গল্প- বন্ধু তুই

বন্ধু তুই -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কোন স্কুলবেলায় শ্রেয়ারা পাঁচবন্ধু সবসময় একসঙ্গেই থাকতো…সে ক্লাসরুমই হোক কিংবা খেলার মাঠ বা লাইব্রেরী। পাঁচ জনকে একসঙ্গে সবাই পাঁচফোড়ন বলতো। মনের যা কিছু কথা নিজেদের মধ্যে উজার করে বলতে না পারলে ওদের ভাতই হজম হতোনা। হা হা করে প্রাণখোলা হাসি ভেসে যেত স্কুল বিল্ডিংয়ের করিডোর ছাড়িয়ে… স্কুল শেষ হলে সবাই […]

গল্প-বিমলবাবু

বিমলবাবু-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়       বিমলবাবু রিটায়ার করার পর রোজ সকাল বিকেল নিয়ম করে হাঁটেন পার্কের ভিতরের রাস্তা ধরে। রিটায়ারমেন্টের পরেই ডাক্তারের পরামর্শে আর নিজে সুস্থ থাকার তাগিদে শরীরটা একটু সচল রাখার চেষ্টা। যদিও বাজার, দোকান, ব্যাঙ্ক ও নানা দরকারী কাজে তাকে বেরোতেই হয়। এমনিতে বাড়িতে থাকার অভ্যেস তেমন নেই। বেরোবার জন্য খালি উসখুস করেন। […]

কবিতা- তুমি আর আমি

।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।   তুমি আর আমি-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     আমি তোমাকে পাত্তা দিচ্ছি,অথচ তুমি পাত্তা পেতে চাইছো অন্য কারো।কিন্তু সে তোমাকে চিনছেইনা। তুমি হয়তো খুঁজে বেড়াচ্ছো তাকে,আমি হয়তো তখন তোমারই অপেক্ষায়। আমি প্রেমের চাদরে ঢাকতে চাইছি তোমাকে,তুমি হয়তো তখন ব্যস্ত অন্য কোনো প্রেমে। আমি বন্ধুত্বের হাত বাড়াচ্ছি তোমার দিকে,তুমি তখন হাত […]

কবিতা- নষ্ট প্রেমিক

।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।    নষ্ট প্রেমিক-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     সে ছিলো এক সস্তা প্রেমিক,নষ্ট প্রেমিক, ভ্রষ্ট প্রেমিক।ছদ্মবেশী, মুখোশ ঢাকা, অবিশ্বাসী।বেয়াক্কেলে ঘনিষ্ঠতায় বাড়ানো হাত।কিন্তু সে মেয়ে তার চোখেনিজেকেই খুঁজতে থাকে।পায়নি খুঁজে — অনুভবী,আবেশী মনথমকে থাকে। সময়ও তো পাল্টে গেছেপ্রতিদিনের জীবন খাঁজে।শর্তবিহীন ভালোবাসা গুমড়ে মরে। ভালোবাসা,এতই কি আর সস্তা না’কি? ভালোবাসা অনেক দামী।তাইতো সে […]

কবিতা- উদ্বাস্তু

।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।    উদ্বাস্তু-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     পিছে পড়ে থাকে সাতপুরুষের ভিটে।পিছে পড়ে থাকে ঘর, ভাতের হাঁড়ি,সংসার টুকিটাকি।আর পড়ে থাকে স্মৃতি হাহাকার।নাড়ি ছেড়া ব্যথা।জীবনের টানে পার হয়ে চলে যায়মানচিত্রের সীমানা। ওরা উদ্বাস্তু। অনেক জখমী মন নিয়েফিরেফিরে দেখে,ফেলে আসা ভাঙা ঘরখানি।ডাঙায় যে বাঘ, জলেও কুমীর।কোথায় যে বাসা বাঁধবে আবার!কেউ যে চায়না নিতে […]

কবিতা- চিনে নিতে

।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ।।   চিনে নিতে-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     চারপাশে এত মানুষকিন্তু কেউ মানুষ নয়,সবাই মানুষের মত সেজে রয়েছে!মাঝে মাঝে এমনও তো মনে হয় নিশ্চয়-চারপাশে এত বন্ধু,তাও কিন্তু কেউ বন্ধু নয়।শুধু বন্ধুর মত দেখতে লাগে তাদের! এমনো তো হয়,সত্যিকারের যারা বন্ধু,তাদেরই চিনতে পারেনা মন।হয়তো তাদের কাছেকখনো পৌঁছনোই হয়না।অথবা সত্যিকারের মানুষেরসামনে দাঁড়িয়ে […]

গল্প- নতুন সুখের দিন

নতুন সুখের দিন-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     নন্দিতার আজ খুব কষ্ট হচ্ছে। মনখারাপ লাগছে। খুব কান্না পাচ্ছে। মাঝে মাঝেই এরকম হয়। আবার এক সপ্তাহ বাদে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়… মনখারাপিটা খানিক কেটে যায়। তখন সবই ভালো লাগে। আসলে এই একলাজীবনে মনের কষ্টের কথা কাকেই’বা বলবেন? কেই’বা শুনবে? শরীরটাও আজকাল বেঁকে বসেছে। নানা ব্যথা কাবু করে […]

অণুগল্প- জীবনের রঙ

জীবনের রঙ– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     এখনতো অখন্ড অবসর বিশ্বনাথবাবুর। রিটায়ার করেছেন বারো বছর হয়ে গেলো … বউ মিনতিও চলে গেছে পরপারে…তিন ‘বছর হয়ে গেলো। এখন তিনি বড় একা। মিনতি থাকতে তিনি বোঝেননি যে শান্তশিষ্ট পত্নী তার জীবনের কতটা জুড়ে ছিলেন। মিনতি কতটা মায়ার বন্ধনে তাকে বেঁধে রেখেছিলেন।বিশ্বনাথবাবুর দুই ছেলে, এক মেয়ে। সবাইকেই লেখাপড়া শিখিয়েছেন…বিয়ে […]

অণু কবিতা- মান-অভিমান

মান-অভিমান-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     তুমি মুখ ফেরালেইঅভিমানী মন।ফিরে দেখবারকী’বা প্রয়োজন? মন কান্নায় ভিজুক,হোক কিছু জল অপচয়।জীবনে জীবন জড়ালে,এমনই তো হয়!! কিছু কালো মেঘছড়িয়ে পড়বে জানি।কিছু ঝরাফুল,খালি ফুলদানি। তবু কিছু মান-অভিমানকারণে অকারণেই।জানি মিঠে রোদ্দুর এনে দিতেলাগে সেই তোমাকেই।।

অণু কবিতা- আঙুল তুললে

আঙুল তুললে-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     আঙুল তুললে-আউট হয়ে,প্যাভিলিয়নে ফিরতে হবে। আঙুল তুললে –সাজানো ঘর,তাসের ঘরের মত ভাঙবে। আঙুল তুললে –জানি তুমি টলবে তখন,ওই আসনে। আঙুল তুললে –জানি তুমি পাঠিয়ে দেবে,নির্বাসনে। আঙুল তুললে –রক্তচক্ষু… বলবে তখনমিথ্যেবাদী। আঙুল না তুলেই –তাই রইলাম সবনির্বিবাদী।