অণু কবিতা- বোধ

বোধ– দীপ্তিমান ভাণ্ডারী     গনগনে সূর্যের দুপুরেএকখন্ড অবসাদ ঢুকে পেরেমনের অলিন্দে।কেবলই ছায়ার সাথে নিষ্ফল বোঝাপড়া। মুঠো খুলে আজ উড়িয়ে দিতে হবেসেইসব স্নিগ্ধতা-শিশির কণা-ভালোবাসা;কিন্তু হায়, মুঠো খুলে দেখিপরে আছে ফাঁকা বিলকুল। ঠিক তখনই চোখের কোণায়দু-এক ফোঁটা চিকচিকে নোনা জল।একি তবেনিজের জন্য নিজের সহানুভূতি!

অণুকবিতা- সময় প্রবাহ

সময় প্রবাহ– তাপসী শতপথী     হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত আমিপারছি না আর চলতে,কত কথা সেই শুরু থেকে বলাপারছি না আর বলতে।বৃদ্ধ এ মন কুব্জ এ দেহেঅনেকটা পথ হাঁটলাম।নীহারিকা থেকে ধ্রুবতারা হয়েকত অজানাকে চিনলাম।অবশেষে আমি অবসর দেশেতোমাতেই পাই খোঁজ।প্রতিক্ষণ আসি ক্ষণেতে হারায়সময়ের স্রোতে রোজ।

অণু অবিতা- ভিতর

ভিতর -সুমিত মোদক     আজকাল নদীর ওপারের শব্দও শুনতে পাই ;নদীর দুকূল এখানে অনেকটা কাছাকাছি ;ঠিক তোমার আর আমার মতো ….বুকের ভিতরের নৌকটা শীতের কুয়াশায় ঢাকা ;যেখানে সাজানো আছে ভবিষ্যতের আড়বাঁশি ;সেখানেই সাজিয়ে রাখবো অতীতের যত ক্ষত .

অণুকবিতা- বারি

বারি-সঙ্কর্ষণ   বুকেতে যদি বা রাখো পরিযায়ী ডানাপালকে জড়ানো আছে অচেনা ঠিকানা। যে মেঘে ঝরালো জল এ শুষ্ক হৃদয়েআকাশও বাঁধেনি তাকে সে চেনা সময়ে। তুমি কি ভিজেছো তবে হে অনামী পাখিমুছেছো আহত ডানা না জেনে বেবাকই?

অণু কবিতা- জীর্ণ রক্ষা কবজ

জীর্ণ রক্ষা কবজ– শুক্লা রায় চৌধুরী মখমলের ওই আসন পড়ে তোমার দম্ভ কিসের রাজন?জীর্ণ বর্মে যুদ্ধ আমার তোমার হয়েই রক্ত করি হরণ;কূটনীতিতে সিদ্ধ তুমি আমিই কেবল স্থূল,ঠিকের রাজ্যে শাসন তোমার আমিই কেবল ভুল;শীর্ষে যে ওই বিরাজ করো সুখ তো তোমার হস্তগত,রক্ষা কবজ হয়েও আমি রয়েছি তোমার পদানত।।

অণু কবিতা- আনন্দ

আনন্দ– পলি ঘোষ   আষাঢ়েরর প্রবল রবীন আনন্দে।গানখানি প্রিয় গাঁথিলাম মোর ছন্দে।দিল তারে বনবীথিকোকিলের কলগীতিভরে দিল মোর বিশ্বভুবনবকুলের গন্ধে।চারিদিকে বয়ে চলেমাধবীর মধুময় মহামন্ত্রনদীতে মাঝি বৈঠা বায়েতরণী পরেরঙ্গে রঙ্গে রাঙ্গালো এ ত্রিভুবনবানীমম নিল তুলেপলাশের কলিগুলিবেঁধে দিল মোর হৃদয়েরমনিবন্ধে।

অণু কবিতা- মনসাগরে

মনসাগরে – মৈত্রেয়ী ঘোষ জানিস্ ওরে মন– দুঃখ গুলো বড্ড টানে কারণ তারা একান্ত আপন ছায়া হয়ে থাকে পাশাপাশি। হঠাৎ সেদিন মন কাননে এক ফালি সুখের চাঁদ যেই না তাকে ছুঁতে গেছি– অমনি সে চঞ্চলা। আসলে তুই ভীষণ স্পর্শকাতর আঘাত পেলেই করিস স্মরণ, আর ক্ষণিকের সুখস্মৃতি হারিয়ে ফেলিস অতল মনসাগরে।

অণু কবিতা- বেদনার নদী

বেদনার নদী– নাজমুল হুদা খাঁন (হলুদ হিমু)   গভীর ক্ষত পুষে রাখা বুকের পাজরেবেদনাগুলো সুর হয়ে বাজে তার নুপুরেকার্নিশ ঘেঁষে পড়ে রক্তের লালকবিতার পান্ডুলিপিগুলো ছিল বিষাক্ত কাল বেদনাগুলো বার বার হয়েছে আহতঅমরত্বের দাবি নিয়ে হয়নি নিহতযে নদীর বুকেছিল প্রবল শ্রাবণভরা আষাড়েও আজ নেই কোন প্লাবন

কবিতা- সাফল্য

সাফল্য– সত্যেন্দ্রনাথ পাইন শিকড়ের টান কুটিরের কৃতজ্ঞতাক্রমশঃ- ঝোপঝাড় হীনজীবনানন্দ হিরে শীর্ণ স্রোতের নির্ঝরিণীমুক্তি খোঁজে মৃত্যু শোকেঘৃণায় অপমানিত পেখমের চালাকি ঠাট্টা বিদ্রুপ অশ্লীলতায় প্রতিদিন যখনপুড়ে পুড়ে ক্ষয় হতে হতেপারদ নামায়সমতল পৃথিবীর বাস্তবতায়…. জমিদারির পতাকাহেলেদুলে বলে ওঠে তখনি অবনী, ভালো আছো? ।

অণু কবিতা- কদর্য…..

কদর্য…..– কৃষ্ণ বর্মন   কদর্য স্বপ্ন আর্য হতে চেয়েছিল বলেবিতাড়িত সে স্বপ্নের কুলীন সমাজ থেকে।কৃতকর্মের ফল তাঁকে দাড় করিয়েছেবাস্তবের নির্লজ্জ রাস্তায়যেখানে স্বপ্নেরা নিলাম হয়মানহানির অনুপাতেমৃতের চেয়ে সস্তায়। নিলাম শেষে পড়ে থাকে কিছুকিছু ওজনে অতিরিক্তস্বপ্নের ফেরিওয়ালার অবশেষেঝুলিটা হয় রিক্ত।