ভরসা রাখি– দীপ্তিমান ভাণ্ডারী আমার যত মন খারাপের বিকালগুলোসাজিয়ে রাখি একটা দুটো চিঠির ভাঁজে,সন্ধ্যে নামে ক্লান্ত দেহ বিবর্ণ মেঘ,ব্যস্ত থাকি ঘরের কোনে মিথ্যে কাজে। বাইরে তখন কোথাও তো নেই প্রাণের আবেশ,দখিন বায়ুর সঙ্গে তখন বিষাক্ত শ্বাস,কেমন যেন বসন্ত বায় বাহার ছাড়া,তোমার সাথে একলা হবার নেই অবকাশ। কেবল যেন মনের মাঝে দ্বিধা ও দ্বন্দ্ব,কেবল […]
কবিতা- গোধূলি মেঘ
গোধূলি মেঘ– দীপ্তিমান ভাণ্ডারী আমার একটা বিকেল ছিলহালকা রঙের,বিকেলের পিঠের ওপর হালকা চাদরঠিক পৌষের।পৌষের বাতাস ঘিরে গন্ধ ছিলপাকা আমন,বাতাসের গন্ধে ছিল কেমন যেনমন কেমন।মন কেমনের ওড়না খানা খয়েরী রঙেরবিষাদ সুর,পাশেই ছিলিস তবুও যেনঅনেক দূর।পুকুড় পাড়ের সূর্য তখন আবীর রঙেনেশা ছড়ায়,তোরই কাছে ছুট্টে যাবার ইচ্ছে তখনতাড়িয়ে বেড়ায়।কেমন যেন মোচর দিয়েউঠত বুক,বন্ধ চোখেও স্পষ্ট দেখিতোরই […]
কবিতা- স্বপ্নের অলিন্দ বেয়ে
স্বপ্নের অলিন্দ বেয়ে -দীপ্তিমান ভাণ্ডারী স্বপ্নের অলিন্দ বেয়ে নেমে আসে শুধু শুষ্ক বালুরাশি। এখানে থমকে দাঁড়িয়েছে ব্যস্ত জীবন। এখানে ম্লান মুখে ফিরে যায় ধ্রুবতারা। শুধু হাহাকার, শুধু কান্না ডেটলের, বরিকের,ভাঙা অ্যাম্পুলেরব তীব্র বিষ বাষ্পে অসহ্য লাগে এখনও। অন্ধকারকে মনে হয় বড় সুজন। গভীর রাতে লুকিয়ে চুম্বনের ইচ্ছা হলে জলছবি ভেসে ওঠে —- তোমার হাসিমুখ, বেঁচে […]
কবিতা- শীত যাপন
শীত যাপন-দীপ্তিমান ভাণ্ডারী কতদিন হয়ে গেলতোমার সাথে বিকেল দেখিনিসূর্যডোবা নদীর পাড়ে। চলো, আজ সন্ধ্যের কুয়াশা মাখিবড় রাস্তার মোড়ে – হ্যাঁ, দুজনেই।তারপর ভাগাভাগি করে নিইএকখন্ড চাদরের উষ্ণতা।তুমি আমার ঝাঁকরা চুলেবিলি কাটতে কাটতে বলবেপলাশের কথা, শিমূলের কথা,আর আমার শিরা রক্তেজেগে উঠবে ভালোবাসার দূরন্ত আগুন। চলো, আজ রাত্রির অন্ধকারেগুনগুন কবিতা শোনাই তোমাকে।সৃষ্টির উন্মাদনায় কেঁপে কেঁপে উঠুকতোমার […]
কবিতা- কিভাবে ফিরিয়ে দেবো আজ
কিভাবে ফিরিয়ে দেবো আজ – দীপ্তিমান ভাণ্ডারী শীত এলে বড় একাকীত্বতা পেয়ে বসে আমাকে। শেষ বিকালের একটা মন কেমন করা আলো সোনালী ধানের উপর বিছিয়ে দেয় তার আলতো পরশ। শিরশিরে হাওয়ায় ভেসে আসে ভাটিয়ালী সূর – কুয়াশায় মাখামাখি। মাঝি মল্লার নৌকার ঘর জলে ভেসে যায় সন্ধ্যা তারাটির দিকে, যেখানে বসে আছে তার সঙ্গীনী অপেক্ষার প্রহর […]
কবিতা- দেখে আসি একবার
