-
কবিতা- সুখ দুঃখ
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
সুখ দুঃখ
-অনিমা দাসসুখ দুঃখে গড়া জীবন
তাদের নিয়েই চলা ,
দুঃখ আসবে সুখ আসবে
নিয়মের এই খেলা ।দুখের পরে সুখ যে আসে
জীবনের এই খেলায় ,
দুঃখে মোরা ভাসবো নাতো
থাকবো না তো হেলায়।সুখ দুঃখ পাশাপাশি
বড়ই কাছাকাছি ,
সুখ দুঃখ নিয়েই আমারা
সহজ ভাবে বাঁচি।চলছে খেলা জগৎ জোড়া
দুলছি মোরা দোলায় ,
জগতের এই কঠিন খেলায়
জ্বলছি শুধুই জ্বালায়।সত্য কখনো মিথ্যা হয়
মিথ্যা কখনো সত্য ,
গায়ের জোরে সব হয়ে যায়
লাগে না কোন তথ্য ।সুখ দুঃখের জোয়ার ভাটায়
ধরো শক্ত করে হাল ,
সামলে চলা এগিয়ে যাওয়া
থাকবে চলার তাল ।সুখ পেতে চায় জনে জনে
থাকে সবার মনে ,
দুঃখ সে তো ,যায় না ভোলা
থাকে সবার সনে। -
কবিতা- স্নেহময়ী মা
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
স্নেহময়ী মা
-অনিমা দাসমা বলতেই প্রথম ছোঁয়া আলতো হাতে
ভালোবাসায়।
যত্ন করে আগলে রাখা বুকের মাঝে
স্নেহ মায়ায়।
মা বলতেই দিবা রাত্রি কাজের মাঝে
হারিয়ে যাওয়া ।
সারা দিনের পরিশ্রমে নিজের খুশি
খুঁজে পাওয়া ।
মা বলতেই শীতল পরশ ভালোবাসা
আদর মাখা।
শত কষ্টের মাঝেও হাসি মুখে সব কিছু কে
মানিয়ে নেওয়া ।
মা বলতেই আদর আবদার খুনসুটি আর
চাওয়া পাওয়া ।
যথাসাধ্য ভালো রাখার চেষ্টা চলে মনে মনে
যায়না বোঝা ।
মা বলতেই প্রথম শেখা মায়ের কাছে
প্রথম বুলি ।
মায়ের হাতে হাতটি ধরে এক পা দু পা
এগিয়ে চলি।
মা বলতেই দুঃখ হলেও ভালো থাকার
কঠিন প্রয়াস ।
এভাবেই তো চালিয়ে যাওয়া যতক্ষণ
থাকবে নিঃশ্বাস ।
মা বলতেই তেল কালি আর মলিন শাড়ী
ঠোঁটের কোণে একটু হাসি ।
হাজার কষ্টের মাঝেও তাকে থাকতে হয় যে
একটু খুশি ।
মা বলতেই শান্তির সেই আচল খানি নিরাপদে
বেঁচে থাকা ।
সারা জীবন সহজ ভাবে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে
চলা । -
কবিতা- জীবনের রঙ্গ মঞ্চ
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
জীবনের রঙ্গ মঞ্চ
-অনিমা দাসবিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার
সুযোগ পেয়েছি ।
কখনো কন্যা কখনো স্ত্রী কখনো বৌ মা
কখনো মা আরো ভিন্ন চরিত্রে ।
প্রতিটি চরিত্রে নিখুঁত পারফরমেন্স দেওয়ার
চেষ্টা অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছি।
অভিনয় করতে গেলে তো বেষ্ট টা দিতে
সকলেই চায়।
টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে হয়।
জীবনের এই রঙ্গ মঞ্চে কখনো হেসেছি
কখনো কেঁদেছি আবার কখনো
ভালোবাসার সাগরে ভেসেছি ।
আর প্রিয় জন দের সুখী রাখার চেষ্টা চালিয়ে
গেছি জীবন সংগ্রামে ।
মায়ের ভূমিকায় পদার্পণ করা,
জীবনের এক নতুন মোর ।
মাতৃত্বের স্বাদ আধো আধো কন্ঠে মা ডাক শোনা।
সন্তানের নরম হাতের শীতল স্পর্শ ,
এক অনন্য অনুভূতি।
তার পর তাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে
বড় হতে দেখা এটাই জীবনের পরম প্রাপ্তি।
ক্ষুদ্র এই জীবন ঘটনা বহুল রঙ বেরঙের
কত কাহিনী জীবন পটে ধরা পড়ে ।
রঙ্গ মঞ্চে অভিনয় করতে করতে কখনো
ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে যায় এই শরীর মন ।
সেই সময় এই একঘেয়েমি থেকে ছুটি চায়
এই মন অনাবিল আনন্দের খোঁজে ।
আকাশ বাতাসের সঙ্গে একাত্ম হতে চায়
গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকা চঞ্চল হৃদয়।
নীল সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে মিশতে মন
ছুটে যায় দূর বহু দূরে ।
প্রকৃতির সাথে কিছুটা সময় একাত্ম হতে ।
আবার জীবনের রঙ্গ মঞ্চে ফিরে আসা ।
এভাবেই চলে জীবন । -
কবিতা- শান্তি নিবাস
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
শান্তি নিবাস
-অনিমা দাসচাই না আমি অট্টালিকা
চাই ছোট্ট একটা বাড়ি ,
আমার চাওয়া ক্ষুদ্র অতি
আমি যে সাধারণ নারী ।শান্তি নিবাস নাম হবে তার
শান্তি বিরাজ মান ,
হাসি খুশি থাকবে সবাই
রাখবে সবার মান।আনন্দ রাজ করবে বিরাজ
কম কিছু তো নয়,
সারা জীবন রাখবো ধরে
করবো মোরা জয়।থাকবে সেথায় ফুল বাগিচায়
রঙ বাহারি ফুল ,
প্রভাত হতেই ফুল তুলতে
ছড়িয়ে এলো চুল ।ফুলের সুবাস ভোরের হাওয়া
স্নিগ্ধ তনু মন ,
ভালো রাখার ভালো থাকার
করেছি যে পণ।ফুল বাগিচায় ফুল দলে
রঙিন প্রজাপতি ,
পাখায় পাখায় রং মেখে
ওই খেলবে কানামাছি ।পায়রা গুলো ঘুলঘুলিতে
করবে বক্ বকম্ ,
শস্য দানা ছিটিয়ে দিলে
খুঁটবে সারাক্ষণ ।মুক্ত বায়ু চলবে সেথা
করবে কানাকানি ,
প্রাণের পরে শীতল বায়ু
দেবে হাত ছানি।বাড়ির উঠোন গন্ডি টানা
নয় তো কিছু কম ,
খোলা আকাশ মাথার উপর
প্রাণ ভরে নিই দম।তুলসী তলায় সন্ধ্যা প্রদীপ
জ্বলবে সন্ধ্যা কালে,
শুদ্ধ মনে ভক্তি ভরে
চলবে নিত্য তালে।বাড়ি টুকু গড়তে গিয়ে
কত রক্ত ক্ষয় ,
নিজের বাড়ি ছোট্ট বাড়ি
তাতেই হবে জয়।ছোট্ট বাসা ছোট্ট আশা
হোক না সবার তরে ।
সেই টুকু তেই খুশি থাকুক
সারা জীবন ধরে ।