
কবিতা- নিজেকে ফাঁকি
নিজেকে ফাঁকি
– লোপামুদ্রা ব্যানার্জী
ও ভাই রিক্সাটা একটু থামাও
অমিতাভ নও!
কত বছর পর দেখা
একি, তুমি একা!
সহধর্মিণী কোথায়? ও বললো
ওই হোথায়।
বোঝা গেল না কোন দিকের করলো ইশারা।
অন্য কিছু শুধাবার আগেই
আমায় করলে জিজ্ঞাসা
আজ আমি কত খানি সুখী?
আসলে ও জানতো আমি দিয়েছি শুধু ফাঁকি
নিজেকে, নিজের ভালোলাগাকে
নিজের ভালোবাসাকে।
সবাইকে সুখী করবার ছিল অভিলাষ,
তাই না বোঝার ভান করে কাটিয়ে গেছি তারই পাশ।
তবু কী পেরেছি নিজের মনকে শক্ত রাখতে
মন চেয়েছে কতবার তাকে ভালোবাসি একথা বলতে।
তার দুই বাহুর মধ্যে ধরা দিতে চেয়েছি বারবার
তাকে নিয়ে কত রঙিন স্বপ্ন দেখেছি ঘর বাঁধবার।
আমার রঙিন স্বপ্নগুলো যখনি রূপ নিতে চেয়েছে বাস্তবের
তখনি নিজেকে বেঁধে ফেলেছি
নিয়মের জনজিরে।
আমার সমস্ত ইচ্ছা অনিচ্ছার মৃত্যু ঘটিয়ে ছিলাম নিজের অন্তরে।
বিয়ের কথা পাকা হলো
সানাইয়ের সুর বাজলো
আমাকে সবাই শুধালো , আমার মতামত
আসলে সবার শেষে ওদের চাই আমার সম্মতি
আমি জানতাম আমার সম্মতি অসম্মতি কোন কিছুতেই আটকাবে না বিয়ের গতি,
তাই আমি জানিয়েছিলাম নীরব সম্মতি।
নববধূ রূপে চলে গেলাম অন্য কারোর ঘরে
তবু অমিতাভের মুখ থাকে আমার সমস্ত মন জুড়ে।
তার হাসি, তার আদর খুঁজে বেরাই নতুন জনের মধ্যে।
কিন্তু এবার ও ভুল করি, অমিতাভের ছায়াকে খুঁজে মরি।
তাই এত গুলো বছর পরে, তাকে দেখে পুরাতন সমস্ত স্মৃতি জেগে ওঠে মন জুড়ে।
ও যখন শুধালো আমি কতখানি সুখী
এবার ও দিলেম নিজেকে ফাঁকি।
কৃত্রিম এক হাসি ঠোঁটের কোনে এনে
বললেম, আমি খুব সুখী।


5 Comments
Prantika Samanta
অসাধারণ লিখেছ গো। মন ছুঁয়ে গেল। কত মানুষ এই ভাবে নিজেকে ফাঁকি দেয়। মনের অতলে সত্যিটা রয়ে যায়, ঘা টা সতেজ হয়ে থেকে যায়।
Anonymous
অনেক অনেক ভালোবাসা বন্ধু
Anonymous
খুব ভালো লাগলো লেখাটা,,
Anonymous
এরকম ভালো লাগল পরশ,
জীবন করে তোলে সরস ।
Lopamudra Banerjee
অনেক অনেক ধন্যবাদ