• কবিতা

    কবিতা- অ- চেনা গল্প

    অ- চেনা গল্প
    -চ‍্যাটার্জী অমল

     

     

    প্রিয়তমা এ কেমন বিচার তোমার ?
    বিকেল ফুরোলেই কিশোরী জ্যোৎস্না যখন নিশান
    ওড়াতো বাতাসের দুয়ারে , মনের ছোট্ট উঠোনে এক
    বুক স্পর্ধা নিয়ে গল্প লেখার ছলে পেতে চাইতাম
    তোমার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য‌। প্রণয়ের গন্ধমাখা কিছু
    অক্ষরে সাজানো যে গল্পের পটভূমি লক্ষ্মীর ঝাঁপির
    মতো আগলে রেখেছিলাম বুকে। যদিও তোমার
    আভিজাত্যের বীজ থেকে জেগে ওঠা কর্কশ
    উপেক্ষার চুম্বন অশ্বমধের ঘোড়ার মতো দাপিয়ে
    বেড়ালো গল্পের শরীর ।

    অথচ কী আশ্চর্য দ্যাখো… বিধাতার কী নিষ্ঠুর
    পরিহাস! বিষাদের দাউদাউ উত্তাপে স্মৃতির খোপ
    থেকে যখন বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝড়ছিল পঙ্গু কিছু
    কালচিটে ভাবনা,বেদনার জোয়াল কাঁধে ধুঁকতে
    ধুঁকতে একে একে যখন মুছে যাচ্ছিল স্বপ্নের রঙীন
    ঢেউগুলো , সেই সন্ধিক্ষণে সুগন্ধি মশলার মতো
    ভালোবাসার সুগন্ধ ছড়িয়ে জানান দিলে তোমার উপস্থিতি।

    সময়ের কঠোর ডানায় চড়ে এক এক করে পেরিয়ে
    এসেছি অনেকটা পথ , আগের ভুল- ভ্রান্তির সব
    হিসেব সরিয়ে সেই তুমি এলে যখন অনাদরে রক্ত
    শুকিয়ে কালচে হয়েছে হৃদয়ের প্রতিটা ভাঁজে।চেনা
    পৃথিবীর মসৃণ বাগান আগন্তুকের পায়ের চাপে হলো
    এলোমেলো , বিড়ম্বনার লোলুপ লালা হড়কা বানের
    মতো নিয়ে এল একরাশ অস্বস্তি।ভাবিনি তুমি আবার
    আসবে ফিরে কোন এক অ-চেনা গল্পের ঝুলবারান্দায় ।

  • কবিতা

    কবিতা- ধৈর্য

    ধৈর্য
    চ্যাটার্জী অমল

     

     

    গজগজ করলেই তোমার মুখের ভূগোলটা কেমন যেন
    বদলে যায়।চলন বলন অবুঝ হয়ে ভাঙে বেসুরো পথ।
    দুর্বাসা মনে তেল সিঁদুর যতই চড়াও ভবি ভোলবার নয়,
    ব্যাজার মুখে যুদ্ধ করার ছবি সে তুলবেই।
    হয়তো ভরপেট্টা ইচ্ছেগুলো জোয়ালের ভারে ফিকে
    হয়ে যায় বলেই ভালোবাসার স্বপ্নগুলোও হয়ে যায় তেতো।

     

    তালে তাল মিলিয়ে টপকাতে হয় সিঁড়ি। হিসেবের কড়ি
    ফসকে গেলেই হুঁস হারিয়ে ঠাঁই হয় ঠেলাগাড়িতে।
    তখন শাখাপ্রশাখাময় ভাবনার আড়ালে সুরেলা দীর্ঘশ্বাস
    লিখে যায় মৌন হাহাকারের সংলাপ,অসময়ে নিঃসঙ্গ
    তরীটি বাইতে বাইতে স্মৃতির কৌটো খোলে স্বপ্নের নীল পাখি।

     

    হাসি কান্না সুখ অ-সুখের আস্ফালন থাকবেই পাঁজরের
    খোঁয়াড়ে, জীবনের ব্যাকরণে কিছু সাধ কিছু না পাওয়ার
    ধারাপাত থেকেই যায় পরম পাওয়ার বাহুবন্ধনে বন্দি হতে।
    গতিময় জীবনে শত ব্যস্ততার মাঝে কারণে বা অকারণে
    ধৈর্য না হারালেই সুরের অঞ্জলীতে সাজবে মানব তীর্থ।।

