-
খেতে ভালো ফল
” খেতে ভালো ফল”
✍ রুনু ভট্টাচার্য
পুষ্টিগুনে ভরা ফল স্বর্গের আহার
পৃথিবীর বড় ফল কাঁঠাল এদেশে
জাতীয় ফলের মান পেয়েছে অক্লেশে
ফল বিচি খোসা ভূত ফেলা নয় তার।
ভিটামিন মিনারেল ফলে থাকে ঠাঁসা
কোন ফলে থাকে স্নেহ কোনটাতে আঁশ
কোনটায় পানি ভরা পেকে গেলে শাঁস
খাবার ফলের স্থিতি স্বাস্থ্য হয় খাসা।
ফল খেয়ে জল পান স্বাস্থ্য করে নাশ
ফল খেয়ে বল পায় রোগী বা সবলে
ধন্বন্তরি অনুপাম ভরা ফলে
স্বর্গ কি মর্তের শোভা যতো ফল গাছ।
পরিবেশ অক্সিজেন রকমারি কাজে
ফল গাছ তাই চাই আমাদের মাঝে। -
“আমার কৃষ্ণকলি”
“আমার কৃষ্ণকলি”
✍ রুনু ভট্টাচার্য
একশ’ বছর আগের সে দিন,ঘন মেঘে আকাশ ঢাকা
আলের ধারে দাঁড়িয়ে পেলে তোমার কৃষ্ণকলি।
হিংসে করি রবিঠাকুর, তোমায় আমি হিংসে করি
আমার ও তো ইচ্ছে করে,আলের ধারে দাঁড়িয়ে থাকি
কৃষ্ণকলির কানে কানে প্রানের কথা বলি।আমার তরী মাঝ দরিয়ায়, জল কেটে যায় ছলাৎ ছলাৎ
উথালপাথাল করলে ও তাই স্রোতের সাথে চলি।
মাথার উপর মেঘের মিনার, দূর সরে যায় নদীর কিনার
বইছে বেলা, মেঘের খেলা, আলপনা দেয় আকাশপথে
ঠোঁটের গোড়ায় হাজির আছে শতেক শেখা বুলি।ঢেউ ছিল আর কেউ ছিল না,তেপান্তরের মাঠ ছিল না
ভেবেছিলাম শান্ত নদী,আঁকবে পটে ক্লান্ত ছবি
ইচ্ছে নদীর ইচ্ছে হল, পথ হারাবে গহিন রাতে
নিই খুঁজে নিই নিজের মত অলস কানাগলি
ঢেউ জানে আর কেউ জানে না মনের অলিগলি।হঠাৎ দেখি মেঘের মাঝে,ঝিলিক দিয়ে আকাশ আলো
চিলতে মেঘের মাঝখানেতে আমার কৃষ্ণকলি
এই কলিটা ভাগ হবে না,বুকে আমার কুসুম। আদর
ভাগ হবে না তোমার সাথেও,আমার ভরা ঝুলি
আকাশ আমার ক্যানভাস আজ, হৃদয় আমার তুলি। -
স্মৃতিপট
স্মৃতিপট
-রুনু ভট্টাচার্য্য
শ্রী কেমন আছো তুমি?
জানতে চাইছি !
খুব অবাক হলে তাই না!
কি চাই, আবার তোমার কাছে !
সত্যি জানিনা তো..?
কিন্তু মনে হয় কিছু চাওয়ার আছে তোমার কাছে
যে পাওয়াতে আমার কলম আবার লিখবে স্বপ্নিল ভালোবাসা!
উপেক্ষা আর একাকীত্ব পাশাপাশি থাকবে কবিতার পাতায়।
স্মৃতিরা ফিরে পাবে আবার মনের ক্যানভাসে তোমার প্রতিচ্ছবি ।
রক্ত ঝরবে অপমান লাঞ্ছিত একটা হৃদয়ে সবার গোপনে
জানি আবার প্রতিটি রাত্রি হবে নিদ্রাহীন !.
আর আমি ?
এক সভ্যসমাজের বিকলাঙ্গ অস্তিত্বহীন বিবেক!
জানো এখন কষ্টরা আমাকে আর কষ্ট দেয় না
কিন্তু কষ্টের যে খুব কষ্ট হয় শ্রী !
আজকাল নিঃশ্বাসে পোড়া গন্ধ পাই
প্রেমিক আছে ,প্রেমিকা আছে!
