• কবিতা

    যখন বিপ্লব আসবে

    যখন বিপ্লব আসবে
    -সৌরভ ঘোষ

     

     

    ধারাবাহিক সিরিয়ালের মত
    ধারাবাহিক বিপ্লব একদিন আসবে।
    সেদিন, সমভূমির প্রতিটি মোড়ে খাড়াই পাহাড় থাকবে
    যার একদিকে বন্যা
    অন্যদিকে বৃষ্টিচ্ছায়া,ক্যাকটাসের জঙ্গল।
    অক্ষরেখা উত্তর দক্ষিনে ঘুরে যাবে
    মানুষ লোভের বাজারে প্রধান পণ্য হবে।
    শেয়াল কুকুরের অটুট বন্ধুত্ব…
    মাটি খুঁচিয়ে উদ্ধার হবে শব্দ
    আচমকা রাত নামবে সাথে চামচিকে…

    সবার গলায় ফাঁস সবাই চালাক
    ঝুলন্ত জিভ থেকে লালা ঝড়বে টসটস।
    তখন ছাই-পাঁস মেখে
    শমন হাতে বিপ্লব উঠে আসবে…

    সুখ গুলো জানালা দিয়ে বেড়িয়ে যাবার সময়
    ট্রেন দূর থেকে হুইসল দেবে…
    বিপ্লব গালে টোল ফেলে বলবে-
    “গাছ থাক, পাখি থাক…”

    পাহাড়ের ব্যালকনি থেকে দর্শক মেঘের হাততালি,রূপালি চমক…

  • অণু কবিতা

    এলিয়ান হয়ে বাঁচা

    এলিয়ান হয়ে বাঁচা
    -সৌরভ ঘোষ

     

     

    মাস্তুল ভেজা চিত্রিত রাত

    চিত্রনাট্যের চরিত্র আমরা আর এইসব-

    পাখি, কুকুর, জঙ্গল, জঙ্গি, শান্তি বাঈ…

    শেষে পৃথিবী,

    মিস ফায়ারিঙে মরে যাবে।

    হোয়াইট হাউস ভারতে,

    চিত্রনাট্য এলিয়ানের দখলে, হইচই…

    সূর্য বেঁচে থাকবে,চাঁদও

    আর জঙ্গলে হারানো সুয়োরানির ছোট মেয়ে..

  • কবিতা

    ছেলেবেলার বন্ধু লকা

    ছেলেবেলার বন্ধু লকা
    -সৌরভ ঘোষ

     

    অবাধ্য,দুরন্ত, ভীষণ -এইসব উপমাই খাটে
    পাড়ার লোক অতিষ্ঠ,কারও কথা শোনে না যে
    আমার বাড়ির পাশে
    একচালার ঘরে মায়ের সাথে থাকে,
    আমার প্রিয় বন্ধু স্কুলছুট লকা।
    উত্তরের জানালা তখন বন্ধ থাকত
    পরীক্ষা নিঃস্বাস ফেলত ঘাড়ে।
    ফিসফিস শব্দগুলো জুড়ে
    কব্জার ফাঁক দিয়ে কানের পর্দায় ধাক্কা দিত।
    লকার আদরের ডাক- “যাবি? চলনা, আজ অনেক হাওয়া, সব ধান কাটা, মাঠ এক্কেবারে ফাঁকা,
    খুব ঘুড়ি ওড়াবো, যাবি?
    জানলাটা খোল,
    চারটে ঘুড়ি দুটো লাটাই,সুতোয় কড়কড়ে লাল মাঞ্জা
    আজ কেউ কাটতে পারবেনা, যাবি? চলনা”
    জানালা খুলতেই লকার এক গাল নিষ্পাপ হাসি
    হাতে পেটকাটি, চাঁদিয়াল, দুটো মুখপোড়া।
    ইতিহাসের আলেকজান্ডারকে যুদ্ধে নামিয়ে মন তখন ঘুড়ির দেশে,
    কিন্তু মা? দৃষ্টি এড়ানো বড়ই কঠিন, বাইরে বেরোতে মানা।
    লকা সাহসী, কাউকে মানে না,
    আবার ডাকে “যাবি? চলনা”