  • কবিতা

    কবিতা- লুকোচুরি

    লুকোচুরি
    -চ্যাটার্জী অমল

    প্রকাশ্যে তোমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ওরা
    কারণ ওদের গুণের পদাবলীর প্রতিটি শব্দ বেশ
    নিয়ম মেনে ঝোলে তোমার মন্দিরের দেয়ালে
    ওরা জানে কাজটা তুমিই পারো বেশ নিখুঁত ভাবে।

    হৃৎপিণ্ডের সুরেলা স্পন্দনের সাথে সহনে-দহনে
    মিলিয়ে নিয়েছো ওদের সপরিবারে। উপাসনায় বুঁদ
    হয়ে ভজনা করো ওদের নামগান, আবদার করলেই
    অসামান্য হয়ে কবরীতে জড়িয়ে নাও ফুলের মালা।

    সাবলীল ভাবে লোকজন জানে তুমি কারো সাতেও
    নেই পাঁচেও নেই অথচ পর্দার আড়ালে কাঁঠালি কলা
    হয়ে বিশেষ ঘটেই পূজো নাও।ভাবছো লোকজন
    কত ন্যাকা কিছুই বোঝে না,আরে বাবা পড়শি বাড়ির
    ভাজা মাছের গন্ধ শাক দিয়ে ঢাকা যায় না।

    ভ্রমণের মেঠোবুকে বন্ধনহীন মুক্ত হাওয়ায়
    উড়িয়ে দাও সত্যের পতাকা, হাওয়ার নির্যাসেই মিটুক
    অভিমানী জনগণের অসীম তৃষ্ণা। বিশ্বাসটা
    কড়াপাকের হলে নিষ্প্রদীপ ঘরেও জীবন বিণায়
    সুর তোলে সম্পর্ক।

  • কবিতা

    কবিতা- যন্ত্রণার নীল থেকে

    যন্ত্রণার নীল থেকে
    -চ‍্যাটার্জী অমল

     

     

    মানিয়ে নিতে নিতে আর মানসম্মত রইলো না
    আত্মসম্মান, দিনে দিনে অস্তিত্বের টানাপোড়েনে
    বুকের উঠানে জারি হলো বিলাপ আর দীর্ঘশ্বাস…
    দিনগুজরানে ক্লান্ত, অবসন্ন হৃদয় আচ্ছন্ন বুনো গন্ধে,
    একাকীত্বের মায়াবী প্রহরে বেলা অনেকটাই
    গড়িয়েছে, প্রতিদিন একটু একটু করে পুড়তে পুড়তে
    দিগন্তের দড়ি প্রায় ছুঁই ছুঁই, সমস্ত তার কেটে কেটে
    কেটে কেটে সকল সৌন্দর্য হারিয়ে অলস শরীরটা
    এগিয়ে চলেছে অন্তিম শয়ানের দিকে পিছুটানহীন ভাবে ।
    মাঠের একছত্র দখল নিয়েই ছল আর বলের
    গুপ্তদ্বার লড়াই, লালসার তোড়ে ঘরময় ভনভন
    করছে যত চিৎকার, চেঁচামেচি,শোরগোল, বোধের
    বিভাজনে বেহেশতের পাখির মতো কণ্ঠ উঁচিয়ে নৃত্য
    করছে বর্ণমালায়। কে পাবে সীমানাবিহীন মালিকানা
    আর কার রক্তের খোঁজে শরীর ছোঁবে ফেরাউনের
    বর্শা। দেমাকে মটমটে ইচ্ছেগুলো বোঝে না ক্ষণিকের
    অতিথি আমরা, বিনা কসরতে একলপ্তে পেতে চায়
    বটুয়া ভরা সুবর্ণদ্বীপ।
    আসলে অল্পতেই আমরা অসহিষ্ণু, বুঝিয়ে দিলেও
    কিছুতেই বুঝিনা সমঝদার না হলে সমঝোতা স্মারক
    হয়ে উঁকি দেয় পলেস্তারা খসা দেওয়ালে।
    আপাতদৃষ্টিতে যোগান ও চাহিদা আনুপাতিক না
    হলেই ধূপ জ্বেলে গঙ্গাজল ছিটিয়ে বে-আব্রু হয়
    কালোবাজারি।।

