• কবিতা

    ভোরের পাখি

    ভোরের পাখি

    -তোফায়েল আহমেদ

    ভোরের পাখি তার সুরের কন্ঠে কহিছে ডাকি,
    ওরে মানব তোমরা আর প্রার্থনায় দিওনা ফাঁকি।
    আমরা হলাম দুনিয়াতে ক্ষুদ্রতম জীবনের পাখি,
    দিনভর কি কি কাজ করলাম হিসাবেতে রাখি।

    তোমরাতো শ্রেষ্ট সৃষ্টির সন্মান পেয়েছো ভব ডোরে,
    তবে কেন তোমরা সবাই ঘুমিয়ে থাক ভোরে।
    আমাদের সুরের কথা আর কি বলিব ওরে বন্ধু,
    আগের মত মধুর সুর আর কন্ঠে নেই মোদের বিন্দু।

    মানুষ এখন আমাদের ধরে ধরে মজা করে খায়,
    সুরে যদি চিনে ফেলে মোদের রাতে ধরবে গায়।
    তাইতো মোরা আস্তে ডাকি জিকির তাতে হয়,
    মানুষের ঘুম ভাঙ্গতে পারলেই আমাদের জয়।

    গাছে গাছে থাকি বলে অবহেলা করনা মোদের,
    বাঁচানোর মালিক আছেতো স্রষ্টা এক কাদের।
    কিচির মিচির করে কত জ্বালাতন করি মোরা,
    ক্ষমা চোখে দেখিও এসব, নইতো বিবেক হারা।

    রাতগুলো কাটাই মোদের বসে বসে গাছের ডালে,
    পা দুটি পুড়ে যায় দিনের তপ্ত রৌদ্রে বসিলে চালে।
    খাবার খেতে উড়াল পাড়ি প্রভাতের নরম আলেআয়,
    রিজিকের মালিক আল্লাহ, তিনিই মোদের খাওয়ায়।

  • কবিতা

    ভাঙ্গা গড়ার খেলা

    ভাঙ্গা গড়ার খেলা
    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    আঁখির স্বভাব নেশায় আঁখি নাচিলে
    উঠে, অনুভূতির ঢেউ,
    মন মিয়ার কত দৌড়া-দৌড়ি চলে
    দেখেনাতো কেউ।

    আঁখি তার আহার ধরে, মনে জমায়
    মন তাহা যাচায়,
    মনের গোপন কথা আঁখিতে সুধায়
    আঁখি বলে তার ভাষায়।

    মন কি বলে আহার খেয়ে অপেক্ষায়
    থাকে ক্ষণে ক্ষণে আঁখি,
    পলকে পলকে তাজা খবর পৌঁছায়
    মনের ঘরে,রাখেনা কিছু বাকী।

    মন সময় নিয়ে আঁখির আবেদনগুলো
    পরীক্ষা নিরীক্ষা করে,
    মনের সাথে কল্পনাকে মিতালী বানায়
    যাচাই বাছাইয়ের ঘরে।

    আঁখির কথায় মনের সায় থাকিলেই
    আঁখির রশিতে বাঁধে,
    মন মিয়া রাজী খুশি না থাকিলে তখন
    আঁখি জলে রোদে।

    ভালোবাসা করা এত সহজ জিনিস নয়
    বোধে যাচাইয়ে বাছাই করা হয়,
    আঁখির সাথে মনের সাক্ষাত সম হলে
    মোহনায় গিয়ে মিলনের কথা কয়।

    আঁখি মনের ইশারায় কন্ঠ তার বহু সুরের
    মিলনে, উচ্চারিত হয়,
    অপর আঁখি মনের মিলন সমতালে হলেই
    ভালোবাসার আসে জয়।

    জয়ের পরে ক্ষয় থাকে, সুখের পরে দুঃখ
    স্মৃতির ভেতর জল্পিত চলন,
    জীবন এমনই ভালোবাসা বরণ করে পরে
    সঙ্গতে হারায়,বিষাদে স্মরণ।

    আঁখি মন জীবনের হলো এক অমূল্যধন
    সাথে বোধ বিচার,
    ক্ষুধার রাজ্যে ক্ষণিকের অবাক বসবাস
    করুণা করে আহার।

