• কবিতা

    বিজয়ের প্রেরণা

    বিজয়ের প্রেরণা

    -অনোজ ব্যানার্জী

     

     

    ‎অদেখা হৃদয়ের গহীন খনি হতে উৎসারিত হয় অমেয় আলোর জ্যোতিঃপুঞ্জ মাঝেমাঝে।
    ‎আসে নবনব শুভ প্রেরণার অমিয় দীপ্তি…।

    হতে হবেই বিজয়ী, জীবনের চলার পথেঘাটে পদেপদে, সামনে আসা সকল জীবন-যুদ্ধে।

    যেমন, ‎সর্বশক্তিমান দিবাকর দিয়ে যায় তার তেজস্বী আলো সেই অনাদিকাল হতে,

    আজো সর্বক্ষণ এই ধরণীবক্ষে।
    ‎ধনপতি যক্ষের অমূল্য বিপুল ধনরাশি আসে যখন হাতের মুঠোয়,

    আনন্দের সুন্দরী পরীরদল যেন আসে নেচেনেচে নয়নসম্মুখে।
    ‎বিজয়ের প্রেরণা, চেতনার আনাগোনা।
    ‎লড়াই চলছে…লড়াই চলবে।

    সমস্ত অশুভ শক্তিকে করতে হবেই বিনাশ।

    করতে হবে প্রতিষ্ঠা সত্যধর্মমানবতা।

    গভীর খাদের জলে খাচ্ছে হাবুডুবু আমাদের গণতন্ত্র, বিপন্ন আমাদের বাঁচার অধিকার।

    ওদের করতে হবেই উদ্ধার। সামনে কঠিন লড়াই।

    দিকদিগন্ত আলোকিত করে ঝলমল করছে বিজয়ের প্রেরণা…
    ভয়ের কালো কালিটাকে মুছে এসো, এসো সবাই এগিয়ে এসো,

    খাবিখাওয়া এই সমাজটাকে, খাবিখাওয়া এই দেশটাকে, বাঁচাই আমরা।
    ‎আজ আর কোন ক্ষমা নয়, কোন ভয় নয়,
    ‎ওইসব অত্যাচারী লোভী, শয়তান, নররাক্ষসদের,
    ‎ওদের করতে হবেই সমূলে বিনাশ,
    ‎চলবে তবেই ভালো মানুষদের শ্বাসপ্রশ্বাস।

  • কবিতা

    ‎বর্ণমালা, উড়বে আকাশে

    ‎বর্ণমালা, উড়বে আকাশে

    -অনোজ ব্যানার্জী

    বর্ণমালা উড়বে আকাশে একদিন। যাবে সে ভেসেভেসে,,দেশেবিদেশে।

    হেসেহেসে বলবে কিছু কথা।

    বলবে,,তোমার আমার মনের,অনুভবের,,,,উপলব্ধির,,চিন্তন, মনন, আনন্দ,দুঃখ,হাসিখুশী, উৎসব,বেদনার কথা। দুঃখ,বেদনা,অন্নাভাব,দারিদ্র,

    ব্যথার ধূসর যন্ত্রণাক্লিষ্ট- কালোরেখা পারবে কী মুছে দিতে সে?

    যাবে ভেঙেভেঙে প্রবল -গোঁড়াধর্মীয় দূরন্ত -বাধার আকাশছোঁয়া,

    -ভেদাভেদের কঠিন প্রাচীর।সেদিন আমাদের অগণিত আত্মার, সুখশান্তি, আনন্দ,,ভাবনার,, অনুরাগ, অনুভূতির সম্প্রীতির কংক্রিট

    সেতু হবেই মজবুত।

    এই অগণন সংসার,,এই সমগ্র পৃথিবীর সব মানুষজাতি,,আমাদের এক পরিবার।

    সেই অলৌকিক সাজসজ্জা , পরিবেশ,কোন বর্ণমালা পারবে কে এনে দিতে,,?

    আমাদের তৃষ্ণাতুর হাতে,হবে কী কখনো বাস্তব রূপায়ণ তার?

