কবিতা- দীপান্তরের বন্দীবীর

দীপান্তরের বন্দীবীর

-শিলাবৃষ্টি

দেশজুড়ে আজ রমরম্ করে-
স্বাধীন পতাকা উত্তোলন,
কোথাও চলেছে নাচ গান আর
কোথাও বৃক্ষ রোপণ।
কোথাও আবার মঞ্চ উপরি
পপ্ ডিসকোর নৃত্য,
ভারতের মাটি মাথায় ছুঁইয়ে…
আকুল আজি এ চিত্ত।
কেন জানি আজ উদাস হৃদয়-
এত যে উতল হয় !
বারে বারে আজ অনুভূতিগুলো
কুরে কুরে শুধু খায়।
শহীদ হয়েছে বীর সন্তান…
একে একে প্রতিজন……
ভারত মাতার দামাল ছেলেরা
করেছে রক্তপণ।
আন্দামানের কালাপাণি ঠেলে–
বিদেশী শাসক দল,
কত শত শত বীর সন্তানে…
পাঠালো করিয়া ছল।
চারিদিকে জল ,ঘণ জঙ্গল…
মাঝে একখানা দ্বীপ-
নেইকো সেথায় মানুষ স্বজন…
জলেনা সন্ধ্যাদীপ।
কারো হাতেপায়ে শৃঙ্ক্ষল বাঁধা,
বন্দীরা করে শ্রম ;
বন্ধু ,এসব কল্পনা নয়…
নয় এতটুকু ভ্রম ।
উঁচু উঁচু সব বিরাট পরিখা…
সেলের পরিধি ছোট,
সেলুলার জেল …লৌহ দরজা…
জানালাও নেই খাটো।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খুপরি উপরে
অক্সিজেনের তরে ।
বীর যোদ্ধারা সীমাহীন ক্লেসে-
রাত দিন কাজ করে ।
মাঝে মাঝে সব চিৎকার ক’রে,
অসীম সাহসে কয়—
” বলো সবে জয়, ভারতের জয়…
নাই ভয় ,নাই ভয় । ”
শত শত ওই বুটের আওয়াজ…
চাবুক পিঠের পরে ;
শাসকের দল শাসন করছে-
নৃশংসতার করে।
খাদ্য যা দেয় – মানুষ খায়না…
পশুরাও বুঝি তাই,
অত্যাচারের শেষ কোথা বলো…
হায়রে মানুষ ভাই !
সহ্যেরো এক সীমারেখা থাকে,
প্রতিবাদী বুক মরে ;
প্রণমি এ দিনে সংগ্রামী নেতা-
বীর সাভারকরে ।
এখনও যখন ফাঁসির মঞ্চ…
খোলা মানুষের তরে,
ভিড় করে কত স্বাধীন মানব…
সেলুলার জেল পরে !
এখনও যখন ধ্বনিত আকাশে
” জনগণমন অধি “,
সেই সেদিনের পিপুল বৃক্ষ —
বলে যায় নিরবধি !
তোমার চক্ষু শুষ্ক থাকে কি -?
বক্ষ ভেজেনা জলে?
বোবা কান্নাকে ঢাকোনা কি তুমি …
ছলে বলে কৌশলে ?

স্বাধীন ভারতে স্বাধীন মানব
গগনের দিকে চায় ……
মুক্ত আকাশে মুক্ত খেচর _
মুক্ত ডানায় যায় ।।

Loading

Leave A Comment