-
ভালোবাসা
ভালোবাসা
-সোমা বৈদ্যভালোবাসা তুমি স্নিগ্ধ ভোরের বাতাস হয়ে ছুঁয়ে যাও হৃদয়।
ভালোবাসা তুমি নিস্পাপ সুরভিত ফুটন্ত গোলাপের পাপড়ি হয়ে করে যাও অপেক্ষা অর্হনিশি,
তোমার নির্মল সুগদ্ধি ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রকৃতির বুকে।
তোমার সুরভিতে মাতাল হয়েছে ভ্রমর নিশ্বাসে বিশ্বাসে ছড়িয়ে পড়েছে,
তোমার এই মাধুর্য সুগন্ধি হয়ে খুঁজে চলেছে দিবা নিশি।ভালোবাসা কবিতার ছন্দের প্রতিটি অক্ষরে,
চরণের অন্তমিল হয়ে উপন্যাসের শেষ পাতায়।
তোমার মুখের উজ্জ্বল হাসি ঐ আবছা চোখের,
ভাষা ঠোঁটের স্পর্শ আজ নতুন করে কবিতা লিখবো,
বসন্তের ভোরের পাখি মিষ্টি মধুর সুরের গান,
শোনাবে তার কণ্ঠে হৃদয় মন উচ্ছাসিত হবে সেই গানে।
ভালোবাসা হবে নদীর ও মোহনার মিলিত হয়ে যার জন্য দিন কাটতো বিষণ্ণ হয়ে,
মিলনের অপেক্ষায় ঢেউ গুলো আছড়ে পড়তো বারে বারে নদীর পাড়ে।
তাদের মিলনের ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে যাবে মনে,মনে কথা বলবে কত না বলা কথা না বলা যন্ত্রণা।
তুমি হবে পূর্ণিমার রাতের আকাশের চাঁদ নিস্তব্ধ রাতের জোনাকি হয়ে,
তোমার আকাশে তাকিয়ে থাকবো শুধু তোমার অপেক্ষায়।
-
স্মৃতি চিহ্ন
স্মৃতি চিহ্ন
-সোমা বৈদ্যআকাশটা হঠাৎ’ই মেঘলা। আজ অন্ধকারে ছেয়ে গেলো চারিদিক।
হঠাৎ বাতাসও স্তব্ধ হয়ে গেল, থমথমে পরিবেশ।
নদীর বুকেও উঠলো ঢেউ উথাল পাথাল ভাঙছে যে তার কুল।
ঐ দূর দিগন্তের যত দূর চোখ যায় হয়তো বা তার থেকেও দূরে।
যেখানে আছে নীরবতা সেখানে নেই অভিনয় ছলনা, মুখোশের আড়ালে হাসি কান্না,
যেখানে নেই করুণ ঘৃণা মিথ্যে ভালোবাসার বাহানা।
সুধা মটির গন্ধে ভরবে মন প্রাণ মাটির সাথে হবে আত্মার আদান প্রদান প্রেমের সংলগ্নে।
এই রঙ্গমঞ্চের মঞ্চ থেকে মুছে যাবে সব স্মৃতি দিনে দিনে ধূসরিত হবে।
হয়তো বা কিছুদিনের জন্য অস্থির হবে উন্মাদ হবে হয়তো কিছু স্মৃতি কথা মনে দোলা দেবে ভাবাবে অপছন্দ কথাগুলো
হয়তো স্মৃতি স্মরণে দু’ফোঁটা জল পড়বে চোখ দিয়ে মন থেকে মুছে যাবে অপ্রিয় মুখটাও হৃদয়ের আঙিনা থেকে।
নতুন সূর্যের আলোয় আবার ভরে উঠবে তোমার জীবন। হৃদয়টাকে সাজিয়ে নেবে নতুন ভাবে।
ফেলে আসা স্মৃতিটাও ঝাপসা হবে ধীরে ধীরে বিলুপ্তি হবে শেষ চিহ্নটুকুও তোমার নিষ্ঠুর হৃদয় থেকে। -
মায়ায় ভরা এই পৃথিবী
মায়ায় ভরা এই পৃথিবী
-সোমা বৈদ্যনিরিবিলি নদীর পাশে গিয়ে বসলাম। নদী নিজের গতিতে আসে যায়, তবুও সে একাকী নিরালায়। কখনো বা জোয়ারের টানে আছড়ে পড়ে নদীর পারে,
