• কবিতা

    কবিতা- মরণের প্রতিদিন

    মরণের প্রতিদিন
    -শ্রী শুক্রাচার্য্য

     

    ভাসা ভাসা সভ্যতা আমি অন্তরে অসভ্য !
    ইতিহাস চর্চার প্রিয় চাওয়া…
    কলমের কালি দিয়ে দাগ পড়ে যাওয়া,
    দাগে নূতন কিছু পাওয়া…
    এই সুন্দর মনটা শূন্য ছিল খোলা আকাশের
    নীচে, শকুন সান্নিধ্যে ভাগাড়ে ভাব…
    ভালো ভালো কথা চামড়ার ফতনায়, পচা গন্ধ
    পছন্দ; চায় সমাজ পাপ…
    উলঙ্গ আমি, কাপড় বেঁধে রাখা তোমার দৃষ্টি;
    উলঙ্গ তুমি- অদৃশ্য মৃত্যুর বৃষ্টি…
    কয়লার খনি থেকে সভ্যতা খুঁজি, পচাগলা স্থাপত্যে
    মৃত স্তূপের কবরে প্রযুক্তির সৃষ্টি…
    ধান্দা গণিতজ্ঞ খুবলে খাচ্ছে চাহিদার মাথা, নিশ্চুপ
    অংশীদার মুখ বন্ধ প্রতিশ্রুতি…
    শতকরা হারে ঢাকা আছে স্বপ্ন, গবেষণার বিজ্ঞান
    পাহারাদার নাটকে, অভিনয় মিনতি…
    গোল হয়ে ঘিরে আছে ভিনগ্ৰহের আত্মা, ভূগোলের
    মেঘলা আকাশ একফোঁটা জলে…
    ছিন্ন ভিন্ন কাটাছেঁড়া যোগ বিয়োগে, দেহে প্রাণী বিদ্যায়; জন্ম মৃত্যুর বেসাতি চলে…
    নিয়ত রাতের যজ্ঞে অসুরের জন্ম তপস্যায় শকুন শকুনির পিশাচী রক্ত…
    নাচানাচি করে ভূতে প্রেতে,প্রত্যাশা শ্বশ্মানের প্রাচীন প্রাণের ছাই চাপা ভক্ত…
    অপদার্থ পুঁথি গেলা আত্মা পদার্থের তল্লাশি করে, মাংসখেগো শিকারীর চোখে…
    মৃত্যুর দেবতাকে আগলে রাখতে চায়, জীবন্ত প্রকৃতি উপেক্ষায় ! অদৃশ্য শক্তির ইচ্ছা রুখে…
    মৃত্যুর জন্য এগিয়ে থাকার প্রস্তুতি, শান্ত করে যায়
    যত অভিনয়ের মিথ্যা সম্পর্ক…
    বর্ণ ভেদে শব্দ ভেদে ধর্মের যুদ্ধ, জাতি সংঘর্ষে অল্প শ্বাসের চেতনায় বিতর্ক…
    উৎপত্তি ধ্বংসের মহাকাল, নিয়তির কাছে চুক্তিবদ্ধ
    প্রগতির পথে নির্ভীক মানব…
    সত্যের ধ্বজা আদিমতার ল্যাজে বেঁধে বিজয়ের ভাবনা, দুপায়ের দানব…
    যুগান্তরের সভ্যতা খুঁজতে থাকে শাসনের চাবিকাঠি,
    হিংস্র ক্ষমতায় ডুবে অস্তিত্ব…
    নিশুতি রাতের অভিসারে ফিসফিস করে প্রকৃতি, কান্নায় ভেংগে পড়ে তার একাকিত্ব…

  • কবিতা

    কবিতা- “অবিন্যস্ত অবিনাশী অনুরাগ”

    “অবিন্যস্ত অবিনাশী অনুরাগ”
    -শ্রী শুক্রাচার্য্য…

     