    যতই করুক যাচাই-বাছাই, ভালোবাসার

    চরিত্রই এমন,
    ভাঙ্গা গড়ার খেলা খেলতে খেলতে একদিন
    নিজেরই হয় মরণ।

  • কবিতা

    স্মৃতি

    স্মৃতি

    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    স্মৃতি প্রীতিতে অম্লান থাকে মরমিয়ার স্বাদে,
    চেতনায় তার স্পর্শকাতরতা জীবনের বিষাদে।

    মনের আয়নাতে ছায়াছবি দৃষ্টির বায়না ধরে,
    হৃদয় শহরে আলো জ্বালায় জল্পনায় করে।

    চিত্তের বাসনায় ভাসমান সদা জাগরনী,
    নিঃশ্বাসের পরতের ঘ্রাণ স্নিগ্ধ ফুলদানি।

    অনুভূতির পরশে চলমান মরিচিকার আশ্বাস,
    নিশির নির্ঘুমে জাগ্রত নেশা স্মরণের বিলাস।

    শিহরণ জাগাতে স্মৃতিরা স্বপ্ন দেখায়,
    মোহনায় ঝড় উঠিয়ে তারা গোপনে পালায়।

    স্মৃতির প্রীতির কল্পনারা ভাবনার তীর ভাঙ্গে,
    নিভৃত গর্জনের ঢেউ হয়ে আজীবন চলে গাঙ্গে।

  • কবিতা

    মনে পড়ে

    মনে পড়ে

    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    মনে পড়ে তোমায়, কাশবনের শিরশির আলতো নরম ছোঁয়ায়,
    ভ্রমর যখন কলির আঁচলে বসে মধু আলাপ করে পূরনের কত ইচ্ছায়।

    মনে পড়ে তোমায় সবুজের উপর বাতাসের ঢেউ দেখে গতিময় স্বাধীনতায়,
    সোনালী ফসল রঙ্গীলা হাসিতে কতদোল খায় হেলে দুলে নিজ কৃত্তিমতায়।

    মনে পড়ে তোমাকে গোলাপের বাগানে গেলে,ছোয়াহীন ফুলটি তুলে খোপায় দিতাম,
    জোয়ার ভাটার তীর অববাহিকায় সবুজে বসে বাদামী আড্ডায় মেতে উঠা সুখ নিতাম।

    মনে পড়ে তোমাকে পলাতকী মনে ফাঁকি দিয়ে আমায় পশম বুকে জড়িয়ে ধরতে,
    তখন তনুর ঘ্রানে ভেজা চুলের আলগা স্নিগ্ধে অসম্ভব ভাবে চেতনায় লুকাতে।

    বহু বছরের কালাতিপাতে ভুলিনি তোমায় আজো, তাই মনে পড়ে স্মৃতির কোলে,
    তুমি বাস্তবে নেই, হৃদয়ের স্পর্শে খুব বেশী মনে পড়ে, দৃষ্টিতে বৃষ্টির জলে।

  • কবিতা

    পাখির কৃতজ্ঞতা

    পাখির কৃতজ্ঞতা

    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    পাখিদের কন্ঠে- কন্ঠে কৃতজ্ঞতা ভোরের সুরে,
    ঘর নাই, বাড়ি নাই, তারা থাকে ডালের পরে।
    জীবন দিয়েছেন পৃথিবীতে তাদের এক বিধাতা,
    তাই তাহারই প্রতি পাখিদের সুরের কৃতজ্ঞতা।

    নিজের আহার নিজেরাই করে অনেক বিলে,
    খাদ্যের সন্ধানে উড়ি ঘুড়ে বসে পাশের ঝিলে।
    দুটি ডানা দিয়েছেন তাদের ভবের পথ চলায়,
    পা দিয়েছেন হাঁটতে অবাক দুনিয়ার শালায়।

    মানুষ কষ্ট করে জমিতে কত ফসল ফলায়,
    কেটে আনে বাড়িতে সে ফসল ভরে গোলায়।
    বিলে এখানে সেখানে পড়ে থাকা কিছু খাবার,
    টুকিয়ে টুকিয়ে হেঁটে -হেঁটে করে তাহা আহার।

    বাবা- মা কত বন্ধু- বান্ধব সবই তাদের আছে,
    ঠিকানা পাখিদের বেশি হল বিভিন্ন বনের গাছে।
    প্রেম -ভালোবাসায় তারা ওএখানে সংসার করে,
    জন্ম দাতা বাবা- মা,রা খোঁজে -নিখোজে মরে।

    শিশুকালে মা -বাবারাই নরম খাবার খাওয়ান,
    মুখে খাবার দিয়ে আবার তারা বিলে চলে যান।
    নিজেরা না খেয়ে তারা সন্তানদেরকে খাওয়ান,
    যুবক বয়স হলে পাখিরা সবাই সবাইকে হারাণ।

