-
কবিতা- “না-ছোড়”
“না-ছোড়”
-অমল দাস
ভর দুপুরে চালের ’পরে ঘুড়িটা লড়ছে, উড়ছে.. পুড়ছে…
মনের কিনার মিলছে না!
লাটাইটা হ্যাঁচকা টানে টানছে… ছুটছে… জোর কদমে লুটছে..
সংযোগ ছিঁড়বে তবু ছিঁড়ছে না!
জাহাজটা ডুবছে- চুবনি খাচ্ছে.. আজকে ডুবতে চাইছে না!
সমুদ্র গিলছে- চিবোচ্ছে- গিলছে… কিছুতেই গলার কাঁটা নামছে না!
আকাশটা কাঁদছে হোগলা পেতে, লাগছে- ভাঙছে করুণ সুরে
জলভরা মেঘ ভাসছে- হাসছে.. বহর ছোটায় বেজায় দূরে
উঠোনটায় গাছ নেই! তাই ফুল নেই, ফল নেই, পাতাও নেই..
দাওয়ায় নারী বসে। পুরুষ আসে? কে পুরুষ তার জানা নেই
অশ্বত্থ আকাশ চুমে- বাতাস ছুঁয়ে -একলা নদের নিমাই দাঁড়িয়ে
বসন্তের কোকিল গেছে উকিল পাড়ায় মামলা খাতায় হারিয়ে
ভাবছি শেষে হিসাব কষে স্মৃতির বিষে-
তোমায় তো আর পাচ্ছিনা
চাহিদার আঁতুড় ঘরে, ভীষণ জ্বরে, ঘুমের ঘরে-
স্বপ্নে তোমায় রাখছি না।
-
কবিতা- তপোক্লিষ্ট
তপোক্লিষ্ট
-অমল দাস
বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর বেদনার আর্দ্রতা নিয়ে
যে কাদামাটি পড়ে থাকে আমার সংকীর্ণ উঠানে;
তাতে বীজ পুঁতে দেখেছি -কোনও চারা জন্মায়নি।
পরিসরের বাইরে যে আগাছা-
বেখেয়ালেই জন্মে পৃথিবীকে চেয়ে দেখেছে,
সেই বেজন্মার দায় আমার নয়।
ঘড়ির কাঁটার অপসারণে সন্ধ্যা ঘনাবার মুহূর্ত দেখে
তুমি আঁধারের ভয়ে গাছের মগডালে উঠে আশ্রয় নিলে
অথচ তুষার আবৃত পাদদেশ জুড়ে আমি রাত্রিবাসের তাঁবু ফেলেছি।
শীতে কাবু পাহাড়ের মস্তক থেকে নিম্নগামী দেশ..
জলাশয়ে স্ফটিকের আঘাত দিয়েছি-
নিদ্রা ভাঙার জন্য।
সোনালী-রূপালী মাছ আয়নার মত সরল জলের বিশ্বাস ভেঙে
-নির্লজ্জের মতো প্রেমে মেতেছে।
যে বন্য আশ্রমে প্রশ্রয় নিয়েছি,
প্রভাকরের কৃপায় সকলেই তারা পর্ণমোচী।
শুধু জ্বালানী কাঠের মত শুকনো হচ্ছি,
এবং শুকনো…
-
কবিতা- তৃষ্ণা-আর্ত
তৃষ্ণা-আর্ত
-অমল দাস
বদ্ধ জলে পাট নিয়ানো কাটির মত ভাঙতে চাইনি
আজন্মকাল অঙ্গীকারের ঢালে প্রস্তরের গাঁথুনি দেওয়ার প্রচেষ্টা
বন-বিলাসী লাক্ষাগৃহে অগ্নি সংকীর্তন পূর্বেই
হিমবাহের সমূহ পতনে মৃগ-নাভি সহ সমস্ত পাড় ভেসে যায়-
জলধারার চারিত্রিক অবনমনের নেতিয়ে পড়া খেলায়।
এরপর লতা লাথানো জঙ্গলের নিদ্রা ভাঙা পথে-
আড়ষ্টতার -নূপুরের মত উপুড় হয়ে পদ-চুম্বনে,
হাঁটুর বাটি-দ্বয় ভিক্ষার কর্তালসম মাথা ঠুকে লুটিয়ে পড়ে পাতালে।
পলকের আবডালে আঁধার সাগরে রূপালী মায়ার তারা জ্বলে।
জগতের সমস্ত নিস্তব্ধতা সমস্বরে তীব্র ঘা মারে নিরীহ কানের পাতায়
অতএব আর কি?
