• কবিতা

    কবিতা- রাধেশ্যাম

    রাধেশ্যাম
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    ব্যস্ত তুমি অন্য অনেক কাজে,
    অন্য কোথাও চলছে আলাপন,
    আমি এখানে একলা বিরহী যে
    খুঁজতে থাকি তোমায় সারাক্ষণ।

    এক পলকে একটু দেখা’র আশ
    রোজ আকাঙ্ক্ষা জাগে এই মনে
    চারটি চোখের এই মিলন – পরশ
    বাঁচিয়ে রাখতে চাই এ জীবনে।

    অভিমান আর অনুযোগ ভরা মন
    কূল-শ্যাম নিয়ে বড়‌ই দোলাচলে,
    ভালোবেসে কেউ ব্যতিরেকে উচাটন
    থেকেছে কি কভু! ইতিহাস তাই বলে।

    তবুও রাধা’রা প্রেমের জোয়ারে ভাসে
    নীল যমুনা’র অমোঘ আকর্ষণে,
    ছুটে ধেয়ে যায় সব কাজ ফেলে এসে
    কলঙ্ক-কথা, দূরে ঠেলে পিছুটানে।

    রাধেশ্যাম শুধু আপন লীলাতে মেশে
    গোপীনি সাথে একে একে নিজ ক্ষণে।
    অভিমানী রাধা তবুও দিনের শেষে,
    কানু প্রেমই সার মেনে চলে এ জীবনে।

    চিরদিন রাধা কাঁদবে এমন করে?
    শুধু নাম জুড়ে থাকবে রাধেশ্যাম!
    কানাইকে কবে বেঁধে রেখে হৃদি -ডোরে
    ভালোবাসা পাবে পরিচয়-পরিণাম।

  • কবিতা

    কবিতা- পরিচয়

    পরিচয়
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    কাজ করলে নিন্দা শুনতে হয়
    অনেক পাশে শত্রু হবে তোমার
    থাকবে কিছু বন্ধু-সাথীও কাছে
    মনের মাঝে সাহস জোগান দেওয়ার।

    তুমি ভাবছো মানুষের কাজ করি,
    তাও যে কেন অভিযোগের পাহাড়!
    কাজ যে করে সেই তো তিলে তিলে
    আধার সবার- দাবি জানাবার।

    যাদের জন্য সকাল- সন্ধ্যা কাজ,
    আড়াল করা তাদের ভুল-ত্রুটি,
    তারাই আবার সময় বুঝে তোমার
    খুঁজতে থাকবে কাজের বিচ্যুতি।

    বন্ধু হয়ে আসবে কাছে কেউ,
    ভাবছো বিরোধ করে সারাক্ষণ!
    একান্তে যে ধরিয়ে দেবে ভুল
    সেই তো তোমার আসল প্রিয়জন।

    হাটের মাঝে তোমার কাজ ও কথার
    ঠিককেও ভুল দেখাতে চায় যে জন,
    সে কখনোই তোমার বন্ধু নয়,
    এদের কথায় ভাঙে না যেন মন।

    কাজের মানুষ কাজ‌ই করে যাবে
    ধৈর্য্য রেখে ভালোবাসার সাথে,
    সফলতার পাহাড় ছুঁতে পাবে
    মানুষ সকল মাতবে আনন্দেতে।

    সেদিন কিন্তু বিজয় মুকুট পড়ে
    ভুলো না তোমার কাজের লক্ষ্য কী?
    সবার মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েই
    এ কাজে তুমি হয়েছো যে ব্রতী।

    নিন্দুকেরা যে যা বলে বলুক,
    চলুক কাজ তার আপনধারায়,
    ঠোকর খাবে,আসবে অনেক ঝড়,
    শেষের দিনে এই কাজ‌ই দেবে–
    তোমাকে তোমার আসল পরিচয়।।

  • কবিতা

    কবিতা- সিক্তা

    সিক্তা
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    আজ গোধূলি ভিজিয়ে দিলো আমায়
    প্রবল বেগে উজাড় ভালোবাসায়।
    প্রখর রোদের দহন জ্বালায় জীবন
    পুড়ছিল তা, তপ্ত লাভার মতন
    এ মন যখন তার‌ই অপেক্ষাতে
    অস্থিরতায় হতাশায় যায় ডুবে,
    ঠিক তখনই আশার সঞ্চারে
    দাঁড়ালো এসে এ শহর প্রান্তে।