    যার, যার, সংসার তারা তখন আলাদা করেন,
    নির্বোধ মানুষ আঘাত করে কেহ তাদের ধরেন।
    কেহ -বা শিকার করে খাঁচায় বন্দি করেন,
    পাখির মধুর কন্ঠে তখন মানুষের কথা শুনেন।

    রোদ -বাদল, বৃষ্টি -ঝড়- তুফানে কত কষ্ট পান,
    রাতে না ঘুমিয়ে প্রতি প্রভাতে মানুষকে জাগান।
    উঠো মানুষ, ভোর হয়েছে, ঘুম থেকে উঠো!
    মসজিদের নামাজে গিয়ে এক আল্লাহকে ডাকো।

    কত পাখি ঘরের কোনে পাশের গাছে থাকে,
    তারা মানুষের উপকার করে বসে ক্ষুদ্র শাখে।
    পাখিদের কখনো আঘাত করা ও মারতে নেই,
    তাদের দেখলে মায়া করে ছিটিয়ে যেন খাদ্য দেই।

    মানুষ বড়, পাখি ছোট, তারাও ঐ কর্তার সৃষ্টি
    প্রাণী হিসাবে তাদের দিকে রাখি একটু দৃষ্টি।
    বেঁচে থাকার অধিকার তাদের ও রয়েছে ভবে
    পাখির মত বিধাতায় কৃতজ্ঞতা মানুষ জানাবে কবে!

  • কবিতা

    মৃত্যু

    মৃত্যু

    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    সৃষ্টি থেকে জীবন জন্ম নেয়, সদাই, করবে বলে
    অদৃশ্য নিঃশ্বাসের বিশ্বাস নেই, কখন যায় চলে।
    পৃথিবীতে জন্মটাই জীবনের হয়, মৃত্যুর জন্যে
    জগতে সে যাপন করে, রাজ্জাকের দেওয়া অন্নে।

    ঘুমের ঘরে নিঃশ্বাস টানে কে-রে! মায়ার জীবন
    নিশির কোলে ঘুমিয়ে গেলে জীবন, মৃত্যুর মতন।
    নিশি কেটে যায় আবার প্রভাত আসে ঘুম ভাঙ্গে
    যদি এই নিশি না কাটে, থাকে দেহ প্রাণহীন অঙ্গে।

    শ্রেষ্ঠ সুন্দর এই মাটির ঘরে বসবাস করে জীবন
    কত রঙের ক্ষণিক পুতুল খেলার রসায়নের ভুবন।
    জীবনের আপন খেলা শেষ হলে, মেলা যায় ভেঙ্গে
    গঠিত মাটিতেই চলে যায় সে, নিথর প্রাণহীন অঙ্গে।

    জীবনের বিদায়ের সময় হলে, মৃত্যুকে ভয়ে দেখে
    আরো বাঁচিতে জীবন পলায়ন করে, দেহের শাঁখে।
    এই মৃত্যুর স্বাদ সব প্রাণই জীবনের অবসানে পায়
    বলিতে পারেনা কোন কথা সে, মৃত্যু ধরে নিয়ে যায়।

    হুকুম পেলেই মৃত্যু দূত এসে নিয়ে যায় মায়ার প্রাণ
    এই সুন্দর পৃথিবীতে থেমে যায় জীবনের জয়গান।
    জীবন নিতে সঠিক সময় মতই সে এখানে আসে
    মৃত্যু তারিখ ক্ষণ জানা থাকেনা কোন সৃষ্টির কাছে।

    বাহাদুর জীবনকে মৃত্যুর কাছে হতে হয় পরাজয়
    যে জীবন এতদিন দুনিয়ায় চেয়েছে তার শুধু জয়।
    এই সত্য মৃত্যুকে ভূলে জীবন থাকে ভব মায়া চাষে
    ভালো কর্ম থাকলে তার এই মৃত্যুতে ও জীবন হাসে।

  • কবিতা

    আঁখি

    আঁখি
    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    আঁখির দৃষ্টি,তুমি শব্দের প্রিয়কে প্রথম যেদিন
    নিষ্পলকে দেখে দলে দলে,
    তার ভালোলাগার কথা আঁখি শুধু কন্ঠ বেয়ে
    গোপনে অন্তরকেই বলে।