    এক খন্ড পৃষ্ঠায় যেন আঁকিবুঁকি কেটেছে;
    ভূপৃষ্ঠের নদী পুকুর খালবিল
    এভাবেই ছুটে গেছে…
    প্রকৃতির যৌবনের মাতাল রূপে বিভোর,
    তরু কান্তার যেন যৌনতায়
    নিস্তব্ধ হয়ে আছে…
    দর্শক গগনের অঝোর ক্রন্দন ধারা নিয়ত
    সিক্ত করে, কিছু স্মৃতি মুছে দেয়;
    যেন ভুল শব্দের বানান…
    কান্তার পথে নির্ভীক চন্দ্রিমা একাকী নৃত্য
    করে, জোয়ার ভাটায় রূপক ছলে;
    তরুলতা আর গুল্ম পেতে রাখে কান…
    প্রকৃতি মিলনের নন্দ পরিহাসে অশান্ত ভানু
    লুটোপুটি খায়, লজ্জার আনাচে কানাচে;
    পাগল হয়ে ওঠে নিসর্গ…
    কলকল ধারা ছলছল হারা আবেগী নির্ঝরিণী,
    ফুরুফুরু সমীরে উরু উরু মহীরুহ পল্লব নাচে;
    কাঁপে অনন্ত কাঁপে ভূস্বর্গ…
    ঝুরুঝুরু পরশে আগ্নেয়গিরি বরষে গুরুগুরু
    শব্দের লাজে, রাঙা পর্বত শৃঙ্গের সাজে;
    বেদনার আর্তনাদ শুনতে চাও…
    দুরু দুরু বুকে সুরাসুর সুখে আত্মহারা প্রাণীকুল,
    জন্ম মৃত্যুর চাদরে ঢাকা স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে;
    যত অবান্তর ইচ্ছা সাজাও…
    ঝিকিমিকি তারা মিটিমিটি হাসে অমাবস্যার রাতে,
    ধিকিধিকি জ্বলে অশান্ত অভিমানী চন্দ্রিমা;
    আদিত্য অভিসার আলিঙ্গনে…
    বিন্দু বিন্দু বরিষ ধারা হিন্দু সিন্ধু সরিৎ এ ঝরা,
    রবি চন্দ্র মিলন বেলায় যেন নাচে তালে তালে;
    কল্লোলিনীর হৃদয় অঙ্গনে…
    একাকী নির্জন নিহারিকার অগুন্তি স্রোতে ভেসে,
    অজুত সাংখ্য দর্শনে হেসে হেসে কথা বলে;
    উলঙ্গ কালপুরুষ দোতারা হাতে…
    বিজলীর তরঙ্গে ছলকে ছলকে ওঠে তোমার মঞ্চ;
    পবন দাপটে বাগিচায় ঝরে পড়ে পুষ্পবৃষ্টি,
    আমি ঘুমিয়ে পড়ি গভীর রাতে…
    ঢুলুঢুলু আননে স্বপ্নের কাননে আপনারে ভুলি;
    গহীন নিদ্রায় কে যেন গোধূলির আলো মেখে,
    বিস্তৃর্ণ জলধির পরে…
    এক পক্ষ কৃষ্ণ নামে ষোল সূর্যের বাঁধন খুলে;
    দ্বি পক্ষ শুক্লা নামে ডাক শুনে রাধিকা বলে,
    হরে কৃষ্ণ হরে রাম রাম রাম হরে…

  • কবিতা

    কবিতা- বিভূতির আড়ালে

    বিভূতির আড়ালে
    -শ্রী শুক্রাচার্য্য…

     

     

    নিজের কাছে নিজেকেই অচেনা মনে হয়।
    শ্বাসের বিবর্তন ঘটে, তবে সময়ের মৃত্যু হয়।।
    প্রাচীন মলিকিউলের বদ্ধতা মুক্ত করা ।
    অপরিচিত অসংখ্য আমিতে অভিজ্ঞতা ধরা।।
    সঞ্চয়পত্রে রাশি রাশি মৃত শব্দ কথা বলে না।
    সময় রেখার গন্ডি টানা তাই আগামী অজানা।।
    পাথরের গায়ে মুখবন্ধ; তুমি স্থাপত্য কলার কিছু।
    আজও ভীষন অশ্রু ঝরায়, সব খুশীর পিছু পিছু।।
    আমন্ত্রিত অরণ্যে নিশ্চুপ পল্লবী চিৎকার করে।
    হয়তো তোমার ই প্রতীক্ষায়! ইচ্ছা শব্দ মনের ঘরে।।
    জন্মান্তর শৈল তনু প্রপাতে, সিক্ত চোখের পলক।
    অন্ধকার কাব্য লিখে গেছে; তোমার দূরন্ত অলক।।
    দৃষ্টি উপন্যাস অবলম্বনে, নির্মিত রসায়ন পত্রলেখা।
    মৃত্যুর বাগানে বসে, বৃথা ভাবি না কেন আমি একা ?