    স্পর্শে তার শীতল অনুভূতি
    শিরশিরিয়ে আবেগে উচ্ছাসে,
    জুড়িয়ে দিলো সারা শরীর- মন,
    ভরিয়ে দিলো মিষ্টি আবেশে।
    সরিয়ে দিলো তিক্ত যা কিছু,
    রূপসী আজ সিক্ত সাঁঝবেলা,
    সবুজ হলো ঝলসানো পত্রালি
    লাজে রাঙা হলো যে গাছপালা।

    বহুদিনের পরে এলে তুমি,
    ল‌ও হৃদয়ের সাদর আমন্ত্রণ,
    আজ সারারাত ভিজতে চাই যে আমি
    প্রেমচ্ছাসে গভীর আলিঙ্গন।
    আজ নিশিথে তোমায় সাথে নিয়ে
    স্বপ্নালোকে দেবো আমি পাড়ি,
    মেঘেদের আজ বড়ই কাজের তাড়া
    ছড়িয়ে আছে আপন আকাশ জুড়ি।

    একফালি চাঁদ ঐ দিচ্ছে উঁকি
    চলছে মনে রঙের আঁকিবুকি
    শরীর মনে আনন্দ লহরী
    আলাপে মেঘ-মল্লার সঞ্চারি।

  • গল্প

    গল্প- আকাশমুখী

    আকাশমুখী
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    সকালে চোখ খুলেই অপু জানলার দিকে তাকালো, আকাশের মুখ ভার। মনটা খারাপ হয়ে গেল, তবুও সে গা ঝারা দিয়ে উঠে পড়লো দৈনন্দিন কাজ তো করতেই হয়। সকালে ছাদে গিয়ে সে রোজ আকাশ দেখে,তার সাথে কথা বলে অপু রোজ তার দিন শুরু করে। আজও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু আজ যেন সবতেই কিছু খারাপ ইঙ্গিত। হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে তার মুখভার দেখে অপুর খুব খারাপ লাগে, এবং অপুর মনের জমানো অভিমান জানাতেই আকাশ রাগে ফুঁসে উঠলো। এ যেন অন্য আকাশ। এ আকাশ অপুর অচেনা। বড়ো কষ্ট পেয়েছে অপু আজ। এত রাগ,এত গর্জন- বিনা মেঘে! বৃষ্টির আভাস‌ও নেই।

    অপু- অপর্ণা বোস, চাকুরিরতা মধ্যবয়সী। মফস্বলেই বেড়ে ওঠা, সেখানেই থাকা। সাদাসিধে অথচ দাম্ভিক অপু বড়ো ভালোবাসে ঘর গোছাতে। সবকিছু সাজিয়ে রাখায় তার কাজ। কিন্তু কেন যে এই সাজানো সবকিছু মাঝে মাঝেই উলোটপালোট হয়ে যায়, অপু বুঝতেই পারে না। অপু খুব কাজ পাগল, রান্না করা, গাছ লাগানো অপুর হবি। অপু কথা খুব বেশি বলতে না পারলেও মানুষজন খুব ভালোবাসে।
    একবার অপুর তখন সদ্য যৌবন। সরস্বতী পূজোর ঠিক আগেই অপু ব্যস্ত নানা কাজে,হঠাৎ তার চোখ পড়লো আকাশের দিকে। কি সুন্দর ঝকঝকে বসন্তের উচ্ছাস। কি নির্মল! ব্যাস সেই শুরু তার আকাশের প্রতি প্রেম। তারপর থেকে অপু আকাশের। কিন্তু আকাশ ঘনঘন রূপ বদলায়। কখনো মেঘ,কখনো বিদ্যুৎ, কখনো চাঁদ কখনো বা সূর্য আকাশকে অধিকার করতে চায়, মাঝে মাঝেই অপূর খুব কষ্ট হয়। তার মনে হয়,স্বচ্ছ নীল আকাশ শুধু তার, তবু কেন সেখানে মেঘেদের ভীড়, তারাদের অধিকার, চাঁদের আকর্ষণ? প্রশ্নেরা ভীড় করে অপূর মনে।

