কেবল শিখেছি
–সুমিত মোদক
কত সহজেই আমার অনুভূতিগুলো গ্রহণ করতে পারে ;
সে কারণে, সেই ছোটবেলা থেকে ওদের সঙ্গে আমার এতো সক্ষতা,
এতো প্রেম, এতো ভালো-বাসা, অভিমান …
আমার সুখ, আমার দুঃখ,
আমার অমৃত, আমার গরল,
সব কিছু নিতে পারে অতি সহজেই;
ওদের মতো এতো অনুভব শক্তি অন্য কারোর মধ্যে আর আছে কি না
আমার জানা নেই;
হয়তো, জানা নেই বলে অন্য কোথাও যাই না;
একমাত্র আমার আশ্রয়স্থল সবুজ পাতায় পাতায় রোদ্দুর মাখা গাছ;
কেন না শিকড় আমাকে শিখিয়েছে,
কিভাবে মাটির গভীরে প্রবেশ করতে হয়;
কি ভাবে দেখে নিতে হয় সীতার পাতাল প্রবেশ,
অহল্যার পাষাণ উদ্ধার;
সবুজ পাতারা শিখিয়েছে, কিভাবে বাতাসের বুকে শব্দ তুলতে হয়,
সৃষ্টি করতে হয় শব্দ-মালা;
বাকলের কাছ থেকে শিখেছি কিভাবে সহ্য করে নিতে হয় আঘাত;
কিভাবে রক্ষা করতে হয় স্বত্বা;
শিখেছি, কেবল শিখেছি, গাছের কাছ থেকে;
গাছেদের কাছ থেকে …
পুনর্জন্ম না হলে হয় তো জানা হতো না,
অতীতের ফেলে যাওয়া শব্দ-স্মৃতি কিভাবে স্বযত্নে বুকের ভিতর আগলে রেখেছে;
প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি শব্দ নীরবে গ্রহণ করে,
আবার নির্জন গভীর রাতে একটু একটু করে ছেড়ে দেয় বাতাসে বাতাসে;
সেগুলো ভেসে বেড়ায় …
আবার সেগুলোকেই কুড়িয়ে রাখে বুকের গভীরে;
এমন স্বজন, এমন আত্মার আত্মীয় কে আছে এ জীবনে, পরজীবনে!
মাটিতে গভীর থেকে গভীরে গিয়ে,
মাটির কৌশিক জল প্রতিনিয়ত এনে দেয় আমারই পংক্তির বুকে;
পংক্তি বাঁচে;
বাঁচে আমার আমার আমিত্ব, বিশ্ব-সংসার।