  • কবিতা

    কবিতা- অ- চেনা গন্ধ

    অ- চেনা গন্ধ
    -চ‍্যাটার্জী অমল

     

     

    প্রিয়তমা এ কেমন বিচার তোমার?
    সন্ধ্যা গড়ানো কিশোরী জ্যোৎস্না যখন তোমার কোলজুড়ে বসে
    একফালি চুমু রেখে যেত দুধ সাদা শরীরে, তখন একটা
    গল্প লেখার ছলে প্রতিদিন পেতে চাইতাম তোমার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য‌।
    যে গল্পের কুশিলব তুমি আমি আর ছিল আমাদের
    চার দেওয়ালের সুখ সুখ ভালোবাসার নৈবেদ্য। যদিও
    আমাদের গল্পটা চার দেওয়ালে বন্দী হবার আগেই
    তোমার আভিজাত্যের কর্কশ উপেক্ষায় শিরোনামহীন হয়ে
    আজো রয়ে গেল।

    অথচ কী আশ্চর্য দ্যাখো… বিধাতার কী নিষ্ঠুর পরিহাস!
    হৃদয়ের বাদশাহী সড়কে স্মৃতির খোঁড়ল চুয়ে যখন
    নির্দ্ধিধায় টুপটুপ করে ঝড়ছিল ক্ষীণচেতা কিছু স্মারক।
    জীবনের পটভূমে তুমি মূল্য না দিলেও ইতিহাস ভেঙে ভেঙে
    যখন জানান দিচ্ছিল প্রহসন হয়ে যাওয়া তাদের যৌবনের ইতিহাস,
    তখন থোড় বড়ি খাড়া ছায়াছায়া আলোর ইমারতে
    অতীতের ভুল ভেঙে সেই তুমি এলে নিষিদ্ধ এক গল্পের খোঁজে…
    তুমি এলে যখন অপেক্ষার ভারে ফুলগুলোর বুকে জমাট বেঁধেছে
    থোকা থোকা তাজা রক্ত।

    চেনা পৃথিবীর মসৃণ বাগানে হঠাৎ অচেনা পায়ের ছোঁয়ায়
    এলোমেলো হলো ধ্রুপদী শব্দের আলাপন,
    বিড়ম্বনার বিপুল বিশালতা হড়কা বানের মতো নিয়ে এল
    একরাশ বিব্রতকর অস্বস্তি। চেনা হলেও ভাবিনি
    তোমার সাথে আবার দেখা হবে এমনি করে
    কোন এক অ-চেনা গন্ধে শূণ‍্যতার ঝুলবারান্দায়।

  • কবিতা

    কবিতা- পরিণতি

    পরিণতি
    -অমল চ্যাটার্জী

     

     

    সেই ভুল আবার করলে
    পইপই করে বলেছিলাম কাক জোছনার ধারালো রূপে
    মশগুল হয়ে মজে যেওনা,পসরা সাজিয়ে বসত গড়তে
    ভোরের ঢের সময় বাকী। নিদারুণ অবজ্ঞায় আমার কথা
    কেটে উলঙ্গ করলে। অতি উৎসাহে ইচ্ছেদের জাগিয়ে
    মরিচিকার পিছনে ছুটলে আলো ভেবে আগুনের ডালি
    ধরতে। সওয়াল জবাবে জীবনের কাঠগড়ায় ভাঙ্গবে
    তবু মচকাবেনা। অনুশোচনার ছিন্ন কুঠুরিতে প্রায়শ্চিত্তের
    মধু ঢেলে শাপমোচন করলে ভুল সিদ্ধান্তের।

    ঘটনার আর কী দোষ বলো, তাকে ডেকে এনে
    ফুল চন্দন দিয়ে বরণ করার পর বুঝতে পারলে বেকুব
    বনেছো। ভাবনার বলিরেখায় খুঁত ধরলেই তুরীয়
    মেজাজে কার্তুজের মতো ধেয়ে আসে এলোপাথাড়ি
    চোখাচোখা অবাধ্য শব্দ। ঢাক পিটিয়ে গুষ্টির নাড়িভুঁড়ি
    বার করে উপভোগ করো নিজের ঔদ্ধত্য।

