কবিতা- “মা”

মা

-কাজল দাস 

 

 

কেমন আছো- মা,
রক্তের সম্পর্ক ছেড়ে আগুনের সংসারে!
এই টানাপোড়েনের জীবনের টানাটানি মুক্ত করে-
কেমন আছো- মা!

চলে গেলে- কিছু না বলে,
চলে গেলে, নতুন ঠিকানায়,
কেন ফেলে গেলে শূন্য আঁচলে,
সত্যি বলছি ভীষন কান্না পায়।
শাঁখার শব্দ গুলো ভীষন বুকে বাজে,
বাটনা বাটার শব্দেও হাহাকার,
আয়না ভরা সীমন্তিনী সাজে,
মেঘের মতো জমেছে অন্ধকার।

দুপুর হলেই জানতে ইচ্ছে করে,
কার মাথায় হাত রেখে আজ ঘুমাও,
ঘুমের রাজ্যে অনেক যত্ন করে,
কার মুখেতে খাবার তুলে দাও!
আমার মা!
বাটনা বাটা মা,
আয়না ভরা সীমন্তিনী মা,
আর যে তোমায় দেখতে পাইনা।

আঁচল খানি ছুঁয়ে দিয়ে গেলেই,
ভরসা ছিল, এই তো তুমি আছো।
এখন আমার ভেজা চোখের জলে,
উড়িয়ে আঁচল কেমনে তুমি বাঁচো!
এখনো যে ঝড় ওঠে, ভয় পাই,
জ্বরের রাতে আগুনে যাই পুড়ে,
আগলে রাখার আর যে কেউ নাই,
কোলের ছেলে একলা যে রোদ্দুরে।
আমার মা,
কান্না মোছা মা,
খুব আদরে আগলে রাখা মা,
আর যে তোমায় দেখতে পাইনা।

সন্ধ্যে নামে এখনো তোমার নামে,
ধূপের গন্ধে হয়ে থাকি মশগুল।
দুঃখ জমে রাত বদলের খামে,
সময় যেন অচেনা কোনো ভুল।
কঠিন বড় এই পৃথিবীর আলো,
চোখে আমার দারুন তৃষ্ণা ভরা।
এখনো আমি পথ চিনিনা ভালো,
বাঁচার লড়াই মরছে তোমায় ছাড়া।
আমার মা
প্রদীপ জ্বলা মা,
মিষ্টি মধুর দুষ্টু ছেলের মা,
আর যে তোমায় দেখতে পাইনা।

রান্না ঘরে আজো তোমায় খুঁজি,
ঠাকুর ঘরের কাঁকন কাঁপা হাতে।
বুকের ভেতর আয়নাতে মুখ গুঁজি,
খুঁজি তোমায় স্বপ্ন ভাঙা রাতে।
এখন সকাল ভীষন অভিমানী,
দুপুর গুলো একাই ভাত বাড়ে,
সন্ধ্যে হলে পড়ে থাকে ধুপদানি,
ছেলে এখন একাই থাকতে পারে।
তোমার ছেলে একাই থাকতে পারে!
একাই থাকতে পারে….

Loading

Leave A Comment