  • কবিতা

    বিপন্ন শৈশব

    বিপন্ন শৈশব
    -অনোজ ব্যানার্জী

     

     

    সংসারের বাগানে, অগণন ছোট্ট ছোট্ট ফুলের কুঁড়িগুলো,

    পারছেনা, পারছেনা পরিপূর্ণ ফুল হয়ে ফুটে উঠতে।

    ঝরে ঝরে….. যাচ্ছে পড়ে,
    অকালেই, খাচ্ছে গড়াগড়ি মাটিতে,,
    ওদের ছেঁটে ছেঁটে, হেঁটে হেঁটে, যাচ্ছে, মানুষ, গরু, ছাগল,
    কত, কত আশা-স্বপ্ন-কল্পনা ছিল, জীবনে ওদের।

    বিলাইবে সুগন্ধ ,স্যৌরভ, এই ধরনীতে।

    সংসারের বলবিয়ারিং অচল, যে সব শিশুদের…কারো মা নেই,,কারো বাবা নেই,
    শৈশবেই হারিয়েছে যেসব অভাগারা, তাদের মা-বাবাকে,,
    তাদের সংসারের সব খরচ,, চাল,ডাল,নুন,তেল,সবজি,হাট,বাজার, পোশাক-আশাক ওষুধপত্র…
    এসবের খরচের টাকাকড়ি,, আসবে কোথা থেকে??
    শৈশবের সব আনন্দ,খেলাধুলো, পড়াশুনো, আমোদ-আহ্লাদ,এইসব সুখ-শান্তি ভুলে ছোট ছোট শিশুরা …
    কত নাবালিকা,, অন্যের বাড়ি বাড়ি করে চলেছে,,ঝি-এর কাজ,,বাসন মাজছে,,,
    ‎কাপড় কাচছে,,ঘরদুয়ার দিচ্ছে ঝাঁট।
    ‎কত বাচ্চা ছেলে,,,
    কেউ চা-কফির দোকানে,কেউ হোটেল-মোটেল,রেষ্টুরেন্টে,,,অল্প বেতনে কাজ করেই চলেছে…………
    কি ওদের ভবিষ্যৎ জীবন?
    এই গহীন অন্ধকারের জীবনের পথ থেকে,,
    কে নিয়ে যাবে ওদের আলোঝলমল সুন্দর জীবনের প্রাঙ্গনে?
    এই বিপন্ন শৈশব থেকে,,কে নিয়ে যাবে ওদের,,
    ধন-ধান্য-সুখশান্তিপূর্ণ আনন্দঘন জীবনে??

  • কবিতা

    মানুষ মানুষের জন্য

    মানুষ মানুষের জন্য

    -অনোজ ব্যানার্জী

     

     

    লভেছি ধরণীকোলে,শ্রেষ্ঠ মানবজন্ম;;
    গতজন্মে সঞ্চিত, অফুরান কর্ম-পূণ্য।
    ধ্যানেজ্ঞানে রাখবো হৃদয়ে সর্বক্ষণ,
    মননে… চিন্তনে…মানুষ মানুষের জন্য।।।
    শিবজ্ঞানে করবো সদা জীবের সেবা,
    সংসারে জীবন হবে ধন্য,ধন্য ধন্য।
    দাঁড়াবো গরীব, দুঃখী, নির্যাতিতের পাশে
    চেতনায়, বিবেকে, মানুষ মানুষের জন্য।।
    জনহিতকর কর্মে,থাকবো মিলেমিশে,
    সদাজাগ্রত মস্তকে, প্রকাশিত মান ও হুঁশ।
    বিবেকের বাণী চলবো সতত মেনে,
    তবেইতো আমরা প্রকৃত, সম্মানীয় মানুষ।।
    ষড়রিপু,হিংসা,লোভ,স্বার্থের প্রলোভনে,
    কখনো হইনা যেন ঘৃণ্য, নরপিশাচ, বন্য।
    আলো- আঁধারে, সুখেদুঃখে, হাসিকান্নায়,
    অন্তরে গাঁথা, চিরকাল মানুষ মানুষের জন্য।।
    জাতিধর্ম, ধনীগরীব,আত্মীয়পর ভুলে,আমরা…

