বানভাসি –তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন হৃদয় আকাশে ছড়ালো নতুন সূর্যের মায়ামাখা ভোর। ঝিরিঝিরি হাওয়া ঢেউ তুলে গেলো এ হৃদয় বরাবর। আদরের এক পালতোলা নৌকো প্রেমের উজান বেয়ে চলে। ব্যথার নুড়ি কুড়িয়েছি যত, ছুঁড়ে দিই নদী জলে। সেই প্রেম অগোচরে হারালো জীবন থেকে। জল ছলছল চোখে আপনমনে খুঁজি তাকে। আবছা আলোয় সজল চোখে বিষণ্ণ এক মন। বৃষ্টিতে […]
কবিতা- অপেক্ষার শেষে
অপেক্ষার শেষে-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তহীন অপেক্ষার শেষেনিঃসীম অন্ধকার।বিষন্ন মনে মরা স্বপ্নেরাজমাট পাথর। মন তাও রোদ ছুঁতে চায়,চায় জ্যোৎস্নার মায়া।সবটুকু অন্ধকার মুছিয়ে,সরাতে চায় ক্ষয়াটে ছায়া। জন্ম থেকে জন্মান্তরে,মাটি,জল,আলোর পরশ লেগেছে প্রাণে।অনন্ত প্রেমের ধারা,উঠেছে জেগে,আবেশে ছুটেছে হৃদয় গহনে। রাতচরা পাখী উড়ে যায়,আকাশের চাঁদ ছুঁয়ে।জোছনায় মাখামাখি নরম মায়া,দহন ক্লান্ত হৃদয় দেয় জুড়িয়ে।।
কবিতা- অন্ধকার ক্লান্তি
অন্ধকার ক্লান্তি-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি নেই,আদর্শ নেই,শিক্ষা নেই,কাজ নেই,আলো নেই।আদর্শহীন জীবনে প্রাণও নেই।আছে শুধু বেচাকেনা।এখানে মানবতাও বেচা যায় অল্প দামে।এখানে নীতি,আদর্শ,শিক্ষা,সম্মান বেচে দিয়ে দুর্নীতির জপমালা কেনা যায়। এখানে হারিয়ে যাওয়ার গল্প আছে।কিন্তু ফিরে আসার কোনো গল্প নেই। এখানে অসততার চোরাবালিতে ডুবে যাওয়ার গল্প আছে।কিন্তু চোরাবালি থেকে নিজেকে টেনে তোলার কোনো গল্প নেই। জীবনের বিষাদ […]
কবিতা- অভিমানী
অভিমানী-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় শরীরটা বেঁচে আছে, তবু বলোমন কেন মরে যায়?অভিমানী কথাগুলো সব,দু’টি ঠোঁটে নীরবতা পায়? বাঁচবে কি করে বলো মন…প্রিয়জন,ভালোবাসা ছাড়া?আলোগুলো কেঁপে নিভে যায়।মন খালি পথ ভুলে গিয়ে,প্রিয়জন,ভালোবাসা হারায়। মুহূর্তরা আসছে ফুরিয়ে,হারিয়েছে কত মন।জীবন থেকে জীবনকে কেড়ে,খুঁজে চলি আপনজন। হাজার প্রতিশ্রুতির মাঝে…আজও হাতে হাত রেখে চলা।আজও স্বপ্নগুলো রোদ মাখে,মনে মেঘ – বৃষ্টির খেলা।।
গল্প- খুশীর রঙ
খুশীর রঙ -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনে রঙের তো কোন অভাব ছিলো না অপর্ণার। রামধনুর সাত রঙের মেলায় ও ছিলো রঙীন এক প্রজাপতির মতো। বাবা-মায়ের আদরের ছটপটে মেয়েটি লেখাপড়া করে একটা চাকরী যোগাড় করেছিলো প্রাইভেট ফার্মে।জীবন বেশ চলছিলো তরতরিয়ে। বাড়ির দায়দায়িত্ব তেমন কিছু ছিলো না… নিজের উপার্জিত অর্থ নিজের খুশীমতো খরচ করতে পারতো সে। বন্ধুদের […]
