-
কে কে কী…?
কে কে কী..?
-রাজীব লোচন বালা
একটা বড় প্রশ্ন ছোটোবেলা থেকেই ,বর্ণচিহ্ন নিয়ে খেলা
আবার বর্ণ নিয়ে ঘটে চলা সমাজ ব্যবস্থার নানান বচসা !!!
অদ্ভুত জন্মগত অসাধারণ এ নিয়ম মোদের জীবন শুধুই কামলা খাটা__
উঁচু- নিচু, ছোটো- বড়ো এসব জানতে বিদ্যা আর লাগে না।
সবইতো জন্মগত কর্মগত নামেই বলে, হিসাবহীন এ জঘন্য তা_
ব্রাহ্মন, ক্ষত্রিয়- বৈশ্য ও শূদ্র কর্মক্ষেত্রে গোলমেলে কিন্তু,
জন্মসূত্রে পাওয়া এক নৈব নৈব চ অপরিবর্তীত কানুন এ জগতে।শাস্ত্র বলে এদের কথা, সময় আর স্বপ্ন আজ পেলাম যথার্থতা
ব্রাহ্মন কে ? বলে ঋগ্বেদ শ্লোক নং ৭.১০৩.৮ এ বলছে,
ঈশ্বরানুরক্ত, অহিংস নিষ্ঠার সাথে হতে হবে সৎচরিত্র_
আরও আছে বলা ব্রহ্মন হবে শাস্ত্রঞ্জানী সু-শৃঙ্খলায় ভরা।ক্ষত্রিয়ের কথা এরা আবার কারা ? চন্দ্রবংশ, সূর্যবংশ
বড্ড রকম এ জ্বালা তাই নিভাতে ঋগ্বেদে ১০.৬৬.৮ এ পেলাম এর উত্তর বলা আছে সেথা তোমার কি আছে দেখা,
সৎকর্ম দ্বার শুদ্ধত, রাজনৈতিক ঞ্জানী সত্যের ধারক ও ন্যায়পরায়ণ
সে কিন্তু অবশ্যই হবে বিদ্বেষমুক্ত সত্যের জয়কারী এক যোদ্ধা ।বৈশ্য কে ? এ জাতি বলে দেয় নানান ঘাটে পাড়ি_
ওঠা- বসা, কায়দা- কানুন জানতে হবে তালুচাঁটা জলটাও খাওয়া।
অথর্ববেদ ৩.১৫.১ হবে তারা সৎ ব্যবসায়ী, দানশীল ও চাকুরীরত মহান কাজে ব্রতী দেশকে করবে সে ধনী ।এবার আসে গোলাম জাত খায় এরা মার, তিন জাতির সেবায় জন্মগত_
সকল কিছুই করবে এরা ,হল শূদ্রজাত ।
কিন্তু বাপু দেখো ভেবে নমস্য এরাই যারা দেয় অকাতরে,
ঋগ্বেদ, ১০.৯৪.১১ দিয়েছে চেনার অপার অমোঘ বৈশিষ্ট্য_
যারা হবে অদম্য, পরিশ্রমী- অক্লান্ত জড়া- ব্যাধি যাদের গ্রাস করতে পারে না ,হতে হবে লোভ মুক্ত চাই কষ্ট সহিষ্ণু সেই চালিকাশক্তি শূদ্র ।
প্রশ্ন এবার ওঠে দেখে বর্তমানের ঘটমান সকল বিষয়াদি
কে তবে মানব সভ্যতার মূল কাঠামের সৃষ্টিকারী ?
উত্তর আর নয় যেতে হবে যজুর্বেদে ৩০.৫ এ শ্লোক নাম্বারে_
পুরুষসুক্তের অন্দরে সাম্যের বাণী বিশ্ব মাঝার ছড়াইতে,
কে কী বর্ণে তফাত না করে ভালোবাসো সবাইকে মানুষ জ্ঞানে। -
মাটির টান
মাটির টান
-রাজীব লোচন বালা
পাখি যতই উঁচুতে উড়ুক এই নীলাকাশে
মাটিতে আসতেই হবে কেননা খাদ্য আছে এখানে।তদরুপ মানুষ যত উঁচায় উঠুক আর গরিমা বাড়ুক,
মাটির কাছে আসতেই হবে, মিশতেই হবে শেষে।এই টান অমোঘ টান, মায়ের প্রেমের টান
এটি কভু যেন না ভুলি মোরা স্বপ্নে। -
ভাবিয়া দেখো মন
ভাবিয়া দেখো মন
-রাজীবলোচনে বালা
বিবাহ নিয়ে সদর্থক লেখা বেশ , একটু ভাববার বিষয়_
নতুন ধরে পুরাতন ছাড়ে এতে নাকি রুচি বাড়ে !
