-
কবিতা- ঝকমারি
ঝকমারি
– সঞ্জিত মণ্ডলকতো কে যে কতো ভাবে চাইছে দিতে বাঁশ-
আগে থেকে বুঝলে ভালো নইলে গলায় ফাঁস।
লাফিয়ে চললে বুঝতে হবে যাচ্ছে লোকাল বাস-
টিকিট ফাঁকি ইচ্ছে মতন খায় সরকারি বাস।
চোখ থাকতে অন্ধ যিনি সে-তো পুলিশ জানি-
হাত বাড়িয়ে কতো নেতাই খায় জানি কাটমানি।
অতি কষ্টে ফেরত পাবেন দিলে টাকা ধার-
দমন করা যায় না মোটে দুর্নীতির আধার।
পূর্বে ছিলো এখন যা নেই সেটা সততা-
শেষ হয়েও হয়না যা শেষ বাংলা সিরিয়াল কথা।
অসম্ভব কে সম্ভব করে সে নিউজ চ্যানেল –
খবর রটায় খবর পটায় তিরপিত ভেল।
সবচেয়ে সুখাদ্য খাবার সেটা হলো ঘুষ-
প্রতিবাদ টা যারা করে তাদের আছে হুঁশ।
সবকিছু যে সহ্য করে তার নাম জনগণ –
নির্বাচনে জেতায় তবু ঝাড় খায় সর্বক্ষণ।
ক্রমশ যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটা দ্রব্যমূল্য –
ভাষণ শুনলে মনে হবে জনধন কি অমূল্য।
মিথ্যে ভালো বলতে পারে এখন নেতারাই-
শুলুকসন্ধান করতে গেলে বুঝবে বিপদ ওটাই।
হরেক মানুষ হরেক কথা ঝামেলা কম নয়-
সাধুসঙ্গ করতে চাইছো সবাই সাধু নয়।
কেউ লুটছে টাকাকড়ি কেউ দিচ্ছে বাঁশ-
যাকেই ভোটে জেতাও তুমি দেশের সর্বনাশ।
কি ঝকমারি তাড়াতাড়ি বুঝতে যদি পারো-
দেশের দশের সবার ভালো বুঝে সমঝে চলো। -
কবিতা- অসম লড়াই
অসম লড়াই
– সঞ্জিত মণ্ডলগরীব কৃষক লড়াই করবে করপোরেটের সাথে!
কি মনে হয় স্বপ্ন দেখছি দিনে কিংবা রাতে।
শিক্ষিত নয় দেশের চাষি সিধা অন্তরটাই,
অবরোধ আর আন্দোলনে দিচ্ছে তাও কেমন লড়াই।
সরকার আর বাধ্য নয়কো ফসল তাদের কিনে নিতে,
ওসব করবে করপোরেটরা আইন হয়ে গেছে দেশে।
চুক্তি চাষে করপোরেটের দালাল যখন বলবে এসে,
মুখ বুঁজে তাই মানতে হবে নীলকর ফিরে এলো দেশে!নয়া আইন গালভরা নাম চাষির মূল্য নিশ্চয়তা,
চাষির জীবন মূল্যহীনই করলে তুমি শাসক ভ্রাতা।
করপোরেটের দালাল সাথে কৃষক করবে নতুন চুক্তি,
মার ঝাড়ু মার পাচ্ছে হাসি কালাকানুন কতো ভক্তি!
পাড়ার গরীব পশুপতি ভাগ চাষির সেই কাজটা করে,
তার কি সাধ্য পকেটের জোর হাইকোর্ট যায় লড়াই করে।
দুবেলা যার ভাত জোটেনা তার উপরে বুকের ব্যামো,
লড়াই করার পাঁজর ভাঙা কোমর ভাঙা নাক থ্যাতলানো ।মুক্ত স্বাধীন কেনা বেচা তারাই জেনো করতে পারে,
যাদের পেটে বিদ্যেবুদ্ধি পুঁজির জোরও বছর ভরে।
কৃষকেরা নেহাৎ বোকা কিচ্ছু বোঝে নাকো তারা,
নিপীড়িত অন্নদাতা কেঁদে মরে দিশাহারা।
লক্ষ কোটির তবিল লুটে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছেটা দেশ,
তাদের বেলায় ঋণ মকুবের খেলা দেখি জমেছে বেশ!
