অণু কবিতা- স্বপ্নীল রাতে…

স্বপ্নীল রাতে…-সত্য দেব পতি   সুনীল আকাশে রুপোলী ইন্দু জোছনা ঝালর ফেলিছে,হাজারো তারকা অম্বরে আজিরাতের বিহগা গাহিছে-দুরে নিপশাখে রাতজাগা পাখিনিরখে খুদিত উদরে,তমাল তরুতে নেমেছে রাত্রিমরু পর্বত সাগরে…ঘুমের সাগরে স্বপ্নের মেলা রঙিন খুশির রাশি,সকালের উষা উজ্জ্বল হয়ে হাসিবে রোদ্র হাসি।

অণু কবিতা- গাঁটছড়া

গাঁটছড়া-মৈত্রেয়ী ঘোষ   মনের মিলন,ভাবের সুজনবন্ধুত্বে হাতছানি,আমার স্মরণতোমার বরনস্বার্থকতাই মানি।   স্বপ্ন দেখেছিবাঁচতে চেয়েছিমনেতেই কথা বলা,ভরসা পেয়েছিহারিয়ে গিয়েছিএভাবেই পথ চলা।   মোর অনুভূতিসরল আকুতিস্থান দিলে হৃদয়েতে,তব প্রশস্তিঅনুপম দ্যুতিআছে মোর পরাণেতে।   সমাজের দায়চাই পরিচয়স্বপ্ন রয়েছে সাধা,সুপ্ত আশায়শুভ পরিনয়তাই গাঁটছড়া বাঁধা।

বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি

বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি-কৃষ্ণ বর্মন   বুদ্ধজীবি বুদ্ধজীবি ,বুদ্ধি তোমার কই?আমার ছেলে অনশনেঅপরাধী বই। বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি,তুমি কি ঘুমাও?আমার মেয়ের গর্ভপাতযন্ত্রনাটা ফাও। বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি,বোধে অনটন?তাই বুঝি না লেখারকরেছো আজ পন? বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি,তোমার মাথায় ছাদ,ওদের খোলা আকাশযৌবনে বরবাদ। বুদ্ধিজীবি বুদ্ধিজীবি,তোমার কলম কই?শেষযাত্রায় ছড়িয়ে দিওতোমার শব্দ খই।

মূল্যবান

মূল্যবান-সৌরভ ঘোষ   পরিত্যক্ত নদীর বাঁকে চুপচাপমাঝে বান এসেছিলো,চলে গেছে,আরও বেশি ফাটাফুটি ফেলে কলমের ঠকিয়ে দেওয়া লেবু গাছ আমিকাঁটাগাছের প্রথম ফল শেষ ছিল… জানি,অশোক গুল্মের মত একদিন কাটা পড়বআমাকে সমূলে উপড়ে ওরা পুঁতে দেবেভালো জাতের আসল কদম চারা তা’হলে,অন্তত কয়েক বছরেই কাঁচা কাঠ পাওয়া যাবে…

মনের কথা

মনের কথা-পায়েল সাহু   মনের কথা মনই জানেহাত বাড়ালেই বন্ধু মানেআকাশ যখন মনের স্বরূপমেঘের আড়ালে প্রেম অটুট । আবার যখন মনের মতিউজান বেয়ে দ্রুত গতিমন কেবলই পিছুটানেসময় শুধু প্রমাণ গোনে । তুষার শুভ্র হিমালয়ের মতোকালিমা বিহীন মেঘের মতোমন দুটি চলে উজান বেয়েমনের সংসার সাজিয়ে নিয়ে ।

প্রেম

প্রেম-সুজিত চ্যাটার্জী   এ ঘরে সকাল আসেনা অনেককাল।রঞ্জনার চোখের তলার রাত্রিছড়িয়েছে সারা ঘরময়।হাহাকার বৃষ্টি থামবেনা বুঝি আর।সেই কবেকার স্মৃতিফাটা দেওয়ালের মালাহীন ছবিটা।তার পা টিপেটিপে আলতো চলে যাওয়াবিশ্বাস হয়না আজও, তুমি তো আছ,হ্যাঁ, তুমি আছ। তাই আমিও আছি,বাঁচি, তোমার সঙ্গেরাতের সঙ্গে, ভালবাসার সঙ্গে, আমৃত্যুপ্রেম সঙ্গোপনে।

হিসেব

হিসেব-তপন কুমার মাজি   কর্ষিত হচ্ছে মানবমাটি লক্ষ লক্ষ বুলেটে,বারুদবীজ হচ্ছে‌ বোনা মগজের গিঁঠে গিঁঠে ! আসছে টাকা হাওয়ায় ভেসে,উড়ছে টাকা হাওয়ায়,মাটি কামড়াচ্ছে ভুখা মানুষচরমতম ক্ষিধায় ! পাল্টে যাওয়ার সংবিধানে যাচ্ছে পাল্টেক্ষমতার সীমারেখা,ঘুর্ণায়মান পৃথিবীর সাথে ঘুরে যাচ্ছেইতিহাসেরও চাকা! ঘুরতে ঘুরতে সুতোটা যেদিন হয়ে যাবে ঢিলে,সেদিন টুকরো টুকরো হয়ে যাবে সবই হিসেবের গরমিলে!

মধ্যরাতের কবি

মধ্যরাতের কবি-শংকর হালদার   মায়াবী কাজল আঁচল মোড়কে মুড়েসৃজনের ভাষা খোঁজে মধ্যরাতের কবি ।নিশীথের সংলাপ, মিছিলের রেষারেষিপ্রকৃতির রদ-বদল,সাতকথার আর্জিতে কলম নিবের আলিঙ্গন।সৃজন তরঙ্গ উপচে পড়ে নগ্ন বারান্দায় ,ঝিঁঝির আর্তনাদ, তমসার বৈরাগ্য চেতনার উম্মেষ ,গা ভাষায় কলমের কালির বমিতে ।যামিনীর উদযাপন, তন্দ্রার অঞ্জলি লেখনির ভূমিতে ,একে একে জন্ম নেয় মধ্যরাতে কবির হাত ধরে ।

নতুন প্রেম

নতুন প্রেম– সোহিনী সামন্ত কচি পাতার মতন গজিয়ে ওঠা নতুন প্রেম,নতুন কাগজের গন্ধ খোঁজে অজান্তে।হাত ধরাধরি খেলায় উন্মাদনা বেড়ে ওঠে,সিক্ত স্পর্শের চুম্বনের রিক্ত ঠোঁটে।লাভ বার্ডরা খুনসুটি করে বিরক্ত জঙ্গলে,খেলাখেলির মাঝে প্রেমের পরশ লাগে নিঝুম অঞ্চলে।রাত বাতি নিভে যায় নিশুতি আলিঙ্গনে,তমোঘ্ন নিঃশেষে অদ্ভুত নিশীথের গভীর প্রলোভনে।

পাপ

পাপ-বিভূতি ভূষন বিশ্বাস     পাপের কথা বলিলেই মনে হয়,চরিত্রের অপচয়।প্রাকৃত ভৌতিকবাদই হলো,পাপের পরিচয়। যেমন ম্যালেরিয়ার পরিচয়, মারাত্বক জ্বর।প্রকৃতির কবলিত ভোগবিলাসে,পাপিষ্ঠ সব নর।পুণ্য,রাজ সিংহাসনে বসলে,পাপ হয় তার চর।