    প্রতিদিন যে যাওয়াও যায়না,
    তোর তো পরীক্ষা নেই
    ভয়ও পাসনা মা’র লাঠির ঘা।
    এদিকে গুরুমস্তিষ্কে তখন আলেকডান্ডারের সাহসী বিচরণ…
    মন বলে “পুরুর দেশের মানুষ হয়ে ভয়? কক্ষনো নয়।”
    দখিন বারান্দা, মা তখন সঞ্চয়িতা, মা’এর তখন ঝিমুনি
    সন্তর্পনে পাহারা এড়িয়ে বেরিয়ে পড়ি
    মুক্ত আলো, মুক্ত শ্বাস, আহ…
    মাঠ জুড়ে সে এক অগ্নিপরীক্ষা,
    ঘুড়ির লড়াই, চেঁচানি – ‘ভো কাট্টা…’
    লকা সুতো টেনে ধরে, আমার হাতে আস্ত মুখপোড়া
    “ঢিলে দে ঢিলে দে ও মোমবাতি ছেড়েছে”
    এত ছেলে!
    কিকরে আসে, কি করে ধুলো দেয় মা’র চোখে?
    লকার মাঞ্জা সেরা,
    আমাদের মুখপোড়া আলেকজান্ডারের বিজয় পতাকা।
    সন্ধ্যা বেলায় বাড়ি,
    মা’র রণমূর্তি,হাতে পুরির লাঠি
    আমি তখন ঝিলাম,আমি তখন পুরু,
    চোখে একফোঁটাও জল আসতনা,
    না হত বুক দুরুদুরু।

    আমার মা-আর মারে না,আর ডাকেও না জোরে
    রাজা পুরুর বশ্যতা স্বীকার,
    চাকরি নিয়েছি দূরে।
    নিউটাউনে দুটো পার্ক পেড়িয়ে
    সাজানো ফ্ল্যাট পুরো আটশো স্কোয়ার ফিটের।
    এখানেও বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ে,অনেক
    তবে ছাদ থেকে
    আমার একমাত্র ছেলে মায়ের একান্ত অনুগত…

    লকা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে,
    শীতের দুপুর, ঘুড়ি দেখলেই মনে পড়ে।
    এখনো ঘুড়ি ওড়ায় লকা?
    তার ছেলেপুলে নিশ্চই…
    মেঘগুলো ওদিক থেকেই আসে,
    কই একটাও মুখপোড়া উড়ে আসেনা তো।
    একদিন যাবো লকা তোদের গ্রামে,
    আমার ছেড়ে আসা গ্রামে।
    তুই কল খাটিয়ে দিবি
    আমি নিজে ঘুড়ি ওড়াবো, মন দিয়ে…

    বছর দুয়েক আগে বেচুদা বলেছিল লকার লিভার ক্যান্সার,
    বেচুদার সাথেও অনেক দিন দেখা হয়নি,
    তুই নিশ্চয়ই বেঁচে আছিস, এত প্রাণ আছে যার সে…
    তুই’যে আলেকজান্ডার
    আমি যাব লকা, আসছে শীতেই যাব,
    আবার তুই জানালায় এসে দাঁড়াবি,
    আবার ডাকবি আগের মত।
    আর ভয় পাই না, এবার তোর কাঁধ ধরেই যাব
    সারাদিন ঘুড়ি ওড়াবো,
    দেখবি সব একই আছে, আমিও…
    আর একবার ছেলেবেলা ফিরিয়ে দে লকা,
    ছেলেবেলার সকাল, ঘাসের ডগায় শিশির
    আকাশের দিকে চেয়ে তারা গোনা
    করমচার ডাল থেকে নদীতে অগুন্তি ঝাঁপ
    তোর গায়ের সোঁদা সোঁদা গন্ধ, দুপুরগুলো…
    মাটির মুখোমুখি হতে চাই আর একবার
    তুইই পারিস, তুই যে আলেকজান্ডার।
    পারবি লকা
    তুই নিশ্চই পারবি…ছেলেবেলা…

  • কবিতা

    একটা অকাল বোধন

    একটা অকাল বোধন
    -সৌরভ ঘোষ

    দেখো অবস্থান নির্ধারণ করাটাই শক্ত কাজ,যেমন খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা।
    তুমি বরং গ্লোব নাও। কত আর দাম…
    ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে সাড়ে অষ্টআশি ডিগ্রী দ্রাঘিমা বরাবর নীচে নামতে থাক,