আবার ভাঁটাই চলে যায় দূর থেকে বহুদূরে অপরূপ দৃশ্য তার। বসে বসে আনমনে দেখি আর ভাবি প্রতিদিন কত ভঙ্গী তার অপরূপ সৃষ্টি, নদীর পারে বাঁধা শ্যাওলা সে আঁকড়ে ধরে নদীর পারকে। কিন্তু নদীর ভাঁটার টানে ছিনিয়ে নিয়ে যায় দূর থেকে বহুদূর মাঝ গঙ্গায়, ভাসতে ভাসতে চলে যায় কোন অজানা ঠিকানায়। ভাবতে ভাবতে মনটা কেমন আনমনা হয়ে যায়, হঠাৎ শুনি অদ্ভুত এক ধ্বনি ‘বলো, হরি,হরি,বোল। যে আওয়াজ শুনেই বুকের মধ্যে চমকে উঠলো, এই ধ্বনিতেই যে হারিয়েছি কত আপন জন। আমি নদীর পার থেকে উঠে এক পা দু পা করে এগিয়ে গেলাম সামনে, কিছু মানুষের ভিড় তার মাঝে মাটিতে শুয়ে আছে এক নিথর নিঃস্ব প্রাণ দেহ! সাদা কাপড়ে ঢাকা। তার একপাশে এক শিশু বয়স অনুমানে পাঁচ থেকে ছয় বছর, শিশুটিকে জড়িয়ে আছে তার মা! মাথায় সিঁন্দুর মোছা এলো মেলো চুল হাতের শাঁখা ভাঙা পরনে সাদা শাড়ি অদ্ভুত দৃশ্য। শিশুটি বার বার তার মাকে বলছে বাবা এমন ভাবে কেন শুয়ে আছে, কেন? বাবা আমায় কোলে নেবে না? তুমি কেন এমন সাদা শাড়ি পড়েছ মা? আমার ভয় করছে, যে কথা গুলো সবার বুকে বিঁধে যাচ্ছে চোখের জল ঝরাচ্ছে। আসলে শিশুটি জানে না যে তার বাবা আর তাকে কোলে নেবে না, সে মানুষটি সারা জীবনের জন্য ঘুমিয়ে আছে আর উঠবে না। সবার চোখে জল শিশুটির মা বারবার লুটিয়ে পড়ছে মাটিতে, এই শেষ দেখা শিশুটির বাবার সাথে শিশুটির। স্নেহের বাঁধন ছিন্ন করে চলে গেলো শিশুটির বাবা, শিশুটির বাবাকে যখন সবাই নিয়ে যায়, তখন অবুজ শিশুটি শেষ বার বলে ওঠে। বাবা তুমি কোথায় যাচ্ছ আমি যাব তোমার সাথে, শিশুটি আর কোন সাড়া পায়নি তার বাবার। পাথর চোখে দেখতে পারবে না নিজের বরযাএী, তখন তার শেষ বিদায় নেওয়ার পালা। সবাই তাকে বিদায় দিলো তাদের চোখের জলে, চার-কাঁধেতে উঠলো সে আপন ঘর আপন বাড়ি সব-ই ছেড়ে চলল নিজের মাটির ঘরে। শ্মশানঘাটে হবে স্নান,দেখবে না কেউ ঘুরে। সবাই মিলে নিথর নিঃশ্ব প্রান দেহটা চন্দনের কাঠে সাজিয়ে তুলে দিলো কাঠের চিতায়, চিতার আগুনে পুড়বে দেহ যেটা যত্নে রাখা ছিলো। যে দেহটা পুড়ে এক মুঠো ছাই হবে, তাকেও যে শেষ অস্তিত্ব বলে ভাসিয়ে দেবে গঙ্গা জলে। এভাবেই মিশে যাবে আমাদের শেষ চিহ্ন টুকু প্রকৃতির বুকে, এভাবেই হারিয়ে যাবে সবাই। আমাদের নামের “প্রথম অক্ষর বদলে যাবে ঈশ্বর চিহ্নে”! এই তো পৃথিবীর কঠিন নিয়ম। -
শেষ ঠিকানা
শেষ ঠিকানা
-সোমা বৈদ্যআজ মন চাইছে বহু দূরে হারিয়ে যাই,
সেখানে গেলে আর কেউ ফিরে আসে না,
সেখানে নেই কোন কষ্ট, যন্ত্রণা,রাগ অভিমান।
বহু অপেক্ষার শেষ যেখানে,
