মুক্ত গদ্য

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
-রাণা চ্যাটার্জী

 

 

এ এক দারুণ অ্যাডভেঞ্চার অথচ, তেমনভাবে দেখলে, অনেকে হয়তো ভাববে,” আমি মরছি নিজের জ্বালায়,মোবাইল থেকে কোন এক অসতর্ক মুহূর্তে উড়ে গেছে আমার যাবতীয় কন্টাক্ট নাম্বার ,আর উনি কিনা রোমাঞ্চিত হয়ে অ্যাডভেঞ্চার গল্প শোনাচ্ছেন”!

মাকড়শাকে ভীষণ সিম্বলিক মনে হয় আমার। কি সুন্দর নিশ্চিন্তে, একটা অদৃশ্য জাল বুনে, অবস্থান করে । কাছে গেলে বা আলো ফেললে,বোঝা যায় কি অসাধারণ দক্ষতা নিপুণতা এই জাল তৈরিতে।আমরাও এখন পরিচিত হয়ে গেছি এই বৃহৎ ওয়েবজালে, সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানুষ নয় এক একটা আইডি ,প্রোফাইল , ডিপিতে,কোড পরিচয়ে।

মেসেঞ্জারে কথা বলতে বলতে এই অদৃশ্য টানের আপন আত্মার আত্মীয় বন্ধুদের প্রায়শই বলি,”আচ্ছা যদি হঠাৎ করে মারা যাই, দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কিভাবে সবাই জানবে !স্ট্যাটাস আপডেট তো পাবে না “! সত্যিই এই ভাবনা আমায় ভাবায় !

এত্ত অপরিচিত মানুষ জন ইন্টারনেটের স্রোতে ভাসতে ভাসতে আজ কি সুন্দর মিশে গেছে। সামনে এসে পরিচিত হবার সুযোগ নাই বা হলো তবু যান্ত্রিক জীবনে অপরিচিত মানুষগুলোর সাথে মিশে,এক পারিবারিক বন্ধন। হঠাৎ মোবাইল বিগড়ে, মেমোরি ,হোয়াটসআপ কন্টাক্ট, মুছে গেলে নিজেকে বড় অসহায় লাগে ! মনের মধ্যে একটা ছবি ভাসে যেন এক নির্জন দ্বীপে একলা হয়ে গেছি আর জলে নুড়ি পাথর ছুঁড়ছি।
“কহ না প্যায়ার হ্যায়” সিনেমার ঋত্বিক,আমিশা হঠাৎ ঘুম ভেঙে,এমন নির্জন দ্বীপে এসে পড়ে ছিলো!ঋত্বিকের না হয় আমিশা ছিল। কন্টাক নম্বর হারিয়ে যে আমি ,তুমি হয়ে যাই বড় একা!

এই ভাবেই হঠাৎ করে মোবাইল বিট্রে করলে বড় জ্বালা ,মাকড়শার জাল ছিঁড়ে গেলে যেমন মাকড়শা ঘাবড়ে পরিত্রাণের কথা ভাবে,আমরাও আবার বোনা জালে নিজেকে প্রবেশ করিয়ে তবে নিশ্চিন্ত হই।

না জুটুক দুমুঠো ভাত,রুটি
কমতি পড়ুক চাল-আটা,
হে সৃষ্টিকর্তা ,বিধাতা দেখো
যেন পাই নিরবিচ্ছিন্ন”নেট ডাটা”

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page