কত বিধান শাস্ত্রে হৃদয় মেলাবার , দারুণ ব্যাপার
একটি মেয়ে সব ছেড়ে যাবে অপরিচিত বাড়িতে নববধু সেজে।জানেন ও পাড়ার রুমকি – চুমকির বিয়ে হয়েছিল,
বেশ ভালো করে, বাপ তার সর্বস্ব নিলাম করে দেয়।
আনন্দের ধারা বহে ছেলের বাড়ি, মেয়েকে নিঃস্ব রিক্ত করে,
তাই তাদের বিয়ের নামে , আহা নামে নয় অজুহাতে
শেষে গরীবের মেয়েকে আগুনে পুড়তে হয় , ঝুলতে হয়।সত্যিই ভাবি একান্তে, এ জগতে “বিবাহ” হয় শুধু মাত্র _
বড়লোকের ছেলে- মেয়েদের আর বাকি সব নাটক।
বিয়ে ,পবিত্র বন্ধন ঠিক আছে। তবে ভাববার বিষয়_
একটা মেয়ের জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষা এই বিবাহ।ভালো ঘর, খারাপ ঘর দুটো বিষয়,তদমধ্যে চাহিদাকে বলে মনের মিলন , ওটা বড়লোকেদের সাজে।
এই পাড়ার হারাধনের মেয়ের নয়, এতে শুধু যৌতুকের কৌতুক।
প্রেম প্রেম প্রেম বিবাহ মানেই দুটি হৃদয় যদি এক হৃদয়ে মিলন হয়,
তবে এর মাঝে কনে পক্ষের তরফ থেকে বিয়েতে যৌতুক কেন?একি মনের না সম্পদের এক দেহে মিলন? অদ্ভুত !
তাই দেখে মন ভারাক্রান্ত , টাকা না দিলে হয় বদন ক্লান্ত – কালো।
যতদিন না বিয়েতে যৌতুক নেওয়া বন্ধ না হয়,
মনের মিলন হৃদয়ের মিলন ভন্ড কথা হয়ে যেন রয়।ওই যে মেয়েটি যার কথা বলছি
কি সুন্দর, বিবাহ হল তার সাধ-আশায় মন টলমল
হঠাৎ পড়লো গায়ে কেরোসিন, আগুনের তেজ তাকে গলিয়ে ফেলল।
চৌমাথায় দাঁড়িয়ে বিয়ের সানাই আর ঢাক বাজছে।“বিবাহ” করে কি ভেবেছিল, কত স্বপ্ন ছিল মেয়েটির
“বিবাহ” তার স্বপ্ন দেহে মিলে, লাভা ছাই হল নিঃশেষে।
যৌতুক একটা অভিশাপ সোজা বাংলায়।
তাই বিবাহ বা হৃদয়ের মিলন শুধু শুনতেই শ্রুতিমধুর।আরেকটি খুব ভালো কথা হঠাৎ মনে পড়ে
মেয়ে যুবতী হলে বিয়ে দিতে হয়, সামাজিক কাজনাহলে অসুবিধা আছে, লোকের মুখ তো আর থামে না !
যখন বাবা মেয়েটিকে তুলে দেয় অচেনা পরিবারের নন্দনের হাতে,একটি শাস্ত্রীয় মন্ত্র পড়ে পুরোহিত মশাই বলে কন্যা সম্প্রদান কালে,
বাবা বলে হাতে পড়ে কত কি !!! বাবাজীবনেরে,
“কামাথ কামহেতু সমর্পয়ামি” অর্থাৎ এর মানে হল,
আমার মেয়ের শরীরে কামের উদ্রেক হয়েছে
তাই তোমার হাতে আমার আদরের কন্যাকে তুলে দিলাম, তুমি দেখো।তাই যাহা ভাবি মূলত তাহা নয় , ধর্ষণ তো রোজই হয় ,
আমার হৃদয় তোমার হোক , তোমার হৃদয় আমার হোক_
এটা সবত্র খাটে না , তাই ভাবি সবই উল্টো।
সবই হাহাকার আর আর্ত চিৎকার ,
যার হারিয়েছে একবার সেই বুঝে।যৌতুক বন্ধ করতে না পারলে বন্ধু
নারীমুক্তি , সাম্যতা আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখো,
আর না হলে সুইটকেসে সাজিয়ে লোক দেখাও।
তাই বিবাহ ভাববার বিষয় , অবশ্যই সবাইয়ের_
নাহলে দেখো শেষে গলায় দাগ না পড়ে। -
রেখা
রেখা
-রাজীব লোচন বালা
জীবনের নাম যদি তোমার সাথে লেখা রয় ওগো রেখা,
তোমার পরশে যদি হৃদয় মোর কথা কইতে চায়_
তবে কি তুমি আপন করে বেঁধে নেবে প্রেমের ডুরির অনুরাগে
এই প্রাণ যদি মোর বীতশ্রব্ধ হয়, তোমার পরশ কি পারবে ফিরাতে ।তুমি রয়েছো মোর প্রেমের গুলশানে , রাঙ্গা ফুলগুলো গুছিয়ে নিয়ে,