তখন হয়তো ভুলেই যাবে আমায় কেউ যে ছিলো তোমার অপেক্ষায়।
জীবনে শেষ নিঃশ্বাসটুকু থাকাকালীন
কখনো দেখেছ বসন্তের শেষ বৃষ্টির চাতক কেমন অপেক্ষা করে এক ফোঁটা জলের।
ঠিক তেমনি এই হৃদয়ের স্পন্দনটা বন্ধ হওয়ার আগেও তোমায় খুঁজে ছিলো,
শুধু একটি বার দেখার জন্য শুধু একটি বার তোমার মুখে ভালোবাসা কথাটা শোনার জন্য।
চাতক যেমন বছরের পর বছর অপেক্ষা করে এক
ফোঁটা বৃষ্টির জলের,
আকাশ কি তা মনে রাখে কে কখন ঝড়ে গেলো বসন্তের শেষ ঋতুতে।
ক্রমে ক্রমে তুমিও যাবে আমায় ভুলে নতুন বসন্তের ফুলে নিজেকে সাজিয়ে নেবে,
চোখ ভরা জলে কত না প্রশ্ন জাগবে এ মন কত না স্বপ্ন দেখেছিলো?
এ কেমন স্বপ্ন আজ সে অনেক দূরে,
তবে এটা স্বপ্ন বোধ হয় স্বপ্ন নই অবেগ মাখানো মিথ্যা অনুভূতি।
সমুদ্রের স্রোতের মত আবার ফিরবে আসবে জানি,
তবে আজ হারিয়েছে অনেক কিছু কত আপন জন,
নতুন করে বাইবে তোমার খেয়া তরী আমি দূর খেকে দেখবো একা একাকী নির্জনে| -
অভিমানী মন
অভিমানী মন
-সোমা বৈদ্যনমীতার মনটা আজ চুপ চাপ সকাল থেকে কিছু একটা ভাবছে।
কবির: নমীতা হঠাৎ আমায় ফোন করছো?
নমীতা : চলো না আজ ঐ কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছটির নিচে বসি। আগে তো প্রায় যেতাম তুমি আর আমি কত না কথা বলতাম রাগ অভিমানের।
কবির: আচ্ছা চলো তবে যাই। বলো কখন আসবে তুমি। আমিও নাহয় তখনই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসব ফুল গাছ টির নিচে।
নমীতা: আমিতো এখনি যেতে চেয়েছিলাম আর বেরিয়েও পড়েছি।তাই তোমায় ফোন করলাম।
ভেবেছিলাম এক সাথে যাব।
কবির: ও আচ্ছা আমায় একটু আগে বলতে তাহলে হয়তো আজ ছুটি নিতাম।
নমীতা : না তোমার যদি আজ আসতে প্রবলেম থাকে তাহলে আজ আর এসো না অন্য একদিন না হয় আসবো তোমার সাথে।
কবির: তা বেশ বলেছ তুমি।
নমীতা মনে মনে ভাবে আজ কতটা পালটে গেছো তুমি।আগে আমার সাথে দেখা করার জন্য পাগল ছিলে।আর ঐ কৃষ্ণচূড়া গাছ টা ছিলো আমাদের সাক্ষী তোমার আমার ভালোবাসার।কি করে ভুলে গেলে তুমি আজকের দিনটা।বলতেই চোখে জল এলো।একাএকাই বসে থাকে ঐ গাছটার নিচে।আর গাছ টিকে চিৎকার করে বলে তুমি তো একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছ বহু বছর ধরে ।তুমি তো পাল্টে যাও না ।সব সময় নিজেকে সাজিয়ে রাখো ফুলে ফুলে।তুমি তো ভুলে যাও না ফুল ফোটাতে।তুমিতো ভুলে যাওনা তোমার ফুলের গন্ধে মানুষের মন ভরাতে।
তবে মানুষ কেন ভুলে যায় কথা দিয়ে সে কথা রাখতে।
কবির হঠাৎ পিছন থেকে কাঁধে হাতটা রাখে।
