-
অণু গল্প- স্বপ্ন সন্ধানী
স্বপ্ন সন্ধানী
-রাণা চ্যাটার্জীঠেকে এলি কিন্তু এমন গুম হয়ে কি ভাবছিস বলতো অয়ন !!এত কিসের ভাবনা?
না রে কিছু না বলে সিগারেটে টান দিতেই পুলক পাশ থেকে প্রশ্ন ,’ কি ভাবছিস বল ভাই,তোর বাড়ি গিয়েও দেখছি কি সব কাগজে কি সব হিসেব আর ভেবেই চলছিস!
পল্টু ফুট কেটে বলল সবাই মিলে আয়নক্স যাই,ফিল্ম দেখে পিৎজা খেয়ে ফিরবো।
থাক না ওসব ,পুজো আসছে হাতে টান আছে,এসব পরিকল্পনা না হয় অন্য একদিন হবে।
কি বলিস রে অয়ন তুই।দিল দরিয়া তোর কিনা অর্থের টান!আগে প্রায় খাওয়াতিস তুই! এখন কি প্রেমে ইনভেস্ট করছিস,তাই চিন্তা মগ্ন!না রে ,পুজোর চার দিন কিছু ভিখারিকে ভিক্ষা করতে নিষেধ করেছি,ওদের নিয়ে কিছু করার ইচ্ছা ছিল ।ওদের সংখ্যাটা আর কিছু যদি বাড়াতে পারতাম খুশি হতাম কিন্তু আমি নিরুপায়।
‘কি ভাবনা তোর শুনি?ভিক্ষা করতে মানা করলে ওদের চলবে কি করে?পুজোর দিন গুলোতে ওদের ভিক্ষা করতে বারণ করে ,কি প্লান তোর মাথায় আসছে না কিছু ‘বলে মাথা চুলকে সুকান্ত থামতেই শান্ত গলায় অয়ন বললো, বলছি দাঁড়া বলে আর একটান দিয়ে সিগারেটের আগুন জুতোয় নিভিয়ে বসলো।
“তেমন বিরাট কিছু ভাবিনি রে-পাড়ার একটা হোটেলে বলে দিয়েছি ওরা এলে যেন যত্ন করে খাওয়ায়,তাচ্ছিল্য না করে ,খাবারের বিল মেটাবো আমি । দেখলাম চল্লিশ টাকা করে মিল হিসাবে পাঁচ জনের দুবেলার খাবারের দায়িত্ব নেবার আটশো টাকা হাত খরচায় জমেছে আমার”।
কি দারুন ভাবনা রে বন্ধু!এত সুন্দর করে কজন ভাবে বল!আমরা সবাই একটু দায়িত্ব ভাগ করে নিলে এত অভাব থাকে না ওদের পূজার দিনে।
হম রে ভীষণ মানসিক শান্তি। ওদের নির্ভেজাল হাসি আসলে আশীর্বাদ স্বরূপ।অল্প হলেও
দায়িত্ব নিয়ে দেখ ভালো লাগবে। শুধু নিজে ঘুরবো-ঠাকুর দেখবো ,পূজায় আনন্দ,খাবো এসব না করে ওরাও কটা দিন একটু চিন্তা মুক্ত হয়ে ঠাকুর দেখুক।আমিও রাজি অয়ন। সামান্য টিউশানি করি তাই দুজনের দায়িত্ব নিতেই পারি। পল্টু বলল আমিও নেব।
বাহ,এভাবেই আমার ভাবনা যদি ছড়িয়ে পড়ে, খুশি গুলো বাঁটোয়ারা করতে পারি তবেই আমার শপথের সার্থকতা।তোদেরও খুব ভালো হোক।কথা দিলাম বিবেক পরিশুদ্ধ হয়ে দারুন কাটবে পূজা।
-
কবিতা- না বলা কথা
না বলা কথা
-রাণা চ্যাটার্জিঅনেক তো হয়েছে কথা…
কথার পিঠে কথা সাজিয়ে নির্মিত সুদৃশ্য তোরণ,
প্রাসাদ রাজমহল, তবু না বলা জমা কথার ভিড়,
চোরাস্রোতে বয়ে চলে সময়ের গতিশীলতায়।যা পিচ্ছিল করে মন,থমকে হাঁক দেয় শোন,
সময়ের ক্যালেন্ডারে পঙ্কিল যাতনায় মহারণ!