তোমার হাতে করে মালা গেঁথে রেখো
মাঝরাতে উঠে উঠে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থেকো,
দেখিবারে পাবে তুমি দুচোখ ভরে আমার স্বপ্ন গুলো লেখা ছিল।এক পলকের শুভদৃষ্টি ভুলিনি আমি সেই যে দেখেছিগো প্রিয়া,
শুষ্ক চোখ দুটো মোর তৃষ্ণার্ত হয়ে হয়ে একবার তোমায় দেখবে বলে ।
জানি না কখন কি কিবা কি যে হবে তোমার পরানে আমি জিড়িয়ে লইবো,
পারবে কি না ওগো তুমি , তোমার সাথে চিরকাল রইবো ।তোমার নয়ন দুটি বাঁকা ভ্রু-এর মাঝে হরিণীর ন্যায় কোমল প্রস্ফুটিত,
তোমারই চোখ দিয়ে তিমিরেও আলো কিরণ আমি দেখি।
বিনুনি করা তব কেশের স্নিগ্ধা শোভায় পাহাড়িয়া ঝর্ণাও লজ্জা পায়,
আলোর কিরণে তুমি সবারে রাখো সেই রেখার মাঝে আমারেও রেখো।স্নিগ্ধা জোৎস্নালোকিত তোমার মুখের হাসি পদ্ম ফোঁটায়,
তোমার শব্দগুলো আমার নিথর দেহে নূতন প্রাণ জাগায়।
কত যে বেসেছি ভালো , সে কথা তুমি যদি জানতে,
এই হৃদয় চিরে যদি দেখানো যেত, তবে তুমি জানতে ওগো রেখা।তুমি রেখা নও ওই অঙ্ক পাতার , তোমাকে পাই আমি হৃদয়ে আমার_
তোমার স্নিগ্ধ হাসি যখনই খসে পড়ে ধরার পড়ে ওগো অপরূপা ,
শরতের মেঘের ভেলায় উড়ে চলা এক হিমেল হাওয়া ,
আর নীল সাগরের সেই মনের মিলন বেলা।যে কথা মুখে বলা আজও হয়ে ওঠেনি, সাহস করেও তোমায় জানাতে পারিনি,
যে চোখের কথা দিয়ে শুরু হয়েছিল ,দুটি দেহ এক হৃদয়ে
বাঁধা পড়েছিল ।
স্বপ্নের গল্পগুলো মেঘেরো খামে, তোমারিই নামে উড়ো চিঠি গুলো পাঠিয়েছিলাম,
তুমি পড়ে নিও , মিলিও নিও খুব যতনে তা লিখেছিলাম।মনের ভাষা গুলো চোখের মনিতে ভেসে ওঠে জানো,
তোমার হাসি আমি দেখবো বলে কত কবিতায় আমার স্মৃতি আঁকি।
যে কথার শুরু চোখে , তোমায় এক পলক দেখে
মন চায় বলি একবার প্রাণের কাছে ডেকে।সারা জীবন মোর কি এভাবেই কাটবে , তোমার হৃদয় দোয়ার খোলা রেখো,
আমি যেতে চাই , পেতে চাই তোমারে আমার মনের ঘরে।
আমার যা কিছু আছে আলোর মাঝে জানি আছে অন্ধকার,
আলোটুকু নিয়ে তুমি সাজাও এসে ছোট্ট আলোয় ভরা কুটির আমার ।তোমারেই খোঁজে ছেড়েছি পবন দেখো নাহি মানে কোনো বর্ডার,
নীলাকাশে চেয়ে দেখো পাখিদের উড়ন্ত বাহার
যদি কভু যাও তুমি নদীর ধারে,
ভাসানো ফুল হয়ে দেখবো তোমায় শুধু দু-নয়ন ভরে,
যদি যাও পাথরের কিনারায় , থাকব বৃক্ষ হয়ে ছায়াদানে তোমায়।একটা কথা ওগো তুমি শুনে রাখো, তোমাহীনা এ জীবন মোর
নীল দরিয়ায় ডুবন্ত তরী কূলকিনারাহীন নাবিক হয়ে রয়ে যাইবো।
ওগো তোমায় নিয়ে ভালোবেসে তোমার দেখা পাইবো বলে,
ছুটে চলেছি অকূলপাথারে তোমার রাঙ্গাহাসি দেখবো ভেবে।ইহকাল আর পরকাল আমি থাকবো তোমার চিরকাল
যে যে সময় তোমারে দেখি চলে যাই জানি না কিভাবে কখন,
আজ নয় কাল তোমায় বলবো ভেবে এতগুলো দিন চলে গেল
পাখির বাসা যেমন হাওয়ায় দোলে, আমার প্রাণ তেমনি থাকিতে না পারে ।তুমি জানো বন্ধু ওগো প্রাণের সখী
আমার হিয়ার অন্তর- বাহিরের জীবনের গতি
বহু অমাবস্যা পাড়ি দিয়ে জীবনে প্রথম চলার পথে
তোমার মতোন এমন পূর্ণিমা চাঁদনীর দেখা পেয়েছি।যখন ছিলাম আমরা এগারোর ঘরে, বান্ধবী তুমি মোর মরমে ছিলে,
