বাঁক
– শক্তি পুরকাইত
বাঁশের তৈরি লম্বা একটা বাঁক। সহজেই বেঁকে যায় বলে নাম বাঁক। তার নিচে ঝুলতে থাকে দু-একটা মাটির ভাঁড়। ভাঁড়ে বাবা মহাদেবের মাথায় ঢালার জন্য নদী থেকে তুলে আনা জল। মধুশ্রী বাঁক কাঁধে নিয়ে হাঁটতে থাকে। ‘বোম্ – বোম্ – বোম্’ বলতে বলতে। সজিত নাসিংহোমে ভর্তি, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মুখে মধুশ্রী… মধুশ্রী নাম! মধুশ্রী হাঁটতে পারে না। তবুও কোনরকমে হাঁটছে সজিতের বাঁচার জন্য। অনেকটা পথ পেরিয়ে আসে মধুশ্রী। দূর থেকে দেখা যায় বাবা মহাদেবের ঐতিহ্যবাহী সাবেকী মন্দির। মন্দিরের গা বেয়ে নেমে গেছে ছোট ছোট বটের ঝুরি। সারা মন্দিরের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। মন্দিরের সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠে মধুশ্রী। কাঁধ থেকে ভারি বাঁকটা নামিয়ে রাখে। বাঁক থেকে খুলে আনে মাটির ভাঁড়, ভাঁড়ে জল । মন্দিরের পুরানো দরজাটা কোনরকমে খোলে সে। পিয়ালী ছুটতে ছুটতে খবর আনে, সজিত মারা গেছে! তখনও মন্দিরের বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছে একটাই শব্দ বোম্– বোম্–তারকবোম্!