ভাবনার পিচ্ছিল আবর্তে,না জানি কোন শর্তে,
চুপ করে বসে থাকে মনের চোরা কুঠুরি জুড়ে।
ঘুলঘুলি বেয়ে উঠে আসা স্যাঁতস্যাতে শিহরণ।শব্দ মালায় শব্দের ভিড় তবু না বলা কথার দল,
অস্থির স্রোতে উদাস ঠোঁটে বড়ো বেশি চঞ্চল!
ভাবনার গহ্বরে শব্দগুচ্ছের শুনি হিল্লোল ঝঙ্কার,
তবু কিছু কথা নির্বাক হয়ে বলা রেখে যায় বাকি।মেঘের চাদরে বারে বারে লুকাই যত মুখ,
হাহাকারে নামে হৃদয় অলিন্দে, ক্রন্দনরত দুখ!
কথার দল ভেসে চলে আগাছার পিছুটান
ঘুড়ি লাটাই সূতোর সুতীব্র আকর্ষন অভিমান,
এই বুঝি নেমে আসে মনে শান্তির বাতাবরণ।তবু ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় ভাবনারা চোখে হারায় ,
এক লহমায় ছুটে আসে শব্দের বুদ্বুদ,অদ্ভুত।
শব্দের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমে ওঠা বারুদের স্তূপ,
ঠাসা অভিমানে সম্ভাবনার হঠাৎ উল্কাপতন!
তবু কথার দল সারিবদ্ধ ভাবে এসেই চলে মনে,
ক্রমশ মুছে দিতে চায় আবেগী জীবনের গ্লানি,
কষ্টের নামকরণ কখন যে হয় দুঃখ বিলাসী,
এর মাঝেই না বলা বাকি কথারা,সপ্রতিভ
বলতে চায় ভালো হয়ে যাক পৃথিবীর অসুখ,
শুভ হোক যা কিছু জমা ক্ষোভ, শুভ হোক। -
অণু গল্প- নববর্ষ
নববর্ষ
-রাণা চ্যাটার্জীওরে তোরা ওঠবি কখন!আজ নববর্ষ! বাবার ডাকে তড়াক করে উঠে ঘুম জড়ানো বাসিমুখে দুইভাই বোন পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানালো ।স্নান সেরে ঠাকুর প্রণাম সেরে বাবা মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে রুমকি বললো,বাবা তুমি ভাইকে নিয়ে লক্ষীশ্রী, রায় ক্লথ যেও।আমি মায়ের সঙ্গে সন্ধ্যায় শ্রী বস্ত্রালয় যাবো হালখাতা করতে।
আনন্দে লাফিয়ে ভাই বলল নবদূর্গা, স্বর্ণ জুয়েলার্সও যাবো তো।আরে তাই তো,রূপক তোর যে পোয়া বারো বলে সবাই হেসে উঠলো।
এবছর সাতটা দোকান থেকে হালখাতার নিমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছসিত রূপক। শুধুই অপেক্ষার দিন গুনছিল ।নববর্ষ মানেই অদ্ভুত একটা আনন্দ আকাশে বাতাসে। সবে শেষ হাওয়া চৈত্র সেলে খান তিনেক নতুন জামা হয়েছে তার। সকাল থেকে প্রভাত ফেরি আয়োজন,রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাদকতা মেখে ছোট বড়ো সবাই মন্দির,রাস্তায় নেমেছে।
দিদি তুই তো গত বছর রায় ক্লথ যাস নি,কোল্ড ড্রিংকস,এত বড় প্যাকেট আর জানিস একটা চাবির রিং উপহার দিয়েছিল।জানি তো ভাই,ওই জন্যই তো তোকে পাঠাচ্ছি।এসে বলিস কিন্তু কি কি হলো।
ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেলো রুমকির।মা বলে হেঁকে ফেলেছিল ভুলে। এ কি এতক্ষণ কি তবে সে স্বপ্নে পৌঁছে গেছিলো শৈশবের হালখাতা,নববর্ষ উৎসবে।!মা বাবা আজ কেউ বেঁচে নেই,ভাই স্কটল্যান্ডে সেটল।চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো রুমকির।আয়নায় নিজেকেই শুভ নববর্ষ শুভেচ্ছা জানিয়ে সংসারের কাজে মন দিলো।
-
কবিতা- অন্তরাত্মার ডাক
অন্তরাত্মার ডাক
-রাণা চ্যাটার্জীচলে যাবে! এত জলদি!