যেদিন তোমার কন্ঠ শুনেছি , আমার চিত্ত থেমে যেত।
তোমার আসা- যাওয়া দেখিয়া রইতাম,
একদিবস চলে গেলে বিরহ জ্বালায় সারাটা দিন খুঁজে বেড়াইতাম।তোমার চাহুনি আজও মনে পড়ে জানে সেই দিন রেখছি যতনে,
আমি বোধহয় এখন ওগো হয়েছি পাগল এই সায়রে
তরী হয়ে এসে তুমি ধরো আমারে ,
প্রাণপ্রেয়সী ওগো কাছে টানো শেষ হওয়ার আগে।তুমি জানো আজও বলিনি , আমার কবিতায় তুমি নতুন তুলি,
আঁকব তোমায় বীণার সুরে , ছন্দে ছন্দে প্রেমের পরশে,
তুমি সাথে থেকো, যেও নাগো দূরে, তোমায় হারাতে চাই না বারেবারে।
সত্যি করে বলো আমার আমি তোমার হৃদয় কি না,
তুমি আমার সুখ- দুঃখের পরাণ বন্ধু কি না ?হৃদয়ে লিখেছি নাম তব, সে নাম কভু মুছবে না,
আমার প্রাণ জীবন হতে বের হয়ে গেলেও তোমার পলক ভুলবে না।
গভীর হয় গো যেখানে ভালোবাসা তোমারই কথা ওগো,
সেখানে থাকে না মুখের কোনো ভাষা।যা কিছু ভালো আমার তোমারে দিলাম , সারাজীবন হাসি- খুশি থেকো
তুমি না হাসিলে ব্যাথা বড় আমি পাই , নিজেরে দোষী তখন মনে হয়,
আমি সাগরের পাড়ে ভেসে ভেসে তোমার হাস্যোজ্জ্বল বদনখানা দেখে রইব।তাতেই আমার প্রাণ জুড়াবে , পদ্ম পাতায় টলমল জলবিন্দু হয়ে ,
যখন তোমার কথা শুনি একাগ্র চিত্তে হৃদয় বুনেছি।
জীবনে এক ঝলক দেখিয়া তোমায় পাগল হয়েছি
সারা জনম তোমারে আপনজন ভেবে বুকের মাঝে রাখতে চাই ।তুমি স্বর্গে সেই যা দিয়ে আগুনেও প্রেমের অনল বহে,
তোমার সহসা চোখের বাণে এই হৃদয় মোর বিঁধে গেছে।
আজও বাঁশি বাজে দেখো চেয়ে শ্রীকুঞ্জকাননে
তারই তালে নৃত্যকারী মোরা দুজনে হইবে ভানুদয় জানি প্রভাতে।অরুণ- বরুণ , পবন- অগ্নিকে সাক্ষী রেখে
মিলাবে – মিলিব এক হৃদয়তে হাতে হাত রেখে পবিত্র বন্ধনে।
জানি না কি করে হবে সাহস দিয়ো প্রভু চাই বলিবারে,
এ জীবন তেমাকে দিয়ে , জনমে জনমে যেন পাই তোমারে।কত কথা কত ব্যাথা আমার লুকিয়ে রাখা
জানো নাগো তুমি-সেই হারানোর ব্যাথা।
যেও না ছেড়ে মোরে কভু বড্ড কষ্ট হবে ,
মালা দুটো বানিয়ে রেখো যত্ন করে তোমারে পরাবো জনমে- জনমে ।জীবনের শেষ গান তোমার জন্য রহিবে ওগো অনুপমা,
ক্লান্ত হয়ে যদি যাইগো আমি, তুমি হইয়ো প্রাণ -ছায়া।
যেখানেই থাকো তুমি ভালো থেকো, খোলা রেখো দরজাখানি
একই প্রাণ- মনে একাত্ম হতে ।কালবৈশাখীর ঝড়ে ভাঙ্গবে না কভু বন্ধন মোদের প্রিয়তমা,
মনে রেখো তোমায় আমি স্বপ্নে দেখি একই মালার হৃদয়তলে।
সরায়ো না মোরে তব অম্লান হাসিমাখা মধুর কন্ঠ হতে,
জীবন ভর তোমায় ভালোবাসিব , এই বন্ধন তুমি প্রভু হতে চেয়ে নিও।নাম তোমার রেখা, সত্যেরিই আঁকা ঈশ্বরের পরম সৃষ্টি,
যতনে যতনে গড়েছে তোমায় এত সুন্দর শব্দ- হাসি দিয়ে।
এ জীবন তোমাকে দিলাম বন্ধু , তুমি শুধু ভালোবাসা দিও,
সদা যেন হাসিমুখে থাকো তুমি , রাজীবের রেখা হয়ে সদা প্রেমের হৃদয়ে। -
তুমি আছো বলে
তুমি আছো বলে
-রাজীব লোচন বালাধর্ম আছে – অধর্ম আছে, সত্যি আছে – অসত্যিও আছে,
জীবনের মধ্য দিয়ে কাহানী আছে গরিমার।
বিদ্যা আছে – শক্তি আছে, জ্ঞান আছে- ভক্তি আছে, কত- কাহিনী সবাধার__