    দৃষ্টির নির্যাসে ধরে ভালোলাগাটা বহন করে
    অন্তরের মূলে নেয়,
    অার সূক্ষ্ম অন্তর আঁখির কথায় বিশ্বাস করে
    তখনই সহমতে রায় দেয়।

    সেই থেকে শুরু হয় সুখের উৎসাহ উদ্দীপনা
    প্রেরণার ফুটন্ত চলন,
    ভালোলাগার ভেতর থেকে উদিত হয় সহসাই
    ভালোবাসার অনিন্দ মুখরিত বলন।

    আঁখির কারণেই অনুভব- অনুভূতিরা জাগে
    মনের পাগলামী হৃদয় আঁকে,
    ধূর্ত মন চঞ্চলে চলে, দৃষ্টিকেই মিতালী বানায়
    আলো আঁধারীর সংশয়ী ফাঁকে।

    আঁখির নাগালে আঁখি পড়িলে পলকে নাচে
    হৈ চৈ পড়ে তরুণ তরুণী পারায়,
    স্নিগ্ধ আবেশে কাছে ডাকে, ঐ আঁখি নেশার
    ছোবলে,তীক্ষ্মতাকে সুধায় ধারায়।

    আঁখি মনের কথা বলে,ভালোবাসার আঁখিরা
    সহসাই তাহা বুঝে,
    পৃথিবীটা যে আঁখিতে দেখে,সেই আঁখির কষ্ট
    হয় ভালোবাসাকে না দেখিলে রোজে।

    হৃদয়ের যত কথা, মনের কাঁধে চড়ে আঁখির
    দৃষ্টিপাতেই প্রকাশ পায়,
    একই হৃদয়ের ব্যথা, মনের ক্রন্দন, ভালোবাসা
    হারালে, আঁখিতেই দেখা যায়।

  • কবিতা

    ব্যথার দান

    ব্যথার দান
    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    আজীবন চিন্ চিন্ করে বুকের দুই ইঞ্চি নীচের
    গভীর শেখর অনুভবে,
    হারিয়ে যায়না সে, পরদেশীর বুকে সুখের উল্লাস
    করে, অতীত মানস প্রিয়া সগৌরবে।

    পুকুর ঘাটে দৃষ্টি পড়িলো পথ চলার এক বিকেলে
    দু’ নয়ন অতীতকে দেখছে,
    উত্তাল কোমরের ঢেউয়ের বাঁকে কলসী বসিয়ে সে
    ভেজা শাড়ির আঁচল ছেড়ে হাঁটছে।

    নির্ভুল অতীত স্মরণ করিয়ে দিলো তার ছায়াছবি
    কল্পনার স্বাধীন জগতে,
    অযথাই মনটাতে বেজে উঠলো অতীতের দৃশ্যপট
    চেতনার হৈ-চৈ পড়লো ধমনীতে।

    সেই প্রথম দৃষ্টিতে তুলে আনলো হৃদয় ঘরে তাহাকেই
    বাঁশির সুর মোহনায় বেজেছিলো,
    জীবন পেয়েছে তার আপন সোহাগ,পুলকিত হাসি
    সবুজ নব পত্র পল্লবে সেজেছিলো।

    সব ছিলো অভিনয়ের খেলা, লুকোচুরির আয়নাতে
    প্রাঞ্জল হৃদয় সারাংশ বিলিয়েছিলো,
    অতীতের শালায় আজো বন্দি জীবনের মূল স্পন্দন
    দৃষ্টির বাঁধনে অতীত স্মরণ অযথাই জাগিলো।

    অতীত অব্যয়,তাই জীবনে আসে মনের খোঁচানিতে
    ব্যথার মরমিয়ার সংহারে,
    পরাজিত সৈনিক আহত হয়ে ও খুশি থাকে দৃষ্টিতেই অতীতের অন্কুর উদিত উপহারে।

    ভালোবাসলে অবশেষে বিনিময়ে পায় ব্যথার মত দান
    যা ভালোবাসারা দিয়ে যান,
    সারাজীবন প্রাপ্ত ব্যথার যন্ত্রনায় ভোগে,অচিন রোগে
    বহে বেড়ায় জীবন তৃষিত থাকে প্রাণ।

    অতীত জীবনের অহংকার,বর্তমানে বাজে চমৎকার
    ভালোবাসার অভাবে,
    ভালোবাসার জীবন ভালোবাসাকেই হারিয়েই খোঁজে
    প্রকৃতির জীবনের স্বভাবে।

