-
নগ্ন প্রেম
নগ্ন প্রেম
– সত্যেন্দ্রনাথ পাইনপ্রেম উড়ে আসে না
উদ্দেশ্যহীন পাখিদের মতো
পথে পাহাড়ে পর্বতে জঙ্গলে
সাগরে ধনী গরীবের ঘরে ঢুকে পড়ে
ধোঁয়ার মতো আপনা হতেই
উত্তরে দক্ষিণে।
কথায় কর লাগে না
বোকা সরলা গ্রাম্য বধূর মতো
ঠমকি ঠমকি চলে সর্বত্র।আগুন দিক মানে না
মানে না মন্দির মসজিদ গির্জাউত্তেজনা সন্ত্রাস সর্বদাই হিংস্র যেমন
শার্দুলের মতো
হঠাৎ ঢুকে পড়ে যেখানে সেখানেনগ্ন প্রেমের রক্তমাখা রূপকথার চিমনি
অনুসরণ করে
প্রশাসনের অন্দরে অন্দরে। ।। -
প্রবন্ধ- নতমুখী
নতমুখী
– সত্যেন্দ্রনাথ পাইন“কলম” কথাটার মধ্যে মাত্র তিনটি অক্ষর। অথচ বাংলা স্বররর্ণে ও ব্যঞ্জন বর্ণের ব্যাখ্যায় এর তুলনা ভগ্নহৃদয়ে প্রেমহীন হয়ে বেঁচে থাকার সামিল।
Pen is mighter than sword. মানে করলে দাঁড়ায় ” অসির চেয়ে মসি দড় “;! তবু , অসি বা তরবারি সর্বদা ঊর্ধমুখী।সে বিপ্লবে হাত না লাগিয়েও বিক্ষিপ্ততায় ধ্বংস করে কারোর চূড়ান্ত সফলতা কিংবা জীবন। আর “কলম” প্রতিনিয়ত বিপ্লবী। বিপ্লব যেন তার ঘনিষ্ঠতম আপন। তবু সে নম্র স্বভাবী, বিনয়ী, এবং শ্রান্তি হীন প্রেমিকা।
যে বা যারা এই কলম নিয়েই ক্ষমতা বান হতে চায় বা চান সে বা তাঁরা ভাবেন কি কলমের সততা আয়ত্বা ধীন নয়? ভাবেন না। বোধহয়। তাই “ভালবাসি” -টুকুও নিছক অভিমানে তাদের কলম থেকে বেরিয়ে আসতে অবসাদগ্রস্ত হয়।
কলম তো নতমুখী। সোজা করে ধরলে কিংবা উঁচুতে তুলে ধরলে”কলমে”র অপঘাতে মৃত্যু ঘটে। সেখানে উপেক্ষা, নির্লিপ্ততায় অহংকার জন্মায় না। বিচ্ছেদ ঘটে। অর্থাৎ’কলম’ বিনম্রচিত্তে বিপ্লবাত্মক হয়েও ভালবাসা পেতে ও দিতে চায় সকলকে সবসময়ই।
যারা এই কলম ধারী তারা বোঝেন নিশ্চয়ই কোথায় প্রেম আর কোথায় অবসাদগ্রস্ততা থেকে পিছু হটার ডিপ্রেশন।ঠেলতে ঠেলতে যখন কেউ কুয়োর কিনারে মৃত্যুকে খুব সামনে থেকে দেখতে পায় তখনও সে কলমকে সাথী করে তার মৃত্যুর প্রমানপত্র হিসেবে রেখে যেতে চায় জটিলতার অহংকারহীন ভালবাসা। এবং সেটা অবশ্যই নতমুখীনতারই পরিচয় বহন করে। তাই নয় কি!?