দেখে আসি একবার-দীপ্তিমান ভাণ্ডারী হিংস্র নেকড়ের সংখ্যাবড় বেড়ে গেছে এখানে,লোভী হায়না আর ধূর্ত শিয়ালও তোকম যায়না খুব একটা! সকলেই সকলকে দেখে আড়চোখে।সকলেই কাঁচা মাংসের প্রত্যাশী।উদ্ধত দাঁত নখ থেকে মাঝে মাঝেইঠিকরে ওঠে চোখ ঝলসানো আলো।বাঁকা চাঁদ বাঁকা চোখেদেখে যায় সব নিশ্চুপে। তবুও এখোনো কোথাও দূরেমাদলের সূর জেগে ওঠেএই শাল মহুয়ার জঙ্গলে। কালো যুবকটি কি […]
কবিতা- আগামী
আগামী– দীপ্তিমান ভাণ্ডারী আমি অফুরান বিষ বাষ্পের মাঝেমেলে ধরেছি ডানা।পালকে পালকে আজ মৃত্যুর হাতছানি।যে হতে পারত আমার স্বপ্ন উড়ান,সেই স্বপ্নই আজ বড় কুহেলিকাময়। তবুও কোথাও এখনওস্মৃতির অতলে জোনাকীরা জাগে,জাগে প্রাণের অনুভূতি।জানিনা এই কি আমারনা দেখা পূর্ণিমা রাত?যেখানে চাঁদের রাতেমাদলের সূরে স্বপ্নেরা বাঁচে! আজ আমার নীল শরীরেকেবল গ্রন্থি বিহীন, ঠিকানা বিহীনকয়েকটি মায়াবী দুপুর ঘোরাফেরা […]
কবিতা- সুর
সুর– দীপ্তিমান ভাণ্ডারী মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়ছিন্ন একতারার করুণ সূরে।একটিও সূর আর বসানো যাচ্ছেনাঠিক ঠিক তাল -লয়-সূরের সহজ সূত্রে। যখন ঝরের রাত্রেদুহাত আড়াল রেখে বাঁচিয়ে দিয়েছিলমোমবাতির দরিদ্র শিখাটাকেদূরন্ত দামালের দল,তখনও ঠিকই ছিলঅবিকল একতারার সূর। কিন্তু সে ছিল অন্য প্রেক্ষিত;সে সূরের মূর্ছনা ছিলহৃদয়ের বড় কাছাকাছি;সে মৃদু আলোয় ছিলএকখন্ড বাঁচার রসদ। আজ নিয়নের তীব্র আলো।আলোর […]
অণু কবিতা- বোধ
বোধ– দীপ্তিমান ভাণ্ডারী গনগনে সূর্যের দুপুরেএকখন্ড অবসাদ ঢুকে পেরেমনের অলিন্দে।কেবলই ছায়ার সাথে নিষ্ফল বোঝাপড়া। মুঠো খুলে আজ উড়িয়ে দিতে হবেসেইসব স্নিগ্ধতা-শিশির কণা-ভালোবাসা;কিন্তু হায়, মুঠো খুলে দেখিপরে আছে ফাঁকা বিলকুল। ঠিক তখনই চোখের কোণায়দু-এক ফোঁটা চিকচিকে নোনা জল।একি তবেনিজের জন্য নিজের সহানুভূতি!
কবিতা- বর্ষার রূপ
বর্ষার রূপ-দীপ্তিমান ভাণ্ডারী জলের কথা আসলো যখন।আস্ত একটা নদী,ছলাৎ ছলাৎ জল থৈ থৈশব্দ নিরবধি। নদীর শব্দে, হাওয়ার শব্দেআসছে ছুটে মেঘ,মেঘের বুকে ঠিক তখনইবৃষ্টি ঝরার বেগ। আকাশ এখন গোধূলী মেঘবর্ষা রঙে ঢাকা,দূর দিগম্তে গ্রামের ছবিজল রঙেতেই আঁকা। নদীর পাশে সেই যে বাড়ীসুখের সুতোয় বোনা,সেটাই ছিল মেঘ বৃষ্টিরবর্ষা ঠিকানা। বর্ষা মেঘেরনকাজল চোখেনেশা লাগার সুর,বৃষ্টি কেবল ঝরার নেশায়আনন্দে […]