-
কবিতা- একটি চুম্বন এর ইতি-কথা
একটি চুম্বন এর ইতি-কথা
-তমাল হাইতআজ চুম্বনের আতিশয্যে ডুবে থাকা গোলাপি ঠোঁট জোড়াও লুকিয়ে রাখে একদা কামড়ের ক্ষতচিহ্ন!
নাহ! ঠিক ক্ষতচিহ্ন নয়, সে তো কবেই গেছে মিলিয়ে।কিন্তু, আকস্মাৎ চিলেকোঠার ঘরে দেওয়ালে চেপে ধরা দুটো বলিষ্ঠ হাত যেদিন নামিয়ে এনেছিল নিকোটিনে পোড়া কালচে দুটো ঠোঁট সেই গোলাপি ঠোঁট জোড়ায়,
হতচকিত তুমি হয়তো ভেবেছিলে
পান করতে এসেছে তোমার ওষ্ঠ-সুধা !ঠিক যে মুহূর্তে সায় দেওয়া আহ্লাদী মন তোমার বন্ধ করেছিল চোখের পাতা,
টের পেয়েছিলে সুধা পান নয়, নিতে এসেছে কাঁচা মাংসের স্বাদ।নাহ! খুলতে পারো নি চোখ জোড়া, মন ও হয়ে ওঠেনি বিদ্রোহী।
শুধু নেমেছিল অশ্রুধারা দু’ চোখ বেয়ে, আর গোলাপি ঠোঁট দুটো তখন লালচে আভা নিয়েছে, তোমারই রক্তে।সে ক্ষতচিহ্ন তো কবেই গেছে মিলিয়ে,স্মৃতিটুকু আজও টাটকা।
-
কবিতা- রম্য কল্পনা
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
রম্য কল্পনা
-তমাল হাইতএকটা সকাল আলসেমি মাখা,
হঠাত ই মনে পড়ে তাকে, চেয়েছি বারেবারে যাকে।চকিতে মেসেজ, “আছো নাকি একলা ঘরে”!
ফিরিয়ে দিল উত্তর নিমেষে,
আমায় অবাক করে!“আছি একলা বসে নিরালায়, তোমার কি খবর ?
হঠাত ডাকলে যে বড়, হতে চাও নাকি যাযাবর!”ওই একটি কথায়, আশকারা পায় আমার চঞ্চল মন,
নিমেষে উধাও আলসেমি যত, ভেঙে ফেলতে উদ্যত সব বারণ।কল্পরাজ্যে হারাই দুজনে আদুরে স্পর্শে নব জাগরণ!
কামনার ভাষা দুই চোখ বোঝে,
কারণ খোঁজা মানা অকারণ।লেহিত চরণ সংযম ভাঙে, কামনার শীৎকার,
দলিত মথিত দেহপল্লব,
একে অন্যের শিকার।তীব্র আবেশে সঙ্গম সুখে, সমুদ্র হোক তোলপাড়,
কামনার নারী দিতে অমৃত বারি, এসো ফিরে বারবার। -
কবিতা- কবিতা নিয়েছে ছুটি
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
কবিতা নিয়েছে ছুটি
-তমাল হাইতকবিতা নিয়েছে ছুটি, নীল রঙা মলিন খামে
লিখে রেখে গেছে বার্তা তার ,
বিকোয় নাকি আজকাল রদ্দি দামে।সেই যে তুমি আকাশ নীলের স্বপ্নে বিভোর ছিলে,
ছুঁতে চাওয়ার বাসনা প্রবল; কষ্ট কি পাওনি মোটেও ,
যখন সে স্বপ্ন বিসর্জন দিলে!লোকে বলে কবি নাকি বাস্তবে না, কল্পনায় বাঁধে সুর
মাগগি গন্ডার বাজার সে বোঝে নাকি,
কলমের আঁচড় কেটে জীবন চাকা গড়াবে কতদূর!তাই কবিতা নিলো ছুটি, মলিন নীলচে খামে
বার্তা দিয়েছে স্পষ্ট, ফেরার আশা নষ্ট
বিকিয়ে দেবে না সে আর নিজেকে রদ্দি দামে। -
কবিতা- একাকীত্ব
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার।।
একাকীত্ব
-তমাল হাইতএকাকীত্ব ঘিরে ধরে কখনো,
নলি ঠেলে উঠে আসতে চায় দলা পাকানো কষ্ট!
ভিড়ের মাঝে থেকেও ঝাপসা সব মুখ!
মুখ? নাকি মুখোশের ভিড়ে বাঙ্ময় ব্যঙ্গ!
ছুটছি, অন্তহীন! তবু শেষ হয়না পথ।দিকভ্রান্ত পথিককে গ্রাস করে ক্লান্তি,
ঐতো বিস্তীর্ণ ফাঁকা প্রান্তর, সুযোগ একটু প্রাণখুলে শ্বাস নেওয়ার!
দলা পাকানো কষ্টটা কমছে, মিলিয়ে যাচ্ছে হারিয়ে যাচ্ছে গভীরে।নিঃশ্বাসের সাথেই প্রাণবায়ুর নিষ্কৃতি!
ঝাপসা মুখ মুখোশ এর ভিড়ের ইতি।
আহ্! লাভ হবে অপার শান্তি! -
কবিতা- ছুঁয়ে যাক
।। অমর নাথ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ।।
ছুঁয়ে যাক
-তমাল হাইতআমার কলমের সঙ্গী তুই এখন,
একলা থাকার সময়টা আকঁড়ে ধরা তোকে।
বুঝি এসব পাগলামী স্রেফ, শুনলে বলবে লোকে।লোকের কথায় কি আসে যায়,
যদি তোর কথা শুনে মন নিজেকে হারায়।
নিজেকে রাখবো বাজি, একবার হ রাজি ; বল ভালবাসবি আমায় অনন্ত।জানিস কি কে তুই ?
কি এই সম্পর্কের পরিচয়?
কেন আটকাতে পারেনি মন, বারেবারে শুধুই আশকারা দেয়।যেদিন পেয়েছিলাম প্রথমবার কাছে তোকে,
শরীরে মনে উঠেছিল ঝড়,
বারেবারে তাই পেতে চাই আমি
শুধুই তোর বন্য আদর।যে আকুতি সীমাবদ্ধ ছিল শুধুই তোর পায়ে,
কখনো নূপুরে, কখনো বা স্পর্শের অস্থিরতায়।
সময়ের সাথে কখন জানি হয়েছে গভীর আরো,
ছুঁয়েছে তোর হৃদয় ভীষণ উন্মত্ততায়।