কবিতা – এক অন্য দেশ
– দেসা মিশ্র
তারায় তারায় গেঁথেছি প্রাণের গীত।
আলোতে আলোতে সাজিয়েছি সব পথ।
কত শত শত পদ্ম ফুটেছে নদীর বুকে।
নীল আকাশে জানা অজানা পাখিদের আসা যাওয়া।
জীবনের গল্প বইটা খুব সহজ, রঙিন মলাট শুধু হাসি মুখ।
কিন্তু পাতার পর পাতা পেরিয়ে পেরিয়ে জীবনের অনেক সংজ্ঞা পেয়েছি খুঁজে।
হাজার রঙের মুখোশ,
রঙিন রঙিন চরিত্রের সমাবেশ অদ্ভূত মায়া জাল।
কখনো পাতাগুলো সবুজ, কখনো বিবর্ণ।
কখনো সে ভীষণ আর্তনাদ করে, কখনো বা তার চোখ ভেজা।
কখনো সে এক বিন্দু জলের আশায় চাতক।
কখনো সে ডানা ভাঙা খঞ্জনা পাখি।
কখনো পথ ভুলে যাওয়া ক্লান্ত পথিক।
কখনো শীতের রাত্রে ক্ষুধার্ত নগ্ন শিশু।
শূন্য ধানের মাঠ, গঙ্গা সাগরে কোলের শিশুটি ভাসিয়ে দিয়ে মিথ্যা পুন্যের আশা।
আজও দাড়ি পাল্লাতে পণ ও বধূ,
আরো বাকি, আরো বাকি।
অনেক অন্ধকার,
এতো শূন্যতা কোথায় রাখবো?
তাই হৃদয় পেতেছি আজ।
তারাদের মাঝে সেই প্রেমের গীত নেই তো আর,
নিরাশ আঁধারে ঢেকেছে সব পথ।
নদীর বুকে শুকনো পদ্ম মালা আজ।
পাখিদের দল ও বিষাক্ত বায়ুতে ছটপট করছে।
মৃত্যু যখন জীবনের দ্বারে দু’ হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে,
বলে- গল্পটা এবার শেষ হোক,
তখন পাতার পর পাতা চোখের সামনে ভাসতে থাকে।
গল্পের আসমাপ্ত লাইনগুলি যেন হৃদয়ে আঘাত করে।
কত খুঁত,
কত ভুল,
কত না পাওয়ারা আজ মিছিলে নেমেছে।
তাদের পাওনাগুলো শোধ হবে না আর।
শুধু একটা শান্তির দেশ পাওয়া যাবে উপহার।
পৃথিবীর কষ্টগুলো, কান্নাগুলো সে দেশের ঠিকানা জানে না।
তারার সমুদ্র সেখানে খেলা করে।
সেখানে শুধুই আলো।
নিষ্পাপ হাসির ঝর্ণা সেখানে সর্বদা বয়ে যায়।
পদ্মরা সেখানে শুকোয় না,
এক অদ্ভূত মিষ্টি গন্ধে চারিদিক পূর্ণ।
এক একটি দুঃখের পুঁথি গিয়ে আনন্দ মালাতে মিশে যায়।
কি অপূর্ব সে দেশ।