শোষণের সুদীর্ঘ পথ উল্লাসে উদ্ভাসিত
-ফেনিয়ে ওঠে বিজয় চিত্তে।
উঠে দাঁড়াবার পক্ষাঘাতে শুষ্ক উপত্যকার সরসরানি পাতাদের এলোমেলো দৌড়
উপহাসের চরণধূলি উড়িয়ে দেয় শায়িত অবসন্ন আধামৃত দেহে!
বিপর্যস্ত পাশার চাঁদোয়ায় প্রবোধ ফেলে বিমর্ষে ছক কষি
নিস্তেজ পড়ে আছি ক্ষুদ্র নুড়ির মত, -কাদামাটি চরে।
অন্তরে… গেঁথে যাওয়ার ভয়।
পাশে একহাত লকলকে জিভ বার করে তৃষ্ণার্ত সারমেয়-
ফ্যালফ্যাল চেয়ে থাকে-
জীবনের নীল রঙ মুছে যাওয়া মেঘলা আকাশে।
-
কবিতা- আঁধার আলাপনে
আঁধার আলাপনে
-অমল দাস
সূর্যের রক্তিম আভার কাছে যারা ছুটে গেছে
উদীয়মান সকালের আলো ধরতে অতি উৎসাহে
তাদের পৃথিবীর বর্ণপরিচয় খোলার সময় হয়নি কখনো,
দেখেনি তারা নিশি আলনায় পাটেপাটে সাজানো আছে
নৈসর্গিক পৃথিবীর অবর্ণনীয় কৃষ্ণকায় রূপ।
কতদিন গ্রহের ছায়ায় মুছে গেছে রোদ!
কত মেঘের আড়ালে হারিয়েছে তারাদের স্রোত!
আঙিনার বৃদ্ধ-বাসে খোয়া গেছে কতশত মোমের হাসি,
রঞ্জিত মেরুর আলেয়াও ক্ষণিকের –উদ্বায়ী, উদাসী।
তবু তারা ছুটে যায় পরিযায়ী ডানার মতন …
কতবার ভেসে গেছে রামধনু রঙ বৃষ্টি-আলাপনে
ওই রঙে বহুবার আলপনা দিয়েছে গোধূলি গোপনে,
পৃথিবীর আঁধারেই জেগেছে জোনাকি -ফুলেদের ঘ্রাণ
আলোর উৎসমুখে ছাই হয়ে নিভে যায় আজও বহু প্রাণ
হয়নি দেখা উল্লাসে, দেখার নয়নে..
চেনা-অচেনা মন পোড়ার গন্ধ মেখে গায়ে
ওরা ছুটে যায় যেন কুণ্ডলিত ধোঁয়ার স্বরূপ।
-
কবিতা- পারিভাষিক
পারিভাষিক
-অমল দাস
ডাল-ফোঁড়নের দুপুর বেলায়
হেমন্তের একবাটি নির্ভেজাল রোদ্দুর আর-
মুঠো কতেক শস্যদানার ওজন ঘামে
ভক্তিগীতির এক ভক্ত বৃদ্ধ হেঁটে যায় আবছায়া দুরত্বে..
