• কবিতা

    কবিতা- উপহার

    উপহার

    -অমল দাস

     

     

     

    আমার বিনিদ্র নিশি…
    রজনীগন্ধা করে তোমায় উপহার দিলাম,
    ফুল স্বরূপ তুমি একই সূত্রে তার মালা গেঁথে নিও।

     

    স্বর্গীয় বাগ হতে যথেচ্ছ তুলে নাও….
    আমার মন্দিরে দিতে হবেনা একটিও,
    তুমি তোমার আরাধ্য দেবতার চরণে সব দিও।

     

    আমার শৈত্যের রাত…

    রেশমকীট করে তোমার হাতে সঁপে দিলাম,

    তুমি রেশমের শাল করে অবয়ব ঢেকে নিও।

     

    উন্মুক্ত বাগের শেষ কীট তুলে নাও…

    আমার জন্য রেখ না রেশম সুতো একটিও,

    তুমি তোমার প্রাণপুরুষকে উষ্ণ চাদরে জড়িয়ে নিও।

     

    আমার নির্বাক নিশি…..

    প্রেমের ধ্বনি করে তোমার কণ্ঠে দিলাম,

    তুমি সুর বেঁধে বসন্তের গান ধরে নিও।

     

    সমস্ত স্বরলিপি তুমি নিয়ে নাও….

    আমার জন্য রেখ না স্বরধ্বনি একটিও,

    তোমার গানের ভেলায় তোমার প্রিয়তমকে ভাসিয়ে নিও। 

  • কবিতা

    কবিতা- ইন্দীবর

    ইন্দীবর

    -অমল দাস

              ১

    একদিন পোড়া মাটি, চড়া রোদ,

    ছেঁড়া কবিতা ফেরী করতে যাবো-

    তোমার বাড়ি। তোমার গলি, তোমার উঠোন,

    তোমার আঙিনায় ছড়িয়ে দেবো

    আমার নশ্বর দেহের ছাই।

    তুমি কলকল-ছল বইতে থেকো, বইতেই থেকো-

    ভেঙে যাক পাড়, ডুবে যাক ঘর

    ভেসে যাক মরা মানুষের দেহ…

    তোমার তো আর শ্রাবণ আসে না..

              শ্রাবণ শুধু আমারই অহংকার।

    ছেঁড়া কবিতার নৌকা করে ভাসিয়ে দিও

    আমার উপসর্গ উপরোগ।

    আমি অশোধিত তরল জ্বালানী ঢেলেছি

    ক্কাথহীন শব্দ-বর্ণের বৃন্ত ক্ষুন্ন পাতায়

    পুড়ে যাক, তারপর ধোঁয়া, তারপর-

    গ্যাস পিণ্ড, তারপর স্বেচ্ছা মৃত্যুর তারা..

    একদিন মৃত আলো নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বো

    পৃথিবীর তোমার ওপর।

    আমি তোমার নয়, আমার বুকেই ক্ষত করেছি কত..

    কত বীজ পুঁতেছি –অঙ্কুরহীন জীবন।

    ঊষার আলোর বিন্দু ঢেলে তাকাও এই গর্তে

    শ্রবণের অতিশাব্দিক তরঙ্গে ভেসে আসবে

    জল-পাতাল-জল…

    রক্ত শুধু রক্ত- লাল আর লাল

    হার-খুলি-কঙ্কাল ভেঙে এগিয়ে যাই আমি

    তুমি মরীচিকার মত হারিয়ে যাও মরুর বালি-পেটে

    আমি তোমার শরীর ছুঁয়ে নীল হতে চাই পৃথিবী,

    নীল…

  • কবিতা

    কবিতা- ‘মৃৎ-বত’

    ‘মৃৎ-বত’ 

    -অমল দাস

     

     

    ব্যস্ত মোড়ে মনুমেন্টের ছায়া পূবে শায়িত হয়ে

    অবসাদের আস্বাদে বিদায়ী দিনের ইস্তেহার বাঁটে।   

    পেন্ডুলামের  কাঁটা দোল  দিয়ে  ঘন্টায়  তাল  দেয়  যখন

    তখন একদল  স্কুলছুট দৌড়ে  আসে বিপ্লবের ঘ্রাণে;

