বিশ্বকবি রবি
– ডঃ নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
১
আজও প্রভাতের বাতাস তোমার সুরে,
গান গেয়ে ওঠে,
দোয়েল, কোয়েল, ময়নার সুরে
আন্দোলিত হয় হৃদয়,
ভৈরবী, মল্লারে-
যেমন আন্দোলিত হয় বৈশাখী ঝড়ে,
ফাগুনের ফাগ মাখা ভোরে;
তেমনই শিউলি বিছানো
আশ্বিনের ভোরেও তোমার স্পর্শ
জড়িয়ে আছে রবীন্দ্রনাথ ।
আজও যে কথা ছন্দ খুঁজে পায়
তোমার ঠিকানায়-
সে কথা সব কবিতা হয়ে যায়।।
আজও বিষাদে,আনন্দে,
ছন্দে, নিরানন্দে-
উৎসবের উন্মাদনায়-
বিরহের যন্ত্রনায়,শোকে,
ক্ষতে,হৃদয়ের রক্তক্ষরণে-
সকল সুরহীনতায়-
লাঞ্ছনায়,পরাধীনতায়,
মনুষত্বর অবমাননায়,জীবনের শুন্যতায়
আবার পরিপূর্ণতায়-
সুখের অলিন্দে বিচরনের ক্ষনে-
ক্ষত থেকে রক্তক্ষরনে,
হৃদয়ের প্রকোষ্ঠে –
অবলার অশ্রুঝরার লগনে-
সভ্যতার ভাঙনে, কিংবা হিংসার আস্ফালনে,
বরিষ্ঠের দমনে-
প্রেমহীনতায়,অত্যাচারের লেলিহান শিখায়-
লাঞ্চনা,অপমান,মনুষত্বর অবমাননায়-
প্রতিবাদের ভাষা কথা বলে,
মুখর হয় মূক,
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, আজও তেমন করে,
নব চেতনায়,তোমার ছন্দে,
আগামীর পথে।।
২
উৎসবে যেমন,শ্মশানে, গোরস্থানেও তেমন
অবিচল তুমি-
দু:খে যেমন,সুখেও তেমন করেই,
তুমি বিদ্যমান!
প্রভাতে, সাঁঝরাতে,রাত্রির নিস্তব্ধতায়
বীণার মূর্ছনায়,তোমার অনুরণন –
সুরে যেমন, অ-সুরের বিনাশেও তুমি উজ্জ্বল!
জন্ম আছে,মৃত্যু নেই,
ছন্দ আছে,ছন্দহীনতা নেই-
সমগ্র চেতনায়,মননে স্বপনে
পঁচিশে বৈশাখ,বা বাইশে শ্রাবণ নয় শুধু;
সারাক্ষণ , প্রতিপলে,
ঊষায় যেমন ,মধ্যাহ্নের জ্বলন্ত সূর্যের দীপ্তিতে
তেমন করেই ভাস্বর, সাঁঝের স্নিগ্ধতায়
রাত্রির নীরব গভীরতায় তোমার উপস্থিতি;
তেমনই শরতে,বসন্তে,আষাঢ়ে,
হেমন্তের পূর্ণিমা রাতে,পৌষালি ভোরে
তিনশো পঁয়ষট্টি দিন,
তুমি সব হৃদয় জুড়ে, আছো নিবিড় করে –
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ।।