জয় আছে-পরাজয় আছে, সত্যের মধ্য দিয়ে কভু বিরহজ্বালারও আঁধার আসে।আমৃত্যু, মৃত্যুর খোঁজে চলে কত জীবন এই ভূমন্ডলে,
‘তুমি’ আছো বলে হে মৃত্যু, জীবনের মূল্য এত বেশী।
তুমি গরিমা, তুমিই মহাত্মা, এই জীবনের পরম পরাকাষ্ঠা _
তোমা সনে জড়িত আছে কত, বীর শহীদদের জীবন গাঁথা।“তুমি” আছো বলে জীবনের সর্বৈব গুরুত্ব রয়ে যায়;
ধর্ম মার্গকে প্রতিষ্ঠা করিতে “শাহাদত” কত তরুণ প্রাণ- প্রাণা।
কে বলে যে মৃত্যু কভু কাঙ্খিত নয়,’তুমি’ আছো বলে হে,
ভারতমাতার বীর সন্তানদের জীবন সংগ্রাম অমর হয়ে রয়।ভুলে যেও না সেই বীর বিপ্লবীদের, যারা হাস্যমুখর বদনে সদা জড়িয়ে ধরছে মৃত্যুরে প্রিয় আপনজন ভেবে,
ক্ষুদিরাম, ভগৎ, আসফাকউল্লা, আজাদ রাজগুরুর মতন-
কতশত অনাম্নী বীর বিপ্লবীরা__
মোহের বাঁধন ছিঁড়ে, স্বাধীন করতে মায়ের হাতের কড়া,- ফিরিঙ্গী শৃঙ্খল,
দিয়েছে প্রাণ দেখো, হাস্য-গানের মধ্য দিয়ে শির সুউচ্চ রেখে- সদা।‘তুমি’ আছো বলে, জীবনের শ্রেয়টুকু প্রকৃতই মানুষ পায়,
জানি আপন বিয়োগ কভু ভালো লাগে না !
মৃত্যুরে তাই ভয় লাগে !তবে কেন এত শব্দ- কবিতা- গান ?
কত প্রাণ যায় এই অশ্বমন্ডলের ওপরে, তবে তাহলে মানতেই- হয় যে,
মানুষের মাঝে একাত্মতার অভাব আছে সুনিশ্চয়।শ্রীকৃষ্ণ বলে গেছেন, এসকল মায়া জেনে মনে রেখো বন্ধু,
মৃত্যুই পরম সত্য এই ব্রহ্মান্ডে, তা সদা সূর্যের মতন তেজোদৃপ্ত অবিচল।
তুমি মৃত্যু করতে পারো নাই সবারে জয়, হয়েছে কত মৃত্যুঞ্জয়,
তারা কর্মের মধ্য দিয়ে মাটি – মাংসে গড়া মানুষ সেজে রয়েছে মানব হৃদ মন্দিরে।অমর হয়ে রয়ে যাওয়া এই কায়ানাতে অভিশাপেরই সমতুল
“মহাভারতে”র অশ্বথামা পেয়ে যাচ্ছে তার মাশুল।
আমৃত্যু, তাই মৃত্যুর তপস্যা, এই জীবনে মোর জপমালার আধার,
মৃত্যুই আর্শীবাদ যদি পারি সৃষ্টিমালা গাঁথতে এ জগত -সংসার।মৃত্যু যদি না রইতো, এই জীবনে তবে কলুষতার হাড়ি ভরতো,
মানব জন্ম সদা উদ্দেশ্য পূরণের জন্য করে সমাপন নিজ নিষ্কাম কর্তব্য __
চলো শেষে প্রসন্ন মন-চিত্তে করে গমন”অমৃতধামে” শেষবারে,
জীবনের শেষ গতি “তাকে ভালোবেসে” চির শান্তির দেশে।‘তোমার’ বিচারে, ধনী-নির্ধন, জাত-পাতের নাই কোনো স্বীকার,
‘মৃত্যু’ তুমি আছো বলে,জীবনের শেষ মৃত্যুর অলঙ্কারে মানুষ_
চিরস্মরণীয় হয়ে রয় মানুষের চিন্তন-মননের ভেতর, সর্বভূতে।
সদা যেন থাকি ‘তুমি’ মৃত্যুকে বরণ করতে-বন্দনা দিতে,
দুই বাহু প্রসারিয়া তোমারে আলিঙ্গন করিতে এই
রাজীব দাঁড়িয়ে টলমল রক্তিম জীবন নদীর ধারে। -
পিঁপড়াবাদ
পিঁপড়াবাদ
-রাজীব লোচন বালাএই তমাসাঘন তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাবে ব্যক্তিস্বার্থতার মত্ততায়,
আভ্যন্তরীণ অসৈরনতা আর বাহ্যিক কোন্দল বচসায়
বিবেক বর্জিত ব্যক্তিকেন্দ্রিক বুদ্ধির জোয়ারে ভেসে,
আত্ম মূল্যায়ন নাই, তাদেরই গ্রাস করা এই পৃথিবী।মানুষ আর মানুষ কিন্তু ফারাক অনেক এই ভূ-তলে,
কেউ বা ইমারতে কেউ ড্রেনের পাশে,কেউ বা ট্রেনের- কামরায়_
কেউ খায় ফেলিয়ে-ছড়িয়ে !কেউ কুড়ায় ড্রেনের ধারে
ধারে!!!