    ছুটন্ত ঘোড়া আর ফুটন্ত ক্ষোভ দুই-ই অপ্রতিরোধ্য

    ভালো-মন্দ ইতিহাস লিখতে পারে অনায়াসে।

    ইতিহাসে যারা এতকাল ক্রীতদাস-

             এ পৃথিবী আসলে তাদের মৃতবাস।

    মৃৎ -এর ঘরে যত মূর্তি তৈরি হয়

    তাতে রঙ প্রলেপন হলেও

     -প্রাণের সঞ্চার ঘটেনি!     

    তারা দেনার দায়ে কল্পনার আড়ালে লুকিয়ে বেরায়

    কল্পনা আর জল্পনার সহবাসে কস্মিনকালেও-

    কোনও নবজাতকের চোখ খোলেনি আস্তিকালোয়।

    যে শিশু আঙুল ধরে গুটি পায়ে হেঁটে এসে বলবে

    ‘ইনিই আমার পিতা আর ওই দূরে…

    কাঠের চুলায় আগুন ধরান তিনিই আমার মাতা’।

  • কবিতা

    কবিতা- বসন্ত সংলাপ

    বসন্ত সংলাপ

    -অমল দাস

     

     

    সমান্তরাল দৃষ্টির সমানুপাতিক নয়ন-সমর্পণে

    জটিল জ্যামিতিক উপাপাদ্যের সমাধান হতে পারে!

    তুমি ঊষার আপাতীত রশ্মির মতো স্পর্শানুভূতির সরল সূত্র নিয়ে

    সাবাই ঘাসের তৈরি অন্তরের মসৃণ পাতায় দাগ কেটে দেখো!

    আমি পরিমিতি -ত্রিকোণমিতি- ব্যাস ব্যাসার্ধের দ্বন্দ্ব,

    সাঁঝের ধূসরের আগেই মিলিয়ে দেবো গোধূলির রঙে।

    এই রঙেই পৃথিবীর রূপে অনুরণনের মোহজাল,

    লিওনার্দোর মোনালিসা প্রাণ পায়।

    এই রঙই ঢেলে দেবো বিবর্ণ সরণীতে।

     

    বিষাদের আবহবিকারে অনুভুতির প্রস্তর

    যেখানে ক্ষয়ের কান্নায় ভেঙে পড়ে,

    অথবা বিরহ প্রবাহে দানা রূপে তির্যক সমীকরণে সঞ্চিত হয়;

    সেখানে অতীত স্থাপত্য ফিরিয়ে দিতে পারি তোমার বসন্ত সংলাপে।

     

    যদিও সংসাধন অ-পুর্তিতে কোনো এক রাতে-

    নিভে গেছে আমাদের চালা ঘরের শিখা।

    দাঁড়িয়ে আঁধারের আরশিতে দেখি বিষাক্ত হৃদয়ের ভৌতিক রূপ।

     

    মনে পড়ে কবে কোন ঘোলা হাঁটু জলে ডুবে গেছে আমাদের নাও?

  • কবিতা

    কবিতা- গলওয়ান ধারা

    গলওয়ান ধারা

    -অমল দাস

     

     

    দূরবর্তী শ্মশানের মতন মৃত শহরে দীপ জ্বলে,  

    হুতুমের ডাক সহজে শোনা যায়না। তবুও-

    শব্দ তরঙ্গ, কড়ঙ্গ নিয়ে নিশ্চুপে কীর্তন গেয়ে যায়

    শহর থেকে শহরের তলপেটে।

    ‘জাগতে রহো’-র দল জেগে জেগে কবে যেন

    মিশে গেছে গলি পথে হলুদ ঘাসের’পরে,

    হেমন্ত শিশিরের ঘ্রাণেও ফিরে আসেনি আর!