নিম্নচাপে আকাশ-শত্রু শোকে বিহ্বল হলেও
এখানে কাদামাটির প্যাঁচপ্যাঁচে রুক্ষ্ম পথ নেই।
যারা বহুকাল আগেই লক্ষ্মীছাড়া গৃহহারা
তাদের অনুসরণের ছাপ গিলে খেয়েছে পোড়ামুখো পিচ।
ইটে ইটে যত দেয়াল গড়ে উঠেছে খেয়াল মত
ততই আব্রু হারিয়ে ভেঙে পড়েছে পৃথিবী রূপ।
ভাঙেনি কিশোরীর আরশিটা
প্রতিবিম্বের অলোক সাজিয়ে খুশি কেনে সে।
ঝিলের বিক্ষুব্ধপাড়ে যে ছেলেটি বড়শী পাতে আশার আলোয়,
কতেক মাছ আলো ঢেলেছে দ্বিধাহীন মৃত্যু দিয়ে।
মৃত্যুর পরিভাষার দরকষাকষিতে বাজার যখন ঈর্ষাউষ্ণ
তখন সাঁঝের ময়লা-মেঘের ছিন্নভাগে-
একসিকি চাঁদ ভালোলাগে।
-
কবিতা- ভুলচুক
ভুলচুক
-অমল দাস
তুমি হেঁটে যাও হেঁটেই যাও
রাস্তা চেয়ে থাকে, চেয়েই থাকে
আমি দেখি -দেখে ফিরিয়ে নিই মুখ
তুমি কি আগের মতোই আছো?
তোমার চেহারায় চিড় ধরেছে? না তেমনই
যেমন আমি পেয়েছি ঠোঁট-গলা-বুক।
গন্ধ ভেসে আসে হাওয়ায়, ভেসেই যাক..
দ্বন্দ্ব’রা দ্বন্দ্বেই থাকুক -বন্ধের দ্বারে,
মৃত-ময়দানে রোদ খাক তোমাতে উৎসুক।
তুমি কি রোজ আসো? এখানে রোজ…
ভয় নেই পলাতক জঙ্গলে? জঙ্গলে হরিণী
যদিও খিদেয় নেই- সর্বস্ব গিলে ফেলা ভুখ।
তুমি আর চেয়ো-না ফিরে, ফিরেই যাও…
ধুলো উড়িয়ে যাও আঁচলে -ধুলোয় হারিয়ে
জানি তুমি আমাতে পাওনি কোনও সুখ!
তুমি কি এপাড়াতেই -এপাড়ারই কেউ?
আলতো পা ফেলো- বাজেনা নূপুর যেন
স্নানের রোজ রাতে মুছে দিও বিগত ভুলচুক।
-
কবিতা- আবাস
আবাস
-অমল দাস
ভালো লাগছেনা তাই রুগ্ন হয়েছিল পাতার শহর,
ভালো লাগছেনা হলুদের অবগুণ্ঠন ঘাসের উপর।
পাঁকে পাক খেয়ে শতদল মাথা তুলবে না আর,
ভালো লাগছেনা তাই নীল আকাশে মেঘের বাহার।
বসন্ত চিঠি নিয়ে উড়তে চাইছে না পাখিদের দল!
শিবিরের পথে নিবিড় রাত্রির মৃত কোলাহল,
পৃথিবীর আঁচলে আগুন -জ্বলছে তরু-লতা-ঘর;
ভাঙা পাড়ে কাঁদে -গর্ভে নদীটির অবৈধ চর।
ভালো না লাগার গোধূলি বেলা রোজ সূর্য ডোবায়,
অসুখে.. মন খারাপের সমুদ্র জল লবন হারায়।
দেখি, হাওয়াদের স্রোত বেড়ি পরে নেয় বদ্ধ খামে;
ভালোলাগা নেই, তাই করুণ শহরে আঁধার নামে।
কোনও ভাঙা দরজায় দারোয়ান নেই -রৌদ্র প্রখর,
নীল- বিষাদের বিষে কুয়াশার ঘ্রাণ মৌন-মুখর।
ফুল.. শিশিরের গ্রামে ঝরে-পড়ে-মরে দূর্বা-ঘাসে
ভালোলাগাহীন ধূসর শহর -ভগ্নদশার বৃদ্ধাবাসে।
-
কবিতা- অসম মৌতাত
অসম মৌতাত
-অমল দাস
আচ্ছা বলো, বলো তো তুমি কি পারো!
খাদ্য বণ্টনের পোকা ধরা চাল নিয়েছো কোনও দিন?