  • কবিতা

    কবিতা- তুমি পড়বে তো?

    তুমি পড়বে তো?
    – শ্রী শুক্রাচার্য্য…

    নিঃশব্দ প্রেমে ইচ্ছে স্বপ্ন ছোঁয়া…
    হৃদয় শ্বশ্মান, চিত্তে চিতার ধোঁয়া…
    গোপন ব্যাথা বুকের মাঝে জেগে…
    চেনা মুখ অচেনা হয়ে আছে রেগে…
    শূন্যস্থান পূরণের অতিথি ছিল নাকি…
    আমি বিকল্প হয়ে ভাবনায় কেন থাকি…
    অশান্ত পথ হারিয়ে আমি কেন খুঁজি…
    ভ্রান্ত সময় চলে গেছে কিছু দিয়ে বুঝি…
    নিবিড়তা দূরত্বে দাঁড়িয়ে কিছুর খোঁজ…
    রাশি রাশি অনুভূতির গভীরে রোজ…
    এ যন্ত্রনায় যেন অশ্রু নেই, পরম সুখ…
    নিথর বুকে ভেসে অচেনার চেনা মুখ…
    আজ নিরর্থক নির্দেশের অপেক্ষা নেই…
    নিমজ্জিত আপনার আসা যাওয়াতেই…
    সেদিন রোদনের স্রোতে ভেসে গেছে যা…
    আজি নয়ন সরসীতে লিখেছি কবিতা…
    তুমি পড়বে তো?…

  • কবিতা

    কবিতা- জটিল জীবন

    জটিল জীবন
    শ্রী শুক্রাচার্য্য…

     

     

    জীবন কেমন একরাশ পথ চলায় আটকে আছে,
    যেখানে আনন্দটা প্রকাশ হীন…
    সুখ চাওয়া গল্পগুলো সিগারেটের প্যাকেটের মত
    সব, সৌন্দর্য্য যেন ধোঁয়ায় বিলীন…
    নিজেকে পুড়িয়ে দিয়ে আগুনের আনন্দ দেওয়ার
    উপলব্ধি আহরণ তৃপ্তি…
    জন্ম যেন এমনি হয় যেখানে শুধু মীমাংসায় কাল
    চক্র কাটে, জ্বলে না দীপ্তি…
    জানালার বাইরে উত্তপ্ত জানালার ভিতর উত্তপ্ত, বিবর্ণ
    তিক্ততা গলা জড়িয়ে ধরে…
    বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি , কেউ সারা দিল
    না! মনে হয় ছটপট করে মরে…
    কিছু পেয়ে পাওয়া হয় না কিছু না পেয়ে পাওয়ার মত লাগে,যেন অপ্রয়োজনীয় অংশ…
    খুব ইচ্ছেগুলো সব সোনার রথে চড়া স্বপ্নের মত লাগছিলো, কাছে যেন যন্ত্রণা…
    সকাল থেকে রাতের নিরন্তর স্বপ্ন গুলো ততক্ষন পর্যন্ত চাওয়া, আর চাই না…
    খেলায় হারিয়ে দেওয়া লক্ষ্যে কামনাগুলো আকর্ষণ করে শুধু উল্টো দিকে…
    যত এগিয়ে চলে জীবনের উপন্যাস পেছনে পৃষ্ঠার লেখাগুলো, মনে হয় ফিকে…

  • কবিতা

    কবিতা- নীরবতা

    নীরবতা
    -শ্রী শুক্রাচার্য্য

     

     