    যারা জেগে ছিল নবীন নুড়ির চরে,

    সমুদ্র সফেনের মত বরফের চাদরে,

    সবুজের নিবিড় আবরণে আকাশের তলে অপলক

    তেমনি কতেক তারা নেমে গেছে পাহাড়ের গা বেয়ে

    পাথরের পাহারা ভেঙে আততায়ীর ঘায়ে।

    গতরাতে কিশোরী গলওয়ান হাঁটু গেড়ে কেঁদেছিল

    একা শবের উপত্যকায়।  

    সারারাত ভেসে এসে তর্পণের ঘাটে নোনা জল ব্যথা লেখে

    পূবে ওঠা সূর্যমুখী হাতের তালুতে।

    উত্তুরে হাওয়া বিবাদ বিষাদ নিয়ে আলুথালু ঘোরে

    দরবারী দ্বারে- নগরীর কপাটে- গ্রামের ভিতরে।

    আমরা ঘুমন্ত হৃৎপিণ্ড নিয়ে জেগে উঠি

    আগ্নেয় লাভার মত ছড়াতে চাই অসম্পূর্ণ মানচিত্রে

    বিষাদ বরণে সাঁঝের প্রহরে চোখ দিয়ে যত স্রোত নেমে এলো

    সেই শোকার্ত ধারা-গলওয়ান নদী ধীরে ধীরে খোয়া যায়  

    নিশীথের অন্ধ কুঠিতে তর্জার আসরে।

     

     

       

  • কবিতা

    কবিতা- বেহিসাবী কড়ি

    বেহিসাবী কড়ি

    -অমল দাস

     

     

    ভাঙছো যেমন ভেঙেই ফেলো রাস্তাগুলো

    কুকুরগুলো পেছন ফিরেই না হয় শুলো

    উপড়ে ফেলো বনপলাশের নবীন পাহাড়

    খাচ্ছ যেমন ছিনিয়ে খেও মুখের আহার।

    বুক পাঁজরে বুলেট শিল্প দানায় দানায়

    মূল্য শবের মিটিয়ে দিও কড়ি-কানায়

    বিলাস যেমন রাজপ্রাসাদের তক্তপোষে

    সিঁধেল কেটেও দৃষ্টি দিও অর্থ-কোষে।

    মারিয়ে যেও স্বাধীনচেতা পিঁপড়ে ভেবে

    জল চেওনা! জলের বদল রক্ত নেবে?

    সেই যে খুঁটি গাড়লে সেথায় জবর দখল

    দোলাও যত নৌকা দোলাও সইব ধকল।

    লোটন লোটন পায়রারা সব জোটন বেঁধো

    মিথ্যে শোকের বাঁশ বাগানে শিয়াল কেঁদো।

    টেক্কা-সাহেব-বিবির রেখো লক্ষ গোলাম

    দাবার কোটে সেপাই ঘোড়া ঠুকবে সেলাম।

    চোখ পেয়েছ দেখতে থেকো দৃশ্য দূষণ

    কেমন যেন রঞ্জিত লাল তোমার ভূষণ  

    মৃৎ -এর ঘরে মৃত্যু দিয়ে মূর্তি গড়ো,

    এমনিতে রোজ মরছে না হয় -মরবে আরও…

     

     

     

  • কবিতা

    কবিতা- রাতের রক্তে স্বপ্ন ধরি..

    রাতের রক্তে স্বপ্ন ধরি..

    -অমল দাস

     

     

    দূর থেকে এক হাকার এলো

    কেবল ‘আ’ কারটাই কানে গেলো,  

    আসল কথা পথে পথেই শেষ।

    সেই যে আমরা কোথায় ছিলাম

    এখনই বা কোথায় এলাম,

    সমুখ-পানে দৃষ্টি অনিমেষ।   

     

    দৃষ্টি দৃশ্যে রঙের ছায়া

    মোহ মায়ায় লিপ্ত কায়া,

            ঘোর কাটাতে কাটে কতেক দিন।  

    ছুটছি সবাই ছুটছি মোরা

    বাঁধন ছাড়া পাগলা ঘোড়া,

            মিটিয়ে যেতে এ জনমের ঋণ।  

     

    আকাশ ধূসর মেঘের মেলা

    কতেক ঘুড়ি করছে খেলা,

           কতক প্যাঁচে হারাচ্ছে তার লেজ।

    আবার বদ্ধভূমে জাগবে তৃণ

    মিটবে না সে কোনো দিনও,  

             সইতে রাজি রৌদ্র প্রখর তেজ।  

     

