• কবিতা

    জীবন যাপণ

    জীবন যাপণ
    -রাণা চ্যাটার্জী

     

     

    আড়াইশো গ্রাম ভালোবাসা,পাঁচশো স্নেহ,
    আর তিনশো বিশ্বাস কিনে সবগুলো মিশিয়ে,রোজ সকালে এক চামচ সেবন ।
    নইলে , টিকে থাকা বড়ো দায় এই কাঁচ ঘেরা রুদ্ধ
    দ্বার পৃথিবীর বৃত্তীয় ময়দানে !
    মনের মধ্যে কার্বন মনোক্সাইড প্রলেপ আঁচড়,
    স্বার্থপরতার পোস্টারে ছয়লাপ বাতিস্তম্ভ।
    আধুনিক শিক্ষায় উন্নত নাগরিক মন, তবুও কেবল নিজের জন্য ভাবনার গভীরে ডুব সাঁতার!
    একাকী রাত ডিগবাজি খায় গ্যাজেট ল্যাপিতে।
    রাস্তায় অসহায় মানুষের পাশ দিয়ে নাকে রুমাল চাপা অতিক্রম, বড়ো গা সওয়া এ শহরের ।
    কিডনি চক্রের ছায়া মানবের ফুটপাথ দাপাদাপি,
    তবু খাসা বাঁচা মুখোশ দুনিয়ায় কাঠপুতুল হয়ে ।

  • কবিতা

    অবগাহন

    অবগাহন
    -রাণা চ্যাটার্জী

     

     

    জ্যোৎস্না দেখে আমার এ-মন প্রেম যমুনায় ভাসে
    অলক্ষ্যেতে, প্রেম-দেবতা তাই না দেখে হাসে।
    চাঁদের আছে কলঙ্ক জানি ,জ্যোৎস্নার মুক্ত হাসি,
    অন্তরাত্মা হে প্রেম দেবতা,তোমায় ভালোবাসি ।

     

    তোমার প্রেমে কৃষ্ণ চূড়া ,মাতাল প্রেমের বাঁশি,
    উথাল পাথাল তোমার ছোঁয়ায়,হয় মন উদাসী।
    হৃদয় তুফান , জোয়ার ভাঁটা হটাৎ আসে প্লাবন,
    উদাস চোখে মেঘ বালিকা আছে এখন কেমন?

     

    মেঘ বালিকা জ্যোৎস্না রূপে সঙ্গী হলো চাঁদের
    ওই শোনা যায় কৃষ্ণ বাঁশি , প্রেম বিরহ ফাঁদের ।
    স্বপ্ন প্রেমিক,দৃপ্ত পুরুষ চাঁদ,ভুবন ভোলানো হাসি,
    ও চাঁদ চলো মায়াবী আকাশে,সাঁতার কেটে আসি।

  • কবিতা

    অবৈধ তকমা

    অবৈধ তকমা
    -রাণা চ্যাটার্জী

     

     

    কথায় কথায় আপ্লুত হই , লিখে ফেলি অস্যাম ,
    আজ ঐ অশান্তির শিখা,প্রতিবেশী প্রিয় আসাম!
    লক্ষ মানুষ দিকভ্রষ্ট দেখি,একি পরিনতি শিয়রে!
    ছুটেছে ঘুম,মনের শান্তি, দুশ্চিন্তার প্রতি প্রহরে ।
    বৈধ অবৈধের যাঁতাকলে ছুঁয়েছে সংখ্যা লাখে ,
    অশান্তির বাড়ছে পারদ, কৈফিয়ত দেবে কাকে ?

     

    দিন ভোর শুধু বাক্যবাণ,উত্তপ্ত দুই সংসদ কক্ষ,
    উদ্বাস্তু তা বলে এত্তো! সংখ্যা ছাড়িয়েছে লক্ষ !
    চাপান উতোর কি হয় এদের, সে সব প্রশ্ন পরে,
    কে নেবে এর দায়ভার,গৃহ-যুদ্ধ হলে ঘরে ঘরে?
    ভোটার,রেশন এদের মুঠোয়,ভোটের রাজনীতি,
    এতোগুলো মানুষ ক্ষেপলে কি বাড়বে সম্প্রীতি !

     

    বীর সেনা দল,নজরদারি সবই ছিলো সীমান্তে,
    কোন পথে অনুপ্রবেশ, এতদিন চুপ নিশ্চিন্তে!
    বছর বছর ব্রম্মপুত্র নদে, বন্যা হওয়াই রীতি ,
    কোন অছিলায় উদ্বাস্তু এরা, মনের কোণে ভীতি!

     

    অনেক প্রশ্নে বুদবুদ ওঠে, কৌতূহলীর ভিড় ,
    এন.আর.সি-র খসড়া হ ঠাৎই করে যে অস্থির !
    এমনিতেই জর্জরিত খুব,উত্তর পূর্বের রাজ্য ,
    দাঙ্গা উস্কানি থামুক , বন্ধ হোক এ নৈরাজ্য ।

  • কবিতা

    এক ফালি চাঁদ

    এক ফালি চাঁদ
    -রানা চ্যাটার্জী

    পোড়া রুটি এক ফালি চাঁদ ওই আকাশে,
    ওরে ছেলে খাস নি কো, মুখ বড়ো ফ্যাকাসে!
    পিঠে দেখি বোঝা ভারী , কাগজের বস্তা ,
    হাড়ে হাড়ে বুঝেছিস জীবন নয় সস্তা !

     

    চাঁদ দেখে বড়ো হওয়া, ছোটো বড়ো সকলে,
    চাঁদ মামা দেয় হামা ,টিপ ও দেয় কপালে ।
    এক ফালি চাঁদ দেখে, শূন্যতা আসে ওই ,
    জোছনার আলোতে চল খেলি ওরে সই ।

     

    কবিদের মনে কতো , লেখা ভাসে শত শত ,
    চাঁদ পানা মুখ দেখে,  খুশি হওয়া অবিরত ।
    তবু দেখি খিদে পেলে,পোড়া রুটি চাঁদ টা ,
    জীবন টা ক্ষতে ভরে, খাবি খায় প্রাণ টা !

     

    চাঁদ দেখে আসে ঈদ,  পূর্ণিমা পূজাও,
    পঞ্জিকা চাঁদ দেখে , রমজান রোজাও I
    এই চাঁদ ভালোবাসি, তুমি,আমি,রোমিও,
    চাঁদ মামা রাত জাগে, ভালো করে ঘুমিও।

You cannot copy content of this page