    তোমার ছাদ বাগানে অনেক ফুল-ই তো ফোঁটে, তাদের
    কেউ কেউ গোলাপ হয়ে সুরভী ছড়ায় আর কেউ কেউ
    দেখনদারি হয়ে বাগান সাজায় । সবাইকে কী তুমি
    গোলাপ বলো ? জানবে জানলায় দাঁড়িয়ে মায়াময় সবুজ
    প্রান্তর আর নীল আকাশ যতটুকু দেখা যায় ততটুকুই সত্যি।।

  • কবিতা

    কবিতা- আমি বাঁচতে চাই

    আমি বাঁচতে চাই
    -চ্যাটার্জী অমল

    শুনতে পাচ্ছ? মানব জাতি…
    আমার কথা শুনতে পাচ্ছ তোমারা…
    আর কতকাল? বলি আর ক-ত-কা-ল আমার
    হাত পায়ে শেকল পরিয়ে পথ দেখাবে অচেনা আলোয়?
    দু’হাত উজাড় করে সবকিছু নিয়েও এতটুকু কমেনি
    তোমাদের লালসার পরিমাপ! সেই কোন প্রত্নকাল থেকে
    কালো মেঘের বারান্দায় সলতে দিচ্ছে গভীর দূরভিসন্ধি,
    মরীচিকাকে আলো ভেবে রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞাপনে দোল খাচ্ছে
    প্রতারণার বিষাক্ত ফণা। সামনে তাকিয়ে দেখ মারাত্মক
    দুষণে কালের গর্ভে ডুবে যাচ্ছে বসন্তবর্ষীয় আয়ু।
    কাল-মহাকালের ভেতর সময়ের ডুমো মাছি ভুল বানানে
    হারিয়েছে দিন-রাতের বৈশিষ্ট্য, বারবার জোড়াতালির
    মহামন্ত্রে গুনছো ভুলের মাশুল।

    আড়াল আবডাল নয়, বুকে কান পাতলেই শোনা যায়…
    এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছে…
    হতাশার আগুনে পুড়ে যাওয়া পৃথিবীর করুণ আকুতি,
    আমি বাঁচতে চাই… আমি বাঁচতে চাই…
    শুনছো তোমরা… আমাকে আমার মতো বাঁচতে দাও…
    বুকে আমার নতুন দিনলিপির পর্বে পর্বে মাটির গন্ধ
    বয়ে আনুক প্রাচীন মাদকতা, জীবনের ক‍্যানভাসে
    নিশ্চয়তা নিয়ে লুটিয়ে পড়ুক ভেঙে যাওয়া সমাজের ভবিষ্যত।
    সামাজিক অনাচার ঠেলে সুহাসিনী হোক ভোরের সূর্য,
    গোধূলির ভাটিয়ালি নদী, আকাশ, বাতাস, পাহাড়, সাগর,
    পশু, পাখি সকলেই। এড়িয়ে যেওনা… জরাজীর্ণ সভ‍্যতা…
    তোমরা এড়িয়ে যেও না, আমার কথা শোনো…
    আর আমি থাকবো না নিষ্ক্রিয় দর্শক, গিলোটিনের আলোয়
    ঘাতক হয়ে কিছু রক্তের বিনিময়ে একুশ শতকের আয়নায়
    ঝরাব সমৃদ্ধ পাতার জীবনী।

  • কবিতা

    কবিতা- তুমি ছিলে বলেই

    তুমি ছিলে বলেই
    – চ‍্যাটার্জী অমল

     

     

    ভেসে যেতেই তো চেয়েছিলাম,
    ভাগ‍্যের চিরসত‍্য ঘূর্ণনে চিরাচরিত ঝাঁঝালো মারপ‍্যাঁচ
    আমি বুঝেছিলাম হাড়েহাড়ে।
    আশা ভরসার কাঁটাঅলা ঘৃণ্য ছলচাতুরির পাল্লায় পড়ে
    নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে বোধের পাদটীকায় দাঁড়িয়ে
    চুপ ভঙ্গিতে সাজিয়েছিলাম ভবিষ্যতের রূপকাঠামো।

    জীবনের উঠোন জুড়ে চৌষট্টি কলার দিঘিতে
    তলিয়ে যাবার আগেই অকস্মাৎ বহুকালের জমাট তৃষ্ণায়
    অমৃতের নির্যাস নিংড়ে উন্মাদিনীর মতন এসে বলেছিলে,
    এই শুনছো তুমি… ভেঙে পড়োনা, আমিতো আছি…!