হ্যাঁ চুরি অবশ্য করেছো তুমি –চৌর্যবৃত্তে।
– খেয়েছো? খাওনি কোনও দিন।
এমনও হয়েছে কোনও দিন, হেসেছো আর হেসেছো
-মৃত সন্তান কোলে!
তবে সেই হাসিটাই একবার হেসে দেখাও,
-দেখি তোমার উজ্জ্বল দাঁতেরপাটি।
ওই যে বাঁদর ঝোলার আদর খেয়ে, ঘাম স্নানে-
নিত্য যাতায়াতের সিক্ত রক্তদেহের দল
-ছেড়ে যাওয়া শ্বাস কুড়িয়ে তোলে, লক্ষ মাথার ভিড়ে।
ওদের মত পায়ে লুটিয়ে তুলেছো বাঁচার আশ?
তোল নি তো.. তুলবেও না.. পারবেই না!
তুমি পেরেছ কেবল নগ্ন রাতের আঁচল খুলতে..
পেরেছ কেবল রুগ্ন-র শ্বাস ছিনিয়ে নিতে..
পেরেছ কেবল বিলাস তারার বিলগ্নীতে বিলিয়ে যেতে..
ঘাসের ওপর শুয়ে দেখ নি –কত জীবন্ত প্রাণ
রাতের আকাশ চেয়ে দেখ নি -কত আলোর কথা
মাটির ছোঁয়া নিয়ে দেখ নি -কত বিশুদ্ধ ঘ্রাণ
জলের তলে ডোবাওনি পা – কত স্নিগ্ধ পরশ
তুমি দুষ্টের দেহ ছিন্ন করো নি –সে সাহস তোমার কই!
তুমি দুঃস্থের দুখ দূর করো নি –সে অভিলাষই বা কই!
তুমি ছাত্রের বুকে এঁকেছ ক্ষত
তুমি, মেহনতি মাথা করেছো নত
তুমি সবান্ধবে লুটেছো যত – সে খতিয়ানই বা কই!
আজকে যদি হিসাব করি – নস্যাৎ তুমি করতে পারো
আমার চোখে চোখ রেখে দেখ যদি নির্লজ্জতা ঢাকতে পারো
পারবে না -আধা পেটে শোয়ার অভ্যেস তোমার নেই
অর্থ-রক্ত-মাংস ছাড়া অন্য কোনও খোয়াইসও যে নেই
পারবে না থাকতে শিশির ভেজা চালা ঘরে সারা রাত
দীনের দেশে দুর্গন্ধ – টাকার দহে মোহ-মৌতাত।
-
অণু গল্প- ক্ষত
ক্ষত
-অমল দাস
বিকালের আলো রক্তিম আভা নিয়ে আত্মিকার পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে আছে। যেন বিদায় কালের অনুমতি চাইছে। বসন্তের পাতা ঝরা-রা এলোমেলো ঝরে আছে আশেপাশে। কোকিলের যে কুহু শুনে একসময় মন হারিয়ে যেত; সে সুর আর আত্মিকার কানে ভাসে না। না-কি সেও কোনও বিরহে আর ডাকেনা! জানেনা। জানার আগ্রহ আর নেই নিস্তেজ শরীরে। অশোক গাছের নীচে এই বেদীটায় সে একাই বসে থাকে মন হারা হয়ে। ওর সাথে আজ আর কেউ নেই। কেউ আসেও না… কতগুলো উৎসুক মুখ প্রয়াশই আশেপাশে পেঁচার মত উড়তে থাকে রোজ -শিকারের আশায়। ডানা ঝাপটায় কিন্তু কাজ হয়না। আত্মিকার আত্মাকে তারা ধরতে পারেনা। যে প্রেম প্রস্তাবে ওরা বিদ্ধ করতে চায়, তা অনেক আগেই বুকে গেঁথে নিয়েছিল আত্মিকা। হর্ষের প্রস্তাবে। তারপর কত আনন্দ, কত সুখের দিন। এই আকাশ, বাতাস, ময়দানের সবুজ ঘাস নীরব সাক্ষী। সাক্ষী বিকেলের হাঁটতে আসা বয়স্কদের ভিড়। ওদের দিকে চেয়ে তাঁদের মৃদু-মৃদু হাসি ঠোঁট বেয়ে নেমে আসতো আশীর্বাদ নিয়ে। আজ আর আসে না। ওঁরা আসেন। সেই ঠোঁটে চেনা হাসি আসে না।