    প্রকৃতি প্রেমিক অপু কিন্তু চাঁদ, তারা, মেঘেদের আলাদা করে খুব ভালোবাসে।অসংখ্য তারারা যখন মিটিমিটি চায় অপূর মনে হয় এ যেন হাতের মুঠোয় স্বর্গ। জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধ আলো যখন ব্যালকনিতে পড়ে, অপু হারিয়ে যায় তেপান্তরের মাঠে রূপকথার দেশে। মেঘেরা যখন উড়ে আসে তখন অপুর মন সিক্ত হয়। তবুও এই সবাই যখন সবটাই করে আকাশকে ঘিরে তখন অপুর খুব কষ্ট হয়। অপু তার আকাশের বুকে মাথা রাখার জায়গা খুঁজে পায়না। মুক্ত আকাশকে কখনও অপু নিজের করে পায়না, কখনও তার স্পর্শ পায়না।

    অনেক অভিমানে অপু মাঝে মাঝেই আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখতে চাই। সঠিক ঠিকানায় পাঠালেও কখনো সে চিঠি আকাশের কাছে পৌঁছয় না।শুধুই দিশা হারিয়ে ফেলে। এখন অপু অন্তহীন অপেক্ষায়। কবে তার মনের কথা বুঝবে তার আকাশ। কবে ঐ উচ্চতা কাটিয়ে ধরায় নেমে মিলিত হবে অপুর সাথে? কবে অসীমতা কাটিয়ে সসীম হয়ে উষ্ণতা ছড়াবে অপুর ভালোবাসায়।

    অপুর মাঝে মাঝে মনে হয় আকাশ বড়ো অহঙ্কারী। সে সর্বদা তার উচ্চতা সম্পর্কে সচেতন। বুদ্ধিমতি অপু বুঝতে পারে,আকাশমুখী হয়ে উঠছে সে। নিজের অস্তিত্ব, কাজ, ভালোলাগা সব যেন একে একে হারিয়ে ফেলছে‌, অপু তার মনকে বাঁধতে চায়। তবুও ভালোবাসার বন্যা কি আর বাঁধে আটকায়। সে চলে তার আপন প্রবাহে। অপুর স্থির বিশ্বাসে বেঁচে থাকে, নিখাদ ভালোবাসার জয় নিশ্চিত। একদিন সমস্ত মায়াজাল ছিঁড়ে উচ্চতা কমিয়ে নীলাভ আভার সাথে আসবে সে তার অপূর কাছে। বুকে করে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে ঐ সুদূরে। ভালোবাসার জয় অবশ্যম্ভাবী।

  • কবিতা

    কবিতা- দোঁহে

    দোঁহে
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

    অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি আমরা
    কত বসন্ত কেটে গেল ভালোবেসে,
    অনেক সময় দিন ঢেকে গেছে মেঘে,
    আলো নিয়ে গেছে রাতের আঁধার এসে।

    আবার দু’জনে সূর্য ওঠার ভোরে,
    আঁজলা ভরে তুলেছি বেল ফুল,
    গ্রীষ্ম দিনে প্রচণ্ড দাবদাহে
    পুড়েছে কত না জেনে করা ভুল।

    যত অভিমান বাদলে ভাসিয়ে দিয়ে
    ভালোবাসার শস্যে ভরেছে মন,
    এক সমুদ্র বিবাদ, বিরহ কেটে
    ফিরে পেতে চাই আবার আপন জন।

    ফুলে ফুলে আজ ভরে থাকি এসো দোঁহে,
    ফিরে ফিরে আর নাই বা পিছন দেখি
    একসাথে বাঁধা এই দুটি জীবন আবার
    এসো এসো সখা ফুলের পরাগ মাখি।

    তুমি বলেছিলে মনের মিলন হ’লে
    দু’জন নাকি দু’জনাতে যায় মিশে,
    এমন কোনো কালবৈশাখী নাই
    পৃথক করবে এই দু’জনাকে এসে।

    তবুও ভয়াল তুফান এনে দিলে
    ভূমিকম্পে বিদীর্ণ হৃদিতট,
    ভাঙা হৃদয়েও তোমাকেই কাছে ডাকি
    এ দু’চোখে যে শুধু তোমার চিত্রপট।