গরীব চাষি সারা দেশে ঋণের ভারে দুমড়ে মরে,
বীর বাহাদুর মন্ত্রী নেতা সেই বেলাতে চুপটি করে!মিথ্যে কথার ফুলঝুরিতে গণতন্ত্র শুধুই কাঁদে,
দৃষ্টি ঘোরায় মিথ্যে খবর যুদ্ধ বুঝি এবার বাধে।
দেশদ্রোহী দেগে দিয়ে যতই তুমি জেলে ভরো,
অন্নদাতা উটছে জেগে দেখি কে সামলাতে পারো।
কি দারুণ দিন এসেছে আজ আগে নাকি কেউ দেখেনি,
সবাই নাকি ঘি খেয়েছে দাম মেটাতে কেউ শেখেনি!
যারা অন্নদাতার অন্ন কাড়তে চাইছে ভুল বুঝিয়ে,
বুঝবে তারা দুদিন পরে ঝাড়ে বংশে লোপাট হয়ে। -
কবিতা- পরিস্থিতি
পরিস্থিতি
– সঞ্জিত মণ্ডলপরিস্থিতিটা বদলে গিয়েছে আওয়াজ শুনতে পাও?
ধীর পায়ে যারা এগিয়ে আসছে তাদের সেলাম দাও।
সম্পদ যত বিকিয়ে দিচ্ছে যেথায় শাসক দল,
চাষির ফসল লুটে নেবে নাকি কর্পোরেটের কল!
পাঞ্জাব পথ দেখিয়ে দিয়েছে কৃষকরা একজোট,
অচল করেছে শাসন শোষণ বেঁধেছে যে মহাজোট।
রেললাইনেই বসে পড়ে তারা করে রেল অবরোধ,
শাসক বাহিনী দফায় দফায় করে নানা উপরোধ।কৃষি আইনটা কাদের স্বার্থে বুঝে গেছে জনগণ,
ভাঁওতা বাজীতে হয়না কিছুই ভেজেনা কারোর মন।
লেবার কোডের অর্ডিন্যান্সটা পাশ হয়ে গেছে দেশে,
কষিয়ে লাথিটা মেরেছে জানো কি চেনা উত্তর প্রদেশে।
বিদ্যুৎ কর্মীরা সব সেথা করেছে আন্দোলন,
নাজেহাল সরকার লিখে দেয় লাগু হবে না তা এখন।
প্রতিরক্ষার কর্মী তারাও মানেনি কালাকানুন,
সরকারি মুখ পুড়েছে সেখানে বিফল সে কালা কানুন।
ভ্যালুয়ার টিম ইতি উতি খোঁজে কোথায় কি বেচা যাবে,
গোটা দেশকেই বেচে দিতে চায় কমিশন লুটে খাবে।
কোল ব্লকগুলো নিলামে তুলবে সরকার বাহাদুর,
জেগেছে শ্রমিক মজদুর ভাই নিলাম সে বহুদূর।যারা চুষে গেছে এতোদিন ধরে বংশ পরম্পরায়,
তবু তারা কিছু রাখঢাক করে এরা তো লাগাম ছাড়ায়।
লোটে আর বেচে দেশের ও দশের যত কিছু সম্পদ,
একই কায়দায় বেচেছে আগেও ধরাও পড়েছে সব।
এরা বেচারাম সব বেচে দেয় দুটো কোম্পানি কাছে,
যাদের কাছেতে ভোট আগে থেকে টিকিটাও বাঁধা আছে।
ধর্মের ধুয়া তুলে আজ যারা দেশকে বোকা বানায়,
গণ আদালতে তাদের বিচার হবে জেনো নিশ্চয়। -
কবিতা- জনদরদী
জনদরদী
– সঞ্জিত মণ্ডলপথটা এখনো পেলেনা বন্ধু পথটা কি বন্ধুর-
চড়াই-উৎরাই খড়কুটো ধরে বাঁচাটা কি দস্তুর!
