মুক্ত গদ্য

মুক্ত গদ্য- বোবা সমাজ

বোবা সমাজ
– দেসা মিশ্র

 

 

বোবা মেয়ে জন্ম নিলে, – কত দুঃখ, কত রাগ কত অভিশাপ।
যে মা সেই বোবা মেয়ের জন্ম দেয়,
তার দুঃখ কেউ বোঝে না, আবার তাকেই সবাই দোষারোপ করে

আবার সুস্থ মেয়ে জন্ম নিলে আমাদের এই মুখোশ ধারি সমাজ জানে –

ঠিক কতটা আঘাত দিলে একটি মেয়ে বোবা হয়ে যাবে।

পরিস্থিতির চাপে মেয়েদের চুপ থাকতে হয়, তবে সে মেয়ে লক্ষ্মী হয়।
মিথ্যেটাকেও সত্যি বলতে  হয় আর ভুলটাকে ও ঠিক।

প্রতি নিয়ত আসে রাত।
নিকষ কালো রাত।

আমরা তুলসি তলায় শুদ্ধ বস্ত্রে প্রদীপ আলো জ্বালি।

আমরা অন্ধকার ঘরে বৈদ্যুতিক আলো জ্বালি।

আমরা কেন মনে আলো জ্বালাই না!

আমরা এখনো অন্ধকারে আছি।
খুব অন্ধকার।
শুধু রাতে নয়, দিনের বেলাতেও মনে- গভীর অন্ধকার।

সূর্যের তো দোষ নেই,
সে তো পুড়ে পুড়ে সোনা হতে বলে।
আত্মার শুদ্ধ করণ।

আমরা আজ নীরব দর্শক।
কাঠের পুতুল নাচ দেখতে ভালোবাসি।
কাঠের পুতুল মতো নাচতে ভালোবাসি।

আমরা প্রত্যেকেই প্রতি নিয়ত আত্মহত্যা করছি, কখনো শরীর কখনো মন।

আমরা দুর্বল এর অস্ত্র হতে শিখিনি, কিন্তু আমদের দ্বারা খুব সুন্দর একটা বোবা সমাজের জন্ম হচ্ছে।

এই চির অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে হবে।
আলোর পথ খুঁজতে হবে।

মানুষ – শ্রেষ্ঠ জীব, তবে
আমরা কি একটা ভালো পৃথিবীর জন্ম দিতে পারি না?

যেদিন এই কাঠের পুতুল গুলি সত্যি মানুষ হবে,
যেদিন বোবা সমাজ মুখ খুলবে,
অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।
অসহায়দের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেবে।
সব পাপের বিনাশ হবে।
মানুষ ভালোবেসে মানুষের পাশে দাঁড়াবে,
সেদিন সৃষ্টি কর্তার তৃতীয় চক্ষু খুলে খুশির আলো বেরোবে।

প্রতিটি শুদ্ধ আত্মার আহ্বানে আমদের নীল বসুন্ধরা হাসবে।

Loading

One Comment

Leave A Comment

You cannot copy content of this page