এই নিয়েই লেখা হয় শব্দের মারফতে রসোচীত সাহিত্য এই সমাজে।কত শব্দ ! কত কথা !! কত মাধুর্যে ভরা রসের খনি!!!
কেউ তো আসে না, তাদের কাছে হাতখানি বাড়িয়ে,
সময় নেই মানুষের কাছে! নিজের হাঁড়ি আগে ভরার তরে
ডেঙ্গিয়ে চলা, মাড়িয়ে চলা মানুষ আর মানুষ হায়রে!!!তাই চাই সত্য- সরল-পবিত্রতার মেলবন্ধনে দৃষ্টি নিক্ষেপ,
কাদের দিকে ? ওই বুদ্ধিজীবিদের দিকে ! হা! হা! হা!
নাহ্ তাদের দিকে নয়,কোনোদিনই নয় ওই স্বার্থান্ধদের- দিকে,
চোখ মেলিয়া তাকাও ওই ক্ষুদেদের প্রতি আহা ! কি সুন্দর ।একদিন সকালে, কোনো খাবার দিবে ওই মাটির উপরে
একটা ‘পিঁপড়া’ দেখো আসবে ঘুরতে ঘুরতে ওই খানে,
খাবে না সে কোনোভাবেই , দেখে চলে যাবে
দলবেঁধে পরে এসে আনন্দেতে খাবে আর মিটমিটিয়ে চাবে।তাই তো বলেপিঁপড়ার মতো সবাই এক তানে চলি__ সবাই মিলে মোরা যদি খাই ভাগ করে নিয়ে,
তবেই তো বিশ্বে সাম্য -শান্তি ফিরে আসতে পারে
মানুষ আর মানুষে প্রেম প্রীতির অনুরাগে ভাসতে পারে।ভবা পাগলার এই বাণী চলো জীবন ধরে
এই পথেই চিরন্তন মনুষত্ব ফিরে আসতে পারে।
“কত বাদ নিয়ে চলে জগতে লড়াই
আমরা যদি ‘পিঁপড়াবাদ’ ধরে চলি রে ভাই,
ভারতবর্ষে আর কোনো বাদের দরকার নাই।পিঁপড়ার মতো যদি সবাই একত্র হয়ে,
সবাই যদি খাই মোরা ভাগ করে নিয়ে
তবেই তো শান্তিরথ আবার ফিরতে পারে,
পিঁপড়ার মতোন করে চলি তবে সেই পথে একত্র হয়ে।“এই জগতে মানুষ যারা ভালো কিছু পেলে
জন্মের গেলা তখন একা একা গেলে”
অসীম মহাশয়ের সত্য বচনের পথে,
চলি শুধু যেন পিঁপড়াদের মতোন হয়ে হয়ে।এই জন্য পিঁপড়াবাদ ধরে চলা চাই,
এক সাথে- মিলেমিশে কাজ করা চাই।
কর্মের ভিতর দিয়ে ভাগ করে করে,
জীবনকে সুন্দর করে গুছিয়ে পিঁপড়াবাদকে প্রণাম করে। -
বুদ্ধির বিপক্ষে
বুদ্ধির বিপক্ষে
-রাজীব লোচন বালাজীবন হল রূঢ় সত্য,
নানা রঙ্গে আবর্ত।
জ্ঞান-পান্ডিত্য, বাক্যবাণের মানুষ,
আছে হাজারো_____
সন্দেহ নাই, বিস্ময়ের অন্তও নাই!
এই বিশ্ব চরাচর।
বুদ্ধিবল নাকি বড় বল !!!
মানুষ ভেবে বসে,
বুদ্ধি আর প্রতাপ যে এক নয়,
তা কয়জন বোঝে।
মানুষ যারা যারা এই ধরণীতলে,
বুদ্ধি নয়, প্রেম আর ত্যাগের তরে____
চির প্রেমাসন পেল মানব হৃদ-কাননে।বুদ্ধি দিয়ে সুদীপ্ত বাবু! হওয়া যায়,
গরীব মেহনতীর রক্ত-ঘামের মূল্য ফেরত দেওয়া যায় না।
বুদ্ধি দিয়ে এম.এল.এ. হওয়া যায়, মন্ত্রী হওয়া যায়,
মানুষের মন নিয়ে লুকোচুরি খেলা যায় ____
কিন্তু,
‘মানুষ’ হওয়া যায় না, সততার সহিত বাঁচা যায় না।মনুষ্যত্বের বাণী বুদ্ধি দিয়ে মনে আসে না,
আসে বিবেক থেকে, হৃদয় মর্ম থেকে;
বিবেকের কথা, মনের অনুভূতির কথা_____
বুদ্ধি দিয়ে হয় না,
হয় প্রাণের পরশে, হয় জীবনবোধ থেকে।মনে রাখা উচিৎ, বলি সবার মাঝারে____
বুদ্ধি দিয়ে স্বরাজ আসেনি !
