কবিতা- ভারত আবার স্বাধীন হোক

ভারত আবার স্বাধীন হোক
-উজ্জ্বল দাস

 

 

এখন তো কেউ রক্ত চায়না
স্বাধীনতা কেউ দেয় না আর,
আজ স্বাধীনতা অন্য কারুর
ভগ্ন দেশে যে যার তার?

গণতান্ত্রিক উপমহাদেশ প্রস্তর যুগ ফিরিয়ে দিক
বৈদিক বা লৌহ যুগ আর মগধ রাজ্য সঙ্গ নিক।
স্বাধীনতাহীন ব্রিটিশ শাসনে আমার ভারত ভাগ হলো-
শৃঙ্খলা ঘুচে এলো শৈশব তেরঙ্গারই জিত হলো।

পায়ে পায়ে আজ স্বাধীনতার সত্তর পার,
পঁচাত্তর বা ছিয়াত্তর পেরিয়েও আমরা ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছি না তো?
অর্জিত স্বাধীনতা কোথাও জবুথবু অথর্ব হয়ে যাচ্ছে না তো !
অভিজ্ঞতার বদলে কোথাও, বার্ধক্যের ঘুণে আক্রান্ত হচ্ছে না তো আমার দেশ !
এ প্রশ্ন তোমার, এ প্রশ্ন আমার,
রেখে গেলাম সকলের দরবারে।
উন্নতশীল একটা দেশের সফটয়্যার যেখানে সারা বিশ্বে সমাদৃত,
উন্নতশীল একটা দেশের প্রতিরক্ষা যেখানে বিশ্ব বন্দিত,
সবথেকে বড় গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো আজ হুমকির মুখে !

যে দেশে রাত্রি গড়ালে,
নিশ্চিন্তে চোখের দুপাতা এক করে খেটে খাওয়া মানুষ-
সে দেশে আর যা কিছু হোক অনুদান আছে,
স্বাধীনতা বেশ খানিকটা অধরা এখনো।
দয়া দাক্ষিণ্যে চলতে থাকা ভারতবাসীর মেরুদন্ড-
ধীরে ধীরে নুইয়ে পড়ছে না তো?

রাজধানীর রাজ্যপাটের অন্তরালে এখনো আর্তনাদ করে লুটিয়ে পড়ে-
একলা ঘরে ফেরা যুবতী-
এখনো মুমূর্ষু রোগীর পকেট কাটে
এদেশের চিকিৎসা।
দরজায় দরজায় ঘুরতে হয় একটু রক্তের জন্য।
যে দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিক্রি হয় চড়া দামে,
আলো নিভলেই শহরের ফুটপথে নিদ্রামগ্ন হয় হাজার হাজার কচিকাঁচার দল-
এখনো মেধার থেকে সুপারিশকেই প্রাধান্য দেয়া আমার ভারত,
পড়ে পাওয়া চোদ্দআনা কখনও যত্নে লালিত হয় না।
সংগ্রাম করে অর্জন করা বস্তুতেই যে আসল প্রেম।

মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করুক
শিল্পে এ দেশ দরাজ হোক-
বাস্তবমুখী হোক রোজগার
ভুলুক ক্ষুধার ক্লান্তি শোক।

দুমড়ে যাওয়া মুচড়ে পড়া
স্বাধীনতাটার বিকাশ হোক।
জঠর ভরাক দুবেলা দু-মুঠো
বদ্ধ খাঁচার মৃত্যু হোক।

গর্জে উঠুক আমার এ দেশ,
স্বীকৃতি পাক পতিতালয়
শিক্ষিত হোক আ-সমুদ্র
শিক্ষিত হোক- এ হিমালয়।

দাম্ভিকতা কাটিয়ে উঠুক
মার্জিত হোক আমার দেশ
স্বাধীনতা হোক সংক্রমিত
পরাধীনতার কাটুক রেশ।

গোত্রহীন- হয়ে এসো তুমি,
তোমায় ছুঁয়ে দেখতে চাই।
জাতপাত সব হোক না গৌণ
হাতিয়ার হোক স্বাধীনতাই।

Loading

2 thoughts on “কবিতা- ভারত আবার স্বাধীন হোক

Leave A Comment