কবিতা- ভোলা মহাকাল

ভোলা মহাকাল
-রীণা চ্যাটার্জী

গতে বাঁধা চৌখুপী ছকে লুকিয়ে যত পাপ
আজন্মের সংস্কারে ছেয়ে গেছে তত শাপ,
ছক ভেঙে গড়ে নেওয়ার বিশ্বাসী আশায়
কুড়িয়েছিলাম পাথর-নুড়ি মনের বাসায়।

কিছু নুড়ি গোল, কিছু স্মৃতির ভাঁজ
মাঝে কিছু বেয়াদব, বেসামাল খাঁজ,
ধুলো মাখা, কাদা-বেশে গরমিল রূপে
অগোছালো জমে আছে জীবনের স্তুপে,
অকারণ অভিনয়ে বেলা বয়ে যায়
ছক ভাঙার খেলা ঝলক অপেক্ষায়।

এক নুড়ি হাতে নিয়ে চোখ মেলে দেখি
মিঠে বোলে, দুধে-হেসে শৈশব দেয় উঁকি,
পাশে রেখে, হাতে তুলে নিই আরো কিছু নুড়ি
ঘ্রাণে জুড়ে কৈশোর-যৌবনের আধ ফোটা কুঁড়ি
মা’র আঁচল, সাঁঝবেলা, চিলেকোঠা, মিঠে রোদ্দুর,
আরো আছে প্রথম প্রেমের হারানো সেই সুর।

দুই ফেলে তিন খোপে চোখ যায় চলে
দায় নিয়ে নুড়ি তখন পাথরের খোলে,
দাবীর নাভিমূলে ছকের শৈবাল সাগর
কবরে আশ্রয় নেয় ছক ভাঙার আকর।

বাকি অবশেষে, শেষ নিঃশ্বাসের শোক
সাথে গোবর ছড়া, দড়ি-কলসীর যোগ
ছক ভেঙে গড়ে তোলার বৃথা সে গরব
শেষ খোপে আমি ছাড়া সবাই সরব।
শুদ্ধ হওয়ার তাগিদে নিয়মের জাল
বাঁধা ছকে বয়ে চলে ভোলা মহাকাল।

Loading

6 thoughts on “কবিতা- ভোলা মহাকাল

  1. কবিতার গভীরতায় মুগ্ধ করলো দিদির ভাবুক কলম।দারুন

  2. বাহ, বেশ সুন্দর লেখা। ভালো লাগলো

Leave A Comment