বুদ্ধি দিয়ে ” দেশভাগ” রোধ করা যায় নি।
বুদ্ধি দিয়ে কখনো স্বাধীনতার হোম যজ্ঞে নিজেরে,
নিরঞ্জন দেওয়া যায় নি,
আত্মস্বার্থ শূন্য যুদ্ধের কাফেলায় ঝাঁপ দেওয়া যায় নি।
হয়েছে গভীর মহাভাবের প্রেমের টানে___
একাত্মতার টানে , ক্রন্দনরতা জননীর ব্যাথার টানে।বুদ্ধি দিয়ে দেশের মানুষকে ঠকানো যায়,
এমনকি রাজসিংহাসনও পাওয়া যায় !
কিন্তু,
নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস হওয়া যায় না,
ক্ষুদিরাম, ভগৎ সহ বীর শহীদ হওয়া যায় না।
বুদ্ধি দিয়ে দেশপ্রেমিক-প্রমিকা হওয়া যায় না____পাষণ্ড হওয়া যায়, আখের গোছ গোছানো যায়,
চাটুকারিতা ,তালুচাঁটা “মানুষ রুপী মানুষ” হওয়া যায় !!!
বুদ্ধি দিয়ে কভু সৎ সাহসী “মানুষের মতোন মানুষ”____
মানুষ হওয়া যায় না, হতে পারে না।বুদ্ধি দিয়ে দাঙ্গা-অসৈরনতা ,সাম্প্রদায়িকতার বিষ ঢেলে,
পৃথিবী গ্রাস করা যায়, মনুষ্যত্ব মেরে ফেলা যায়_____
ধর্মাধর্মের বিষাক্ত অনল এনে মানুষ মারা যায় ;
কিছু সৃজন করা যায় না।
সৃজন হয় মনের ভাবাশক্তির দ্বারা, প্রেমের দ্বারা,
মেলে তার প্রমাণ এই বিশ্বমানবের সায়রে।বুদ্ধি দিয়ে অনেক বড় ” Position ” পাওয়া যায়,
বড় মনের মানুষ হওয়া যায় না, কখনো না।
সম্মান-প্রেম-ভালোবাসা সহ প্রীতি পাওয়া যায় না।সত্যিই বলতে বুদ্ধি দিয়ে কবিতাও লেখা যায় না,
কবিতা লেখা যায় ” অনুভব ” দিয়ে, ” আবেগ ” দিয়ে __
মিথ্যা কিন্তু নয় ?
বুদ্ধি দিয়ে শব্দবাণ ছোঁড়া যায়,
মিথ্যা জ্ঞানদীপ্ত ভাষণ দেওয়া যায় ;
কিন্তু, তা কখনো হৃদয়স্পর্শী হয় না, হতে পারে না।বুদ্ধি ! সাধারণ অর্থে যাকে বলা হয় ” I.Q.”!!!
হায়রে কারও বেশি আবার কারও কম ;
এই দিয়ে কি কখনো একাত্মতার ভাব-সলিলে মেশা যায়?
প্রত্যুত্তর, পাহাড় – মরু, নদী- আকাশ থেকে,
গুঞ্জে গুঞ্জে আসবে, বলবে না আসবে না !
কেন নয় ? যদি জাগে প্রশ্ন মনের মাঝে_____
প্রশ্ন করবে নিজেরে বুদ্ধি দিয়ে কি করলাম এ জগতে।
বুদ্ধি দিয়ে শুধুই নিলাম, দিলাম না কিছুই ;
তখন কিন্তু অনুতাপের আগুনে যেতে হবে, হবেই যেতে।জীবনে তবুও বুদ্ধি চাই,
সুমতি চাই না !!!
জীবনে বুদ্ধিমান হতে চাই,
দায়িত্ববান হতে চাই না !!!
বুদ্ধি দিয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিতে চাই,
প্রেমের বারিতে মানুষকে একসাথে নিয়ে,
রাঙ্গাতে চাই না !!! মিশতে চাই না !!!
বুদ্ধি দিয়ে কাউকে ডেঙ্গানো যায়,
সর্বোচক্ষের সামনে কাউকে ছোটো করা যায়_____
অপমান করে নীচু দেখানো যায় !
কিন্তু,
কারোর প্রাণের স্পর্শ বোঝা যায় না, দেখা যায় না।জীবনে ____ জীবন চাই, মর্ম চাই,
এগিয়ে যেতে চাই, চলতে চাই – বলতে চাই,
মন- প্রাণ দিয়ে____
প্রেম- প্রীতি সহযোগে , ভালোবাসা দিয়ে ।কোথায় সেই দিন ? সেই অম্লান সৌরোজ্জ্বল হাসি____
তারই খোঁজ করি জীবন ভরে, এই হিয়ার অন্দরে,
কেউ কি বলতে পারো মোরে ?
