• কবিতা

    খেলাঘর

    খেলাঘর
    -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

     

     

    প্রথমবেলায় প্রথম প্রেমের সেই সে খেলাঘরে।
    স্বপ্নগুলো সেজেছিলো খুশীর হাওয়ায় ভরে।

    টুপ টুপ টুপ বৃষ্টিধারায়, ভিজত মনের উঠোন।
    ঝর ঝর ঝর ঝর্ণা হত -শুনতো না ‘মন’ বারণ।

    চোখে চোখে কোন ইশারায় বুকের ধুকপুকানি।
    একটু চাওয়ার অনেক পাওয়ায় ভরতো হৃদয়খানি।

    রামধনুর ওই সাতটি রঙে রাঙিয়ে দিতে তুমি।
    প্রজাপতির রঙীন পাখায় উড়ে যেতাম আমি।

    স্ফটিক চোখের আলতো ছোঁয়ায় ছুঁতে আমার মন।
    দিবানিশি স্বপ্নে তুমি আসতে সারাক্ষণ।

    কবে যেন গেলে চলে এমন বাদলদিনে।
    এখনো কি ভাবো আমায় একা, আনমনে??

  • অণু কবিতা

    ভাবনা

    ভাবনা
    -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

    যা চেয়েছি,সবই কি আর পাওয়া হলো ?
    যা পেয়েছি,তাও কি হলো মনের মতো… শুধুই ভালো ?

    ইচ্ছে হলেও অনেককিছু হয়নি করা।
    যা করেছি,তাও তো সে সব ভুলে ভরা।

    অনেককিছু দেখতে চেয়েও হয়নি দেখা।
    দেখতেও যা চাইনি মোটে, বাধ্য হয়েই দেখতে থাকা।

    যা মনে রাখার তাতো মনে রাখতে হবে।
    ভুলে যেতে চাই যেগুলো –সেগুলো কি ভোলা যাবে??

  • কবিতা

    পাপের আঁখর

    পাপের আঁখর
    -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

     

     

    ইতিহাস পথ বেয়ে আসে,
    অতীত,বর্তমান, ভবিষ্যৎ মিলেমিশে যায়-
    লোভ,উচ্চাশা,হিংসা ও দ্বেষে।
    জয়ের অদম্য বাসনা মনকে বিষাক্ত করে দেয়,
    জীবন এসে আঁধারে মেশে।

     

    ইতিহাস বারবার ফিরে ফিরে আসে,
    বোমা,গুলি,গোলা বারুদের গন্ধে,
    আজো বাতাসে মেশে-
    সন্ত্রাসের রক্ত মাখানো বিষ – বিদ্বেষে,দ্বন্দ্বে।

     

    কোনদিন আনন্দ,প্রেম,শান্তি,ভালোবাসা-
    পারেনি সে রাখতে ধরে,হৃদয়ের অন্ত:পুরে।
    সব আলো নিভিয়েছে,নিভে গেছে আশা।
    যুগে যুগে মানুষ লিখেছে রক্তাক্ত ইতিহাস,
    মানুষেরই পাপের আঁখরে।।

  • কবিতা

    বদল

    বদল
    -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

     

    বদলে যাচ্ছি আমরা সবাই।
    বদলে যাচ্ছে প্রেমের ভাষা।
    বদলে যাচ্ছে প্রতিদিনের যুদ্ধ হাজার।
    বদলে যাচ্ছে চেনা মনের ভালোবাসা।

     

    উষ্ণায়নের তাপ লেগেছে জীবন জুড়ে।
    ইচ্ছে হলেও সে তাপ থেকে যায়না বাঁচা।
    ঐতিহ্যকে আঁকড়ে রাখি যত্নে ভীষণ।
    যদিও মনের বসত এখন ভাঙা খাঁচা।

     

    গোধুলির রঙটা কেমন ছন্নছাড়া।
    উদাস বাতাস ডাক দিয়ে যায় চুপিসারে।
    মনটা কেমন অকারণেই বাঁধনহারা,
    ইচ্ছেরা সব মনের ঘরে কড়া নাড়ে।

     

    গভীর ফাটল যায় দেখা আজ হৃদয় পথে।
    বসন্ত আজ যায় চলে সব রঙ হারিয়ে।
    জীবনটা আজ সুর হারানো স্বরলিপি,
    ক্লান্ত পায়ের চলার পথ যায় ফুরিয়ে।।

  • অণু কবিতা

    চলে যাবার আগে

    চলে যাবার আগে
    -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

     

     

    একই ছায়াপথ ধরে চলে যেতে হয় বলে,চলে যাবো।
    আমি,তুমি,আমরা সবাই।
    একই পথ ধরে।

    কিন্তু যাবার আগে দু’টো প্রশ্ন,
    আমরা কি মানুষ?
    আমাদের মনে কি ভালোবাসা আছে?