সুবিধাবাদীরা আখের গুছায় তুমি চোখ বুঁজে থাকো-
আদর্শবাদী নয়কো জেনেও কি করে যে কাছে ডাকো!
খুদকুঁড়ো দিয়ে ভোট চেটে খায় সুবিধাবাদীরা যারা-
সংশয় নিয়ে তুমি ধুঁকে মরো বাকীরা লাগামছাড়া।
সবই তো বেহাল নাজেহাল লোক মরেও লড়াই করে –
তুমি চেয়ে দেখো শেষ বিচারেতে কখন কটা যে মরে!নজীর গড়ার আন্দোলন কি সব ভুলে গেলে ভাই-
মিছিলের লোক আজও আসবেই তুমি তারে ডাকো নাই।
পাইয়ে দেওয়াটা বড়ো কথা নয় প্রতিবাদী হতে হবে-
জনদরদীকে চাইছে জনতা খেয়াল রাখতে হবে।
বিশ্বাস আর আস্থা ফেরাতে পথে যে নামতে হবে-
ঠান্ডা ঘরের আরামটা ছেড়ে লড়াইয়ে নামতে হবে।
নীতি বাগীশেরা বুলি কপচায় কাজের বেলায় ঢেঁকি –
মেকি নেতা তাই পানি পায় নাকো যতদূর চেয়ে দেখি।দৃঢ় প্রত্যয়ে তরুণ তুর্কী হয় নাকো কেনো জানো-
রেষারেষি করে গদী আঁকড়ায় মানা মানি নেই কোনো।
উপরে উঠতে যে চেয়েছে তাকে কাঁকড়ার মতো টানো-
ক্ষমতা চ্যুত হয়ে গিয়ে শেষে যাকে তাকে নেতা মানো!
নীতি বাগীশেরা কারণ খুঁজতে এ দেশ বিদেশ চলে-
আত্তি করণ করেনা কো নীতি আপ্তবাক্য বলে!
পরিবর্তীত পরিস্থিতির দোহাই কতো যে শুনি-
লড়াইয়ে ফিরতে জনদরদীকে ডাকতে হবে সে জানি।। -
কবিতা- চলো পটল তুলি
চলো পটল তুলি
– সঞ্জিত মণ্ডলচলো পটল তুলি –
নাকে মুখে জড়িয়ে থাকে কীসব ঠুলি?
খুলেই ফেলি ছুঁড়েই ফেলি ওসব গুলি।
চলো পটল তুলি।
মুখে দিলে যায়না চেনা, মনের মানুষ হয় অচেনা,
সামনে দিয়ে গেলেও যে মা, যায়না চেনা সিকি আধুলি!
তাইতো মুখের ঢাকনা খুলি-
চলো পটল তুলি।
থুতনিতে আর কানে ঝোলাই, গোঁফের শোভা লিপস্টিক দেখাই,
মৃত্যুর হার কমে গেছে বলছে সবাই, আর ভয় নাই,
তাইতো আমারা মুখোশ খুলি ঘুরেও বেড়াই,
মুখটা তুলে শ্রীমুখ দেখাই, মুখোশ খুলি।
চলো পটল তুলি।
দিব্যি এখন যাচ্ছি মলে, দলে দলে ঘুরবো বলে,
খাচ্ছিদাচ্ছি মনের সুখে, ভয়কে আমরা কলা দেখাই।
হাটেতে যাই বাজারে যাই, কিনছি দেদার যা খুশী তাই,
ভাইরাস কে কলাই দেখাই, আর কি নিজের কানটা মুলি?