  • কবিতা

    সৃষ্টির গান

    সৃষ্টির গান
    -তোফায়েল আহমেদ

     

     

    অপ্রাপ্তির রোদন বেদন নিরবের মিলন চলমান
    ধরার জীবন ভাটায়,
    বিলাসী মানসের জীবন সদাই সুখী হতেই চায়
    যাপনের পাতায় পাতায়।

     

    চরণের চলনে, কথনের বলনে আপনকেই
    সদায় হিয়ার বাসনায় চায়,
    মূল আপন আসে ক্ষণিকের কোন লগ্ন স্রোতে
    অনুভব বপনের সুধায়।

     

    ভালোবাসা এসে সৃষ্টির শেখরে স্বাদ লাগিয়ে
    দূরে চলে যায়,
    সারাজীবন অনুভূতি দিয়ে সেই স্বাদ খোঁজে
    ভবের নৌকা বায়।

     

    নিভৃত ব্যথায় দৃষ্টির বৃষ্টিতে ভিজে যায় সৃষ্টির
    কত বুকের পাজর,
    কষ্ট পেতে পেতে জীবন শুদ্ধ,স্বচ্ছ, অনিন্দ হয়,
    অভিজ্ঞতার দোসর।

     

    আশা -নিরাশার দোলাছলে সব জীবনই চলে
    মনের আয়নায় ধরে বায়না,
    অপেক্ষা- আপেক্ষিক হয়ে গড়িয়ে পড়িলেই
    সংযম কারো সহেনা।

     

    শুকনো পাতারা ঝরে যায়, মৃদু পবনের টানে
    হয় অচেনায় একাকার,
    সুখ বলতে কিছু নাই, রয়েছে তার উপাদান
    যার নির্যাসে গড়ে বাসর।

     

    দুঃখ না থাকিলে আপন জীবন অচিন থাকে
    কোলাহলের বাজারে,
    চর্মের – কর্মে মায়ার টানে সুরের জীবন ঘুরছে
    ভবের এই অবাক সংসারে।

     

    জ্ঞানীরা মনুষ্যত্বে চিনে নেয় আলোর বাতিঘরকে
    কর্তায় হস্ত বাড়িয়ে,
    তাই শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিরা স্রষ্টায় নিবেদিত থাকে স্বার্থ-
    মোহ, লোভকে তাড়িয়ে।

     

    পৃথিবীটা সৃষ্টি হয়েছে অান্তরিক ভালোবাসার
    বাঁধনের উপরে,
    সময়ের স্রোতে কামনার গান গায় আজীবন
    ভবের ক্ষণিক বালুচরে।

  • কবিতা

    আসা যাওয়া

    আসা যাওয়া

    -তোফায়েল আহমেদ

    জোয়ার আসে নদীতে ভাটায় হারাতে
    ভাঙ্গন আসে কাদাতে,
    আশা আসে জীবনে ভবিষ্যৎ দেখাতে
    জন্ম আসে মরতে।

    কলি আসে গাছে অলির লাগিয়া
    আলিঙ্গনে ফুল ফুটাতে,
    ফুল আসে তার স্নিগ্ধ সুবাস ছড়িয়ে
    পদতলের প্রশ্চাত্যে।

    প্রেম আসে রসায়নের মহা আনন্দে
    মোহনায় মিলিত হতে,
    ভালোবাসা আসে সৃষ্টি ভালোবাসতে
    হৃদয়ের ক্ষুধা মিটাতে।

    তরুণ আসে যৌবনের গান গাইতে
    সামাজিক অরুণ ছড়াতে,
    বিবেক আসে শ্রেষ্ঠকে লালন করতে
    মনুষত্বের পথ দেখাতে।

    আলো আসে শুধু অন্ধকার তাড়াতে
    প্রভাত আসে কর্মেতে,
    অনুভূতি আসে তার অনুভব করাতে
    মন আসে মানস রাঙ্গাতে।

    চিত্ত আসে নিভৃত চেতনাকে ধারাতে
    দুঃখ আসে দীর্ঘশ্বাসে,
    সুখ আসে সৃষ্টির চাহিদাকে হাসাতে
    ঈমান আসে বিশ্বাসে।

    জীবন আসে কর্তার প্রার্থনা করিতে
    ক্ষুধা আসে খাদ্যে খেতে,
    স্বর্গ ও নরক তৈরী আছে রূপান্তরে
    মানুষের কর্মের আদতে।

You cannot copy content of this page