এই অনর্গল বকবক করা চনমনে আমিটা,
এই বার্তা পেতেই কেমন যেন দল ছুট মেঘের মতো একাকী নিঃসঙ্গতায় থমকে গেলাম…!ঝুপ করে সন্ধ্যা নামার মতো …
মনের মধ্যে আঁধার নেমে হঠাৎ যেন,
শুন্যতার প্রলেপ মাখা আমিতে রুপান্তর।থাকো না আর একটু…
জানিতো সময়ের কাছে দাস খত দেওয়া সবাইকে নিজ কাজের মগ্নতায় ক্ষণিকের সরে যেতে হয়!আবার ফিরবো সেই চনমনে গল্পের আড্ডায়…
ওই দূরে মন্দিরের সন্ধ্যা আরতি,শঙ্খ নাদ,
প্রদীপের আলোয় মন ভালো করে দেওয়া মুহুর্তরা, পবিত্র এই ক্ষণে মাথায় টোকা দিয়ে বলবে তুমি…
“পাগল নাকি…! কোথায় আর যাব,
যাই নি কোত্থাও..এই যে একদম পাশে,
মন দিয়ে কাজ না করলে পিছিয়ে পড়তে হয়।” -
কবিতা- ইচ্ছে করে হারিয়ে যেতে…
ইচ্ছে করে হারিয়ে যেতে…
-রাণা চ্যাটার্জীপথ চলতে চলতে খুব ইচ্ছা করে হারিয়ে যেতে..,
এই মাঠ, ঘাট প্রান্তর, রাস্তা ভিড়ভাট্টা বাস ট্রেন সবকিছুর মধ্য দিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া
আমি’টা র হঠাৎ অন্তর্ধান ইচ্ছা….ইচ্ছা করে এ ইঁট কাঠ পাথরের কৃত্রিম জঙ্গল থেকে মুক্ত হয়ে পৌঁছে গেছি যেন সবুজের দেশে।
কল্পনায় দেখি বিশালাকার সুউচ্চ পাহাড়,বিনম্র চিত্তে শেখাচ্ছে অহংকারী না হওয়ার মূলমন্ত্র!বিস্তৃত নীল আকাশ বলে,যতটুকু পারো নির্মল
হয়ে ছড়িয়ে দাও উদারতা সহযোগিতার হাত…
উড়ে আসা মেঘের দল পাঠ দেয়, দুঃখ-কষ্ট অভিমান ঝরিয়ে মনের ভার লাঘব করতে!বাড়ি ফেরা একদল পাখি ডানা ঝাপটে বলে, স্বার্থপরতায় মানসিক শান্তি আসে না, একসাথে মিলেমিশে থাকার নামই হলো জীবন।
সবুজ গাছের ডাল দোল খাইয়ে আবার ভিড় রাস্তায় সবার মাঝে পৌঁছে,
একাকিত্ব উপলব্ধি করে বলে,দূষণ মুক্ত জীবন নাই বা শহরের বুকে সম্ভব হলো চিরসবুজ থাক মন,
সংঘাত বিভাজনে নয় বাঁচুক সভ্যতা একতার মন্ত্রে। -
কবিতা- ফিরুক শান্তি সহাবস্থান
ফিরুক শান্তি সহাবস্থান
– রাণা চ্যাটার্জীআমার মনের চোরা কুঠুরিতে
এখনো দাউ দাউ জ্বলছে শান্তির নামাবলী গায়ে,
পুড়ে কাঠ হয়ে যাওয়া ভীত সন্ত্রস্ত একদল মহিলা,শিশু কন্যার স্বপ্ন দেখা নিথর দেহ!
এই তো সেদিন মার্চেই নারী দিবস পালনের আছড়ে পড়া শুভেচ্ছা স্রোত …,
এখনো কেবল তাজা নয়,রীতিমতো মনে ফিল গুড ছড়ানো গর্বিত নাগরিক বৃন্দ!