    সুহাসিনী হয়ে বিপুল আগ্ৰহে আদর মাখা হাত
    না বাড়ালে কবেই আমার অস্তিত্ব মাধুরীহীন হয়ে
    তুমুল ভেসে যেতো খড়কুটোর মতো।
    শুধু তুমি ছিলে বলেই সুশোভিত সুদূরপ্রসারী সুনীল
    আকাশ, জল, মাটি,সবুজ স্নেহের চারু উপাচারে
    সাজানো মায়াবিনোদিনী মহাবিশ্বের প্রকৃত সৌন্দর্য
    থেকে দৃষ্টিরস বঞ্চিত হয়নি।

  • কবিতা

    কবিতা- তুমি মুক্ত

    তুমি মুক্ত
    – অমল চ্যাটার্জী

     

     

    অবশেষে………
    হ্যাঁ অবশেষে ভাবনার দীপ্ত স্বরে তুমি দিলে আজ মুক্তি।
    জীবনের ক্যানভাস থেকে খসে যাওয়া কিছু পাপড়ির মতো,
    অবলীলায় ভালোবাসাকে দিলে বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে,
    একটা সীলমোহরে বললে তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন।
    একাকী প্রাসাদে ব্যাথার প্রহর সাজিয়ে দু’হাত পেতে নিলাম
    অগ্নিময় যন্ত্রণার কালসাপ।

    আয়ুর কঙ্কাল চোখে বৃদ্ধ তানপুরার নির্জন ঘরে স্মৃতির চাবিতে খোলে
    অনাবৃত তালা। হাজারো ব্যস্ততার ভিড়ে সুর নিয়ে আর সুরমোহন হয়নি
    অতীত বসন্ত।
    জীবনের যোগফলে সময়ের নামতা খসা দিন মাস বছরের
    জঞ্জাল বয়ে সে ক্লান্ত। স্মৃতিশালার ধুলোমাখা দেরাজে
    হারগিলে স্মৃতিগুলো ছবি আঁকে বেসুরো হওয়ার যন্ত্রণার।

    সম্পর্কের পাঁজরে বেশরম প্রতীক্ষার ধারাপাতের হল অবসান,
    প্রজাপতির ডানায় ভর করে একাকী স্বপ্ন ছোঁয়ার আকুল আকুতি
    হারিয়ে যায় বোহেমিয়ান চাঁদের বিরোহী গল্পে।
    রাত শেষে কত স্বপ্নের বাসর হারিয়ে গেল নির্বাক দীর্ঘশ্বাসের একমুঠো কুয়াশায়।
    কফিনে যতনে শয়ান একটা স্বপ্ন ছোঁয়ার অসমাপ্ত কবিতার শিরোনাম
    “তুমি মুক্ত” ।।

  • কবিতা

    কবিতা- মনের আড়ালে

    মনের আড়ালে
    -চ্যাটার্জী অমল

     

     

    নাওয়া খাওয়া তো দূর অস্ত
    তুমি জানতে ওই বাড়িতে আমি যাবো না।
    বিষাদের স্মৃতিগুলো এখনো বহন করে
    গোলাপের গায়ে অবাঞ্ছিত গন্ধ। সুপরিকল্পিত
    থেঁতলানো আলিঙ্গনে সম্পর্কের সুরত হয়েছে নষ্ট।

    তুমি জানতে ওদের মতো আমি বিদ্যের বাবু মশাই নই
    পালিশ করা আধুনিক সভ্যতার সুড়ঙ্গ ফুঁড়ে
    ঠোঁটে এখনো বাসা বাঁধেনি বিশেষণের তীব্র বিষ।
    পারিনা ওদের মতো ছলাকলায় কব্জি ডুবিয়ে
    ছলচাতুরির বেসাতি।

    পানকৌড়ির বাসনা নিয়ে অনাস্বাদিত সুখের সন্ধানে
    লালসার লকলকে ছোবলে স্বীকার করলে ওদের আমন্ত্রণ,
    স্বীকার করলে ওদের আতিথেয়তা, হয়তো বুঝেছিলে
    ওখানেই প্রতীক্ষা করছে অনন্ত সুখের ইশারা ।

<p>You cannot copy content of this page</p>