    সাড়ে বাইশ বা তেইশ ডিগ্রী অক্ষরেখার মিলনস্থলে লাল মার্কারের নিবে ফুটকি দাও,
    এর মানে যে বিপদজনক জোন তা নয়, কান রাখো ফুটকিতে,
    ঘর বন্ধ করো, পাখি তো নয়ই যেন মশাদের আবদারও কানে না আসে।
    শুনতে না পেলে স্টেথোস্কোপ ধার নাও দাতব্য চিকিৎসালয় থেকে,
    স্টেথোস্কোপের চোঙ ফুটকির বুকে রাখ,
    শিশুদের কান্না শুনতে পাচ্ছ? খিদের জ্বালায় হতে পারে, আমল দিও না,
    এক পা এগোও, নবীনদের কান্না, বেকারত্ব বা ধোকা
    দু’ পা এগোয়, মিসক্যারেজ হওয়া মায়ের কান্না
    দ্বিরাগমনের আগেই যে নবোঢ়া বিধবা তার কান্না
    ছেলেদের কান্নার শব্দ খুব ক্ষীণ।
    তিন পা এগোও,জোড় বাড়ছে না!
    বানে ভেসে যাওয়া নদীর শব্দ সরিয়ে দেখ কয়েকটা সংসার কাঁদছে,

    দেখো শেষ যুদ্ধে নিহত যুবকের বিধবা মা কাঁদছে, দেখো জলে তলিয়ে যাওয়া আত্মীয়ের শবদেহবাহীরা কাঁদছে
    দেখো ট্রেনে বাসে ব্রিজের নীচে চাপা পড়া লাশগুলোর দাবীদার কাঁদছে।
    যে বিধবা পাঁচ বাড়ি কাজ করে, যে বিধবা সারারাত সেলাই করে,যে বিধবা কাগজের ঠোঙা বেচে ছেলেকে মানুষ করেছিল, সে ছেলে হারিয়ে কাঁদছে।
    আর একটু এগোও, রক্ত দেখতে পাচ্ছ?
    দাগ মুছে কান পাতো আর্তনাদ শুনতে পাবে, ওরা ধর্ষিতা।
    আর একটু এগোয় কিছু শুনছ? গুঞ্জন! ওটা বৃদ্ধাশ্রম, আলোচনা চলছে কার ছেলে কবে আসবে, দেখ আশ্রমের বাইরে কত দিন চাকার দাগ পড়েনি, শুনতে পাচ্ছ ওদের ফুঁপিয়ে কান্না, ওদের কান্নার রঙ চাপা শ্যাওলা,
    একটু কোনে তাকাও, অন্ধকারে, ওটা নরক,
    ওখানে বেশ্যা থাকে, ছোট ছোট কেবিন, লুকিয়ে কাঁদে।
    আর এক পা এগোও, অট্টহাসি শুনতে পাচ্ছ?
    ওরা জার্ম…

    একি চোখে জল কেন?

    ‘আমার বাবার কান্না শুনতে পেলাম।
    প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে লোনে ল্যাপটপ কিনেছিল বাবা, তিন বছরের ই.এম.আই.পছন্দ হয়নি।তখন কলেজ,মাত্র পঞ্চাশ টাকা হাতখরচ। চলে? বাবা ছেঁড়া লুঙ্গি তালি দিয়ে পড়ত, আমার লজ্জা হত।ভেবেছিলাম এই লোকটা অনুভূতিহীন। আসলে সব অনুভূতিগুলো ফালি ফালি করে কেটে ফেলেছিল বাবা।হুড়মুড় করে বোধনের দিন ঘর ছেড়েছিলাম।
    জানতাম না বাবা আড়ালে কাঁদে। আজ বাবা বড় একা আমিও।’

    তাহলে একাকীত্বও বুঝলে?
    এবার চলে এসো ঝাঁড়ু দিতে হবে, কয়েকটা অশ্বক্ষুর নদী আঁকতে হবে, কয়েকটা স্বচ্ছ বসন্ত, একটা ভোর আনতে হবে, একটা সূর্য নামাতে হবে, সাম্য মৈত্রী স্বধীনতা ইতিহাস থেকে বাস্তবের খুঁটিতে বাঁধতে হবে, দরকার হলে চামচ দিয়ে খাইয়ে দিতে হবে অপুষ্ট সমাজ চেতনাকে।

    একবার আয়নাটা ধর ফুটকির সামনে, যেটা দেখতে পাচ্ছ সেটা অসংখ্য বিন্দু সমষ্টির লাবণ্য।মাইক্রোস্কোপের নীচে ফেলে ধৈর্যে চোখ রাখো- দেখবে শিকড়ের বন্ধন, সবাই আত্মীয়, তোমার আমার শীতার্ত জরাজীর্ণ বঙ্গ…

    পারবে আর একটা অকাল বোধন করতে…?