নমীতা চমকে ওঠে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে তার প্রিয় মানুষটি।হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ ফুলের তোড়া ।
কবির: কি ভেবেছিলে আমি ভুলে গেছি এই দিনটার কথা তাই তো ?কি করে ভুলবো বলো আজকে তোমায় দেয়া কথাটা এই গাছটাকে সাক্ষী রেখে তোমার আমার ভালোবাসার কথা বলেছিলাম।
এ জীবন থাকতে হয়তো তা আর ভোলার নয়।
নমীতাকে কথাটা বলতেই কবিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।আর বলে আমি ভেবেছিলাম তুমি তোমার কাজের চাপে হয়তো আমায় ভুলে গেছো এই দিনটার কথা । আজ আমাদের ভালোবাসার এক বছর পেড়িয়ে গেলো।
কবির : না ভুলিনি তাই তো আজ অফিস ছুটি নিয়েছিলাম আজ সারাটা দিন তোমায় দেবো বলে।
নমীতা : কেন আমায় বলোনি ফোন করে যখন আসার কথা বললাম তো?
কবির: তোমায় একটু চমকে দেবো বলে।
নমীতা :এতো ভালোবাসো তুমি আমায়?
কবির: হ্যাঁ বাসি বাসি আর সারাজীবন বাসবো এই কৃষ্ণচূড়া সাক্ষী তার।আর এ দেহে নিঃশ্বাস আছে যতদিন আমি শুধুই তোমার।
নমীতা : এতোটা ভালোবাসো আমায়?
কবির: হ্যাঁ
নমীতা:হাজার ব্যস্ততার মাঝে আমায় ভালে যাবে না তো কবির?
কবির: কি করে ভুলবো তোমায় তুমি তো আছো এ হৃদয় মাঝে এক মৃত্যু ছাড়া তোমার থেকে আমায় আলাদা করতে পারবে না।
নমীতা: এতোটা ভালোবাসো তুমি আমায়?
কবির: নমীতার হাতটা ধরে কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছটির নিচে নিয়ে যায় আর আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে আমি তোমায় ভালোবাসি নমীতা।
নমীতা: কবির বুকে মাথা রেখে বলে আমিও তোমায় খুব ভালোবাসি কবির।।
ভালোবাসা বোধহয় এমনি হয় কিছু অনুভূতি কিছু না বলা কথা। কিছুটা পাগলামী।। -
ভালোবাসার মায়া জাল
ভালোবাসার মায়া জাল
-সোমা বৈদ্য
আচ্ছা তুমি কখনো দূর আকাশের বুকে চাঁদ কে দেখেছ ?
কতো ঝলমলে আলো তার বুকে আমাদের কে আলোকিত করছে।
আমারা কি কখনো ভেবেছি ঐ ঝলমলে আলোর পিছনেও অন্ধকার আছে,
তবে আমারো আজ কাল ঠিক তেমনই মনে হয় কেন?
উপরে আমি ঝলমলে আলো আর ভিতরে হাজারো দুঃখ কষ্টের ভীড়।
তার সামনে দাঁড়াতে নিজেরই কেমন যেন অদ্ভূত ভয় হয়,
আজ কাল খুব জানতে ইচ্ছে করে তুমি কেমন আছো?
আচ্ছা আমি তোমায় বিরক্ত করছি না তো ?
ভালোবাসা মানুষকে এতো অসহায় করে তুলতে পারে আমার জানা ছিলনা।
তোমার সাথে আমার পরিচয় না হলে হয়তো আমার জানাই হতো না।
তোমার ভালোবাসা আমায় বাঁচতে শিখিয়েছে তোমার হাতে গড়া আমার এই পৃথিবী,
যাকে সুখী দেখবে বলে তুমি চলে গেলে দূর থেকে বহু দূরে।
খোলা আকাশে পাখীর মতো ডানা মেলে উড়ে গেলে?
