কবিতা- প্রেমিকের ডাকনাম

প্রেমিকের ডাকনাম -কাজল দাস -“তোকে তুমি বলে ডেকে ফেলি যদি কেন আকাশকে ছুঁয়ে ফেলে নদী।” হ্যাঁ, সেদিন তুমি ছিলে- তুই। আর তুই থেকে তুমিতে আসতে দীর্ঘ একটা পথ নদীর মতোই বয়ে গেছে অন্য ঠিকানায়। বলতে গেলে এক প্রকার উন্মাদনাই ছিল- তুমি শোনা আর তুমি বলার ভেতর। ছিল একটা লজ্জা সিক্ত উচ্চারণ- তুমি। বেশ অধিকারের জোরেই- […]

কবিতা- ফাঁকি

ফাঁকি-কাজল দাস     দুই এক্কে দুই, দুই দু’গুনে চারতিন দু’গুনে ছয়, ছয়…. ছয়……ভুলে গেলাম, তার পরে’তে…কি যেন…. কি.. হয়?নামতাগুলো মাথার ভেতরকোথায়.. যেন থাকে,বলতে গেলেই হাতড়ে মরিঘিলুর ফাঁকে ফাঁকে।অঙ্ক দেখলে বুকের ভেতরকেমন জানি হয়,কষতে গেলেই হারাই যেন-পিতৃ পরিচয়। মাষ্টমশাই রেগে বলেন-“কি করেছিস গাধা,সহজ কিছু অঙ্ক দিলামবানিয়ে দিলি ধাঁধা? কি আর বলি মাষ্টোমশাইবোঝাই যে কি ব’লে!অঙ্কগুলো […]

কবিতা- তুমি স্বপ্নে বাঁচো

তুমি স্বপ্নে বাঁচো -কাজল দাস তুমি স্বপ্নে বাঁচো, স্বপ্নেই বাঁচো প্রেমের উঠোনে নয়, আমার ভিতর ঘরে,- অন্তরালে তুমি নিষিদ্ধ পরিচয়। তুমি স্বপ্নে বাঁচো, স্বপ্নেই বাঁচো তাড়া নেই ঘরে ফেরার, রাত্রি যাপন- হোক জ্বালাতন চোখ হোক দিশেহারা। তুমি স্বপ্নে বাঁচো, স্বপ্নেই বাঁচো খোলা আকাশের মতো, খুলে ফেলো সব জড়তার মেঘ ভিজে যাও অবিরত। তুমি স্বপ্নে বাঁচো, […]

কবিতা- প্রেমের মানে প্রেমিক জানে

প্রেমের মানে প্রেমিক জানে– কাজল দাস     ছেলের ইচ্ছে প্রেমিক হবেহবেই হবে কে ঠেকায়!মেয়ের ইচ্ছে ঘর বাঁধারসেই সুদিনের অপেক্ষায়।প্রেমিক মানে প্রেমিক জানেপ্রেম কি আর ঘর চেনে,মেয়ের কি দোষ স্বপ্ন দেখে।চোখের জলের সুখটানেছেলের আছে চৌরাস্তা,মেয়ের আছে অজুহাতছেলের জন্য নিয়ন আলোমেয়ের চোখে বিষাদ রাত। মেয়ের ইচ্ছে আকাশ ছোঁয়াসিঁথির নদে ঘর সাজায়।ছেলের বুকে আকাশ যেনছুটির দেশে ছুটতে […]

কবিতা- ভানুর কীর্তি

ভানুর কীর্তি– কাজল দাস     চাইলে তুমি তোমারে লইয়া চাঁন্দে দিমু পারি,লক্ষ্মী সোনা রাগ কইরা মুখ কইরো না হাড়ি।কি চাও কও গিন্নি তুমি টাকা- কড়ি-সোনা,আজকে না হয় ভিক্টোরিয়ায়, ঘুরুম-নে দুই জনাফুচকা, চানা, বাদাম লইয়া গড়ের মাঠে যামু,হরি দাসের বুলবুল ভাজা পরাণ ভইরা খামু। ও গিন্নী, আমি কি তোমার এতোখানি পর,কখনো তুমি বর্ষা নামাও, কখনো […]