এখানে সংস্কৃতিচর্চার সুর – তাল- লয়- ছন্দ যেমন আছে তেমনি আছে “মা”হয়ে”স্ত্রী”হয়ে ভালোবাসা মাপার যাদুকরী মানদণ্ড স্বরূপ উন্মোচন। এখানে বেড়ে ওঠা দেদীপ্যমান জ্যোতির সাথে পূরুষতান্ত্রিকতার ছোঁয়া থাকলেও সে নারী স্বরূপা মৃন্ময়ী । অবজ্ঞা তার অজানা। সে নিথর হয়েও, প্রেমাভিলাষী হয়েও ছলাৎ ছল অবহেলাকে “তুড়ি মেরে দৃঢ়তায় এগিয়ে নিয়ে চলে। তবু তার মুখ নয়। বিনম্রতায় বিশ্বের ধুলোবালিছাই থেকে ঘরে ফিরে”ভালবাসতে'”চায়। সে সামনে না থেকেও পূর্ণ প্রেমিক হত্যায় পূর্ণতা পেতে চায়। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত সে অভিনয় করে বিনম্রচিত্তে। তাতেই চির জনপ্রিয়তা এবং স্বাচ্ছন্দ্য লক্ষ্য করি। বিদূষী স্ত্রী হয়েও কোমল কঠোর রূপী সহচরী। প্রশংসা, নিন্দা সবই তার জানা।
তবু, চরিত্রাঙ্কনে, স্বদেশ প্রেমে, অশ্রুময়তায় এবং প্রবলতায় সে মা গান্ধারী যেন। তিনি পুত্রশোকে মূল্যমান হয়েও সদা ধর্মের জয়গান গেয়েছেন নতমুখে। এটাই তো মহা-ভারত।
অথচ, সেই ভারতেরই জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী একদিন pen strikeবা কলম ধর্মঘট ডেকেছিলেন। এবং তাতেই দুর্ধর্ষ প্রবল প্রতাপশালী ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও ভয় পেয়েছিল। নতমুখী কলম বোঝাতে চেয়েছিলেন অবগুণ্ঠন ঢাকা প্রেয়সী স্ত্রীও পুরুষকে হার মানাতে সক্ষম।
অতএব হে কলমচীগন, উপেক্ষিতা না হয়ে নিজস্ব নন্দন চর্চায় সামিল হতে জীবনসঙ্গী রূপী লেখাকে পরকীয়া না ভেবে ট্র্যাজিক সম্পর্কের বিফলতা য় প্রসারিত প্রতিভা, উদ্দীপনায় অনিবার্যভাবে অভিশপ্ত অনিন্দ্য সুন্দর অসহনীয় সৌভাগ্যের শিকড়ে আত্মবিশ্বাস প্রস্ফুটন করাকেই নতমুখে পাহাড়ের চূড়া স্পর্শ করার বিতর্কিত নিত্যসঙ্গী করার যুদ্ধে প্রাণের মানুষের অসহায় পরিণতি কে না দেখার প্রয়াস করে কলমের নীড় বাঁধাকে সাথী করার লক্ষ্যে ছবি আঁকলে কেমন হয়! অপূর্ব “সাহিত্যকুঞ্জ” তখন যথার্থই প্রযোজ্য মনে হবে এ নতমুখী কলমের পুষ্পবৃষ্টিতে।