তার মুখে আজ এমন কথা মানায় না আমি জানি।
আমি এখন আর পাচ্ছি না আমার চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে
তোমার রেখে যাওয়া স্মৃতি স্বপ্ন,
ভোরের সকালে শিস দেয় তোমার সেই ভালোবাসা।
সারাক্ষণ আমার সাথে ঘুড়ে বেড়ায় তোমারই স্মৃতি,
আমি তাকে না পারি কাছে টানতে না পারি দূরে সরিয়ে দিতে।
আমিও যে সুখী হতে চেয়েছিলাম
কিন্তু আজ সেই একলা আমি কালও যেমন ছিলাম,
মনের মধ্যে কষ্টের পাহাড় জমেছে
আমার কোন অধিকার নেই আমার তোমার সামনে যাওয়ার।
তবুও তুমি একদিন বলেছিলে,
যদি কখনো মনে হয় তুমি একা হয়ে গেছো
তখন তুমি ফিরে এসো আমি অপেক্ষা করবো তোমার !
হ্যা আমি আজ খুব একা হয়ে গেছি,
আমার অভিমান তোমায় ছাড়া সুখী হওয়ার।
আজ সব কিছু ফেলে এসেছি তোমার কাছে ফিরিয়ে নাও আমায়!
কথা দিচ্ছি এমনটি হবেনা ,
আর আমি জানি আজ তুমি একলা এক বুক অভিমান কষ্ট নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ!
খুব অভিমানে, কষ্টে কেঁদে ওঠে মন !
কেউ জানে না, আমি জানি কেন তোমার মনের মধ্যে এতো অভিমান কষ্ট ,কেন এত অবহেলা।
আমি জানি সব হারিয়ে কেন তুমি আজ এতো একলা হয়ে কার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছো !
-
মমতা ময়ী মা
মমতা ময়ী মা
– সোমা বৈদ্যনমীতা প্রতিদিনই বাসে করে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরে।আজ ও তেমনি বাসে করে বাড়ি ফিরছিলো। নমীতা জানালার পাশে বসতে খুব ভালোবাসে তাই আজ সে বাসের জালানার পাশে এসে বসলো। নমীর শরীর টা আজ বেশ ক্লান্ত লাগছে চোখেও ঘুম ঘুম,নমীতা আস্তে করে জানালার পাশে মাথাটা রেখে সবে চোখ টা বন্ধ করেছে।হঠাৎঅদ্ভুত চিৎকার কানে আসে। চোখ মেলে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে এক মা তার মৃত শিশুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে শিশুটির সারা শরীর রক্তে রাঙা।নমীতা ঐ দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে যায়। বাসটাও ছুঁটছে তার গন্তব্যের দিকে। নমীতার চোখে ভেসে ওঠে এমনি এক ঘটনা যেটা নিজে চোখে দেখে ছিলো আজও সে ভুলতে পারেনি। তখন নমীতা স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাএী ।সব বন্ধু বান্ধুবীরা মিলে পরীক্ষারর জন্য রওনা দিয়েছে ট্রেনে করে।দু ঘণ্টার পথ।বেশ হৈ চৈ শব্দে মেতে উঠেছে সবাই। তার মধ্য থেকে কানে ভেসে আসে চিৎকার কান্নার আওয়াজ,হঠাৎ করে সবাই চুপ পরিবেশ টা থম থমে হয়ে যায় ।ট্রেনের মধ্যে কেউ এক যাএী বলে ওঠে ইস শিশুটি ট্রেনের তলায় পড়েছে,শিশুটা কি বেঁচে আছে হয় তো কাটা পড়েছে। নমীতা কথাটা শুনতে সিট থেকে উঠে সে তাড়াতাড়ি ট্রেনের গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখে এক মা তার শিশুর জন্য চিৎকার করে কাঁদছে আর রেললাইনের পাতের উপর আঁছড়ে পড়ছে আর নিজের বুক চাপড়ে চলেছে ঘন ঘন আর বলছে আমার মামনিকে আমায় আনতে দেও । তিন চার জনে আটকে রাখে সেই মাকে । ঐ দৃশ্য দেখে নমীতা নিজের চোখের জল আর আটকাতে পারলো না চোখের জলে ভেসে চলেছে তার বুক। নমীতা পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে ট্রেনের যাএীরা যে যার নিজের ধরমের ঈশ্বর কে স্মরন করছে।