গল্প- রবীন্দ্রনাথকে ছুঁয়ে
রবীন্দ্রনাথকে ছুঁয়ে-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় মৃন্ময়ী আর দিগন্তের প্রাণভোমরা ওদের মেয়ে সমাপ্তি। ও লেখাপড়ায় খুব ভালো… নরম, মিষ্টি মন আর খুব বুঝদার। ছোট থেকেই শিক্ষিকা হবার ইচ্ছে ছিলো ওর।ছোটবেলায় স্কুল থেকে ফিরেই খাওয়াদাওয়া করে খেলতে বসে যেতো। দুপুরে কিছুতেই মেয়েকে ঘুম পাড়াতে পারতো না মৃন্ময়ী। প্রথম প্রথম চেষ্টা করে পরে হাল ছেড়ে দিয়ে নিজেই ঘুমিয়ে […]
গল্প- তিন বর
তিন বর-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় নববর্ষের সকালবেলা থেকেই জিকো তাড়া লাগাতে শুরু করলো…দাদুভাই, ঠাম্মি তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করে ড্রেস পরে নাও।দাদুভাই তুমি ধুতি, পাঞ্জাবী পরবে আর ঠাম্মি,তোমায় কিন্তু আজ মা, গরদের শাড়ীটাই পরতে বলেছে। খানিকবাদে অমিয়বাবু দেখলেন ওনার ছোটছেলে আর বৌমা সুন্দর সেজেগুজে রেডি হয়েছে আর জিকোবাবুও আজ পাঞ্জাবী পরে একেবারে ফুলবাবু। বছরের প্রথম দিন সবার […]
গল্প- মাথা গরম
মাথা গরম-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় মহুয়ার বিয়ে হয় এক ব্যবসায়ী পরিবারে। পরিবারের ছোট বৌ সে। ওর বর ধীমানের আলাদা ব্যাবসা। ধীমানের বড় দাদা বিমান পারিবারিক ব্যাবসাই দেখাশুনা করে। মহুয়ার শাশুড়ী চুপচাপ মানুষ…শ্বশুর একসময় না’কি খুব রাগী ছিলেন। তবে বয়সের ভারে এখন আর সেই রাগ নেই…চুপচাপই থাকেন এখন… তবে শাশুড়ীমা এখনো ওনাকে বেশ ভয়ই পান।এখনো রান্নায় […]
গল্প- মিষ্টি গুজব
মিষ্টি গুজব -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় জগু মিত্র রোডে ঢুকেই বাম পাশের সরু গলিটার শুরুতেই মাধবের মিষ্টির দোকান “সত্যনারায়ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার”। দোকানটা অনেক পুরোনো। মাধবের বাপ-ঠাকুরদার আমলের। এখন তো মাধবেরও বয়স হয়ে গেছে। ঠিকমত দেখাশুনো করতে পারে না।চাকরীর বাজার খুবই খারাপ। তাই মাধবের ছেলে লেখাপড়া শিখেও মিষ্টির দোকান চালায়। যদিও ওর খুব ইচ্ছে ছিলো চাকরী করে। কিন্তু […]
গল্প- খুশী পরিবার
খুশী পরিবার -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায় যৌথ পরিবার তো এখন বড় একটা দেখা যায় না। তবে প্রদীপদের পরিবারটা বড় পরিবারের তকমা লাগিয়ে রেখেছিলো অনেকদিন। এখন নতুন প্রজন্মে ছেলেপিলেদের বিয়ে হচ্ছে… তারা একটু আধুনিক ভাবে হাতপা ছড়িয়ে থাকতে চায়…তাই ঘর চাই… তারপর ভালো চাকরীর সন্ধানে বাইরে যাওয়া চাই। আর করবেটাই’বা কি? ভালো পড়াশুনো করে তো আর যা হোক […]