    মানুষ,এই হোক, সংসারে শ্রেষ্ঠ পরিচয়।
    গড়বো… অমলিন,মনোরম, মধুলিপ্ত ধরণী,
    ভেদাভেদহীন,সুসভ্য সমাজ,নেইকো সংশয়।।
    সবার বিপদেআপদে, দাঁড়াবো পাশে,সম্মাণীয়
    সবাই,আর্ত,শিশু, নারী,কেউ নয় ভোগ্যপণ্য।
    মানুষ.. সত্যশিবসুন্দরের পূজারী যুগেযুগে,
    ভুলবোনা কখনো, মানুষ মানুষের জন্য।

  • কবিতা

    ‎বাতাসে বারুদের গন্ধ ভাসে

    ‎বাতাসে বারুদের গন্ধ ভাসে
    -অনোজ ব্যানার্জী

    আজব গ্রহের,আজব দেশে আজ…….

    রজনীগন্ধা, গোলাপ, বেলী,চন্দনের সুগন্ধ কি ভেসে ভেসে আসে?
    ‎নিঃশ্বাসে, প্রশ্বাসে, আশেপাশে, আকাশে, বাতাসে বারুদের গন্ধ ভাসে।

    পুত্রস্নেহে অন্ধরাজা ধৃতরাষ্ট! তার অগণন কুসন্তান আজ করে নির্যাতন চালায় নির্বিচারে

    সমাজের অনুপরমানুতে শোষণ, ধর্ষণ, ছিনতাই, ‎অপহরণ, খুন, রাহাজানি, তোলাবাজি……
    ‎খায় ক্লান্তিহীন ঘুষ, নির্লজ্জভাবে, লাখোলাখো,কোটি কোটি টাকা, অফিসে, আদালতে, প্রশাসনিক সর্বস্তরে, প্রতিবাদের দেওয়াল ওঠে যদি, ওঠে যদি প্রবল সাইক্লোন….
    ‎চলে গুলি, ছুরি,তরবারি, বোমাবর্ষণ… নির্বিচারে, অট্টহাস্যে…
    ‎বাতাসে বারুদের গন্ধ ভাসে।।
    ‎অগণন লাশ থাকে পড়ে, এখানে সেখানে,
    ‎পথেঘাটে। পুকুরে, নদীতে, খালে বিলে…
    ‎বনেজঙ্গলে, প্রেতাত্মার আর্তনাদ,
    ‎নিষ্পাপ রক্তনদীধারার ক্রন্দনরোল, করে বিদীর্ণ শান্ত মনপ্রাণ, বিবেকের অভ্যন্তরে।
    ‎সুখশান্তি, আরামবিলাসের স্বপ্নিল চোখের, আশালিপ্ত হৃদয়ের জনাকীর্ণ মানবচেতনা, বিপন্ন ভয়ংকরতম।
    ‎আকাঙ্ক্ষিত, নিশ্চিত সুখের স্বর্গ… ওরা আসে কেড়ে নিতে সবলে, সদম্ভে…
    ‎বিবেকহীনা গান্ধারী মায়েরা কালোকাপড়ের
    ‎ঠুলি থাকে বেঁধে তিনচোখে।
    ‎কে আজ ওদের রোখে??
    ‎সত্যশিবসুন্দরের ধার্মিক পূজারীরা অহর্নিশি কাঁপে ভয়ে ত্রাসে….
    ‎বাতাসে বারুদের গন্ধ ভাসে।
    ‎দুঃশাসনদের মহানন্দ শুধু,,, সাজানো সুখের সংসারে ধরানো বিধ্বংসী আগুন,,,
    ‎কেড়ে নিতে চায়,,সুখের ফাগুন।
    ‎তাজাবোমা থাকে পড়ে, পথেঘাটে, মাঠেময়দানে,বনেজঙ্গলে, ফুটপাথে,
    ‎মেঠোরাস্তায়, পাতায় পাতায়, ঘাসে ঘাসে,
    অন্তরালে ওই কারা যেন অট্ট-হাসে…


