অশুভ যাত্রা– বিশ্বদীপ মুখার্জী     খবরের কাগজে প্রকাশিত রাশিফলে আমার বিশ্বাস নেই। তাও অভ্যাসবশত রোজ একবার দেখেই নিই। আজ সকালে উঠে দেখলাম আমার রাশির নিচে লেখা আছে- যাত্রা শুভ নয়। এক্ষেত্রে বিশ্বাস অথবা অবিশ্বাসের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, আজ আমাকে বেরোতেই হবে। অফিসের কাজে যেতে হবে ভুবনেশ্বর। রাতের ট্রেনে টিকিট, হাওড়া থেকে। তবে […]

নবজাত– বিশ্বদীপ মুখার্জী     কাজের মাসিকে বদলেছি কিছু মাস হলো। নতুন কাজের মাসি বেশি কথা বলে না। সব সময় মুখে অদ্ভুত বিষণ্ণতার ছাপ। কারণটা জানতে পারলাম মাসির মুখেই। কারণ জেনে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম আমি। মাসির ধর্ষিতা মেয়ে নাকি মা হয়েছে। জন্ম দিয়েছে এক কন্যা শিশুকে। তারপর থেকেই শুরু হয় গ্রামের লোকেদের উৎপাত। সেই শিশুটিকে […]

মাতৃভাষা– বিশ্বদীপ মুখার্জী     আগেই বলে দিই, গল্পটা লেখার উদ্দেশ্য কোনও ভাষাকে অপমান করা নয়, বরং নিজের ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখা। ভাষা নিজেই এত মহান হয় যার অপমান হতেই পারে না।— — — — — — — — — জয়ন্ত সেই চেহারাটাকে খুব ভালো করে চিনতো। বেলঘরিয়া থেকে বিধাননগর রোড স্টেশন যাওয়ার সময় প্রায় রোজই […]

সে দিনের কথা– বিশ্বদীপ মুখার্জী     বিগত এক বছরে কুড়িজন লেখকের বই প্রকাশ করে ফেলেছে তিলোত্তমা প্রকাশনী। পাবলিশিং হাউস হিসেবে বেশ নাম ডাকও হয়েছে। এক বছর আগে অংশুমান এবং তার বন্ধু রুদ্র মিলে শুরু করেছিল ‘তিলোত্তমা প্রকাশনী’। তখন অংশুমান বলেছিল রুদ্রকে – ‘আমরা আজ পর্যন্ত নিজের কোনও একক বই প্রকাশ করতে পারলাম না রুদ্র। […]

শূন্য হৃদয়ের আর্তনাদ– বিশ্বদীপ মুখার্জী   জীবনটা হয়তো আরও ভালো হতে পারতোপেতে পারতাম কারোর নিখুঁত ভালোবাসা,যার দু’ চোখে দেখতাম নিজের ছবিযার কোলে মাথা রেখেতৃপ্তির গভীর সাগরে যেতাম ডুবে।তার একটা নরম স্পর্শমনকে রোমাঞ্চিত করে তুলতো….তার ভালোবাসাকে রাখতাম আঁকড়ে ধরে,মনের গভীরে।জীবনটা হলো মরুভূমি….চারিদিকে ক্যাকটাসের কাঁটাপ্রতিনিয়ত হৃদয়ে করে গভীর ক্ষত,ভালোবাসা মরীচিকার ন্যায়দূর থেকে দেয় দর্শন….কাছে গিয়ে শুধু শুনতে […]

ন্যুডিটি অফ ওয়ার– বিশ্বদীপ মুখার্জী   ১ দুপুর দু’টো। নিজের চেম্বার থেকে নিচে নেমে এলো ডক্টর সায়ন্তন গাঙ্গুলী। নিচে দাঁড়িয়ে থাকা নিজের গাড়ির দিকে এগোলো ঠিকই, কিন্তু গাড়িতে বসলো না সে। কারোর অপেক্ষা করছে। সায়ন্তন খানিক পরেই দেখতে পেল মেঘনাকে। দ্রুত গতিতে মেঘনা এগিয়ে আসছে তার দিকে।সায়ন্তনের কাছে এসে মেঘনা বলল – ‘সরি সায়ন্তন। দেরি […]

সমুদ্র সৈকত– বিশ্বদীপ মুখার্জী   একজনকে মাঝ সমুদ্রে ডুবিয়েতুমি চললে সমুদ্র সৈকতে।সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউ হয়েআমি আসবো তোমার কাছে,করবো তোমায় স্পর্শ,তুমি করতে চাইবে আলিঙ্গন আমায়কিন্তু পাবে না আমাকে।চলে যাওয়া ঢেউয়ের দিকেতুমি তাকিয়ে থাকবে অপলক,এই আশায় হয়তো আবার ফিরে আসবে সে।রাতে যখন শুয়ে থাকবে বালির উপরঅসংখ্য তারা মিটমিট করেতাকিয়ে থাকবে তোমার দিকে….তুমি সেই অজস্র তারা-দের নিয়েআঁকতে চাইবে […]

বালির মহল– বিশ্বদীপ মুখার্জী   ঝড় কেন?হাওয়ার অল্প ধাক্কাও বালির মহলকেনিমেষে শেষ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।কিছু কিছু মুহূর্ত গুলোকে গিলে ফেলে সুমদ্রের ঢেউ….দিনের শেষে পড়ে থাকে শুকনো পাতা,যে এক সময় ছিল সবুজ..সৃষ্টির নিয়মে আজ খুইয়েছে নিজের অস্তিত্ব।আজ সেই আমার সঙ্গী,আজ আমিও সৃষ্টির নিয়মে অস্তিত্বহীন।স্বপ্ন দেখেছিলাম সুন্দর এক মহলের,যেখানে ভালোবাসা ডানা মেলেউড়ে বেড়াবে চারিদিকে..যেখানে কর্তব্যের স্থান […]

অবশেষে– বিশ্বদীপ মুখার্জী   ছাদে এক কাঠের বেঞ্চিতে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা গুনছিল বিউটি। অজস্র তারায় ছেয়ে আছে সমস্ত আকাশটা। এই অসংখ্য তারার মাঝেই কোথাও না কোথাও লুকিয়ে আছে তার মা। ছোট বেলায় তাকে মা বলতো, যে মারা যায় সে আকাশের তারা হয়ে যায়। এই ধারণাটাই তার মনে বাসা বেঁধে নিয়েছিল। ইচ্ছে আছে আজকের […]

আমি বোবাই ভালো– বিশ্বদীপ মুখার্জী   কিছু কিছু দম বন্ধ হওয়া মুহূর্তগুলোকেজ্বলন্ত পাঁজরের খাঁচায় বন্দি করেরেখে দিয়েছি,অনবরত অক্সিজেনের সাথে বহু মাত্রায়চূড়ান্ত নোংরামি শরীরে প্রবেশ করেবেঁচে থাকার ইচ্ছেকে করছে নির্মূল।তবুও এমন তালা এঁটে রেখেছি নিজের মুখেযার চাবিকে দিয়েছি খুইয়ে,বোবা হয়ে থাকাই বেঁচে থাকার একমাত্র উপায়।কেউ যেন সেই তালার চাবিকে খুঁজে বের করারচেষ্টা না করে….তালার আড়ালে লুকিয়ে […]