    তুফান শেষে নতুন করে গড়ি
    ভাঙতে দেবো না কোনো দুর্যোগ -ঝড়ে,
    ফাটল যা কিছু পূরণ করে নেবো
    তৃতীয় কেউ না প্রবেশ করতে পারে।

    আমরা দোঁহে রচিব ভালোবাসা
    এ ধরায় নয়া গল্প লেখা হবে,
    সৃষ্টি হবে নতুন অনেক কিছু
    লোকে ভালোবেসে আমাদের কথা ক’বে।

  • কবিতা

    কবিতা- সমর্পণ

    সমর্পণ
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

    জীবন খাতার প্রতি পাতায় আঁকা আমার যে সব ছবি,
    দেখিয়ে দিলাম খুলে তোমায়, গোপন যা কিছু সব‌ই।

    তুমিও আমায় বললে অনেক, ষোলো আনার জীবনকথা,
    তবুও কোথায় আড়াল টেনে রাখলে কিছু দিয়ে ঢাকা।

    সেই আড়ালেই আমার ক্ষত, কোথাও যেন অবহেলা,
    উজাড় করা ভালোবাসায় আড়াল টানার এ কি খেলা?

    বিশ্বাস আর ভরসা সাথে আপনাকে সমর্পণে,
    তেমনভাবেই চাই তোমাকে, এই মনের খুব গহীনে।

    সমর্পণ তো এমনই হয়,আড়াল কিছু যায় না টানা,
    ভুলত্রুটি আর দোষগুণ, সবকিছুকেই সামনে আনা।

    ঝগড়া-বিবাদ হোক তবে তা শক্ত করে প্রেমের বাঁধন,
    মিথ্যা-গোপন থাকলে কিছু সেখানেতেই শুরু ভাঙন।

    আমার-তোমার বাদ দিয়ে আজ দু’জনে জীবন আঁকি,
    সত্য-খাঁটি দিয়ে গড়া থাকবে না তো কোনো ফাঁকি।

  • কবিতা

    কবিতা- হিসাব

    হিসাব
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    জীবন খাতায় হিসাব লিখতে বসে
    আজকে সব‌ই হচ্ছে এলোমেলো
    সেদিন যেমন ছিল ফাগুন মাস
    আজ‌ও কি তেমনই বসন্ত এলো?

    এমনই এক মাঘী পূর্ণিমা রাতে
    অসীম অব্যক্ত যত ছিল,
    অপলক দৃষ্টিতে সেই কথা
    মনের মাঝেই মন হারিয়ে দিলো।

    সেই মধুক্ষণের স্মৃতির পাতা উল্টে
    প্রতিপলে অনুভবে তাকে পাই,
    ফিরে পেতে চাই এমন মধুতিথি
    চারিদিকে দেখি, না কোথাও নাই।

    খুলে খুলে আজ পড়েছে পলেস্তারা
    ঝরে ঝরে পড়ে উজ্বল সেই দ্যুতি,
    নয়নে উঠেছে আরও দুটি নয়ন
    হারিয়ে গিয়েছে সাহস ও শকতি।

    তবুও এ মন ভালোবাসে অফুরান
    তবুও পেতে চাই যে ভালোবাসা,
    হিসাব নিকাশ নাই মেলাতে পারি,
    চলবে এভাবে প্রেমের জোয়ারে ভাসা।

  • কবিতা

    কবিতা- ভালোবাসা দিবসে

    ভালোবাসা দিবসে
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    ভালোবাসা সহজ তো নয়,
    দেখে-বুঝে, সেধে-যেচে এইভাবে ভালোবাসা হয়?

