-
জলতরঙ্গ ভালবাসা
জলতরঙ্গ ভালবাসা
-তন্ময় সিকদার
তুমি তো জল তরঙ্গের মত বোহেমিয়ান ,
কেউ ছুঁতে চাইলে হয়ে যাও ঢেউ,
আছড়ে পড়ো গভীর ক্রোধে
এ তীর থেকে অন্য তীরে ।
অভিমানে উতরে পড়ো পাড় ছেড়ে ওপাড়ে ।
তুমি স্রোতস্বিনী, তুমি প্রবাহিণী
দাঁড়াবার সময় কোথায় তোমার
কেই বা থামাতে পারে তোমার অবাধ্য গতি ,
শুধু ক্লান্ত পথিক তৃষ্ণা নিয়ে
ছুটে আসে তোমার পাড়ে
এক উজলা জলের আশায় বারংবার ।
একটু খানি পা ভেজানর আশায়
কোন বেলা অবেলায় গহীন সমর এর পর
খানিকটা ভালবাসায় খানিকটা নেশায় । -
স্তব্ধ শব্দ
স্তব্ধ শব্দ
-তন্ময় সিকদার
কত দিন হয়ে গেলো কোন ভাল শব্দ শুনিনি ।
চারপাশে রক্তের দাগ আর মাংস পচা গন্ধ
ধ্বংস স্তুপ আর মাঝে মাঝে বোম ব্লাস্ট,
বিকট শব্দ শুনতে শুনতে আমার কান দুটো স্তব্ধ হয়ে গেছে ।
আমি যতটুকু শুনতে পাই তা কান্নার আওয়াজ ,
শিশুদের আতঙ্কিত চিৎকার আর বড়দের ডুকরে কাঁদার শব্দ ।
শব্দ বলতে যা বুঝি মেশিনগান ,ট্যাঙ্ক আর ফাইটার প্লেন থেকে নির্গত ধ্বনি
তবে আর একটা শব্দ আছে বুটের ,যা বেশি ভয়ংকর
শেষ যেদিন ভাল শব্দ শুনে ছিলাম , তা ছিল একটি শিশুর হাসির
সে খিলখিলিয়ে হাসছিল কি নির্মল সে হাসি
সে হাসি দেখার জন্যই এক জীবন অনায়াসে পার করা যায় ।
সে হাসি সরল সে হাসি পূর্ণ জ্যোৎস্নার মত
অথচ কি একটা শব্দ হল আর থেমে গেল সে হাসি ।
তারপর থেকে আর কোন ভাল শব্দ শুনি নি
যা শুনেছি তা শুধুই নির্মম আতঙ্ক আর ক্রন্দন এর প্রতিধ্বনি -
তুমি বললে বৃষ্টি
তুমি বললে বৃষ্টি
-তন্ময় সিকদার
তুমি বলবে আকাশ গম্ভীর বৃষ্টি নামুক ,
বৃষ্টি নামবে , ভিজে যাবে পদ্ম পুকুর
ভিজে যাবে সহস্র পারিজাত
ধান শুকানো উঠোন ,টিনের চাল
পাড়ার অলিগলি ।
আমি বলব বৃষ্টি থামুক
বৃষ্টি থামবে না , সে নামবে
ভিজিয়ে দেবে হৃদয় এর চৌচাল
অবাধ্য হয়ে আঁকড়ে ধরবে হাত
নিয়ে যাবে আকাশের কাছাকাছি
ভিজিয়ে দেবে ভালোবেসে অনেকক্ষণ ।
তুমি চলবে ভেজা পথে
কর্দমাক্ত জল এসে ছুঁয়ে দেবে তোমার পায়ের নূপুর
শাড়ির আঁচল আর পায়ের আলতা
আমি বলব যেও না , জল থামুক ।
তুমি থামবে না তুমি চলে যাবে
বৃষ্টি মাথায় সবুজ সিক্ত পথে
ভালোবেসে বৃষ্টি ।
আমি ঠায় দাঁড়িয়ে রব ,
দেখবো তোমার চলে যাওয়া
ভালোবেসে তোমায় ,চোখের সীমানার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত । -
তারুণ্যের স্পর্ধা
তারুণ্যের স্পর্ধা
-তন্ময় সিকদার
কোন এক কালবৈশাখীর আগে
যে সন্ধ্যায় প্রচন্ড আওয়াজে
কিছু তরুণ চিৎকার করে গান গেয়েছিল,
সে সন্ধ্যা মলিন হবার নয়।
ঝড়ের দাপটে মরে যাওয়া সে সন্ধ্যাই
দেখাবে অজস্র জ্যোৎস্না রাত,
দেখাবে অজস্র চাঁদের বিকিরণ।
তৈরি করবে অজস্র ইতিহাসের বাতিঘর,
পাল্টে যাবে তরুণরা , বদলে যাবে ঝড়ের গতিবেগ
শুধু পাল্টাবে না তাঁদের চীৎকার , তাঁদের আওয়াজ
তাঁদের গানের অন্তরা আর তাঁদের সংগ্রামের স্পর্ধা।
চির শাশ্বত তারুণ্য বেঁচে রবে ঈশ্বর এর মতো মহীয়ান হয়ে
বিদ্রোহের মশাল হয়ে কালবৈশাখী রাতে তীব্র সংগ্রাম এর আগুনের ফুল্কিতে।