  • কবিতা

    সমকামী

    সমকামী
    -সৌরভ ঘোষ

     

     

    নিজের ছেলে হতে বাঁধ ভাঙা আনন্দে ভাসলেন,
    বাক্স বাক্স মিষ্টি বিতরণ করলেন।
    দিদির দ্বিতীয় মেয়ে হতে
    ধার করা সহানুভূতি দেখালেন,
    স্যালাইনের চ্যানেল খোলার সময়
    এমব্রয়ডেড রুমালে চোখের জল মুছে
    সান্ত্বনার বানে ইডেনের বারান্দা ধুলেন।
    মনে মনে কতটা তৃপ্ত হয়েছেন?
    নিজের ছেলে হওয়ার থেকেও যদি বেশি হয়
    তাহলে আপনি সুস্থ নাগরিক…

    ছেলেতেও ভয় আছে…
    ভুলে যাবেন না তিনশো সাতাত্তর ধারা
    ছেলের, ছেলে বন্ধু হতেই পারে,
    চাকরি পেতে হলে ইন্টারভিউয়ার
    ব্যাড টাচ করতেই পারে,
    টেলিফিল্মে মেন ক্যারেকটারে
    চান্স পেতে হলেও ইত্যাদি হতেই পারে।
    ছেলেকে শিখিয়ে দেবেন,
    যেন পাইরিয়া বা অর্শ বলে ম্যানেজ করে…

    চান্স আছে…
    হবেই বলছিনা…
    যদি কোনো মেয়ে ছেলের হাত ধরে
    প্রেমের স্বর্গোদ্যানে ফুল তোলে
    কিমবা সুকান্ত পার্কের ঝোপে
    ছেলেটার চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলে
    বাড়িতে ভালো লাগছেনা
    মা খুব অত্যাচারী হয়ে উঠেছে,
    স্বাভাবিক…

    সব ছেলে, ছেলের বন্ধু নাও হতে পারে
    বেশি ঘনিষ্ট মানেই অনিষ্ট।
    ভয় আছে।
    হুম। ধর্ষিত হতে পারে আপনার ছেলে
    নিশ্চয়তা
    দিদির মেয়ের ক্ষেত্রে যত শতাংশ…

    হা হা ইয়ার্কি করছি,
    মুষড়ে পড়লেন নাকি বন্ধু!
    ড্রাইভার তেল কিনতে গেছে-
    আসুন না –
    রাস্তা ফাঁকা,গাড়িতে অনেক জায়গা…

  • কবিতা

    ক্রাইসিস

    ক্রাইসিস
    -সৌরভ ঘোষ

     

     

    চোখের জল মুছতে গিয়ে টিস্যু পেপার গলে জল
    পায়ের কাছে ধর্মীয় উৎসব মারামারি করে
    কার্সার ব্লিঙ্ক করতে করতে থেমে যায়
    সমস্যা সারানোর মিস্ত্রির স্ক্রু-ড্রাইভার ভোঁতা
    সমাধানের আকাশ হাতড়াতে পতাকা পাই
    নতুন সিম্বল,
    বাস্তুবিদ্যার কোনো ছাপ নেই
    শুদ্ধি করাও নয়,
    পতাকার ভার্জিনিটি ভেঙে গুনিতকে জেরক্স করাই
    হাতে হাতে ধরিয়ে দিতেই শ্লোগান
    সমস্যা বেড়ে যায়,
    টিস্যু পেপার বাড়ন্ত
    উৎসব দরজার আড়ালে.

  • কবিতা

    শারদীয়া

    শারদীয়া
    -সৌরভ ঘোষ

     

     

    আবার এক বছর পর দেবীর সপরিবার মর্ত্য বিহার,
    অনাথ রাস্তা গাড্ডা ভরা,ধোঁয়ায় ঢাকা ধুলোর পাহাড়।

    নামী রাজপথে কত হুল্লোর,রোগীরা আটকে জ্যামে,
    পুলিশের হাতে বিবস চালান,বিশ্রাম নীল ভ্যানে।

    পাঁচদিনের যোগ বিয়োগ প্ল্যান ,পকেট নিকষ শূণ্য,
    সুইফটের ই.এম.আই ওভার ডিউ,সার্বজনীন দৈণ্য।

    ঘেরা কেবিনে তরুন তরুনী,লাইট ডিনারে প্রেম ফ্রী
    মুদির দোকান এফ.এল সপ, বেসুরো মাতাল সুশ্রী।

    বাইকের শব্দ লড়াই,সংসাপত্র- অকাল মরন
    স্পীকারে মেজাজী গান ,কাসের বনে বেদাগ নাচন ।