পারলে বলো_____
তবে বুদ্ধি দিয়ে নয়, পরম আর মরম মিলেমিশিয়ে,
একবার বন্ধু একাত্ম হয়ে এই ভবের মন্দিরে। -
শেষ ইচ্ছা
শেষ ইচ্ছা
-রাজীব লোচন বালাএই জীবনে যা কিছু পেয়েছি, যাই বা হয়েছি,
কিচ্ছুটি রবে না সাথে, সারা জীবন ধরে।
ইচ্ছা একটাই মনে সুপ্ত রেখে;
আবার আসি যেনো ফিরে বারে বারে,
সবুজ নীড়ের তীরে এই বাংলায়।
রামধনু থেকে সাতরঙ্ নিয়ে ইচ্ছা জাগে _____
ভরিয়ে দেই সবার মনে-প্রাণে।
বাংলা মায়ের কোলের সন্তান রুপে,
ফেরার আশা নিয়ে, যাব যে পুনঃপুনঃ চির শান্তির ঘুমে,
নতুন ইচ্ছার আশা নিয়ে। -
তুফান চাই বারে বারে
তুফান চাই বারে বারে
-রাজীব লোচন বালাঋতু যায় ঋতু আসে, ভাববার দরকার নেই,
বৈশাখে, কালবৈশাখী আসবেই
চিন্তার কিছু নেই মনে-প্রাণে!
কালবৈশাখী আসবে – ফিরবে, তবুও হুঁশ হবে না।বারেবারে পঙ্ক থেকে উঠবে শব! আর্তনাদ আর ত্রাহি ত্রাহি রব
রইবো ঘরে নিস্তব্ধ নিশ্চুপে! যেন কিচ্ছুটি হয়নি!!!
কার কি আসে যায়, নিজে বাঁচলেই হল তাই না?
নিজের ঘরের সন্তান-সন্ততি ভালো থাকলেই হল,
ভালোভাবে চললেই হল, কি আর চাই?দেখো নি মুখ ফিরিয়ে, একটু মাথা তুলে,
হয়তো কোনো ‘বৈশাখী’, লড়ছে মন্দিরে
কালবৈশাখীর ঝড়ে তীব্র যন্ত্রনায়, আর্ত চিৎকার শেষে___
অত্যাচারের শেষে, নিশ্চল শীতল হবে শেষে!!!পরের দিন উন্নাসিক দৃষ্টির বাঁকে, বৈশাখী বেলায়,
আলতো হাওয়া লেগে মনে, এসে বলবে সবাই
মানুষ! একি হল শান্তির বৈশাখী মেলায় হায়রে !!!
ভাবতে ভাবতে মানুষ দিন কাঁটাবে,
চলতে- ফিরতে, খবর আরও রাঙ্গিয়ে ছাপা হবে।নাড়ু গোপাল সেজে মিথ্যা যন্ত্রণার অভিনয়
বুক ফাঁটানো দরদ উথলে উঠে তখন জানান দেবে,
হায় ঈশ্বর!!! একি কাল সময় বয়ে চলছে মানুষ?হবে না কিছু, ‘রাখাল’ না হলে, চঞ্চল বাস্তবিক না হলে_____
চার দেওয়ালে আবদ্ধ থেকে যেমন,
কালবৈশাখী না যায় দেখা;
বোতাম আঁটা জামার তলে শান্তিতে ঘুমন্ত থেকে,
সাত্যিক একাত্মতায় মেশা যায় না, ভাব বোঝা যায় না।ভাব সাগরে দেহ মেলে, আয়েসি শরীরপোষন করে দিলে,
তুফান না উঠলে জীবন সায়রে,
কালবৈশাখীর ঝড়ে সঙ্গ হারা হতে
বদনে সময় বেশী আর নাই।প্রকৃতিতে কালবৈশাখী এসে বলে দেয়,
জীবনটা শক্ত করো, দৃঢ় করে তোলো, কেই কারও নয়___!
নইলে উড়িয়ে নিয়ে যাব, কালের গহনে,
তাই শুধু মানুষ রুপেই সেজে বসে থাকলে!ঝেড়ে ফেল সমস্ত শব্দ-কবিতা আর গান,
মনুষত্বের অবনমনের নাটক দেখতে এ সংসারে।
তবুও, তুফান চাই এই “মরা গাঙ্গে”,
মানুষের অন্তর হৃদয়ে কাল বৈশাখী রুপে
নব সমুজ্জ্বল দিগন্ত উন্মোচনে।হৃদয় মন্দিরে তুফান নিয়ে জেগে দাঁড়াও আবার,
সমস্ত ঝড়কে, ছিন্নমূল করতে_____
সজাগ, সাহসী রাখাল ছেলে হয়ে,
সিংহপরাক্রমে তুফান তুলে কালে কালে এ ভূ- মন্ডলে।