চিত্রগুপ্তের ডাক
-সুনির্মল বসু
মেঘে মেঘে বেলা বয়ে গেল, বহতা নদী মোহনার মুখ পেরিয়ে সাগর মুখী হলো, পড়ন্ত বেলায় সূর্য অস্তাচলে যাবার পথে পিছন ফিরে তাকালো,
সকালে ফুল ফোটার শব্দ, বিলের জলে শাপলা শালুক, পদ্ম দীঘিতে রঙিন মাছের খেলা দেখে উদাস মাঠে গোল্লাছুট,কী সব মায়াময় দিন,
মনে পড়ে, কৃষ্ণচূড়ার দিন, শিমূল গাছ লালে লাল,
এইখানে কত স্বপ্নের দিন হেঁটে গেছে,
কাঁচকে হীরে মনে করে স্বখাত সলিলে কত কান্না জমা হয়ে আছে,কত বেদরদী প্রেমিকা ব্যথা দিয়ে গেছে, কবে যে ভালোবাসা খেলনা হয়ে গেল,
কবে যে দুনিয়া নিলাম হয়ে গেল, স্বার্থপরতা মানবিকতাকে খাদের পাশে ফেলে দিল, বেড়ে চালাক লোকদের হাতে দুনিয়াদারি চলে গেল,
কত মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বাতাসে ভেসে গেল, সাপ নেউলের যুদ্ধ দেখতে দেখতে জীবন ফুরালো,
মানুষের জীবনে সুদিন আর এলোনা,
বুদ্ধিমতী প্রেমিকাও আজকে কি খুব সুখে আছেন,
সুখের অবস্থান বোঝেন ক’জন, সারাদিন শুধু অর্থের পিছনে ছুটে চলা, শেষ পর্যন্ত জীবন কতটুকু দিল,
কোথায় যেন যাবার কথা ছিল, কোথায় হেমন্ত দিনে পথ হারালো, জীবনের গোলকধাঁধায় মনে হয়েছিল, অনেকটা পথ এগিয়েছি, চোখ খুলে দেখি, একই জায়গায় নিরন্তর হেঁটে চলেছি,
চলার শেষ হলে, জীবন অস্তগামী, তখন আকাশে একটি দুটি তারা ফুটবে, জ্যোৎসনার পালকি চড়ে আকাশে চাঁদ উঠবে,
রাতের উদাস হাওয়া সুপারি বনের উপর দিয়ে বয়ে যাবে, বাঁশবনে মর্মর ধ্বনি শোনা যাবে, কাঠ বাদাম গাছের মাথায় এসে বসবে ঢাউস ঈগল,
ডেবিট ক্রেডিটের খাতা খুলে দেখি, চারদিকে শূণ্য,
বুকের বাঁ দিকে ভালোবাসা ছিল, ভালোবাসা দিলে পৃথিবীটা অন্যরকম হতে পারতো,
এটা বোঝার আগেই, চিত্রগুপ্তের ডাক এলো।