    যদি তাই হয়,
    তাহলে চলে যাবার আগে,
    বেঁচে থাকার স্বল্প সময়টুকুতে,
    একই প্রেমের সুর বেজে উঠুক মনের বাঁশিতে,
    সকলের মনে।

  • কবিতা

    লজ্জা

    লজ্জা
    -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়
    তোরা নিজেদের “মানুষ” বলিস?
    আর মানবধর্ম হেলায় ভুলিস!
    মানুষের বেশে এই তোরা কারা?
    হিংস্রতায় তোরা পশুদের সেরা!
    এই পৃথিবীর স্নেহরসে বেঁচে আছে প্রাণ।
    যা কিছু পেলি, সবই পৃথিবীরই দান।
    তাও তোরা হিংসা হানাহানি করিস!
    বিষবাষ্পে এই পৃথিবীর হৃদয় ভরিস!
    ধর্মের নামে তোরা অধর্ম করিস।
    জাত,বর্ণ নিয়ে তোরা কী ভীষণ লড়িস!
    একদিন তো যাবিই চলে একলা সবই ফেলে।
    এইক’টা দিন থাকিস না হয় হিংসা বিভেদ ভুলে।
    কবে তোরা বুঝবি “মানুষ” কথার মানে?
    হাতে হাত রাখবি মানুষেরই টানে??
  • কবিতা

    ঐ দুটি চোখ

    ঐ দুটি চোখ
    -তমালী বন্দোপাধ্যায়
    ঐ দুটি চোখ হারিয়ে গেছে
    সবুজ গাছের ফাঁকে।
    ঐ দুটি চোখ ছুটতে থাকে
    আকাশ যেথায় ডাকে।
    ঐ দুটি চোখ স্বপ্নভেজা
    সমুদ্রেরই নীল।
    ঐ দুটি চোখ শান্ত নিঝুম
    দুঃখে ভরা ঝিল।
    ঐ দুটি চোখ সূর্যরাঙা
    বিশ্বাসে ভরপুর।
    ঐ দুটি চোখ সন্ধানী হয়
    খোঁজে অচিনপুর।
    ঐ দুটি চোখ হাসিমাখা
    সকালবেলার রোদ।
    ঐ দুটি চোখ ভালোবাসায়
    ভোলায় সকল বোধ।।
  • কবিতা

    মনে পড়ে

    মনে পড়ে

    তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

     

    স্বপ্নবিলাসী মন নিয়ে হেঁটেছি এতোটা দূর–
    স্বপ্ন পেরিয়ে মন আজ বড়ই বেদনাতুর!!

    প্রেমের অনলে জ্বেলেছি প্রদীপ উদাসী মনের ঘরে।
    আজও তো ভুলিনি তোমারই সে কথা একটি দিনের তরে।

    নিজেকে হারিয়ে দিশেহারা মন খুঁজেছে শুধু তোমাকে।
    একরাশ স্মৃতি তোমারি পথ চেয়ে,শুধু জেগে থাকে।

    ঝরা পাতাদের শব্দ তুলে দিনগুলো যায় আসে।
    ঝিকিমিকি তারা,জ্যোৎস্নার চাঁদ আকাশের বুকে ভাসে।

    কেন যে পারিনা, ভুলে যেতে ওই ঝরা পাতাদের টান!!
    মন,বোঝে না কেনো যে, রঙীন আলোয় নতুন পাতার গান।।

  • কবিতা

    ঝরাপাতার দিন

    ঝরাপাতার দিন

    তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

    পায়ে চলার পথ ঢেকেছে ঝরাপাতায়।
    শুখনো পাতায় শব্দতুলে  আনমনে হেঁটে চলেছে জীবন।

    অনেক কিছু হারিয়ে জীবন আজ ক্লান্ত।
    শুধু জমা-খরচের হিসাব আর পিছুডাক।

    এই শুষ্ক,রুক্ষ জীবনেতো এসে পড়েনা কোন রঙীন আলো!
    বসন্তের বাতাস লেগে জেগেতো ওঠেনা নতুন পাতার গান।

    একরাশ স্মৃতি শুধু অপেক্ষার দিন গোনে।
    সময়ের স্রোতে শুধু সময় চলে যায় আর ফিরে ফিরে আসে ঝরাপাতার দিন।

  • কবিতা

    জীবনবেলা

    জীবনবেলা
    -তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়

    দুঃখগুলো বুকের ভিতর আটকে রাখি।
    হাসি দিয়ে মনের যত কান্না ঢাকি।

    জীবনপথের আঁকাবাঁকা রাস্তাগুলো যাই পেরিয়ে।
    কেউ ধরেনা  – কেউ বা আবার হাতটি ধরে হাত বাড়িয়ে।

    সুখের সাথে সুখ মিশিয়ে জীবন সাজাই।
    মনের মধ্যে সবুজগুলো যত্নে বাঁচাই।

    এমনি করেই কল্পলোকের দ্বার খুলে দিই।
    টুপটাপ সব স্বপ্নগুলো বন্দী করি।

    স্বপ্নগুলো মনটা জুড়ে করে খেলা।
    এমনি করেই যায় কেটে যায় জীবনবেলা।

You cannot copy content of this page