বৃষ্টি বিলাস
-কাজল দাস
চেয়েছিলাম সোনা রোদ্দুর, মিষ্টি আকাশ ফর্সা,
হঠাৎ এলো ঝমঝমিয়ে উড়িয়ে আঁচল- বর্ষা।
দেখতে দেখতে ভিজিয়ে দিল বিচিত্র এই দেশটা,
ভিজলো আরো অনেক কিছুই বলছি শোনো শেষটায়।
বৃষ্টি এলো গঙ্গা বক্ষে, বৃষ্টি এলো যমুনায়,
বৃষ্টি এলো বৃন্দাবনে কানু-প্রেম’ কামনায়।
বৃষ্টি এলো হিমালয়ে শিব শিখর চূড়াতে,
বৃষ্টি এলো রাজস্থানে কঠিন শরীর জুড়াতে।
বৃষ্টি এলো তাজমহলে ভিজলো একা মুমতাজ,
বৃষ্টি এলো শাসন রূপে হস্তে ধরি রুদ্র বাজ।
বৃষ্টি এলো দালান কোঠায়, ভাঙা মাটির বাড়িতে,
বৃষ্টি এলো নীল চুড়িদার মাঝ বয়সী শাড়িতে।
বৃষ্টি এলো দাম্পত্যে খোয়াব খুশির বিছানায়,
বৃষ্টি এলো ছোট্ট পায়ে নিষেধ ভাঙা আঙিনায়।
বৃষ্টি এলো খালের ধারে নগ্ন শিশুর হাসিতে,
বৃষ্টি এলো একলা ঘরে চৌরাসিয়ার বাঁশিতে।
বৃষ্টি এলো মাঠ থৈথৈ টাপুর টুপুর আলপনায়,
বৃষ্টি এলো লিখছে কবি যা খুশি তাই কল্পনায়।
বৃষ্টি এলো ঝর্ণা ধারায় নাচছে ময়ূর দিল খুলে,
বৃষ্টি এলো ছুটছে গরু এদিক ওদিক পথ ভুলে।
বৃষ্টি এলো ঐ যে দূরে ঝাপসা করে সব আলো,
বৃষ্টি এলো তোমার গালে,লাগছে আমার বেশ ভালো।
বৃষ্টি এলো শুকনো মাটির মন ভিজে যায় স্বস্তিতে,
বৃষ্টি এলো ভিজছে শরীর নাম না জানা বস্তিতে।
বৃষ্টি এলো ফিরছে না কেউ, বাইরে যারা- আপনজন।
বৃষ্টি এলো অপেক্ষাতে কাটছে বধূর সারাক্ষণ।
বৃষ্টি এলো দুষ্টু মেয়ে জানালা ছুঁয়ে হাত বাড়ায়,
বৃষ্টি এলো অভিসারীর কাটছে বেলা অপেক্ষায়।
বৃষ্টি এলো নরম ঘাসে সবুজে হাসির দোলাতে,
বৃষ্টি এলো দারুন প্রখর অগ্নী দাহ ভোলাতে।
বৃষ্টি এলো গাছের তলায় ভিজছে দেহ গোপনে,
বৃষ্টি এলো আবেশে আজ সিক্ত আঁখি চুম্বনে।
বৃষ্টি এলো মেঘ সরিয়ে উঠবে না ঐ চাঁদ বুঝি!
বৃষ্টি এলো ঘরের ভিতর অন্যরকম চাঁদ খুঁজি।
বৃষ্টি এলো মন বাউলের একতারাতে সুর তুলে,
বৃষ্টি এলো চা দোকানে কাটছে বেলা কাজ ভুলে।
বৃষ্টি এলো সোঁদা মাটির গন্ধে বাতাস ছুঁয়ে যায়,
বৃষ্টি এলো মেঘবালিকা মেঘ আঁচলে মুখ লুকায়।
বৃষ্টি এলো লাল সোহাগে- রাঙা মনের ক্যানভাসে,
বৃষ্টি এলো প্রেমিক মনে প্রেম জাগানো উচ্ছাসে।
বৃষ্টি এলো নবীন ছন্দে আবেগ ঘন বাতাসে,
বৃষ্টি এলো রূপ লাবণ্যে কাব্যে রসে উল্লাসে।
বৃষ্টি এলো সব ভেসে যায় মলিনতার বুক ধুয়ে,
বৃষ্টি এলো দিগন্তে আজ লিখছি কাজল, মেঘ ছুঁয়ে।
বৃষ্টি এলো আঁধার ঘন নীলচে আক্ষর স্নিগ্ধতায়,
বৃষ্টি এলো ভিজলো সবাই মন খেয়ালী কবিতায়।