    নিয়ত নিশি কোনো এক আঁধারের যাত্রী
    চিৎকার করে ডাকে আমার পথের প্রতি বাঁকে,সে আহ্বান হারায় আমিকে আমার…
    অন্তর স্নায়ু রশি আবার ঘুমিয়ে পড়ে
    মিহিরের অপলক নুর স্তব্ধ করে গতি,
    আচ্ছন্ন স্বপ্নে অমানুষের মত কিছু বারবার…
    মৃত্তিকার মহিমা দেহ রূপে চাহে না আত্মা, পঞ্চতত্ত্বের অসীম ক্ষমতায় নতি স্বীকার
    করে সন্নিক অতৃপ্ত পিশাচের দল দিক ভ্রান্তির মায়াজালে…
    তবু সে আমি পিছু ছাড়ে না নাড়ী পথে!
    জীবন্ত রক্ত মাংস ছিঁড়ে খাওয়া নশ্বর জীবনের গতি, সেথায় মিলিবে জানি এ মার্গি কুন্ডলী মহাকালে…
    নদী বলেছে আমিকে, নারী বলে সে, জোয়ার ভাটায় রজঃস্বলা তার মোহনায় পুরুষ মিলে,অম্বুবাচী ধরার যেমন সৃষ্টি ঋতু, অনুরূপে শুদ্ধ চরণামৃত…
    পঞ্চতত্ত্বের আমিতে ভীড় ছিল, তোমাকে দেখতে পাইনি বলেছে অন্য আমি, তোমার আসা তো সাধারণ নয়, দিগন্ত মহাশূন্যেও
    যে সীমিত…
    শতাধিক অব্দ সেই সব প্রেত পিশাচের
    দল প্রতিক্ষায় ভীত সন্ত্রস্ত, জাগরিত শয্যায় আচ্ছন্ন ভাবনায় ব্যস্ত কুন্ডলিনী মৃত প্রায়…
    অগ্নির গনগনে আলোড়নে এক শীতল স্রোতস্বিনী দেয়, আমায় এক অচেনা গহীন অরণ্যের প্রাচীন নীরব দুর্নিবার অভিপ্রায়…
    আমি নির্বাক স্তম্ভের মত অচেনা আমার অন্তর নিবাসী যেন জিজ্ঞাসিছে এত বেদনা পাহাড়ের কেন ? যুগ যুগ স্থিরতা
    যেন ঝর্ণা ক্রন্দন তার…
    গম্বুজের ধূসর তরাই যেন নয়ন যূগলের
    স্বার্থ সম্পাদনে চেয়ে রয়েছে ! অনেক জিজ্ঞাসা তার, আমার অন্তর আমিকে
    সেই বা কার?…
    ধাবিত পাহাড়ি পথে অবচেতন পদব্রজে
    আচ্ছন্ন আমার অচেনা আমি যেন
    কোনো এক সঙ্গীতের স্বরে উথাল পাথাল তরঙ্গিনী প্রশ্ন করে…
    নিস্পন্দ রজনীর হিমাংশু আমায় অরণ্য যাত্রাপথের ঠিকানায় পৌঁছে লয়, সেথায় তরঙ্গিনী তীরে জ্বলন্ত বিক্ষিপ্ত নরদেহ দেখ অপূর্ব ঘোরে…
    এ মায়াবী অলির শর্ত যেন! ‘আমার কথা শোনো বন্ধু.. দীর্ঘ শতাব্দী ধরে তোমার অপেক্ষায় রয়েছি সৌন্দর্যের লীলাভূমি শৃঙ্গারে তুমি দেখবে বলে’…
    জন্ম জন্মান্তরের সম্পর্ক, তখন তুমি ছিলে আমাদের-ই কেউ, তুমি নও তুমি ! যাও সুষুম্নায় হারিয়ে.. মনে কর! কথা দিয়ে ছিলে আসবে
    বলে, আজ এলে ?…
    অপরাজেয় ধ্যানে মগ্ন বৃক্ষদল সমীরণে
    আমন্ত্রিত করে,সে অন্তর আমির দৃষ্টান্ত স্থাপনে চিৎকার করে ডাকে ‘কেন শুনতে পাও না তুমি…
    এ অধরা স্বপনের অন্তিম শ্বাসে গগন প্রশ্নে
    তখন আমিটা তৃণভূমি স্পর্শের মধুরিমা আশে , ‘এ সুন্দর বিশ্ব চাওয়া পাওয়া নিঃস্ব জন্মভূমি’…

  • কবিতা

    কবিতা- বন্ধ দৃষ্টি’

    বন্ধ দৃষ্টি’
    শ্রী শুক্রাচার্য্য

    পথে

    চলন্ত গাড়ি থেকে আকাশ দেখেছি
    দূরন্ত জীবন থেকে মানুষ দেখেছি
    ঘুরন্ত পৃথিবী থেকে শিক্ষা পেয়েছি
    অনন্ত আকাশে ভাবতে শিখেছি
    দেহকে
    সময়ের ব্যস্ততায় শ্বাস দিয়েছি
    ব্যর্থতার থেকে যন্ত্রনা নিয়েছি
    অবসর সময় তোমায় এনেছে
    আপনার মনে আলাপী ইচ্ছে
    বৈষম্য
    সুন্দরী প্রকৃতির শিকারি ফুল
    আমি দেখিনি সে ভাবনাটা ভুল
    যদি রূপ দর্শন ছবি এঁকেছে মনে
    প্রতি প্রশংসা যদি মনের কোণে
    আত্ম
    ইচ্ছেপ্রাণ মৃত্যুর মুক্তি চেয়েছে
    সবকিছু সে এ পথে পেয়েছে
    নাড়ি দেহান্তর আকাশে ডানা মেলেছে
    ইন্দ্রিয় উর্দ্ধ আলোক বিন্দু জ্বেলেছে…