আর আমি ও তাই সেই কলম নিয়েই এখন নাটুকে কলমচি হবার বাসনায় বিষাদকে ভুলে আইনসিদ্ধ পরকীয়ার মোহে নতমুখে প্রমানিত করতে চেয়েছি কলমের নম্রতা ভরা দৃঢ়তা ওপ্রত্যয়ভরা উপলব্ধির জমিদারীত্ব। দেখেছি তুলনাহীন বাংলা তথা বিশ্বসাহিত্যের দরবারে মহামানব বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, শরৎ চন্দ্র, সুকান্ত, জীবনানন্দ, নজরুল, শেলী, কীটস্ , বায়রণ পৃভৃতি অসংখ্য যাঁরা কলম ধরেছেন এবং সাহিত্য সেবায় মনোনিবেশ করে সম্মানের শিখরে পৌঁছেছেন প্রত্যেকেই ঐ নতমুখী কলমের অনায়াস অনর্গলতার আশ্চর্য গুনে ও শিল্পিত সভ্যতায়।
তবু কলম চিরকালীন নতমূখী।
সোনাদানা হীরে জহর, মনি মুক্তা দি রত্ন ই কেবল অলংকার নয়। অলংকার মানে তো নারীর ভূষণ। নারীদেহের অলংকার যেমন নমনীয়তা। তেমনি কলম থেকে উদ্গীরণ হোলো লেখকের মনের একান্ত অভিব্যক্তি- যা লেখাটিতে নানা রকম ফুলে ভরিয়ে প্রত্যয় ঘণীভূত করে; অলংকারে পরিণত হয়। সৌন্দর্যের ড্রইংরুমে রসসৃষ্টি করে। এবং স্থানীয় স্বীকৃতি অর্জন করে
রূপ ও দামে যাই হোক না কেন “কলম” তবু কলম ই এবং অতিবিনয়ী নতমুখী।
অস্বীকার করার উপায় নেই কলমের শিল্পিত মনের আদিগন্ত বিস্তৃতি অসাধারণ অলংকার —যা বাজারে কেনাবেচা চলে না! -
কবিতা- সাফল্য
সাফল্য
– সত্যেন্দ্রনাথ পাইনশিকড়ের টান কুটিরের কৃতজ্ঞতা
ক্রমশঃ- ঝোপঝাড় হীন
জীবনানন্দ হিরেশীর্ণ স্রোতের নির্ঝরিণী
মুক্তি খোঁজে মৃত্যু শোকে
ঘৃণায় অপমানিত পেখমের চালাকিঠাট্টা বিদ্রুপ অশ্লীলতায় প্রতিদিন যখন
পুড়ে পুড়ে ক্ষয় হতে হতে
পারদ নামায়
সমতল পৃথিবীর বাস্তবতায়….জমিদারির পতাকা
হেলেদুলে বলে ওঠে তখনিঅবনী, ভালো আছো?
।
-
কবিতা- অনন্ত প্রেম
অনন্ত প্রেম
-সত্যেন্দ্রনাথ পাইনপলি মলি সুতপা সুপর্ণা
যে নামেই ডাকি না তোমায়
সে তো ডাকনাম মাত্র—-
প্রেমের দুর্গম বন্ধুর সিঁড়ি বেয়ে
স্বাভাবিকত্ব পেতে চাওয়া
বিপরীত লিঙ্গের মোহে স্বীকৃতি চাওয়া
সব ভেঙে যাবে। গেছেও।থাকল না।
টিকলো না। যেন মৃত্যুশোকে খসে পড়ল
আমার অশান্ত যৌবন
ঋদ্ধ হোলো না অস্তবেলায়
