অণু কবিতা
-
সবগুলো শব
সবগুলো শব
-সুদীপ্ত সেনসেখানে সবটা শান্তি, সবগুলো শব
সেখানে আগুন পুড়ছে সকলে নিরব।পাশের নদীর জল,ছাইরা ভস্ম সাজে
সাধুরা সুখটান দেয়, বিরতি কাজে।কেও কাঁদেনা ওখানে, পারলে হাসে
আগুন পুড়ছে, আঘাত বাঁশে।আমিও মাঝে মাঝে যাই শান্তি খুঁজি
আমিও সুখে দিই টান,চোখটি বুজি।ওখানে নিজের ছেলেও হচ্ছে পাষাণ
আমি যার কথা বলছি বোধহয় শ্মশান! -
সাইকো
সাইকো
-রাখী সরদার
সমস্ত বুকের ধাঁধা পিছলে গেছে
ট্রাডিশনাল সাহিত্য তছনছসেন্টিমেন্ট জাল গুটিয়ে হাওয়া
কি ভাবছো?
সাইকিয়াট্রিস্ট সিম্পটম দেখিয়ে
আদালতে তুলবে?
সে গুড়ে বালিআমি খাওয়া ছেড়েছি
মর্গে যাওয়ার জন্য নয়,তোমাকে
ছোবল মারার কারণে
ডোমকানা বাঁশবনে পড়ে থাকার
সাধ কার বা জাগে?মানুষ হয়ে জন্মানো মানেই ভিতর
থেকে তাড়া খাওয়া
এদিক থেকে প্রত্যেকেই সাইকো… -
ছায়াময়
ছায়াময়
-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়সকল সময় সঙ্গে চলো।
ছায়া হলেও বন্ধু ভালো।আনন্দ আর দুঃখে আমি তোমায় পাই।
তোমায় নিয়েই একসঙ্গে এগিয়ে যাই।তোমার সঙ্গে চলতে চলতে,
কতরকম গল্প বলি।
বন্ধুছায়া তোমার সাথেই
আমার যত গলাগলি।কিন্তু যখন ঘুটঘুটে ওই অন্ধকারে,
তোমায় খুঁজে পাইনা।
নিকষ কালো,ভয় দেখিয়ে একা করে,
একটুও তা চাই না।। -
ছাতা উড়ে গেলে
ছাতা উড়ে গেলে
– রাখী সরদারআগুন রোদে ছাতা উড়ে গেলে —
সংগোপনে চোখ যায় নাভিমূলে।যদি শাড়ি উড়ে যেত!! তাহলে ?
রিনরিনে স্নায়ুতন্ত্র আছাড় খেত,
সিলেবাসের পাঠ ভুলে হাওয়ায়
মদালসা হৃদয়ের গভীরে ডুবে যেত হাত।ছাতা তুমি উড়ে যাও গ্যালাক্সির পথে ।
নক্ষত্র নেমে আসুক স্তন্যদায়িনীর বাহুডোরে
স্তিমিত আলো দ্রবীভূত হোক অমৃত সুধাজলে।ছাতা তুমি উড়ে যাও বারে বার।
-
নো এন্ট্রি
নো এন্ট্রি
-ঋভু চট্টোপাধ্যায়এই যে নো এন্ট্রি,
এখান থেকে আরো বাঁ দিকে বা
ডানদিকে গেলেও সেই এক।
তখনই ডানার কথা, মেঘের কথা,
অথবা বৃষ্টির কথা মনে আসে।
জমাট ধুলোবালি কণা সরিয়ে বুক চিত করে
একটা শরীর একটি নো এন্ট্রির রাস্তায়
পা ফেলে একটু স্বাধীন ভাবে হাঁটবে,
এর থেকেও বড় গণতন্ত্র ? -
লুডো
লুডো
-ঋভু চট্টোপাধ্যায়প্রতিদিন উঠছি মানেই প্রত্যহ নামছি,
এরপরেও হাজার প্রশ্ন অক্টোপাস অথবা জোঁক,
একদিকে শ্বাস বন্ধ অন্যদিকে বেরিয়ে
যাচ্ছে হিমোগ্লোবিন।
এই তো বাঁদিকে আমার প্রেমিক,
তাও শরীরে বর্গী আক্রমণ, খুঁটে খাচ্ছে পরিযায়ী দাগ।
অথচ হাঁটছি, চলছি,
বাঁচার চেষ্টার মাঝে প্রতিদিন মরছি। -
ভালোই আছে
ভালোই আছে
-তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়যে গেছে সে গেছেই
চলে অনেকদূরে।
হয়ত সে আজ ভালোই আছেঅচিনপুরে।
হয়ত সে আজ করছে খেলা
মেঘের সাথে।
হয়ত সে আজ দীপ জ্বেলেছেনিশুত রাতে।
হয়ত সে আজ গল্প করে চাঁদের সাথে
তারার দেশে।
সেথায় বাতাস পারিজাতের
গন্ধে মেশে।জ্যোৎস্না মেখে যায় গেয়ে গান
মধুর সুরে।
যে গেছে সে ভালোই আছে
অচিনপুরে । -
নাগরিক
নাগরিক
-ঋভু চট্টোপাধ্যায়যা আমার অস্ফুট অজ্ঞাতবাস,
শিরা ধমনি জুড়ে নতশির স্থাপত্যের ওপর
খোদাইএর ভাবনা, তার থেকে সরে সরে
যেভাবে সাজানো সংলাপ শেখানো হল,
এখন সেই শ্রেণিতে উপস্থিত।
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দুখণ্ড বাটিতেফোঁটা ফোঁটা আলোর খোঁজে রাতদিন সব এক করে
শুরু করবার চেষ্টা চলছে।
তবু এখনও দেখার বাকি কোন রাস্তায়
কতটা দাঁত আর কঙ্কালের উপস্থিতি। -
মাটির টান
মাটির টান
-রাজীব লোচন বালা
পাখি যতই উঁচুতে উড়ুক এই নীলাকাশে
মাটিতে আসতেই হবে কেননা খাদ্য আছে এখানে।তদরুপ মানুষ যত উঁচায় উঠুক আর গরিমা বাড়ুক,
মাটির কাছে আসতেই হবে, মিশতেই হবে শেষে।এই টান অমোঘ টান, মায়ের প্রেমের টান
এটি কভু যেন না ভুলি মোরা স্বপ্নে। -
ব্যাধি
ব্যাধি
-সোনালী মণ্ডল আইচকার পক্ষপাত কে আমরণ সইছে
কোথা হতে নিরন্তর কতো জল বইছেশুনি এটা ভুল ওটা নির্ভুল
জীবন তরী খোঁজে কেবল কুলরাম + রহিম = কেষ্টা
মুখের কথা মানে কি কেউ শেষটাশেয়াল ধূর্ত প্রহরে প্রহরে বন্দে
এসব ভেবে কাল কেটে যায় দ্বন্দ্বেশাখায় শিকড়ে যত নত-মূল
গোড়ায় নিঠুর নিরবধি মারে কুড়ুল…