  • কবিতা

    কবিতা-‘গুহায় আলো জ্বালি’

    ‘গুহায় আলো জ্বালি’
    শ্রী শুক্রাচার্য্য

     

     

    তোমরা জানবে না কেউ তবু অনন্ত নাটকীয়
    লৌকিক আলো…
    তোমাদের ঐ অজানা অন্ধকারই ভালো…
    তোমাদের জন্মসূত্রের মিথ্যে মিলন অপঘাতী আমন্ত্রণ…
    তীব্র দাবদাহে বিলীনের পথে তৃষ্ণার অতৃপ্ত নিকৃষ্ট আস্বাদন…
    নকল নিপীড়িত অজুহাতে যৌনতা তোমার আত্মতৃপ্তি অপ্রকাশিত জঙ্গলের ভাষা…

    অবচেতন সুরক্ষার চালাকির তালাটা গায়ের জোরেই খুলে নিজের প্রসংশা বের করা আশা…
    সেই সব পিশাচের দেহে প্রকাশের ভঙ্গি কখনো প্রকৃতির নিয়ম বিরোধী মর্যাদার ভিখারি …
    এই অনিয়মের অসময়ের অতিথি মানুষ ভেবে আনন্দ পায়, এদের চোখে জল…
    লৌকিকতার ভয়ঙ্কর মিথ্যা অহংকার যখন
    ভোগের স্বাদ কেড়ে নেওয়ার কথা বলে…

    আবার নকল মানবিকতার চাদরে জানোয়ার
    যেন মুখ লুকিয়ে ছলে বলে কৌশলে…
    ক্ষমা না চাওয়ার ভঙ্গিতে অন্যায়ের পক্ষ খাঁড়া করে পশুশক্তির যুক্তি…
    আমি জানোয়ারের বীজে সভ্যতা খুঁজি
    বোকার মত জঙ্গলে জ্বালাতে গিয়ে আলোর ভক্তি…
    তখন কে যেন পেছন থেকে নাম ধরে ডেকে দিলে, অমিত…
    এখানে জঙ্গলে অনেক পিশাচের আনাগোনা তোমায় অনুরোধ আলো জ্বেলো না!
    এরা অন্ধকারের কীট…
    তবে ফিরে আসা যাক বলে বড় ভাবনা চলে…
    আমার আমিকে মনের পরীক্ষা এ জঙ্গলে…

  • কবিতা

    কবিতা- ‘আমি কি সত্যি ই ব্যস্ত?’

