রম্য- কথকতা

কথকতা
-সুজিত চট্টোপাধ্যায়

 

 

কিরে পাগলা বিয়ে করবি?

হেঁ হেঁ … টোপর হাতে বসে আছি …
বিয়ে পাগলা প্রেমের আদ্যিক্ষেতা কে প্রেমময় বলিয়া ভুল করিওনা।উহা অচিরেই কম বয়সের কামনা বলিয়া,পরিগণিত হইবে।ঘোর কাটিলেই ঘর ভাঙিবে ।

পিতা মাতার আশীর্বাদ ভিন্ন ঘর বাঁধার স্বপ্ন, নিজ পায়ে কুঠারাঘাত প্রতিপন্ন হইবে, ইহাতে কিছু মাত্র সন্দেহের অবকাশ নাই। সুতরাং ভবিষ্যতে, কম বয়সের ভুল বলিয়া ক্রন্দন করিবার কারণ নিজ হস্তে নির্মাণ করিবার পূর্বে, বহুবার ভাবিবার অবকাশ এবং অবস্থা রহিয়াছে, তাহা অবজ্ঞা করিওনা। নতুবা নিশ্চিত জানিও, পস্তাইতে হইবে। দুকূল হারাইয়া আকুলপাথারে মাথা কুটিবে। অদৃষ্ট কে দোষারোপ করিয়া স্বহস্ত কামড়াইতে হইবে। চোখের জলে নাকের জলে হইয়া , আত্মহননের মনোবাঞ্ছা জাগিবে।
সুতরাং…
মেয়েরা স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত বিবাহের চিন্তাও করিওনা, কাহকেও অন্ধ বিশ্বাসের ফল, নিদারুন নির্মমতায় ভাসিতে পারে। দুনিয়ায় মাকাল ফলের অভাব নাই। বাপের টাকায় কেনা মোটরসাইকেল চড়া, এক কানে দুল, ফুটো কার্তিক দেখিয়া ভুলিও না। উহা রুপসী ভুলাইবার একটি মোক্ষম অস্ত্র।
পতঙ্গের ন্যায় আগুনে আকৃষ্ট হইয়ো না। স্বরণে রাখিও , সাবধানের মার নাই ।

অদ্য ভ্যালেন্টাইন ডে। এসো প্রিয়ে লাল টুকটুকে গোলাপ নাও, নামী কোম্পানির চকোলেট খাও। মনে রাখিও ইহা ছলনা বৈ কিছু না।
ছাগলকে কাঁঠাল পাতা দেখাইয়া , বধ্যভূমি তে লইয়া যাওয়া কিছুমাত্র কঠিন কর্ম নহে । ইহার পরিনতি সকলেই অবগত। তাই , ইহাতে কদাপি ভুলিও না। দুরাত্মার ছলের অভাব হয়না।
একদিন গোলাপ দেওয়া আর নিত্যদিন থলি হস্তে বাজার যাওয়া এক নহে। গ্যাস বেলুন ভরসায় চাঁদের বাড়ি পাড়ি দেওয়া কল্পনাবিলাস মাত্র।

তেঁতুল পাতায় নয়জনের উপমা , কেবল উপমা বৈ কিচ্ছুটি নয়। বাস্তবে তেঁতুল পাতাটিরও দেখা পাওয়া যাইবে কিনা , তাহা লইয়া যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে। সুতরাং গুরুবাক্য অবহেলা না করিয়া , তাহাদিগের সম্মান করাই বুদ্ধির পরিচায়ক হইবে।

Loading

One thought on “রম্য- কথকতা

  1. ইহা পাঠ করিয়া, কাহারও কিছুমাত্র ভালো লাগিলে, লেখক যার পর নাই আহ্লাদ উপভোগ করিবেন।

    আলাপী মন এর সকল শুভানুধ্যায়ী বন্ধুদের জানাই আমার আন্তরিক ভালবাসা।

Leave A Comment