কবিতা

কবিতা- জন্মান্তর

জন্মান্তর
– শিলাবৃষ্টি

 

 

বারংবার আঘাত হেনেছ তুমি…
টলমল শব্দে তবু ভেঙে পড়িনি আমি ।
কতবার হয়েছি স্তম্ভিত
হয়েছি বাক রোহিত ……
ভাবিনি কখনো এও হতে পারে জীবনে আবার!
ভাবিনি নিঃশব্দে ইমারত গড়ব তোমার !
বারবার হয়েছি মিথ্যের মুখোমুখি…
কতবার খুলেছি তোমার রঙিন মুখোশ !
তবু পারিনি চলে যেতে ।
সবই জেনে, হায় সবই বুঝেও
তোমার করুণার স্পর্শখানি চেয়ে
দিয়েছি হাত পেতে।
ক্ষণে ক্ষণে প্রশ্ন জাগে হৃদয় কোণে
‘ ভালোবাসা’র স্বরূপ তবে কি?
উত্তর পেয়েছি মনে
কবির গানে–“সে যে বড়ই যাতনাময়।”
তবে কি সে শুধুই বেদনা দেয়?
না না, কতবার পেয়েছি পরম লগন,
হয়েছ জীবনে কাছের সুজন…
লেগেছে সুখের পরশ।
সব ভুলে তোমাতে করেছি সমর্পন
আমার ভালোবাসা।

কতবার বলেছিলে —
তুমি ছিলে নাকি কোনো জনমে আমার।
সেতো নেই স্মরণে !
মনের দর্পণে একবার শুধু একবার
দেখতে চাই সে মুখ-খানি ।
বড় সাধ অন্তরে।
সে সাধ পুরাই কেমনে!

কোন্ সে জনমে বিদায় বেলার…
স্মৃতিচিহ্ন কিছু ছিল কি আমার
তব কাছে?
দেখাও হে নাথ! একবার শুধু একবার।
সেদিনের সেই বালিকা বেলার ছবিখানি।
প্রতিদিন ঊষাকালে
আনমনে যে মেয়েটি
ছুটে যেত নদীতটে;
ছুটে যেত পাহাড়ের কিনারায়।
বাঁশির মধুর ধ্বনি তব…
বার বার দিত তারে হাতছানি।
ভোরের শিশিরস্নাত
বকুল ফুলের মালাখানি…
জড়িয়ে নিয়ে কোমল হাতে
ছুটে যেত তব পানে……
সেই ভালোবাসা আবার এলো যদি ফিরে
কেন কেন কেন তা এ নামে ! এ রূপে !
হা ঈশ্বর! আজ এজনমে-
কোনভাবেই আর আমি নই তার
সে নয় আমার।
মাঝখানে কেন তবে এই খেলা?

আমার ঠাকুর! ঈশ্বর মোর! জীবন দেবতা
তোমার কাছে রব’না হাত পেতে,
নিজেই নিজের ভাগ্য লিখন
লিখব আঁধার রাতে।

চলে যাই, চলে যাই প্রিয়!
সুখের সাগরে ভাসাও ভেলা
জীবন তো নয় শুধুই খেলা।

শুধু বিদায় বেলায়
অপরাধ মোর নিয়োনা মুখে।
আজ আঁধার মেঘে সব কিছু যাক চুকে।
শুধু পাগলা হাওয়ার বৃষ্টি দিনে
একটিবারের তরে,
মনের কোণে অতীত স্মৃতি
রেখো যতন করে।
এই জনমে তোমার উপর
নেইতো কোনো জোর।
তাই অন্তিমে আজ প্রার্থনা মোর –
আর জনমে এসো বন্ধু,
এসো প্রিয় সখা
তোমার সনেই হয় যেন গো
আমার প্রথম দেখা।।

Loading

One Comment

  • Jit sah

    আজ সবার লেখাগুলি মন দিয়ে পড়লাম। খুব ভালো লাগল আপনার এই লেখাটিও..

Leave A Comment

<p>You cannot copy content of this page</p>