রাতারাতি মঞ্চ বেধে নারী বন্দনার এই প্রাণবন্ত মন তবে কেন বিষাক্ত লেলিহান ছোবলে এমন নৃশংস
অনাকাঙ্খিত পরিণতি!সংসারের ধারক বাহক নারীরা সম্মান পাক এই সামান্য প্রার্থনায় উজ্জীবিত জগৎ সংসার,
এক লহমায় প্রশ্ন চিহ্নের মুখে বিপন্ন কাতর আর্তি!
নাকে আসছে দগ্ধ শরীরের পোড়া কটু গন্ধ…!
লাশ গননা, জল্পনা,কল্পনা আর বিচিত্র ভাবনায়
গতিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়াতে মজুদ কুচক্রী বাতাস!নারীদের গুণগান প্রশস্তিতে ছয়লাফ নেট দুনিয়ায় হঠাৎ এমন আক্রোশের আগুনে
বড্ড বেমানান দিশেহারায় মন!!
তাবলে কন্যাশ্রী,বেটি বাঁচাওয়ের রঙিন পোস্টার পাশ কাটিয়ে দাবানল !
আপন স্বকীয় স্বত্তায় রাজনীতির ঘৃণ্য নিকেশ করার চিরাচরিত ফর্মুলা!
বন্ধ হোক ঘৃণ্যতা,লাগু হোক অপরাধের চরমতম শাস্তি বিধান,
ভেসে ওঠা ক্রন্দন ধ্বনি কোল খালি না করুক কারুর,সত্যি চাইনা গনতন্ত্রের কদর্য বিজয় উল্লাস -
কবিতা- আক্ষেপ
আক্ষেপ
– রাণা চ্যাটার্জীআক্ষেপ কখনো আমারও তো হয়,
এই বুঝি অতর্কিতে গ্রাস করে ভয়!
মনের মাটি আলগা হলে অবশ্যম্ভাবী ক্ষয়,
এটাই নিয়ম,অস্বাভাবিক কিছু নয়,
ভ্রুকুটি ছুঁড়লে কেউ, সমালোচনার ঢেউ,
উজ্জ্বল মুখ ডুব আঁধারে, পিছু হটে জয়!
এমন হলে আক্ষেপ প্রায়শই দেখি হয়।দিনে দিনে যদি বেড়ে চলে দেনা,
হতাশার কম্পনঝড়, পূর্বাভাস আনাগোনা!
এই আনমনা মন তোলে আলোড়ন,
হৃদয় অলিন্দে অশনি সংকেত শিহরণ!
সত্যিকারের নির্ভেজাল মানুষজন পাশে,
না ডাকলেও যদি অবলীলায় অনায়াসে,
গুনে দেখো সঠিক শুভাকাঙ্ক্ষী কয় জনা!মুখোশ পরে মানুষ থাকলোই পাশে যদি,
খাল বিলেরও দেখি নাম হয় কখনো নদী,
সত্যিকারের নদীর মতো তবু স্রোত থাকে না,
এমনভাবে মিথ্যা বহন সম্পর্কেরই অবক্ষয়!আচমকা সব বুঝে তুমি মুখ ঢাকলে পরে,
উদাস, উচাটন বিহ্বল মন কেমন করে!
আসল সত্যিটা যদি অচিরে প্রতিষ্ঠা পেলই
মিথ্যা আশ্রয় নেওয়ার আদৌ প্রয়োজন থাকে না!আক্ষেপ তাই আজও ধাওয়া করে যায় পিছে,
জীবন বড়োই জটিল এ সত্য, নয়কো মিছে।
এভাবেই রচিত হয় ইতিহাসটুকু যেন,
অবক্ষয়ে আক্ষেপের শিকড় অম্লানও। -
কবিতা- অস্থির সময়
অস্থির সময়
-রাণা চ্যাটার্জীসময় এখন ভীষণ গতির,
হোক না জীবন অনামী!
প্রেম প্রণয়ের দাবা খেলা
রোমান্স ঘনায় সুনামী।আড্ডা প্রেমের তুফান ছোটে
স্পর্শ সুখের উল্লাসে ,
নিভৃতে কি করছে ওরা
পাবলিকের কি যায় আসে!যুগের তালে হাওয়ার পালে,
উড়ছে ঝিঁ ঝিঁ পতঙ্গ,
উদ্দীপনা ফুলকি ছোটায়
মুক্ত আকাশ বিহঙ্গ।বলছি শোনো চিন্তা কেন,
সংস্কৃতি কি রসাতল!