চলো পটল তুলি।
শুনছি মরে একটা দুটো ওরা নাকি অনেক বুড়ো,
যাচ্ছে টেঁসে হঠাৎ কেশে, আমরা জোয়ান তাই ভয় নাই।
তাই বরাভয় মুখোশ খুলি।
চলো পটল তুলি।
নাক ঝাড়বো কি কাশবো বলো, ফিতের বাঁধন আবার খোলো,
থুতু ফেলাও কি ঝকমারি, যা হয় হবে কি আর করি,
তাইতো ঠুলি খুলেই ফেলি।
চলো পটল তুলি। -
কবিতা- চেনা
চেনা
– সঞ্জিত মণ্ডলবন্ধু চিনতে ভুল হলে পরে কতো কে তলিয়ে যায়,
অজানা অচেনা বন্ধু আবার পথেই বসিয়ে দেয়।
চেনা বন্ধুও কখনো সখনো অচেনাই হয়ে যায়,
বন্ধু চিনতে ভুল হলে পরে বিপদে পড়তে হয়।রাস্তা চিনতে ভুল হলে পরে সে রাস্তা বন্ধুর-
মসৃণ পথ কোথাও কি আছে জীবন সমুদ্দুর।
ঢেউ ওঠে আর ঢেউ নামে জলে সংসার মহানদী,
জোয়ার ভাটায় সুখের জীবন রাস্তাটা চেনো যদি।চিন্তার নাম মহাসমুদ্র চিন্তায় ওঠে ঢেউ-
সৎ চিন্তায় জীবন সফল দুশ্চিন্তারা ফেউ।
যাদৃশী ভাবনা যস্য সিদ্ধির্ভবতি তাদৃশী,
ঋষি বাক্যের অমোঘ ফলন জীবনযুদ্ধে রশি।বই আমাদের বড়ো বন্ধু যে তার মতো কেউ নয়,
বিপদে আপদে স্থানে অস্থানে বই পড়ে ফেলা যায়।
জ্ঞান ভান্ডার বিদ্যারত্ন জ্ঞানী গুণী মহাজন ,
বড়ো হতে গেলে বই পড়া চাই চিনে রাখো প্রিয়জন। -
কবিতা- অ- জ্ঞানী
অ- জ্ঞানী
– সঞ্জিত মণ্ডলকি করে মানেটা বলবো বন্ধু ভাবনাটা বুঝি নাই
ভালো বা মন্দ বলাটার থেকে চুপ করে আছি তাই।
অনেকে বাহবা দিয়েছে বুঝিবা তারা সব জ্ঞানী গুণী,
ভাবি তাহলে কি আমিই একাকী বোকা আর অজ্ঞানী!ব্যস্ত হয়েই ফোন করে বলি বন্ধু তুমি কি জ্ঞানী,
বেশ তো গুছিয়ে ভালো বলে দিলে কিছুই বুঝিনি আমি।
বন্ধু বললো, সকলে বলছে আমিও বলেছি ভালো,
মাথা কুটে আর কেবা খুঁজে মরে লেখাটা ভালো কি কালো।কেউ যদি বলে গুড মর্নিং আমিও তো তাই বলি,
রাস্তা দেখিয়ে যারা আগে চলে আমিও সে পথে চলি।
গল্প কবিতা কিছুই বুঝি না গুড মর্নিং বলি,
পড়ি নাই পড়ি লাইক কমেন্ট ঠিক ঠিক দিয়ে চলি।জানো কি কঠিন ভাবনা চিন্তা গল্প কবিতা গানে,
কি বলতে চায় বুঝিনাকো বাপু ওতে কি মনটা টানে।
ভালো শব্দটা এতোটাই ভালো লোকে ভাবে আহা বেশ,
কি ভালো মানুষ আমার লেখাকে বুঝে ভালো বলে বেশ।কঠিন শব্দ কঠিন ভাবনা সে যে কতো সুকঠিন,
আমি একপাশে চুপ করে থাকি আমি বড়ো দীন হীন।
না পড়েই যারা ভালো ভালো করে জানি না সে কতো ভালো,
সব ভালো সে যে মোটে ভালো নয়, ভালোতেও দেখি কালো।হৃদয়ে থাকুক সত্যি যে ভালো তারই জয়গান করি,
হৃদয়ের ফুল সুবাস বিলাক তার সমাদর ধরি।
কবিতা গল্প পড়ে যারা শুধু গুড মর্নিং বলে,
ক্ষমা করো প্রভু অমন পাঠক চাই নাকো কোনো কালে। -
কবিতা- বিষ কুম্ভম পয়োমুখম
বিষ কুম্ভম পয়োমুখম
– সঞ্জিত মণ্ডলশাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায় মিথ্যে দিয়ে সত্যি ও নয়,
চাপা দেবার চেষ্টা দেখি সব কেমনে বিফলে যায়।
উপরে চাকচিক্য রাখা ভিতর পানে খড়ের গাদা,
মানুষ কি আর এতই বোকা দিন দুপুরে কে নিদ্রা যায়!সবাই বলে আমরা প্রথম আবিষ্কার তো হয়েই গেছে,
জীবন নিয়ে ছিনিমিনি এমন খেলায় কে মেতেছে!
