কবিতা

কবিতা- বেলা যায়

বেলা যায়
-সুমিতা দাশগুপ্ত

জীবনের এই স্থবির বেলায়
তাকাই যখন পিছনপানে ,
কল্পনাছুট ভাসিয়ে নে যায়
ছেলেবেলার সেই উঠানে।
দড়ির পরে ঐ যে মেলা মায়ের শাড়ি আমার জামা,
পিঠের উপর চুল এলিয়ে ফুল তুলছে আমার ঠামা।
ঠিক পিছনে সাজি হাতে দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট দিদি,

সাবধানে ফুল গুছিয়ে রাখে, উপছে ভুঁয়ে ছড়ায় যদি!!
স্পষ্ট শুনি দাওয়ায় বসে চেঁচিয়ে দাদা নামতা পড়ে,
লাউয়ের মাচায় ফুল ধরেছে , সবুজ পাতা হাওয়ায় নড়ে।
দাদুর গলায় ভৈরবী সুর, বাবা এখন অফিস যায়,
“আসার সময় লজেন এনো”
বলছি আমি চিকন গলায়।
হঠাৎ কখন চটকা ভাঙে
মোবাইল ফোনের রিং এর টোনে
ছায়ায় মিলায় সকল মায়া,
বাষ্প জমে নয়ন কোণে।
তারার দেশে গেছেন যাঁরা তাঁরা নাকি সবাই অতীত,
এতো মায়ায় জড়িয়ে রাখে,
কেমনে তা কল্পনাতীত!!
দাদা ছিলো অঙ্কে তুখোড়, যাচ্ছে ভুলে বর্তমান,
‘স্মৃতিভ্রংশ’ বাংলা কথায়
ইংরেজিতে কী যেন নাম !!
সারাটা দিন আঁকছে ছবি ,
ছোট্টো ছোট্ট তুলির টানে,
মাঠঘাট আর পুকুর বাগান,
হাঁটছে দাদা পিছনপানে।
দিদি সে তো কবেই গেছে সাতসাগরের ওপার দেশে
দূর বিদেশেই ঘর সংসার,
কাটাচ্ছে দিন ঘোর আয়েশে।
তবুও নাকি যেদিন হোথায় আকাশভাঙা বৃষ্টি নামে,
শূন্যে চেয়ে উদাস দিদি কী যে ভাবে সে-ই তা জানে!!
তাই তো বলি আয় না দিদি পরষ্পরের হাতটা ধরি,
ওই উঠোনেই তিনজনেতে খেলবো আবার লুকোচুরি।

Loading

One Comment

Leave A Comment

You cannot copy content of this page