সম্পাদকীয়

নিরপেক্ষতা

নিরপেক্ষতা
-রীণা চ্যাটার্জী

সুধী,
‘নিরপেক্ষতা’ আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ একটি শব্দ। এও সর্বজনবিদিত যারা নিরেপক্ষ থাকতে পচ্ছন্দ করে তারাও আদ্যপান্ত নিরীহ। তারা ঝড়ঝাপ্টা ঝরা পতার মতো ঝেড়ে ফেলে জীবনের সুখী গৃহকোণে আবদ্ধ হয়ে যায় অনায়াসে। একটা দন্ডী কেটে নেয় খুব সুন্দর যুক্তি দিয়ে- ‘আমার তো কিছু নেই, আমি কেন কিছু বলব! আমার কাছে সবাই সমান’ কথাটা এইভাবে ভাবতে গেলে যার পায়ে কাঁচ ফোটেনি সে ধন্য ধন্য করে উঠবে, আর যার ফুটেছে? সেই জানে নিরপেক্ষতা শব্দটা কি অসম্ভব রকমের বিষাক্ত! জীবনের অর্থটাই বদলে যায়, বদলে যায় সম্পর্কের সমীকরণ- কেউ যখন সত্যি জেনেও নিরপেক্ষতায় ছদ্মবেশী হয়ে যায়!
সত্যি করে ভাবতে গেলে নিরপেক্ষতা নিরাপদ হলেও নিরীহ কতোটা? আসল কথা নিরপেক্ষতা হয়তো একটা মুখোশ- যা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নিখুঁত করে বানানো। নাহলে সত্যকে সত্য বলে মানতে, আর মিথ্যেকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পিঠের ওই গোল গোল টুকরো হাড়ের গঠনটা অনেক মজবুত হতে হয়। বিকৃত বা বিক্রিত মনের কাজ নয়। যার মজবুত সে বড়ো বদ, মুখরা- আরো কত বিশেষণ! কিন্তু সময়ে বড়ো প্রয়োজনীয় ওই মানুষগুলো যারা শিরদাঁড়া নিয়ে অনায়াসেই সত্যের মুখোমুখি হতে পারে। বিপদের দিনে মনে হয় এমন একটা নির্ভরযোগ্য লোক যদি পাশে থাকত, যে সমাজের বুকে সত্যের প্রতিচ্ছবিটা তুলে ধরত। দুর্ভাগ্যবশত সবার কাপলে জোটে না। তাই সত্যিটা অধরা থেকে যায় আর মিথ্যে প্রবাদী বচনে জিতে যায়- ‘চোরের মায়ের বড় গলা’। রামকৃষ্ণ দেব তো বলেই গেছেন- যার যেমন ভাব, তার তেমন লাভ।
লাভের পারানি গুনতে গুনতে জীবনটা কেটে যাবে।

চৈত্রের প্রথম সন্ধ্যা, কালবৈশাখীর পূর্বাভাস থাকলেও চৈতালি আসে কি না সেটাই অপেক্ষার। যে এলোমেলো হাওয়া আর সোঁদা গন্ধ ছড়িয়ে জুড়িয়ে দিয়ে যাবে অপেক্ষার কয়েকটি প্রহর।
চৈতালি শুভেচ্ছা ও শুভকামনা সকলের জন্য আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page