    ‎বাতাসে বারুদের গন্ধ ভাসে…
    ‎যারা চায় গণতন্ত্র, অনাবিল সুখশান্তিপূর্ণ সমাজ, এই কালো ঘনঘোর অমাবস্যায়,
    ‎কে দাঁড়াবে তাদের পাশে পাশে??
    ‎বাতাসে বারুদের গন্ধ ভাসে…

  • কবিতা

    সংযম

    সংযম
    -অনোজ ব্যানার্জী

    দুষ্ট-রিপুদের ভয়ংকর সুনামি-জলস্রোতে  ভেঙে যায় পবিত্র সংযমের বাঁধ।
    সহনশীলতা যায় উবে, কর্পুরের মতই।
    নিদারুণ দুর্বলতা করে গ্রাস আমাদের চিন্তন, মনন,আবেগ,অনুভূতি।
    মনুষ্যত্ব বলি হয়,সমাজের হাঁড়িকাঠে,,দূরন্ত রাক্ষসের শাণিত খড়্গে।
    অমানুষের বিষাক্ত রক্তস্রোত  হয় প্রবাহিত, মানুষের শিরা,উপশিরা, ধমনী, অলিন্দ,নিলয়ে।
    কুমতির বলয়ে চলতে চলতে ফেলি হারিয়ে সঠিক পথের দিশা।
    সভ্যতার কোমল কাঠে ধরে যায় ঘুণ।

    ভদ্রতা, নম্রতা, শিষ্টাচার,, সৌজন্যবোধের অমূল্য আসবাব পড়ে খসে খসে।
    ধসে ধসে যায়,প্রীতির সুদৃঢ় সেতুর মজবুত নির্মাণ।
    দেবত্বের পথে যেতে, হতে হবে কঠোর সংযমী।
    সংযম! চাই সংযম… রিপুদের করতে হবে দমন। লোভ করতে হবে সংবরণ।
    আসন্ন ধংসের কবল হতে… বাঁচবে তবেই,
    এই পচা সমাজ, এই ভাঙা সংসার, এই টলমটল দেশ, এই পৃথিবী।

  • কবিতা

    ‎ঘুষ

    ‎ঘুষ
    -অনোজ ব্যানার্জী

     

     

    ঘুষবাবাজী এখন, আলো আর বাতাসের মতই
    আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে,পৃথিবীর মাটি, জল,ঘাসে….

    আকাশের নীলে নীলে,,বাতাসের ভাঁজে ভাঁজে , উপরতলা থেকে নীচুতলায়,,
    অফিসে,আদালতে,যাবে যেখানেই,,লাগবে সেলামী, প্রণামী…

    তবেই হবে তোমার কাজ।

    কিছুনা দিলে, কিছুই হবেনা।

    পাবেনা পেনশন,, পাবেনা লোন,পাবেনা কোন সরকারী সাহায্য।

    পুলিশে ধরছে চোর,ডাকাত, গুণ্ডা!  বড়বাবুকে ঘুষ দিলেই বেকসুর খালাশ।
    ঘুষ দিলেই সব মামলা চাপা পড়ে যায় গামলা।

    চাও কোন সরকারী চাকরী??
    দাও দশ-বিশ লাখ টাকা ঘুষ পেয়ে যাবে চাকরী সহজেই
    চাকরীর পরীক্ষার খাতা থাকনা ফাঁকা
    এসে যায়না কিচ্ছু…
    ঘুষের টাকা না দিলে, একশোর মধ্যে একশো পেলেও পরীক্ষার খাতায়…
    বি.এ, এম.এ, পি.এইচ.ডি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হলেও মিলবেনা,মিলবেনা কোন চাকরী।
    যদি না থাকে,দাদা,মামা, যদি না থাকে ঘুষের টাকা,,
    থাকবে বেঁচে জীবন্ত লাশ হয়ে,
    গুরুদেবকে মোটা টাকা যদি না দাও প্রণামী,,
    পাবেনা তার আশীর্বাদ।
    পেতে চাও,, ঈশ্বরের কৃপা?
    দামী দামী ফলমূলাদি দিয়ে দিতে হবে ভোগরাগ, করতে হবে হোম-যজ্ঞ
    পুরোহিতকে দিতে হবে মোটা টাকা প্রণামী, ।
    যাও সিনেমা হলে,,হাসপাতালে,,
    সেখানেও ঘুরেঘুরে বেড়ায় অসংখ্য দালাল,,
    ঘুষ না দিলে ওদের,,হবেনা কোন কাজই তোমার।
    যেখানেই যাও,,দাও কিছু ঘুষ,পেয়ে যাবে,,
    চটপট ঈপ্সিত সব কাজ।
    ঘুষবাবাজী জিন্দাবাদ,, ঘুষের দালাল জিন্দাবাদ।