ভালোবাসার প্রদীপ খানা।লোভ হয়। তবুও লোভ—-
বাজুক না বাজুক মিলনের সানাই
অন্ধকার মনে জ্বলুক অফুরন্ত প্রেমের
কেরোসিন শিখা
রূপের মোহে নয়, ঋণে
ওড়নাখানা ঝুলুক বাড়ির বারান্দায়
মেঘ- ছেঁড়া রোদে।
জন্ম নিক শ্যামল সবুজ
অনন্ত প্রেম
সমাজের নির্দয় পতাকা তলে—–।
-
কবিতা- এখনো হয়নি সময়
এখনো হয়নি সময়
– সত্যেন্দ্রনাথ পাইনসময় এখনো আসেনি প্রিয়া
যাইতে তব গৃহে
ক্ষমো মোরে হে চির কুমারী
রমণীয় তুমি, জনশূন্য পথ
আকুল হৃদয় বাতাস সম ছুটিছে সদাই
অপেক্ষা কর সাগ্রহে।।সময় তো হয়নি কো শেষ, আসেনি বিপুল ঝঞ্ঝা
তুমি জুঁই, তুমি রজনী গন্ধা
করুনাঘন প্রেমের আঁচলে রাখো বাঁধি
এ লঘু ভার সহিতে পার যদি
প্রাসাদ মাঝে নীরবে নিভৃতে কাননে ফুটিবে যবে ফুল
নির্জন পথে নক্ষত্রালোকে সেদিন যাইব তব গৃহে।।আকাশে মেঘ নাই, সোনালী রোদের জ্বালা
সুপ্ত নয়নে বসে আছি একা
কোকিল তোলেনি সুর কুহু কুহু ডাকে
বাতাসে বাজে না দখিনা বাঁশি
হে সুন্দরী, তপস্বীনী আর্ত নারী বাক্য হীণা
দাঁড়াও নীরবে, প্রেম ভারে অশ্রু মুছে যাইতেছি ধীরে ধীরে।।দিয়েছো পরাণ যবে পেয়েছো সোহাগ
কেন তবে এত আকুলতা
বিরহে কি ফাটিছে বুক ছূটিছে কি সুখ গাথা?
দীপ জ্বেলে দ্বারে বসো, একটুকু হাসি হেসো
দেখিবে আমি আছি পাশে
সঙ্গে লয়ে শত শত বিরহ ব্যথা।।তুমি যে আমার অহংকার
কি জানি কী হেতু এত আকর্ষণ
তোমারে রেখেছি হৃদয় খাচায় বন্দিনী সম
তুমি শিউলি, শেফালিকা
ভালোবাসায় দিয়েছো মোরে প্রশ্রয়
কর অনুগ্রহ হাসি দিয়ে, আমি যাইব তব গৃহে।।স্বপনে দেখি তব অশ্রু ঝরে
মুছে নাও অশ্রু লোর
সময় হইবে যবে কেউ না বাধা হবে
হে প্রিয়া, হে শুচি স্মিতা
আমি যাইব ছুটি সব কাজ ফেলি
তোমারে বাঁধিব সেদিন বাহুডোরে গিয়ে তব গৃহে।। -
প্রবন্ধ- শিল্প সৃষ্টি করে সুরব্রহ্মের সঞ্চারী
শিল্প সৃষ্টি করে সুরব্রহ্মের সঞ্চারী
-সত্যেন্দ্রনাথ পাইনশিল্প একটা সুযোগের সংকেত, একটা সাংগীতিক কথোপকথন এবং অনিবার্য সম্ভাবনার গবেষণা। তাই যা সুন্দর কিছু তাকে please, which is good always hold and then you get Gold.