কোনো এক অভিশপ্ত দিনে সব হাসি মিশে গেছে মেঠো ধূলোয়। এই অশোক গাছটার নীচে এখানেই এক অন্ধকার বিকালে হঠাৎ কালো ঘন মেঘের বজ্রপাত ছিনিয়ে নিয়ে যায় হর্ষকে। মুষলধারার বৃষ্টি একাকী আত্মিকাকে সেদিন নির্মম ভাবে ভিজিয়েছিল আপাদমস্তক। অন্তরে বাহিরে আঘাতের শূল পুঁতেছিল উচ্ছৃঙ্খল হাওয়াদের চাবুকের ঘা। ফেরারি পথে বৃষ্টি ধুয়ে নিয়ে যায় সমস্ত অপরাধী দাগ।
পড়ে থকে নিথর হর্ষ আত্মিকার কোলে।
আজ কতগুলো দিন চলে গেছে। কত স্রোত বয়ে গেছে গঙ্গার জলে। আত্মিকার বিবর্ণ জীবনে রঙ লাগেনি আর বসন্ত-পলাশের। শুধু অন্ধকারে আসা আর যাওয়া স্মৃতির মেরু প্রদেশে।
যে বাদামওয়ালা রোজ ওদের কাছে এসে আবদার করতো ‘ও দিদি বাদাম নেবে? নাও-না।’
আত্মিকা একটা-ই চাইলে সে বলতো ‘তোমরা দুজনে একটা কি খাবে গো দিদি দুটোই নাও।’
আত্মিকা বলতো ‘দুটো নয় একটাই। কারণ আমরা দুজন নই আমরা এক’।
সেই বাদামওয়ালা আজ আর বাদাম নিয়ে হাঁকে না। মাথা নিচু করে হেঁটে যায় আত্মিকার পাশ দিয়ে। সেও জানে সে দিনের সেই ‘এক’ আজ ক্ষত। পশ্চিমে ঢুলে পড়া আলো এই ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে যায় শেষ বিকালে। আত্মিকার আঁচল ভরে ফেলে যায় এক পৃথিবী ধূসর গোধূলি।
-
কবিতা- প্রতিপাদ্য
প্রতিপাদ্য
-অমল দাস
সিঁদুরে মেঘের নোঙরখানায় ঠাঁই খুঁজতে গিয়ে
বাঁধন ছেঁড়া নৌকা পৃথিবীর আঁধারে লুটিয়ে পড়ে,
মেরুবৃত্তীয় আবহাওয়ায় আলোর মৌন মিছিল হলেও
তুহিনাখ্যান, মলাটে মুড়ে রাখে ডুবিয়ে দেওয়ার ভয়।
মৃদু বাতাসী আস্ফালনে শিখা নিভে যাওয়ার পর
পোড়া সলতে অভিমানে দেহ রাখে অবশিষ্ট তেলে।
অবশিষ্ট দেহে সম্ভ্রমের আগাছা জন্মায়নি সহজে
ছন্নছাড়া তানপুরার স্থান বহু-পদের চৌকাঠে।
চৌকাঠের বাহিরপাশে উলঙ্গ প্রকৃতির উন্মুক্ত হাসি,
ভিতরপাশে অন্তঃ কলহের জরাজীর্ণ ব্যাধির স্তূপ।
আশিয়ানার আসমানে ব্যথিত মেঘের সমাহারে
বৃষ্টি- জীবনমাঠে নিবিড়ে হিমেল চাদর বিছায়।
ল্যাবরেটরিতে বৃষ্টি আর অশ্রুর গুণগতমান এক নয়
তবে জলের অণুর অণুঘটকের ফারাক নেই।
দাড়ি আর শাড়ির শরীর একই দড়িতে বাঁধা
তবু লিঙ্গ.. অজ্ঞানতার অহং মেখে শৃঙ্গ বসে।