    শেষ দিগন্তে সাঁঝের রেখা

    নেই কো প্রদীপ, যায় না দেখা

             শঙ্খ নিনাদ সমাপ্তি সুর গায়।

    মাঠের মাঝে উড়িয়ে ধুলো

    ধুলোয় ঘেরা পোষ্য-গুলো,

            আপন মনে ঘরের পানেই ধায়।  

     

    মাতাল হাওয়া লাগলো পালে

    ছল-ছলা-ছল নদীর জলে,  

         দুই পাড়েতে নৌকা ডুবির ডর।  

    ভয় নেই আর নিঃস্ব চালার

    গাছের মাথাও জাগবে আবার,  

         আসে যদি আসুক না হয় ঝড়।  

     

     

    ঝড়ের পাখি চোখ রাঙালো

    ব্যাধের তিরে প্রাণ হারালো,

    ঢাকলো আঁধার সিঁদুর মেঘের লাল।

    আমরা হঠাৎ থমকে পড়ি

    রাতের রক্তে স্বপ্ন ধরি,

      নতুন সূর্য নতুন প্রভাত কাল।  

     

  • কবিতা

    কবিতা- বুদ্ধত্বের সন্ধানে

    বুদ্ধত্বের সন্ধানে

    -অমল দাস

     

     

    বাল্যের দুরন্তপনায় এক প্রিয় কন্থক প্রয়োজন ছিল

    যার পিঠে চড়ে পাড়ি দিতে পারতাম সিদ্ধার্থের পথে

    সে আর আমার পিতৃকুল হতে উপহার স্বরূপ আসেনি

    বংশের রাজ্যপাট ছিল না..

    অষ্টম ব্রাহ্মণের ভবিষ্যৎ নিরীক্ষণও হয়নি…  

    পদব্রজে নেমেছি, অনতি দূরেই থেমে গেছি

    থেমে গেছি অশ্বত্থ গাছটির তলে

    অশ্বত্থ গাছটি তখনও শত বছর ধরে অপেক্ষায়,

    জানি না কার!

              তার সর্বাঙ্গে অপেক্ষা মুদ্রিত আজও  
    আমার শৈশব, কৈশোর, যৌবনের মধ্যপন্থার দিন যাপন

    এই বৃক্ষতলে।

    একে একে স্বজন বিমুখ হয়েছে এই পথে

    পরমান্ন আহার পাইনি তখনও…   

    বৃক্ষ তলেই আমি বুদ্ধত্বের সন্ধানে;   
    এখানেই শ্রান্তি, আধ্যাত্মিক ধ্যান, জ্ঞান লাভের প্রয়াস  
    … আজও বোধিসত্ত্ব লাভ হলো না!
    বোধিবৃক্ষ হয়ে ওঠেনি আশ্রয়ের এই অশ্বত্থ!
    প্রতীক্ষায় থাকে অশ্বত্থ, প্রতীক্ষায় আমি…  

    উপলব্ধির প্রহরে অপেক্ষা শুধু সুজাতার…

    সুজাতা আজও পায়েসের বাটি হাতে, আসেনি অশত্থ তলে।

    অন্তরে আলোড়িত সুর ‘বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি…’ 

     

  • কবিতা

    কবিতা- জলাশয়

    জলাশয়

    -অমল দাস

     

     

    স্বর্গ বানিয়ে ঈশ্বরের আত্মতুষ্টি হলো না

    তৃষ্ণা নিবারণে পরিশ্রুত জলাশয় কাটলেন সেখানে!  

    নাম দিলেন যোনি…

    সর্বৈব সুন্দর জলাশয়ে ঈশ্বর নৌকাবিহারে মাতলেন

    হয়তো শরীরবৃত্তীয় উৎসুকেই মর্ত্যে প্রতিনিধি পাঠালেন

    সাথে কয়েকটি জলাশয়..                  