  • কবিতা

    আধুনিকতা

    আধুনিকতা
    -অনোজ ব্যানার্জী

     

     

    ‎পুরাতনী যায় ভুলে,,সংস্কার শিকেয় তুলে,
    চলে হেঁটে, আধুনিকতার আকাশপথে।
    ‎শিকড় যায় যে ছিঁড়ে, উগ্র সভ্যতার ভীড়ে,
    পাশ্চাত্ত্যের আগুন জ্বলে হৃদয়ের রথে।।
    ‎সাহেবি খানা খায়,পিঁয়াজ -পান্তা ভুলে যায়,,
    মুছে যায়,গেঁয়ো আচার, ব্যবহার, আচরণ।
    ‎গ্রাম ছেড়ে দলেদলে, শহরের দিকে চলে,,
    সাহেবিয়ানায় মনঃপ্রাণ, মগ্ন এখন।।
    ‎ধুতি-পাঞ্জাবী, ছেড়ে,,জিনস প্যান্ট, শার্ট পরে,
    ‎সুরাপানে মত্ত হয়,ফাইভ স্টার হোটেলে।
    ‎ছেলে মেয়ে বোঝা দায়,,নারীপোশাকে শ্রী নাই,,
    ‎পার্টিত মদ খায় নেচেনেচে,,নেশাতে পা টলে।।
    ‎সত্য-ধর্ম -মানবতা,, হাসিমুখে করে হত্যা,,
    রাঙা- ‎মুখোশ এঁটে মুখে,মিথ্যা কথা বলে।
    হিংসায় হয়ে মত্ত, অর্থলোভে অবিরত,,
    খুন,জখম, ছিনতাই,ধর্ষণ করে চলে।।
    অনাচারে অত্যাচারে,, পাপীদের ব্যাভিচারে,
    জনগণ, নয়নজলে, শূন্য সাগর হল পূর্ণ।
    সমাজ দূষিত আজ,পরে আধুনিকতার সাজ,
    মানুষের আশা-স্বপ্ন, সুখ-শান্তি,হল চূর্ণ।।
    রসাতলে যায় দেশ,মায়ের কাঙালিনী বেশ,
    কে শোনে কার কথা? কে বোঝে ব্যথার খাতা?
    আলোর বেগে এগিয়ে চলে সুসভ্যতা!!
    মনুষ্যত্ব পোড়ে চিতায়, এটাই কি আধুনিকতা??

  • কবিতা

    আমাকে আমার মত থাকতে দাও

    আমাকে আমার মত থাকতে দাও
    -অনোজ ব্যানার্জী

     

     

    অঙ্কের নিয়মে চলে কি জীবন?
    এই সংসারে চলতে হয়, রঙ -টঙ মেখেমেখে  সঙ সেজে সেজে….
    ভালো সঙ সাজতে না পারলে  ভালো সংসারী হওয়া যাবেকি কখনো?

    মিথ্যা বা্হাদুরী দেখিয়ে কি লাভ?
    এই পৃথিবীটা বড়ো জটিল, বড়ো কুটিল,
    কিন্তু এসব নকল সাজে সেজে থাকতে  সাজতে চায়না,

    চায়না আমার সাদাসিধে মন।

    মুখোশ পরে থাকতে কি ভালো লাগে কখনো?

