হেভেনিয়া
-শম্পা সাহা
একটা গোলাপি শহরের সরু মেঠো রাস্তা ধরে একটি মেয়ে একা হেঁটে চলেছে।হলদে গাছের মাথায় মাথায় সোনালী ফুল।চেনা নয় তবু সুন্দর।যা কিছু মন।ভালো করে তাই তো সুন্দর!তাই নয় কি?
গোলাপি কেন ?কারণ শহরের প্রতিটি বাড়ি ,রাস্তা, গম্বুজ, চার্চ, দোকান পাটে গোলাপি র উৎসব।অবাক লাগছে সুন্দর লাগছে ,নেশা ধরে যাচ্ছে।
মাথার উপরে চমকে তাকায়!আকাশ দেখি তো!নাঃ আকাশ এখানে নীল ই তবে স্বচ্ছ পরিস্কার, চাঁদটাও স্পর্শ। মেঠো হলদে পথ জ্যোৎস্না য় বড় মায়াময় রহস্য জনক।
বাড়ি ঘর গুলোও চেনা ধরনের নয়!স্বচ্ছ,যেন।কাঁচের তৈরি!ভেতরে মৃদু গোলাপি আলো আর সুগন্ধ বাতাস ,মনে হয় ওই সোনালী ফুল গুলোর।গন্ধটা অনেটা কাঁঠালি চাঁপার গন্ধের মত।সুন্দর কিন্তু নেশা ধরানো।
মানুষ জন রাস্তায় নেই, আকাশে চাঁদ।অদিতির বুঝতে অসুবিধা হলো না যে এটা রাত!কিন্তু সে এখানে এলো কি করে? কে নিয়ে এলো তাকে?
ওর পরনে রাত পোশাক।কাকতালীয় ভাবে এটাও একটা গোলাপি স্বচ্ছ গাউন।এটা বাপী ওর সতেরো বছরের জন্মদিনে এনে দিয়েছিল।
ক্লান্ত হয়ে বসলো একটা গাছে হেলান দিয়ে।একটু জল।পেলে মন্দ হতো না।ওমা!এই তো এক বোতল জল!হ্যাঁ জল ই তো।গোলাপি বোতলে সুগন্ধি জল।ভয়ে ভয়ে অদিতি নাকের কাছে নিয়ে শুঁকে দেখে।গোলাম জলের মত গন্ধ তবে অতটা তীব্র নয়।খাবো?খেয়েই নি?প্রথম এক ঢোক মুখে ঢালতেই ভালো লাগলো।এ চেনা গোলাপ জল নয়।মাকে মাঝে মাঝে বিরিয়ানি তে দিতে দেখেছে।একবার বেশী পড়ে যাওয়ায় তো কেউ খেতেই পারেনি।কিন্তু এ জল।বেশ সুস্বাদু অনেকটা রুহ আফজার মত।
কিন্তু ওখানে এলো কি করে?এ জায়গাটা অবশ্য একেবারে অচেনা নয়।চেনা চেনা।হ্যাঁ তাইতো।এই রকম এক দেশের গল্প ই তো ও রাতে শোবার আগে পড়ছিল।ওটা পড়তে পড়তেই বোধহয় ঘুমিয়ে পড়ে।
ওখানেই তো এই রকম গোলাপি ঘরবাড়ি, হলুদ মাটি হলুদ গাছ,সোনালী ফুলের কথা লেখা ছিল।ও এক ভিন্ন গ্ৰহ হেভেনিয়া!কিন্তু ও এখানে কি করে?এতক্ষণে অদিতি বোঝে ও আসলছ স্বপ্ন দেখছে!জোরে চিমটি কাটে নিজের হাতে।উঁ….লাগছে যে! তাহলে এ স্বপ্ন নয়?