গণিতাঙ্ক নয়, উপলব্ধি এবং অনুভূতি সাপেক্ষ অভিপ্রায় হোল শিল্পের নান্দনিকতা।হৃদয় দিয়েই প্রেমের হৃদয়বৃত্তি—সেখানে তীক্ষ্ণ অঙ্কশাস্ত্র যুক্তি মানে না। কেননা, হৃদয় সকল কিছুর উর্ধ্বে। ধর্মকথা বা শাস্ত্রকথা সেখানে সাংকেতিক মাত্র ;চাপানউতোরের ধার ধারে না।
” সৃষ্টি সুখের উল্লাসে” মানুষ নতুনের পূজারী। শিল্প সেথায় বহমান সময়ের পরিবর্তিত রূপ বা বিবর্তন। এই বির্বতনই সৃষ্টি করে সুরব্রহ্মের সঞ্চারী। কোন্ টা ভাল বা কোন্ টা মন্দ কিংবা কেন তা শিল্পী নিজেই জানেনা। সচেতন শিল্পী কখনোই জনপ্রিয়তার স্রোতে জাল ফেলতে চায় না।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সচেতন ছিলেন কিনা আমার অন্তঃত জানা নেই। তবু তাঁর অঙ্কিত শিল্প, সংগীত, সুর বাঙালির হেঁসেলেও পৌঁছতে পেরেছে অনিবার্যতায় এবং মননের কথোপকথনের প্রবাহে।।
শিল্পের অভিজ্ঞতায় অতিরিক্ত স্বাচ্ছন্দ্য হোল আত্মতৃপ্তি এবং আত্মবিশ্বাস।।
কোনো আবিষ্কার বা গবেষণা শিল্প হয় তখনিই শিল্পীত মনের নিঃসন্দেহ বিশ্বাসের সংজ্ঞায়।
সময়, সুযোগ শিল্প এবং শিল্পীকে প্রভাবিত করে। প্রতিভা সেখানে যেন ভয়ংকর রূপে শাশ্বত। বালুচরে শিল্পীত ছবি যেমন সমুদ্রের ঢেউয়ে অতি সহজেই ভেসে যায়– প্রতিভাও সেখানে হারিয়ে যায়। নান্দনিক চেতনা উচ্চস্তরে পৌঁছতে পারে না। তবু ও সেটা অসাধারণ অনিবার্য সম্ভাবনার দিশা দেখায়। অনিশ্চয়তা বাসা বাঁধে মাধুর্য হীন কলঙ্কের ছোঁয়ায়।
প্রকৃত প্রতিভা হারিয়ে যায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নকল শীলমোহরে।ময়ুরের কদর কমে–ঐ ময়ুরপুচ্ছধারী কাকেদের দাপটে। শিল্প হারায় না বটে কিন্তু প্রকৃত শিল্পীর প্রতিভা কদর পায় না। আর তাই-ই অনিবার্য উপলব্ধি অনুমতি হীন হয়ে ত্রিশঙ্কু জীবন যাপন করে। -
কবিতা- নারী
নারী
-সত্যেন্দ্রনাথ পাইনআপন মনের মাধুরী মিশিয়ে
রাঙিয়ে দিলে আমায়! —-হে নারী
বিচিত্র চন্দনে খেলাচ্ছলে
তুমিই করেছো চুরি আমার আপন সত্ত্বা, সর্বসুখ-আনন্দ প্রেম ভালোবাসাহে নবীন মেঘমল্লার তুমি লক্ষ্মী
তুমি মাতৃসমা—
আবার
তোমারই প্রত্যাঘাতে পেয়েছি শত
বেদনা, মিলণোৎসুক বর্ণ গন্ধ
হে সুহাস সুন্দরী, তোমার রহস্য
উন্মোচিত হোক্তোমার কাঁকন, নুপুরের কিক্কন শুনিয়ে
নিয়ে চলো অমৃত বাণী শোনাতে
সেখানে দেখি যেন তোমার অপরূপ মূর্তি খানি।। -
যতক্ষণ না তুমি আসবে
যতক্ষণ না তুমি আসবে
-সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
যতক্ষণ তুমি ছিলে উদ্বাস্তু অগ্রাহ্য
বিক্ষোভ দানা বাঁধেনি, শুনছো সাম্রাজ্য?যতক্ষণ তুমি ছিলে না, হতো অসুবিধে
বৃষ্টি থামেনি, মিটলো না খিদেযতক্ষণ সিঁদুর খেলা হল না শেষ
গোধূলিই দেখালো দিগন্ত অবশেষযতক্ষণ স্বর্গ ছিল না, কেমন অস্থায়ী
সন্তান ‘মা’ বলবে কাকে, হবে স্তন্যপায়ী?স্মৃতি এল না ফিরে রাগে অনুরাগে
যতক্ষণ তুমি না আস কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। -
শমন
শমন
-সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
অশনি সংকেত
প্রাচীন পাপের চিহ্ণ বহন করে চলেছে মানব জীবন।
জীবনবোধের নাট্যশালায় কত রাত
কেটেছে পুরুষ নারীর প্রণয়লীলায় যৌনমিলনে।বয়স বাঁধ মানেনি ।
মায়ের বয়সী নারীকে নিয়ে
মত্ত পুরুষের ভালোবাসার কথা,
নৈতিক না অনৈতিক সম্পর্ক,
রক্ষিতা না আত্মবিশ্বাস নিয়ে
সুন্দর সবকিছু এঁকে বেঁকে ফিরেছে।ছুরির ফলায় নারী ক্ষুধার্ত
সৌন্দর্যের লীলাভূমি স্বপ্নজাত
স্পর্শময় রঙিন বনফুল।
বিছানায় নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রেম নিবেদনকল্পনা, দুর্ঘটনা, না যৌনমিলনে অংশগ্রহণ
ভাবভঙ্গি ভূবন দর্শন
বিবাহিত বিবর্ণ গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবউপন্যাসের অন্তর্দাহকে পাথর করে
মিশে গেলাম অস্তিত্বের শিকড়ে…..