    তোমার-আমার ভালোবাসায় ফাগুন হাওয়ায় লাগবে মাতন,
    তোমার-আমার চোখের চাওয়ায় পলাশ ফুলে প্রেমের নাচন।

    হৃদগগনে আলোর জোয়ার, সাঁঝের তারার ঝিকিমিকি,
    চাঁদ জোছনা শরীর বেয়ে, ঝিলের জলে দেয় যে উঁকি।

    ভালোবাসা বয়স মানে?
    ঈর্ষাকাতর চোখ এড়িয়ে ডিঙিয়ে যাওয়া বাধার প্রাচীর,
    চোখে চোখে কত কথা, পেরিয়ে সীমা এই পৃথিবীর।

    দিবারাত্রি গল্পকথন, আশ মেটে না তোমায় দেখে,
    সব ব্যাথাটা জুড়িয়ে যাবে ঐ দুচোখে এ চোখ রেখে।

    থাকবে আড়াল, থাকবে বাধা, থাকবে অনেক কূটকাচালি,
    তবুও তুমি শুধুই আমার রোজ যে কথা তোমায় বলি।

    এক পৃথিবী ভালোবাসা, এর তো কোনো হয় না দিবস,
    প্রতিপলে আমার তুমি এইখানেতে নয় তো আপোষ।

  • কবিতা

    কবিতা – কথা ছিল

    কথা ছিল
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    হিমেল হাওয়ার পরশ মেখে মন এখন ররফ কঠিন,
    অনুভবে শুকিয়ে কাঠ, পাহাড়ি এক উছল নদী।
    হেমন্ত তো পাড়ি দিল বিশ্বাসকে হরণ করে ,
    তীব্র- ধূসর শীত তাই এখন আমার মনন জুড়ে।
    কথা ছিল ভাঙবে না মন কিছুর তরে।

     

    পশম সোহাগ আনবে তুমি, কথা ছিল ,
    তোমার প্রেমের ওম এর ছোঁয়ায় গলবে বরফ-
    বসন্তকে আনবে সাথে বলেছিলে মনে আছে?
    লাল পলাশের ফাগুন আগুন প্রেমের কাছে।
    এই কথাটা মনে আছে?

     

    কেন আজও মনের মাঝে শীতের কাঁটা?
    এমন কিছু হবারও কি কথা ছিল?
    বসন্তের ঐ নীল আকাশের সোনা রোদে
    দখিন হাওয়ায় আমরা দু’জন- দু’জনাতে-
    থাকবো মেতে মনের সাথে মনকে বেঁধে।
    কথা ছিল ভুলে গেছো?

     

    কাটছিল দিন বর্ষাশেষের সবুজ সাথে,
    শরতের শিউলি ঝরা ভোরের মতো।
    শীতের শেষের নলেন গুড়ের মিঠাস নিয়ে,
    তোমার ওম আবার দিক বরফ গলিয়ে।
    পারবে তুমি রাখতে কথা!

     

    আমরা আবার নতুন দিনের স্বপ্ন সাথে-
    আঘাত যা সব যাক্ দূরে যাক বর্ষশেষে,
    তোমার দেওয়া এই উপহার ভুলবে এ মন
    বিশ্বাসটা টিকিয়ে রেখো তুমি এখন
    এই কথাটা মনে রেখো কথা হলো।

  • কবিতা

    কবিতা- বজ্রপাত

    বজ্রপাত
    -পাপিয়া ঘোষ সিংহ

     

     

    আকষ্মিক বজ্রপাতের শব্দে
    বিদীর্ণ হয় হদয়তটভূমি
    আদরে সোহাগে লালিত যে প্রেম
    চুম্বনে তার অন্য মুখচ্ছবি।

    যে কথা সে শুনিয়েছে এতদিন
    আজ সে কথা অন্য কার‌ও তরে,
    বিশ্বাসের সেই নৌকার পাল
    ছিন্নভিন্ন অবিশ্বাসের ঝড়ে।

    শরীর মনে অপমানের আঘাত,
    কেমন করে মুছবে সে সব স্মৃতি,
    কেউ কখনও দুস্বপ্নেও ভাবে?
    ভালোবাসার এ হেন পরিণতি।

    তবুও এ মন বড়োই অবাধ্য,
    বাঁধ মানে না তো কিছুতেই,
    প্রহসন আর প্রবঞ্চনার পরেও
    আঁকড়ে ধরে ভালোবাসাকেই!

    ভালোবাসা এমনই অসহায়?
    ঘৃণা- বিদ্বেষ ছাড়িয়ে তার প্রকাশ!
    উপেক্ষিত, প্রতারিত মন
    তবুও খোঁজে ভালোবাসার আকাশ।

You cannot copy content of this page