    মুখ এক কথা বলবে  মন বলবে অন্যকথা!!  এইভাবে চলেকি জীবন?
    এইভাবে চলে কি সংসার? এইভাবে চলে কি পৃথিবী?
    সকল মানুষ,পশুপাখী,পাহাড়,নদী, গাছপালা,
    যে যেমন চলছে চলুক…চলুক…
    পিঁপড়ে চলে পিঁপড়ের মত,ঘোড়া। চলে ঘোড়ার মত….
    খোঁড়ালোক কি আর পারবে ছুটতে কোনদিন চিতাবাঘের মত তীব্রভাবে?
    তুমি থাকো  তোমার মত তুমি চলো তোমার মত,
    আমাকে আমার মত থাকতে দাও।
    কোকিল গেয়ে যাক,সুমিষ্ট সঙ্গীত মধুরকন্ঠে,,
    কাক কর্কশরবে করে যাক কা,,কা,,কা,,
    তাতে কার কিইবা এসে যায়??
    ওরা থাকুক ওদের মত,
    আমাকে আমার মত থাকতে দাও।
    আমাকে আমার মত চলতে দাও।
    কেউ খাঁটি -ভিখারী হয়েও চলতে চায় রাজার মত,,
    আবার কেউ প্রকৃত -রাজা হয়েও চলে, ভিখারির মত।
    যার যা সাধ হয় করুক, যার যা মন চায় তাই করুক,
    আমাকে আমার মত থাকতে দাও।

    দেহের ঘামের মত…সন্ন্যাসীর মত,
    ত্যাগ করলে,,ত্যাগ করা হয়, ত্যাগেই তো সুখ।
    নবাব-বাদশার মত ভোগ করলে,,ভোগ করা হয়।

    ভোগ করতে থাকলে ভোগের লালসা যায় বেড়ে যায় দিনেদিনে।

    আমি চাইনা রাজা…ধনকুবের হতে।

    চাই মনের-মানুষটাকে রাখতে বাঁচিয়ে নিরন্তর আজীবন।
    জীবনটাকে ঠিক জীবনের মতই চলতে দাও,
    আমাকে আমার মত থাকতে দাও।

  • কবিতা

    কিছু জলন্ত আগুনের সঙ্গে

    কিছু জলন্ত আগুনের সঙ্গে

    -অনোজ ব্যানার্জী

     

     

    কিছু জলন্ত আগুনের সঙ্গে,,সেদিন হঠাৎ-ই,
    সামান্য একটু মোকাবিলা হয়ে গেল আমার,
    হাতে লাগলো ছ্যাঁকা,,,সেকি,,জ্বালা!!
    আঙুলে পড়লো,, মস্তবড়ো ফোস্কা,,
    কি বোকা আমি!  আগুন নিয়ে খেলা!
    কিন্তু  হয়তো  অনেক আগুনই বেশ   বেশ   ভালোবাসে আমাকে এখনো,

    আমার এই স্থূল দেহটাকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে… করে দিতে চাই কেবল ছাই…

    আর আমি তখন, আমার সূক্ষদেহ নিয়ে অসহায় শিশুর মত দেখব চেয়ে চেয়ে??
    ভাবছি! ওই জলন্ত আগুনটাকে আমি এবার,,
    বন্দী করে দেবো রেখে আমার নিরুত্তাপ মনের খাঁচায়   চিরতরে।
    তারপর জলন্ত ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির মত
    দেবো ছড়িয়ে সারা বিশ্বের… মানুষের…প্রাণীদের… অন্তরের
    চেতনার অণুপরমাণুতে,
    ওরা করবে লড়াই নরপিশাচদের সাথে।
    মাঠেঘাটে, হাটেলাটে,,অলিগলি, রাজপথে,
    আঁধারে-আলোয়,বনেজঙ্গলে…
    পুড়ে পুড়ে সোনা হবে খাঁটি।
    খাঁটি হবে ধরনীর মাটিজল,বায়ু, হবে অমর…
    সত্যের, ধর্মের,,সুন্দরের, পরমায়ু, আয়ু।

You cannot copy content of this page