কিন্তু ভালোবাসা …..? -
আমার লিখা তোমার দেওয়া নাম
“আমার লিখা তোমার দেওয়া নাম”
✍ রুনু ভট্টাচার্য
বহু প্রতীক্ষারত সেই আমি
অবশেষে নির্জন গভীরতায় হারিয়েছি নিজেকে,
ঐই শান্ত মুখের চাহনিতে,আর দেখেছি সাগর সমান
যেন স্বপ্নের সমষ্টি চেতনার ছবি
হয়ে আছে নিল জল
আর সবুজের দ্বীপ।ঘুম আর স্বপ্ননের মাঝ খানে
আমার হৃদয় আর আমার মাঝ খানে
তোমায় দেখার মুহূর্ত ছিল
শুধু ধংসের। শুধু নেশার।তাই মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়।
পায়ের তলায় হিমেল শীত
অনুভূত হয় হাতের চামরায় অজানা অসুখ।
জানি না কেন আমার ই এমন হয়?জানি। এসবের তুমি নাম দেবে উন্মাদনা।
দিলে দেবে।
তবুও তো সেটা তোমার দেওয়া নাম।যা!এত সাধারণ একটা কথা দিয়ে কবিতা সুরু করা যায় বুঝি?
যায়! যাবে নাই বা কেন?
এই কবিতা তো সুধু তোমাকেই শোনাবার জন্য ।। -
মেঘা
মেঘা
-রুনু ভট্টাচার্য্য
মাঝে মাঝে যখন উদাসীন হয়ে পড়ি একজনের কথা খুব মনে পড়ে । জীবনটাকে নতুন করে চিনতে শিখেছিলাম তার কাছে । তার চিন্তাধারা খুবই অভিভূত করত । আমি খুবই উদ্বুদ্ধ হয়ে পড়তাম তার কথা শুনে । আজও তারকথা মনে পড়ছে খুব বেশী করে । মেয়েটির নাম মেঘা , শিলং এ পরিচয় তার সাথে । হাসি খুশি ছটফটে মেয়ে । ভারী ভালো লাগতো তাকে ।মনেহত সত্যি মেঘালয়েই মেঘাকে মানায় । আরও ভালো লাগত তার প্রেমিকদের কথা শুনে । তার প্রেমের কথা শুনে মন পুলকিত হয়ে উঠত । বর্তমানে মানুষের প্রতি মানুষের প্রেমটাকে তার কৃত্রিম বলে মনেহয় । এখানে মানুষ নিজের স্বার্থে মানুষকে কাজে লাগায় । সুন্দরভাবে একে অপরের সাথে প্রেমের অভিনয় করে যায় । মুখোশধারী মানুষ গুলোর স্বার্থ মিটে গেলে কেটে পড়ে অন্যকে পদ-দলিত করে । মানুষ আজ নিজেকে নিয়েই বড্ড বেশী ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । আত্মকেন্দ্রীক লোকগুলোর সংস্পর্শে থাকার চেয়ে একাকিত্ব কে বেছে নেওয়াই তার শ্রেয় বলে মনে হয়েছে ।
মেঘার প্রথম প্রেমিকের নাম হলো পাইন গাছ ।পাইনের প্রেমে কেউযে এতো পাগল হতে পারে ওকে না দেখলে আমার বিশ্বাসই হতো না , মনের সমস্ত কথাই উজার করে দেয় সে পাইনের সামনে । পাইনও বাধ্য প্রেমিকের মতো চুপচাপ শুনে যায় তার কথা । কোনো খারাপ উপদেশ পাইন কখনো দেয় না ।আমি এই প্রেম দেখে রোমাঞ্চিত হই । ওর দ্বিতীয় প্রেমিক হলো পাহাড় । পাইন ও পাহাড়ের জন্য ওর স্বপ্নের শহর হলো শিলং । ওর তৃতীয় প্রেমিক হলো সাগর । কত উদার এই সাগার মানুষের মধ্যে কোথায় এই উদারতা ।সংকীর্ণ ও পঙ্কিলতায় ভর্ত্তি । মেঘার খুব ইচ্ছে শেষ জীবনে পাহাড়ে গিয়ে বাস করার ।ওর আরও ইচ্ছে পাহাড়ের মতো নির্বাক হয়ে যেতে । বোবাের কোনো শত্রু নেয় তাই তারও কোনো শত্রু থাকবে না ।
-
প্রথম প্রত্যাখান
প্রথম প্রত্যাখান
–রুনু ভট্টচার্য্যকথা ছিল দেখা হবে চন্দনের বনে
আঁকড়ে ধরেছি তাকে বিকেলের ডাকে
কথা ছিল আর ও কথা হবে দেখা হলে
কত কথামালা হয়ে মুখ ঢাকে।দিনে ছিল স্বাধীনতা হারানোর খেলা
বিকেলে হল তা শুধু পরাধীন জ্বালা
কত কথা বলা রয়ে গেল কানে কানে
সব কথা ইতি হয় বিকেলের গানে।জলছবি আঁকা হলো সারাদিন ধরে
কত ফুল কত পাখি এলো ঘরে ফিরে
বিকেলের রঙ ধরা অবেলার ফাঁকে
দেখা আর হল না সে ভোরের আলোকে।ভাঙাচোরা রয়ে গেল পুতুলের খেলা
শেষ হাসি হেসে গেল কোন বাঁশিওয়ালা
কি যেন সে বলেছিল চোখে চোখ রেখে
কথা শুধু মালা হয়ে রয়ে গেছে বুকে।