-
স্বপ্ন ভেঙে যাবার সাতকাহন
স্বপ্ন ভেঙে যাবার সাতকাহন
-সত্যেন্দ্রনাথ পাইনপ্রায়শই মনে আসে স্বপ্ন দেখার স্বপ্নগুলো– সাতকাহন শোনাবে কীভাবে? ভাবনাটা কেমন যেন খেই হারিয়ে ফেলে। আসল সত্যিগুলো স্বপ্নেই রয়ে যায়। মনের ভিতরে, ভাবনার অতলগর্ভে বিকট ঘন অন্ধকার! কে আছে ওখানে? স্বপ্ন ভাঙ্গার গল্প! আর্তনাদ! অস্বীকার! কিছুই বোঝা যায় না।
আজকের প্রজন্মের পুত্র সন্তানেরা ভাবতেই বেসামাল— স্বপ্ন ভাঙ্গার মজলিসে। তবু ঘটনা পরম্পরায় সেটাই কাপড়েচোপড়ে হবার মত অবস্থায়। সদ্য গ্র্যাজুয়েট হওয়া ছেলেকে আর না পড়িয়ে পয়সা রোজগারের মেশিন বানানো– তার মেধাকে উপেক্ষা করা।
মেয়েকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দেয়া তার স্বপ্ন ভাঙ্গার ইতিবৃত্ত। মা ও মেয়ে যেভাবেই কথা বিলি করিনা কেন ক্যালসিয়াম, আয়রণ, ফলিক এ্যসিড দিয়ে যত্ন- বেলুন চুপসে যাবেই। দেখে শুনে নারীদের স্ট্রেস বাড়ে বই কমে কি??
মোমবাতি জ্বলতে জ্বলতে শেষ হয়— গলা মোম নিচে জড়ো হয়। ধূপ পুড়তে পুড়তে ছাই হয়-মেয়েরাও যেমন সংসারএর নুন- ঝালমসলা, কাপড় চোপড় এর হিসেব রাখতে রাখতেই শেষ। কলেজ ফি জমা দেয়ার মত নিত্যদিন মুখঝামটা আর উপেক্ষার শিডিউল তার ভাগ্যে।
নালিশ করবে কাকে? নালিশটা যেন তার ন্যাকামি! ভালোবাসা, আদর প্রেসার মাপার যন্ত্রের লো- প্রেসার, কিং বা ফুচকার মত সহজেই চুপসে থুবড়ে মসলা আর টকজলেই আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। বিবাহিত স্বামী পুরুষটি যেন ট্যুরিস্ট দলের একজন অন্যতম প্রধান সদস্য। মেয়েটিই হয় দায়ী নিখুঁত বিনি পয়সার হাউজহোল্ড কর্মচারী। স্বপ্নভেঙে সাতকাহন গল্প রচিত হয়।