    ‘আমি কি সত্যি ই ব্যস্ত?’
    শ্রী শুক্রাচার্য্য

    ব্যস্ততা কাকে বলে জানিনা
    তাই ব্যস্ত থাকি না…
    সময় ব্যস্ত নাকি ঘড়ির কাঁটায়
    ব্যস্ততা লুকিয়ে ?
    পথচলা পথিকের ব্যস্ততা চোখে
    মুখে বোঝা যায় বেশ ভয়ে…
    ঘেমে নেয়ে একাকার !
    সাইকেলে একক ব্যস্ততা, রিক্সায়
    ব্যস্ততা এঁকিয়ে বেঁকিয়ে।
    চলন্ত বাসে ব্যস্ততা দেখি, ঠেলাঠেলি
    চেঁচামেচি প্যাঁ-পুঁ দিনরাত…
    চলন্ত ট্রেনে ব্যস্ততার চেয়ে কম
    মনে হয় !
    রেললাইন থেকে প্ল্যাটফর্ম ওঠা,
    দাদা ধরবেন হাত ?…
    ফোনে রিংটোন বেজে ওঠে,
    অফলাইনে বার্তায় স্তম্ভ ;
    বেজায় চটেছেন শুনে গম্ভীর মুখে,
    ব্যস্ত অকেজো গোলাম…
    পথে ঘাটে বক্তৃতায় ব্যস্ত বেকার
    সংসার ব্যস্ত নাটকের দুই দিন।
    অভিনয়ে ব্যস্ত পাগলের দল,
    আমি ব্যস্ততায় ধাক্কা দিয়ে
    ষ্টেশনে, মূল্যবান শব্দে
    গালাগালি খেলাম…
    ভারী মজার ব্যস্ত এই পৃথিবী
    ব্যস্ত প্রকৃতি শেখায়,
    তবুও তার কাজের ফাঁকে,
    বাপ মা ব্যস্ত জন্মের পর থেকে…
    ভাই বোন ব্যস্ত কথা দেওয়া
    প্রিয়জনে,পরিজন ব্যস্ত
    সমালোচনার মনে,
    বন্ধু আত্মীয় ব্যস্ত সবাই
    বোকা বাক্স দেখে…
    ব্যস্ত স্ত্রী সংসার বাপের বাড়ি
    সমালোচনায় ব্যস্ত ননদ আর শাশুড়ি,
    ব্যস্ত স্বামী কাজের ক্লান্তিতে
    বান্ধবী খোঁজে যৌন সুখ পেতে…
    ব্যস্ত বান্ধবী ভাগাড়ে তাকিয়ে
    কখন মরা পড়ে কথা বলে বাঁকিয়ে,
    কখনো ব্যস্ত পাড়ার আড্ডায়
    বাড়ির ছোটরা,
    নিত্য রাতে বেশ মদে মেতে…
    ব্যস্ত ব্যবসায়ী টাকার পেছনে ছুটে
    বৃদ্ধকালে বন্দী বাড়িতে
    সব গেছে লুটে, সময় কেড়ে নিয়েছে
    যত ব্যস্ততা…
    ব্যস্ত জন্ম ব্যস্ত মৃত্যু ব্যস্ত কর্মে
    ডুবে গেছে ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটা,
    ব্যস্ত ভগবান ব্যস্ত পূজারী
    ব্যস্ততায় শোনা গেল ধর্মের কথা…
    ব্যস্ত শ্বশ্মানে ব্যস্ত ডোমের অপেক্ষায়
    দাঁড়িয়ে, ব্যস্ত থামানো নিথর দেহ,
    ব্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যস্ত আপনজন
    ব্যস্ততায় দুঃখ করে…
    তবুও ব্যস্ত থাকে আগামীর পৃথিবী,
    ব্যস্ত নদীর জল, ব্যস্ত সবাই ;
    ব্যস্ত তুমি ! ভাবনায় ব্যস্ততা নেই শুধু !
    তাই কবিতার ছন্দে ভরে…

  • কবিতা

    কবিতা- “পাহাড়ি কন্যা”

    “পাহাড়ি কন্যা”
    – শ্রী শুক্রাচার্য্য…

     

     

    আজি বন্ধ চোখে অন্ধকারে ডুবে গেছে
    কল্পনার চাঁদ…
    কোনো এক মনের কথা বুকে চেপে ছেড়ে যায় হাত…
    কোন প্রশ্ন মুখে নিয়ে আজি চৈত্রের সান্ধ্য বাতাস…
    নয়নের জলে এত স্রোত বিলীন হয়েছে আকাশ…
    কোন অমৃতের সুধা পাহাড়ি পথে বিন্দু বিন্দু ঝরে…
    সমতলে সে বিয়োগের বিরহ প্রেম বৃষ্টি হয়ে পড়ে…
    হার মেনেছে আজ মন প্রকৃতির সরলতার স্মরণে…
    স্বর্গের সুধা কন্ঠে নেমেছে মোর এ জীবনে মরণে…
    ফুল যেন পাথরের গায়ে পাষাণী প্রাণ ছুঁয়েছে আজ…
    বসন্তের বরষা দিয়ে গেছে এক সম্পর্কের
    নবীন সাজ…
    জনমের উপহার ইচ্ছার অঞ্জলী তোমার
    আগামীর পথে…
    সময় যদি ফুল ফোটার উপেক্ষা করে তবে
    থাকব সাথে…
    চৈত্রের সন্ধায় কথা দিয়ে গেছে এক পাহাড়ি কন্যা…
    উত্তর-পূর্ব ঈশানির ঝড় সমতলে বয়ে গেছে ঝর্ণা…

You cannot copy content of this page