শেষ সাক্ষাৎকার– সুজিত চট্টোপাধ্যায় দাশরথি দাশ আজ দুপুরে দেহ রাখলেন। বাহাত্তুরে বুড়োর জীবনাবসান। বুকের বাঁ দিকে চিনচিনে ব্যাথা। শ্বাসকষ্ট। নিমেষে নিঃশব্দে এপার থেকে ওপার।নো হসপিটাল। নো নার্সিংহোম। নো সন্দেহজনক বাড়তি বিল। নো বিছানায় শুয়ে শুয়ে প্রাণান্তকর নরকযন্ত্রণা।আহা, কী চমৎকার শান্তিময় মৃত্যু। ওগো, সকলেরই কেন এমন করে মরণ আসে না?আবদার বোঝো…না, আসবে না। মরণের […]
রম্য- শাঁখের করাত
শাঁখের করাত – সুজিত চট্টোপাধ্যায় হরিহর গোঁসাই প্রায় প্রতিদিনই হরিসংকীর্তন শুনতে যান মঠে। সেদিনও গেছেন, শুনছেন হরিনাম। কিন্তু আজকে যেন কিছুতেই মন বসছে না। উসখুস করছেন। বারবার পিছন ফিরে দরজার দিকে তাকাচ্ছেন। চোখে মুখে ভক্তি ভাবের বদলে উৎকন্ঠা ভাব। পাশে বসে থাকা এক ভক্ত, আর থাকতে না পেরে জিজ্ঞেস করলেন, ও হরিদা ব্যাপার কী? আজ […]
রম্য- জয় বাবা শনিনাথ
জয় বাবা শনিনাথ (রূপক) – সুজিত চট্টোপাধ্যায় মাথা গরম বোঝাতে কত কথাই না ব্যবহার করা যায়। রগচটা, বদমেজাজি, রাগী, খোচোপার্টি, তিরিক্ষি মেজাজ ইত্যাদি ইত্যাদি। যেমন গদাইদা। হেব্বি খোচোপার্টি। উচ্চারণের কায়দাই আলাদা। বসে কিংবা দাঁড়িয়ে থাকার ভঙ্গিমা দেখলে মনে হবে, সারা দুনিয়ার একছত্র অধিপতি। সেদিন গলির মোড়ে চায়ের দোকানের সামনে গুলতানি করা গদাইকে, কী কুক্ষণেই না […]
রম্য- ফুলদানি
ফুলদানি (রূপক) -সুজিত চ্যাটার্জি বৌমা, এ-ই নাও ধরো। বৌমা একটু ইতস্ততভাবে হাত বাড়িয়ে ধরলেন, সন্তর্পণে। -যত্ন করে রেখেছিলাম এদ্দিন। এবার তোমার হাতে তুলে দিলাম। না না, মনে কোনও কিন্তু রেখো না। বিশ্বাস.. বুঝলে, আস্থা, একশো আনা আছে তোমার ওপর। তাইতো তোমার হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হলাম। নইলে, আমার কী দেবার লোকের অভাব, নাকি নেবার লোকের। […]
রম্য- সংসারের মহিমা (রূপক)
সংসারের মহিমা রীণা চ্যাটার্জী ইঁদারায় জল তোলার বালতির সাথে কোনও তফাত নেই জীবনের। ডোবাচ্ছে আর তুলছে, ভরছে আর খালি করছে। সংসারে যেমন প্রয়োজন তেমন, যখন প্রয়োজন তখন। সকালে ঘুম চোখ খুললেই শুরু, চা দিয়ে..শুধু একবার হাঁক দেওয়া মানে কিন্তু খুব সোজা দিনের প্রথমবার ডুবনো, চা হাজির। ‘এক টানেতে যেমন তেমন…’ শুরু হলো তারপর একে একে […]
রম্য- কল্কি এলো দেশে (রূপক)
কল্কি এলো দেশে (রূপক)– সুজিত চট্টোপাধ্যায় সত্য কী? সহজ উত্তর, যা মিথ্যে নয়।পিতৃসত্য কী ?এইতো প্যাঁচে ফেলে দিলেন। পিতৃসত্য বললেই , মগজে আসবে রামচন্দ্র, বনবাস, রাবণ, সীতাহরণ, লঙ্কাকাণ্ড। মানে হুলুস্থুল ব্যাপার।আচ্ছা, রামচন্দ্র বনবাস স্বীকার করতে গেলেন কেন। সরাসরি বাপের মুখের ওপর বলে দিলেই হতো…দূর মশাই , আপনি প্রতিজ্ঞা ফতিজ্ঞা করে উল্টোপাল্টা জট পাকিয়েছেন, […]
রম্য- করোনার দাওয়াই
করোনার দাওয়াই– তূর্য বাইন সাতসকালে নেতাই দেখি একখানা ঝুড়ি মাথায় নিয়ে হাঁকতে হাঁকতে যাচ্ছে, ওষুধ নেবে গো, ওষুধ।ঝুড়িতে করে ওষুধ ফেরি করতে বাপের জন্মে দেখিনি, শুনিওনি কখনো।ভাবলাম,খ্যাপার মাথাটা বুঝি আবার গরম হয়েছে। তাই পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলাম।নেতাই এক হাত দিয়ে খপাত করে আমার জামাটা টেনে ধরে বলল, এক্কেরে মোক্ষম ওষুধ,একবার নিয়েই দেখ না। […]
রম্য- পূণ্য পূণ্যি
পূণ্য পূণ্যিসুজিত চট্টোপাধ্যায় পুণ্যি চাই হে বন্ধু, পুণ্যি চাই। যেনতেন প্রকারেণ পুণ্যি চাই। পাপময় অন্ধকার জীবনে আরও অনেক কিছুর সাথে পুণ্যিও চাই।কিন্তু কীভাবে পাই , কোথায় পাই ? যাই , কুম্ভ মেলায় যাই । পূর্ণকুম্ভ। তিথি নক্ষত্র মিলিয়ে সঙ্গমে গোটাকয়েক ডুব মারলেই , পুণ্যির কুম্ভ কানায় কানায় পূর্ণ। কানাইদা মনস্থির করেই ফেলেছেন, এবার […]
রম্য- জীবন নদী
জীবন নদী-সুজিত চট্টোপাধ্যায় ছন্দা, রান্নাঘরে চা তৈরিতে ব্যস্ত। শীতের সকাল, অলসতা কাটাতে চায়ের জুরি নেই। হঠাৎ ছাদের ওপর দমাদম শব্দ। কী হলো ব্যাপারটা। কে যেন ছাদের ওপর তাথৈ নিত্য করছে। কার এমন বেয়াক্কেলে কাজ! কে সেই নরাধম। পুরনো মান্ধাতা আমলের বাড়ি। চারিদিকে ফুটিফাটা হয়ে আছে। বর্ষায়, ঘরে জল টপকায়। কী আশ্চর্য রে বাবা। থামার […]
রম্য- লবি বনাম ঈশ্বর দা
লবি বনাম ঈশ্বর দা-সুজিত চট্টোপাধ্যায় কী চাও? লেখক , কবি, সাহিত্যিকের তকমা পেতে? তাহলে, কালক্ষেপ করোনা । লবিতে নাম লেখাও।লবি চাই লবি। লবির আমি লবির তুমি করতে হবে। তেল দাও তেল, নইলে কপালে ঢংঢং। তুমি কোথায় কী দু’চার খানা রদ্দিমার্কা গল্প, কবিতা লিখেছ , সেগুলো ভদ্রলোকের পাতে দেওয়ার উপযুক্ত কিনা , সেসব মারো […]