কবিতা- নখদর্পণে

  নখদর্পণে  -কাজল দাস      আমরা যারা বুদ্ধি হত মানুষবুদ্ধি কিনি সস্তা সহজ দামেহার মানতে সহজে নতজানুদোষটা লিখি অদৃষ্টের নামে রাজতন্ত্র সমাজতন্ত্র-এ পিষেপৌষ্টিকতন্ত্র- হয় যে নাজেহালপোয়াতি চাঁদ অন্ধকারে মিশেঘরে ফেরে, সঙ্গে বাসি ডাল তবু বড়াই আমরা বেমিসালমোগো ছাড়া হয়না নির্বাচনহারি জিতি পোক্ত গাত্র ছালডাইনে বামে আমরাই জনার্দন তালিকা ভুক্ত সংখ্যায় বারোটাআবালবৃদ্ধবনিতা ও নর-নারীযদিও আমরা […]

কবিতা-আমন্ত্রণ

আমন্ত্রণ -কাজল দাস এবার যখন আসবে নবীন, ফাগুন এনো মনে বসন্তেরই বাতাস মেখে নাচবো তোমার সনে। রামধনু রঙ ছড়িয়ে দেব ধূসর ধরনী তলে, রঙিন সুতোয় বাঁধবো সব-এ হোলি খেলার ছলে। সবাই যখন আবীর খেলায় ব‍্যস্ত রাঙিয়ে নিতে, আমরা তখন রাঙাবো আকাশ একান্ত নিভৃতে। এবার যখন আসবে নবীন, সাগর এনো মনে আমার সকল ভাসিয়ে দেব অতল […]

কবিতা- নীলচে চাদর

নীলচে চাদর– কাজল দাস     কখন যেন যুদ্ধ হয়েছে শেষক্লান্ত আমি, আমার মহাদেশরাত্রি যাপন বুকের স্তব্ধতায়নীলচে চাদর উগ্র মেজাজ কেশ। চাঁদ ছুঁয়ে যায় দীর্ঘ বনবাসদু’মুঠো নয়, দিগ্বিজয়ী আশচিবুক- তিলে বন্য উষ্ণতায়আগুন হয়েই পুড়বো বারোমাস। অস্ত্রগুলো ইচ্ছে-পরাধীনযুদ্ধ করে মরছি সারাদিনরক্তক্ষয়ী জলন্ত বিছানায়ভিজছে সুখে পরাধীনতার ঋণ। লজ্জাবসন- হচ্ছে বয়কটভীতর জলে চোরা ধর্মঘটযুদ্ধ করে মরছি নির্দ্বিধায়দু’হাতে আমার […]

কবিতা- ধর্ষিতার রূপে মেশে দেবীর আদল

ধর্ষিতার রূপে মেশে দেবীর আদল– কাজল দাস     যে শরীর ছুঁয়ে দিলে কামনার বশেযমেরও সাধ্যি নেই ছোঁবে একবাররক্তের দাগে মেটে কবিতা,আপসেলাশকাটা ঘরে চলে যোনি সৎকার কিশোরী শরীর খোঁজে জন্ম জরায়ুমেঘভাঙা চিৎকারে মায়ের আঁচলপরিচিত ডাকনামে ছেদ টানে আয়ুধর্ষিতার রূপে মেশে দেবীর আদল।  খুবলে নিল চোখ পারিজাত শোকেশব্দ নেভা শরীর বিস্বাদ বিনোদনেমানুষের ইতিহাস পিশাচের চোখেজিভ হীন […]

কবিতা- চরিত্রহীন

চরিত্রহীন– কাজল দাস     শালীনতার বাঁধ ভেঙেছে তোমার রূপ,তোমায় ছঁ’বো বলে আমি রোদ মেখেছি,বৃষ্টি ছুঁয়েছি, সন্ধ্যে মেখেছি গায়ে,ভিড় রাস্তায় ঘেঁষে গেছি শীতল উষ্ণতা,শুষে নিয়েছি গায়ের গন্ধ,দিনান্তে সবুজ মুছে ফেলে-কালো হাত তোমায় ছঁ’বে; নষ্ট মন,তাই শত বছরের ঝঞ্জা বুকে নিয়ে-ছুটে এসেছি অন্য গ্রহ থেকে,তোমার জনবহুল শহর, কলকাতায়। ট্রামে-বাসের শব্দে বিরক্ত মন,মেপে গেছে শব্দহীন পদচারণ।আর তুমিও […]