নেট দুনিয়ার অক্টোপাশে
ভাবনা গভীর,নেই অতল। -
কবিতা- চাই না তুমি কষ্ট পাও
চাই না তুমি কষ্ট পাও
-রাণা চ্যাটার্জীআমি তো কষ্ট দিতে চাই না তোমায়….,
দেবো না কখনো এটা অন্তরে গেঁথে নিয়েও,
মজার ছলে কিছু একটা বলতে যাওয়ার পরিণাম যেভাবে রক্তাক্ত করলো তোমার হৃদয় অলিন্দ,
যা বলেছি না হয় ফিরিয়ে নিলাম অবলীলায়।জানি তো ধনুক থেকে ছোঁড়া তীর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না,
তবুও এ তীর যখন অজান্তেই গেঁথে বিহ্বল করেছে,
কল্পনায় দেখতে পাচ্ছি রক্তে ভেসে যাওয়া মেঝে,
অব্যক্ত যন্ত্রনা কাতর তোমার করুণ মুখ মন্ডল,
আমার কলিজাও কেমন যেন স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে…..,ক্রমশ অনুশোচনায় ক্ষয়ে যাওয়া আমি নিজেকেই
দু গালে সপাটে চড় মেরে শিক্ষা দিচ্ছি ,”যা হয়েছে খুব খুব ভুল হয়েছে,এভাবে যা খুশি বলার আগে
ভেবে নেওয়া খুব দরকার শব্দের মিথস্ক্রিয়া।সামান্য হলেও শব্দের গভীরতা যেভাবে ফালাফালা করলো,
নির্দ্বিধায় ফিরিয়ে নিলাম শব্দব্রম্ভ সম বিষাক্ত তীর,নিজের বুকে গাঁথতেও কোনো দ্বিধা নেই,
এভাবেই যেন তোমার যা কিছু কষ্ট, ঝরে পরা চুঁইয়ে পরা ক্ষত নিজের বলে সয়ে নিতে পারি এটাই হোক না আমাদের বোঝাপড়ার শক্ত ঘাঁটি। -
কবিতা- আক্ষেপ আমারও তো হয়
আক্ষেপ আমারও তো হয়
-রাণা চ্যাটার্জীআক্ষেপ কখনো আমারও তো হয়,
এই বুঝি অতর্কিতে গ্রাস করে ভয়!
মনের মাটি আলগা হলে অবশ্যম্ভাবী ক্ষয়,
এটাই নিয়ম, অস্বাভাবিক কিছু নয়,
ভ্রুকুটি ছুঁড়লে কেউ, সমালোচনার ঢেউ,
উজ্জ্বল মুখ ডুব আঁধারে, পিছু হটে জয়!
এমন হলে আক্ষেপ প্রায়শই দেখি হয়।দিনে দিনে যদি বেড়ে চলে দেনা,
হতাশার কম্পনঝড়, পূর্বাভাস আনাগোনা!
এই আনমনা মন তোলে আলোড়ন,
হৃদয় অলিন্দে অশনি সংকেত শিহরণ!
সত্যিকারের নির্ভেজাল মানুষজন পাশে,
না ডাকলেও যদি অবলীলায় অনায়াসে,
গুনে দেখো সঠিক শুভাকাঙ্ক্ষী কয় জনা!?মুখোশ পরে মানুষ থাকলোই পাশে যদি,
খাল বিলেরও দেখি নাম হয় কখনো নদী,
সত্যিকারের নদীর মতো তবু স্রোত থাকে না,
এমনভাবে মিথ্যা বহন সম্পর্কেরই অবক্ষয়!আচমকা সব বুঝে তুমি মুখ ঢাকলে পরে,
উদাস, উচাটন বিহ্বল মন কেমন করে!
আসল সত্যিটা যদি অচিরে প্রতিষ্ঠা পেলইমিথ্যা আশ্রয় নেওয়ার আদৌ প্রয়োজন থাকে না!
আক্ষেপ তাই আজও ধাওয়া করে যায় পিছে,
জীবন বড়োই জটিল এ সত্য, নয়কো মিছে।
এভাবেই রচিত হয় ইতিহাসটুকু জেনো,
অবক্ষয়ে আক্ষেপের শিকড় অম্লানও।