কবিতা

কবিতা- অনাদি- অবিনশ্বর

অনাদি-অবিনশ্বর
-রীণা চ্যাটার্জী

তোমার সুস্থ হবার অপেক্ষায়
পেরিয়ে এলাম আবহমানের দিন-রাত
বেশ কিছুটা জ্যোৎস্না ছড়িয়ে গেল চাঁদ,
অনেক রোদ্দুর একসাথে হেঁটে যেতে যেতে বার্ষিক শেষে, বেশ কয়েক যুগ গড়িয়ে গেল
অপেক্ষা, তুমি সুস্থ হবে একদিন..
কত বাঁধনহারা ঝড়ে, থরথর কম্পনে
দুরুদুরু বুকে সাক্ষী থাকলাম তোমার সাথে,
হিমেল হাওয়ার শীতল পাটিতে তোমার বুকে মাথা রেখে ভাবলাম
এইবার শান্তি.. শান্ত হবে সবকিছু,
সুস্থ হবে তুমি.. ঠিক সেই মুহূর্তে
হুড়মুড়িয়ে হড়কা বানে ভেসে গেল সব আশা, ভরসা.. বাঁধ ভাঙার আসরে সংগ্ৰাম, আবার সংগ্ৰাম..
দু’হাত তুলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা- উদ্ধারের আকাঙ্খায়,বেঁচে থাকার বাসনায়!
হেসেছিলে? খর রুদ্র চোখে!
প্রচন্ড উচ্ছাসে পথচলতি সবকিছু ভাসতে-ভাসাতে ধুয়ে দিচ্ছিলে যখন অহঙ্কারী সভ্যতা.. দেবভূমি! দেবতা!
স্তব্ধ করে দিতে প্রলয়ের মাতন,
ঈশ্বরকে খুঁজেছো কি তুমিও?
না কি সভ্যতার অহঙ্কারে দিয়েছো দস্তক..
থামতে হবে..দিতে হবে লাগাম আগ্ৰাসনে
নয়তো থেকে যাবে হাহাকার,
ব্যর্থতার হুতাশনে জ্বলে যাবে দেবতা- তপোবন।
তোমার ক্ষয়িষ্ণুতা, তোমার পীত বর্ণ অসুস্থতা নয়- সচেতনতার বার্তা।
ধর্ম-দেব সব মায়া, সব নশ্বর;
প্রয়োজনে মুছে দেবে কালের নিয়ম মেনে তুমি সর্বংসহা, তুমি ধরিত্রী।
সহ্যের শেষ প্রান্তে তোমার খোলা চিঠিতে
তুমি মহাকাল, তুমিই প্রলয়।
সৃষ্টির অঙ্কুর বুকে নিয়ে ধ্বংসলীলার
স্বাক্ষর শুধু তোমার..
অজ্ঞানের ঔদ্ধত্য চূর্ণ করে, শুরু হবে আবার নব উদ্যোমে- নব কলেবরে
তুমিই অনন্তকাল বয়ে চলা সম্পূর্ণ পৃথিবী..
ক্ষয়ের উর্ধ্বে- লয়ের তালে এক..অনাদি..অবিনশ্বর।

Loading

6 Comments

Leave a Reply to রীণা চ্যাটার্জীCancel reply

<p>You cannot copy content of this page</p>