    পৃথিবী বিশাল জঙ্গলময় ঘন অন্ধকার

    মর্ত্যকীট সীমিত জলাশয়ে গা ভাসিয়ে বংশগতি বাড়ালো

    জঙ্গল কেটে বসতি, গ্রাম থেকে নগরের বিস্তার…   

    গুরুকুল থেকে রাজকুল-  

    কামুক তৃষ্ণা মেটাতে যে যার মত শক্তি বলে

    কোদালের ঘায়ে জলাশয় কেটে খাল বানালো

    অতিদ্রুত এই খালে ত্যাগ-তপস্যা-সত্যনিষ্ঠা;

    ন্যায়নীতি-অর্থ-সম্পদ ডুবলো!  

    জমিদার-সামন্ত, রাজ্য-রাজত্ব, শেষে রাজা-ঋষিও ডুবে গেলো

    আমরা থেমে যাইনি একই স্রোতে ভেসে এগিয়ে এলাম

    এখন প্রযুক্তি -বিজ্ঞান -জ্ঞানে আধুনিক

    খালে চাহিদা মিটবে কেন…

    অনবরত অকাল বর্ষণে বীর্য প্লাবনে রাশ টানতে-  

    ড্রোজার লাগিয়ে আয়ত্ত্বের খালগুলি নদী করা হচ্ছে!

    কেউ সাঁতার কাটছে, কেউ জাল ফেলছে…

    ত্রিবেণী সঙ্গমে যৌন-স্নানে, মাথা-দেহ, বোতল–ড্রাম সবই ডুবছে,  

    ডুবছে আরও কত কি…  

    সাধারণ থেকে নেতা ডুবছে, রাজ্য থেকে দেশও ডুবছে…

    কতেক পাঁকের মধ্যে হাতড়াচ্ছে নদীর পেটে রত্ন খুঁজতে…

    একদিন নদীর সমুদ্র উত্তরণের পথে পৃথিবীর ধ্বংস হবে।                                                               

    ঈশ্বরের কৃপা হলে পুনর্জন্মে ভাসবে আহুত-অনাহূতের বীজ

    কেউ কুন্তী গর্ভে কর্ণ হবে, কেউ গঙ্গা পুত্র ভীষ্ম

    অথবা ধর্ষিতার বেজম্মা..  

  • কবিতা

    কবিতা- আবছা প্রতিবিম্ব

    আবছা প্রতিবিম্ব

    -অমল দাস

     

     

    বহুকাল পর ভঙ্গুর টর্চলাইটটা হাতে পড়েছে

    প্রত্নতাত্বিক আবিস্কারের শিউলি ফুল চোখের কোণে।  

    যদিও শৈশবের ব্যাটারির উৎফুল্লতায় ছাইয়ের আস্তরণ, 

    মরচে ধরা প্রতিবিম্বে ক্রান্তীয় নাতিশীতোষ্ণ ভাব!

    কারণ আজকাল ঝোপে-ঝাড়ে, আনাচে-কানাচে

    রোমহর্ষক প্রকৃতির খোঁজ নেই!

    যেখানে আলোর উৎসুক বিক্রিয়া ঘটাতে পারি বেখেয়ালি।    

    সর্বত্র এল.ই.ডি-র উপছে পড়া আলোর জোয়ারে-

    বর্ণময় রূপে ভাসছি অ্যালকোহলের উপত্যকায়।

    অথচ মননের নুড়ি-পাথর আঁধার কিনারে অসহায়!   

    হারানো স্মৃতিতে আলোর প্রতিফলন ঘটেনি কখনই;  

    আজও ঘটেনা…

    ঘটনা প্রবাহ কেবল বাহ্যিক আবরণে।  

    অস্তিত্বের সম্পদও নেই শামিয়ানার আড়ালে,

    শুধু কতগুলি পরিচিত মুখ অপরিচিতের আদলে

    ঘাস ফড়িঙের মত উড়ে বেরায় অবয়ব ঘিরে।

    অনুভবের দর্শনে হোঁচট খেলেও-

    টর্চের আলো উপেক্ষিত হয়ে যায় উহ্য স্বরলিপির মত।   

     

     

     

     

     

You cannot copy content of this page