কাছাকাছি এসেই যদি তীরের কাছে তরী ডোবে
কেলেঙ্কারির একশেষেতে কার যে কতো পাপ জমেছে!বিপদ নয় সে যেমন তেমন দিগবিদিকে ইন্দ্রপতন,
মহামারীর ঝড়ের মাতন শেষের সেদিন বড়ই কাছে।
আমিই প্রথম বললে হবে সবাই যে সব হিসেব রাখে,
বানিজ্যটা করবে কেডা মুনাফাখোর সেটাই খোঁজে।বেচাকেনার এই জগতে অস্ত্র কিংবা ওষুধ পণ্য
সাধারণের নাভিশ্বাস টা ওরাই বলে খুব নগন্য।
সস্তা নয়তো কোনো কিছুই জীবনদায়ী হোক না যত,
এ দুর্দিনে কে কার জামাই সবাই এখন জীবন্মৃত।এই দুনিয়া আজব বড়ো বাস্তুঘুঘু ছদ্মবেশী
মুখে মধু মনেতে বিষ বুকে জড়াস ছুরিও মারিস।
কেউ করে নেয় জমি দখল কেউ বাজারটা দখল করে,
সৈন্য সাজায় সীমানাতে চোখ রাঙিয়ে যুদ্ধ করে।সন্ত্রাসী সব ঘরেই পোষে অস্ত্র দিয়ে লালন করে,
বিশ্বমঞ্চে গান গেয়ে যায় সন্ত্রাসের সে নিন্দা করে!
সবাই ছুটতো যার কাছেতে এখন সবাই পালায় দূরে,
কিস্তিমাতের ভুল চালেতে এখন তাকে ঘৃণাই করে। -
কবিতা- এক হোক সব
এক হোক সব
-সঞ্জিত মণ্ডললঙ্কায় যে যখন যাবে তারই ঘাড়ে রাবণ চাপে,
আপ্তবাক্য সবাই জানে প্রমাণটা তাই মনের কোনে।
শিক্ষা যদি ছেলেখেলাই খড় কাস্তে কোদাল হবে
চলা বলা জলে ফেলা হাড়ির হাল তা মানতে হবে।
ছেলেখেলা সবাই করে মস্তানিটা জানলে পরে,
গোবর গণেশ নকল নবিশ আস্ত একটা বইও করে!
উৎসন্নে জাত ও সমাজ শিক্ষা সদন উড়িয়ে দিলে,
অশিক্ষিত রাজনেতা কি দেশ চালাবে গ্যাঁড়ার কলে!
