অণু কবিতা- সমর্পণ

সমর্পণ– তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়     দু’দিনের অতিথি হয়ে আশ্রয় নিয়েছিআকাশের নীচে।আর শুধু জেনেছি সমর্পণ। জীবনের কাছে সমর্পণ।সময়ের কাছে সমর্পণ।নিয়তির কাছে সমর্পণ। সবকিছু হাতে নেই।তাই মাথা নীচু করে সমর্পণকরে যাই চিরকাল।ক্লান্ত মন পথ খোঁজে অন্ধকার থেকে আলোয়।পায়ের বালুরাশি ধুয়ে দেয় সময়ের জল।আকাশের নক্ষত্ররাজি ঘুম আনে চোখে।।

অণু কবিতা- চন্দ্রিমার আঙিনা

চন্দ্রিমার আঙিনা – রাখী চক্রবর্তী গোধুলি লগ্নে সিঁদুর মাখা মেঘে চেয়ে থাকি আনমনে, অরণ্যের সারি, নাকি ভালবাসার আড়ি চন্দিমার আঙিনায় স্থান পেয়েছে কে জানে? ভাঙা ভাঙা আঁধারি আলো আছড়ে পড়েছে আমার শূন্যতাবিহীন এ জীবনে কত স্মৃতি, কত আবেগে মাখা ছিল আমার রাতের আকাশ, আজ হাহাকার মূর্ছনা গ্রাস করেছে আমার প্রতিক্ষণের উল্লাস।

অণু কবিতা- আমার চোখে জীবন

আমার চোখে জীবন  -মিনাক্ষী পতি জীবন হলো বেঁচে থাকার বিশ্বাস, জীবন হলো ভালোবাসার আশ্বাস। জীবন হলো দুঃখকে হারিয়ে সুখ খোঁজার প্রয়াস।, জীবন হলো অন্ধকার থেকে আলোর প্রকাশ। জীবন হলো প্রতিমুহূর্তের সংঘর্ষ, জীবন হলো আপন জনের স্নেহের স্পর্শ। জীবন হলো অমূল্য আশিস ভগবানের, জীবন হলো আকাঙ্খা অন্তিম নিশ্বাস‌ অব্ধি সবার হৃদয়ে থাকার।

অণুকবিতা- সংস্কারের গপ্প

সংস্কারের গপ্প – শুক্লা রায়চৌধুরী আমায় ঘিরে বাড়তে থাকে এক ঘুন ধরা পাঁচিল, অধমুখী মনের গভীর সে জাল বড়ই জটিল; সোঁদা শ্যাওলায় ঢাকা পরে আলোর ওই উৎস, সভ্যতার ইতিহাস হয়ে ওঠে বড়ই বেরঙ্গীন ক্ষুদ্র; অন্ধ বিশ্বাসের কাটাকুটি খেলায় সতীর সহ মরণ, সংস্কারের ছলে কেবল চলে মানের অপহরণ; ভাঙুক এই গোলোক ধাঁধা হয় যদি চির ক্ষয়, […]

কবিতা- প্রজাপতি ও তুমি

প্রজাপতি ও তুমি– সুশান্ত দাস     হে নাবালিকা তুমি সজীব প্রকৃতি,তোমার বক্ষ মাঝের প্রস্ফুটিত হতে থাকাফুলের কুঁড়ির সুবাস মাখতে চাওয়া বাতাস,স্পর্শ গন্ধের অপেক্ষায় থাকা আকাশ।নির্বোধের হৃদয় অন্তপুরের প্রকৃত চাওয়া,আমার অজানা আবছা অপরাধ।দূরন্ত দুপুরের অচেনা অবহেলা,অনেকটা বৃষ্টি ভেজা পড়ন্ত বিকেল বেলা।যদি বাড়িয়ে দাও আলগা বাহুদয় আনমনে,আমি প্রজাপতি হতে পারি প্রেমেরই গানে।

অণু কবিতা- ভাষা

ভাষা– মানিক দাক্ষিত     ভাষা হাসায় ভাষা কাঁদায়ভাষা সর্বনাশা।ভাষা আবার মনেতে দেয়গভীর ভালবাসা। ভাষা করে পরকে আপনআপন করে পর্।ভাষাই বাধায় দক্ষযজ্ঞমনেতে আনে ঝড়। ভাষা ঘটায় বিরহ মিলনভাষা আনে রাগ।ভাষা মনের বড় ওষুধমিষ্টি মধু সোহাগ। এসো আমরা সবাই মিলেমিষ্টি করি ভাষা।জিভের আগায় লাগাম টানিবাড়ুক ভালবাসা।

অণু কবিতা- মুক্তি

মুক্তি– উজ্জ্বল মল্লিক     চাওয়া-পাওয়ার মাঝে যতদিন,লোভ-বিদ্বেষে হবে মমতাবিহীন;অহংবোধে আচ্ছাদিত সোহম্-বাণীঅতীতের নালন্দা-স্তূপেরই মত। আত্মকেন্দ্রিকের অনন্ত একাকীত্ব,নগর-সভ্যতা, রহিত মনুষ্যত্ব,মুখোশে ঢাকা সব যান্ত্রিক, কৃত্রিম,আত্মারামের ক্রন্দন রয় অব্যক্ত: কালে, মুক্তির আনন্দে রয় সতত।

অণু কবিতা- জীবন কাটাই দ্বন্দ্বে

জীবন কাটাই দ্বন্দ্বে– মানিক দাক্ষিত     বারো মাসে তেরো পার্বণলেগেই আছে বঙ্গে,বলতে পারো ভুলেই আছিনানান যাদু রঙ্গে। ভক্তি শ্রদ্ধা চুলোয় গেছেসকাল থেকে সন্ধ্যে,খানা-পিনা-রসে-বশেকাটছে ভাল-মন্দে। মানবতা কথার কথানাইকো কোনো ছন্দে,অধর্মকে ধর্মে মুড়েজীবন কাটাই দ্বন্দ্বে।

অণু কবিতা- আশার আলো

আশার আলো– শচীদুলাল পাল     গহন রাতি আসুক নেমে হোক না অন্ধকার,বিধির আশিস মাথায় নিয়ে খুলবো বন্ধ দ্বার।দীপশলাকায় প্রজ্বলিত করবো দীপশিখার,এক ঝলক আলোয় কেটে যাবে অন্ধকার।আলোর আলোকে খুঁজে পাবো রত্নভান্ডারলাশের পাহাড় শেষে দেখব কত প্রাণময় সংসার।রাত শেষে হবে ভোর, চলতে থাকব অতীত ভুলেপরের প্রজন্মের শিশুদের নেব কোলে তুলে।

অণু কবিতা- বাড়িটি

বাড়িটি-সুশীল মণ্ডল     পাণ্ডুর চাঁদের আলোয় বাড়িটি ঘুমায়শিল্পীর ইজেলে আঁকা এ বাড়িতেমেঘমল্লার ঝরে। অখণ্ড সম্পর্কের বহ্নিশিখাবাড়িটির শরীরে মাখিয়ে দিয়েছেবসন্তরঙা আবীর। বাড়িটির একজীবন বয়সছুঁয়েছে, দাম্পত্যের তন্ময় সাধনাকখনো শোকে, কখনো গানেরঅভিযাত্রায়। বাড়িটির ক্ষতদাগ একটি অনন্য অধ্যায়।