দুই বন্ধু
– দেসা মিশ্র
আজ আবার সূর্য ডুবে যাওয়ার পালা।
শহর বুক সাজবে আলোয় আলোয়।
যে গাছটি সব হারিয়েছে- ফুল ফল ও পাতা,
সে গাছটি কাঁদছে শুধু একা।
তার পাশেই সোনালী নামের নদী বাইশটি বছর ধরে বইছে একই ভাবে।
বন্ধু তারা সুখ ও দুঃখের।
মনের কথা বলে দু’জন দু’জনকে।
আকাশ পানে গাছটি চেয়ে থাকে।
অবাক হয়ে দেখে শহর টিকে,
সকল মানুষ কতই না সুখী- বলে তা নদীর কানে কানে।
নদী আপন মনে হাসে,
বলে- বন্ধু কষ্ট সবার মাঝে আছে।
রাতের চাদর কান্না দিয়ে ভেজা।
আলোর তলে রাত কি চাপা পড়ে?
তবে চাঁদের আলো মিথ্যা হয়ে যেত।
ওই যে দেখেছ চিতার মাঝে,
জ্বলছে মানুষ দেহ- কাল তো সে ভিড়ের মাঝেই ছিল,
আজ তার সঙ্গে নেই কেহ।
বৃক্ষ আপন শোক গেলো ভুলে,
কত কষ্টের গল্প শোনে সে – এ ভাবেই কেটে যায় দিন।
দুঃখে কষ্ট বইতে বইতে যখন – নদীর বক্ষ কালো হয়ে এলো,
বৃক্ষকে সে ডাক দিলো –
বন্ধু- ভালো লাগছে না কিছু,
জানো আমার এই বয়েই যাওয়া মিছু।
বৃক্ষ তখন বুঝিয়ে তাকে বলে- শক্তি সবাই তোমার কাছে পায়।
নিত্য শেখে এগিয়ে যাওয়া জীবন, -এখন যদি তুমি ভেঙে পরও –
সাধ্য আছে এগিয়ে যাওয়া কারো?
মাঝির জীবন জলের স্রোতে ভাসে,
নিত্য সবার আসা যাওয়ার পালা,
তুমি যদি এমন হেরে যাও – ভুল হয়ে যায় অনেক সুখের খেলা।
নদীর বুকে শক্তি প্রবল আসে, শুনে তার সুহৃদ বন্ধুর কথা।
পেরিয়ে যায় বহু বছর মাস–
বৃক্ষ ভোরে ফুটেছে ফুল,
সেজেছে ফল আর পাতা।