    দেবীর হাতে প্রগতির অস্ত্র,চোখে অদৃশ্য ঠুলি
    পিছন দিকে শুকনো কাদা,অসুরের চোখে কালি…

  • কবিতা

    আরও কয়েক শো বছর পুড়ব

    আরও কয়েক শো বছর পুড়ব
    -সৌরভ ঘোষ

    অমোঘ গন্তব্য ,
    ফলস সিলিং পুড়ছে
    খুলে যাচ্ছে অনিচ্ছার খিল
    ঘরে ধোঁয়ার স্বপ্রজননশীল কমলবাগান, নিস্পৃহ সুবাস
    আয়নার পেছনে আসঙ্গের তৃষ্ণা নিয়ে কে যেন বসে
    তন্ময় প্রহরে বন্ধ দোর কড়া নাড়ে
    কালসিটে কারুকাজ জানালার পাল্লাগুলো বিদ্রোহী
    আর্তনাদ পুড়ছে
    আমার নীরবতা ওদের কাছে অপ্রত্যাশিত
    তোরা বেরিয়ে পড় বন্ধু
    আমিই আয়নার পিছনে
    বিলীন বিস্মিত দেশের প্রান্তিক নাগরিক।

    নবজন্মে
    সাদা ছাই থেকে ঠিক ভেসে উঠব
    আবার নীলপদ্ম বুনব
    আবার মেঘ পতাকার নীচে সৈকত গড়ব
    বা খাণ্ডব বন
    ক্রিস্টাল ঢেউ চূড়ায় ধৈর্য ধরব শেষ দাবানলের।

    আধুনিক শব্দ তরঙ্গ বেয়ে ইথারে উড়ে যা
    গাছ,পাখি,আসবাব
    আমি ততক্ষণ সংগোপনে পুড়ি

  • কবিতা

    আদিখ্যেতা

    আদিখ্যেতা
    -সৌরভ ঘোষ

     

     

    তুই এখনও টাইটানিকের রোজ, উইনস্লেট’কে নিয়ে পড়ে আছিস,
    এখনো ভাবছিস ব্র‍্যাড প্রিট অ্যাকশন মুভি করবে
    নিকোলো কিডম্যানকে সেরা বেডসিনে চাইছিস
    তোর যদিও শ্যারন,ম্যাডোনাই বেশি প্রিয়
    বয়স বাড়ছে ওদের,
    দিদি বা মা চরিত্রে ওরা সাবলীল।
    পুরানো জেমস বন্ড, স্পাইডার ম্যান চেঞ্জ হবে না!
    এরা এখন কাকু দাদুতে স্বচ্ছন্দ, গন্ধহীন মৌতাত
    যেমন তুই মৌমাছি হীন চাক
    আয়রণ ম্যানের জার্সিতেও মরচে পড়বে।
    তোর কি সে দম আছে-
    তেজাবের মাধুরীকে দেখে যেমন শিষ দিতিস।
    অমিতাভের ডুংরীর চামড়া কুঁকড়েছে,আর বাজেনা…

    তোর যত সব অলীক বাহানা,
    নিজের যে ঝুড়ি বেড়িয়েছে ভুলেছিস
    গনোরিয়া, বহুমূত্র আর কি সবে যেন ভুগছিস!
    আর পারিস রাত জেগে নীল সিনেমা দেখে থাই কাঁপাতে?
    বিছানায় আগের মত হিংস্র আছিস?নেই!
    সেন্সারের কাঁচি না থাকলে সবটাই বলতাম
    শোন,বাড়ির বাইরে বোর্ড লাগা
    লেখ- ‘Be aware from বুড়োভাম’।
    হ্যাঁ, তুই একটা বুড়োভাম,
    পামচার বাইকে দীপিকা পাডুকন চাই,আদিখ্যেতা।

  • অণু কবিতা

    আর নয়

    আর নয়
    -সৌরভ ঘোষ

     

    এ মরমিয়া জ্বালা রাখি কোথা
    কুলুঙ্গি, আলমারি বড়ই একরোখা
    হাজার হাজার পাশবিকতায়
    ভর্তি বাক্স প্যাটরা…
    ঘর ছাড়তে হবে এবার
    সময় ঘোর কাটাবার
    যা দেখছি-
    আসবাব গুলো চাপা বিদ্রোহী।
    ধোঁয়া ভরা ঘরে অন্ধকার ঝরনা —
    আর নয়, আর নয়
    হয়েছে জানালা খোলবার সময়
    দেখব নতুন সূর্যোদয়……

You cannot copy content of this page