কেউ মুসলিম,কেউ খৃষ্টান,আবার কেউ বৌদ্ধ যে যার ভগবান কে ডাকছে। নমীতার জীবনেও ঘটে যাওয়া এমনি এক দৃশ্য মনে পড়ে যায়। নমীতার তার ময়ের সাথে ঘুরতে বেড়োয় তখন নমীতা খুব ছোট। বয়স সাত বছর পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ভালো রেজান্ট করাতে নমীতার মা নমীতা কে দামি উপহার দেওয়ার জন্য কিছু জিনিস কিনতে বেড়িয়েছে। নমীতা আর নমীতার মা একটু তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেন লাইন দিয়ে প্লাট ফর্মের দিকে আসছে প্রচুর মানুষের ভীড় হৈ চৈ ট্রেনের আসার খবর এদিকে ঐ ভীড়ের মাঝে নমীতা তার মায়ের কাছ থেকে পিছনে পরে গেছে।নমীতার মা প্ল্যাটফ্রমের ওপরে ভীড়ের মাঝে আর নমিতা রেল লাইনের ওপর নমীতা তার মাকে চিৎকার করে ডাকছে কিন্তু তার মায়ের কান পর্যন্ত্য পৌঁছাচ্ছে না, এদিকে নমীতাও প্ল্যাটফ্রমের উপর উঠতে পারছে না ।সে হাত বাড়িয়ে তার মাকে ডাকছে কিন্তু সাড়া নেই। এদিকে ষ্টেশনে ট্রেন ঢুকছে। নমীতার ভয়ে আরো চিৎকার করছে কেউ শুনছে না ট্রেনের লাল আলোটা নমীতার চোখে পড়ছে সে যেন ছুটে আসছে নমীতার দিকে নমীতা ভয়ে চুপ হয়ে গেছে তার মুখে আর আওয়াজ নেই। ট্রেনটা অনেক কাছে চলে এসেছে ঝড়ের বেগে নমীতার মা তখন চিৎকার করে ওঠে, কেউ একজন দৌড়ে কাছে এসে এক ঝটকায় তুলে নিলো নমীতাকে প্লাটফর্মে। নমীতা পড়ে যায় । নমীতার মা নমীতাকে জড়িয়ে ধরে। নমীতা এই কথা গুলো ভাবতে থাকে মনটা অন্ধকার চুপচাপ বসে থাকে তার সিটে। হঠাৎ পিছন থেকে এক জন চিৎকার করে বলে ওঠে শিশুটি ট্রেনে কাটা পড়েনি সে বেঁচে আছে। শিশু রেল লাইনের মাঝ খানে শুয়ে পড়েছিলো।ট্রেনের আঘাতে তার কোন ক্ষতি হয়নি। একথা শুনে সবার মুখে একটু হাসি ফোঁটে।আর বলে ভগবান আছে তিনিই ঐ অবুজ শিশুকে রক্ষা করেছেন। নমীতার চোখে জল আসে আর একটা বড়ো নিঃশ্বাস ফেলে একটু হাসি ফোটে মুখে।তর মনে মনে ভেসে ওঠে ঐ মায়ের মুখ, যে শিশুটার জন্য পাগোলের মতো মাটিতে আঁছড়ে পড়ছিলো।মা হলেন মমতা ময়ী যার তুলোনা হয়না। -
নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
-সোমা বৈদ্য
এমন কোন দিন নেই
যেদিন তোমার কথা মনে পড়ে না।
এমন কোন মূহুর্ত নেই
যে তোমার কথা ভাবি না।
আমি তোমার মুখেই শুনেছি
ভালোবাসা কখনো চোখে জল ঝরায়নি।
তবে কেন বলতে পারো –
প্রতিনিয়ত আমার চোখের জল ঝরাচ্ছি ?
আমি তোমাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবেসেছি।
হয়তো কেউ কাউকে এতোটা ভালোবাসে না।
তার বিনিময় শুধু আঘাত দিয়ে গেলে
ভালো বাসলে না।
এই কষ্ট গুলো আমায় হাসতে দেয় ।