যা শিখেছ সব ভুলে যাও নতুন করে শিখতে হবে,
হাড়েহাড়ে বুঝবে সবাই শিক্ষা এবার কাকে বলে।
গোছাগোছা নোবেল প্রাইজ আসবে দেখো ঘরে ঘরে,
শিক্ষার মান দারুণ নিদান ফিরবে সবাই আদিম স্তরে।
কেউ ইস্কুল ছুট হলে পাবে মানপত্তর সেই বছরে,
যার যতখানি বিদ্যে ধরে হিসেব করে সে গড় ধরে।
নেতারা সব লুকায় যেমন তাদের পাশের প্রমাণ জ্বরে,
টিটকারি আর কেউ দেবেনা নতুন শিক্ষা পেলে পরে।
যার যে রকম বিদ্যেবুদ্ধি সে সেরকম আইন করে,
বাস্তবিকই শিক্ষা এমন হাড়ির হালটা বেরিয়ে পড়ে।
বেশ তো না হয় মেনেই নিলাম একই দেশে শিক্ষাও এক,
পারবে তো সব গড়তে মানুষ মায়ের পেটের সবাই কি এক।
একজাতি আর একপ্রাণ হোক একই মায়ের সন্তান সব,
বৈচিত্রের মাঝে সবাই এক হয়ে যাক একই স্বভাব।
একটি দেশে একই আইন সবার জন্যে সবই সমান,
এতো দিন তা হয়নি কেন ভাবতে বসি ভুলের নিদান। -
কবিতা- বায়না
বায়না
– সঞ্জিত মণ্ডলবুড়ো বয়সে অর্থ আসে কিসের প্রয়োজন-
দাঁত পড়ে যায় আহার বিহার সবই নিয়ন্ত্রণ।
মাথায় বিশাল টাক পড়ে যায় চুল সাদা তখন-
সব কিছুতেই অতি সাবধান রোগেতে ভগ্ন মন।এর উপরেও হয় যদি কারো শরীরে চিনি ও ছানি-
সব বরবাদ ওষুধের বড়ি অপারেশনের ঘানি।
কিডনিতে ভরা পাথর সেগুলো দামী নাকি কমদামী-
গল ব্লাডার যে অপারেট হবে সেটাতো শুনেছি দামী।কানে লেগে গেছে হিয়ারিং এড আর গাঁটে গাঁটে বাত-
ওষুধ, মালিশ, বালিশ লাগিয়ে তবু্ও তো কূপোকাৎ!
পেটে জমে থাকে অনন্ত গ্যাস সিলিন্ডারটা ভরা-
চুলোয় আগুন জ্বলে নাকো তাতে সকলই ছন্নছাড়া।কলকব্জারা নড়বড়ে সব ইস্কুরুপ ও ঢিলে-
চলতে ফিরতে কড়াৎ মড়াৎ শব্দ কেমন তোলে।
দেহ যন্ত্রটা শুকিয়ে পাকিয়ে দড়ি দড়া হয়ে যায়-
শোয়া বসা হাঁটাচলা পাশফেরা সকলই হয়েছে দায়।প্রষ্টেটগ্ল্যান্ড ফুলে ফেঁপে ওঠে বাহাত্তরটা হলে-
সে মহা বিপদ নড়াচড়া দায় কয়েকটা দিন গেলে।
কি যে খাওয়া যাবে কোনটা খাবেনা ভেবে মরে সারাক্ষণ –
হিসেব নিকেশ সব বৃথা যায় বুড়ো আংলার মন।মন তার কিসে শান্ত হবে সে ভাবনাটা ভেবে যায়-
বাজারেতে গেলে দেখে মনে হয় কতো সুখ দুনিয়ায়!
মহামারী অরি কোথাও নেইকো বেচাকেনা করে যায়-
খবর পড়ে ও শুনে যে প্রাণটা ভাবে বাঁচা হবে দায়!ভাষণ শুনলে যেন মনে হবে মিথ্যার শেষ নাই-
ঘরেতে সবাই বন্দী তবুও ভয়ে ভয়ে মরে যাই।
কে কবে পথেতে মরে পড়ে থাকে এ চিন্তায় সবাই-
ভাগের মা যে গঙ্গা পায় না দায় বেঁচে থাকাটাই।।