কবিতা- শীত পরী

শীত পরী
– মৈত্রেয়ী ঘোষ

উত্তরের হাওয়া যখন
একটু একটু করে শক্তি সঞ্চয় করে
শীতের দুন্দুভি তখনই গমগম করে ওঠে!
এ বড়ো বহুরুপী সময়,
কখনো ভয়ংকর দাপাদাপিতে
সারাদিন কোটরেই থাকি,
কখনো শীতের পাতলা চাদর মুড়িয়েই
বেড়িয়ে পড়ি উদর সন্তুষ্টির সন্ধানে,
রূপ সর্বস্ব মেঘের দল–
একটা ফুরফুরে মেজাজ এনে দিলেও
তা দীর্ঘস্থায়ী হয়‌না।
কৃষক শস্য দানায় আঁকে জীবনের সোনালী রং
মহুয়ার বনে শোনা যায় শীতের গান
খেন্তি বুড়ি খচর মচর করে চিবোতে থাকে
কোঁচড় ভরা কড়াইশুটি।
এসবের মধ্যেও দৃষ্টি আকর্ষণ করে–
নবান্নের পৌষালী হাঁড়ির ভিতর থেকে
ভেসে আসা ক্ষুধার্ত শিশুর
কান্নার রোল,
কিংবা রেলের প্ল্যাটফর্মে শুয়ে থাকা
নগ্ন ভিখারীর শীতবস্ত্রের অভাবে মৃত্যু বরণ।
সুখে অথবা দুঃখে এইসময় মুহূর্ত দল
বড্ড কাছাকাছি ঘোরাফেরা করে
পরষ্পরের অনুভূতিতে,
অবশেষে ভালো মন্দের ঘুলঘুলিতে শায়িত
শীত পরীর যাবতীয় নৈকট্যের গায়ে
আচমকাই যতি চিহ্ন এঁকে দিয়ে
আপন উপস্থিতি ঘোষণা করে
ঋতুরাজ।

Loading

Leave A Comment